সংসার সুখের হয় উভয়ের গুনে

কোন মন্তব্য নেই
অধ্যাপক ডাঃ এএইচ মোহামমদ ফিরোজ
এফসিপিএস এমআরসিপি এফআরসিপি

সব মানুষই ভালোবাসা চায়। মানুষ ভালোবাসা ছাড়া বাঁচতে পারে না। বিবাহিত জীবনেও ভালোবাসার কমতি হলে বা ঘাটতি হলে দাম্পত্য জীবন সুখের হয় না। এ ব্যাপারে বহু ব্যাখ্যা বিভিন্ন সময়ে উপস্থাপিত হয়েছে। দাম্পত্য জীবনের ভালোবাসা অটুট রাখতে প্রত্যেকেরই ভূমিকা অত্যন্ত বেশি। স্বামী কিংবা স্ত্রী উভয়ের একান্ত ভালোবাসা শ্রদ্ধাপূর্ণ একটি দাম্পত্য জীবন তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
প্রায় ক্ষেত্রেই অভিযোগ শোনা যায় স্ত্রী কিংবা পুরুষের একার ওপর দায় বর্তেছে পরিবারে সুখ সমৃদ্ধি ধরে রাখার। মনোবিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেন যে, সুখী পরিবার সৃষ্টিতে কারো একার অবদান যথেষ্ট নয়। বরং উভয়কে পরিশ্রমী এবং একনিষ্ঠ হতে হবে। মনে রাখা উচিত স্বামী এবং স্ত্রী দু’জন ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান থেকে ওঠে আসে এবং একসাথে একটি নতুন অবস্থানে এসে একত্রে সংসার জীবন শুরু করে। কাজেই দু’জনের মন মানসিকতা একেবারে শতভাগ মিলে যেতে হবে এমন কোনো কথা নেই। আবার দু’জনেই যে কোনো কাজের জন্য উপযুক্ত হবে এমনটি আশা করাও স্রেফ বোকামি।
সঙ্গী বা সঙ্গিনী কিংবা স্বামী স্ত্রীর মধ্যে যে ভালোবাসা থাকে তা মনের সীমানাকে ছাড়িয়ে শরীরকে সপর্শ করে। একটি ব্যাপার জেনে রাখুন কেবলমাত্র শারীরিক ভালোবাসা কিংবা কেবলমাত্র মানসিক ভালোবাসা সুখী সংসার বা সুখী দাম্পত্য জীবন গড়ার জন্য যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন শরীর এবং মনের উপস্থিতি এবং পূর্ণাঙ্গ সহমর্মিতা। অনেক ক্ষেত্রেই দাম্পত্য জীবনে সামান্য একটু ভুল বোঝাবুঝির জন্য প্রচন্ড অশান্তি নেমে আসতে পারে। এতে করে ব্যাহত হয় সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের গতি। লক্ষ্য রাখবেন মন মানসিকতায় একবার হতাশা বা ক্লান্তি ঢুকে গেলে জীবনে বিপত্তি বাড়তে পারে। এতে করে শস্নথ হয়ে যেতে পারে আপনার উন্নতির চাকা। কাজেই দাম্পত্য জীবনের অশান্তি থেকে দরে থাকুন। নিজেকে নিয়ন্তণ করতে শিখুন। জানতে বা বুঝতে শিখুন নিজেকে এবং আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে। তাহলে নানাবিধ বিপত্তিকে পাশ কাটানো সম্ভব এবং সম্ভব দাম্পত্য জীবনকে পূর্ণাঙ্গ সুখী করে তোলা। নানাসময়ই এই ব্যাপারে অনেক প্রবন্ধ আমরা পড়ে থাকি যে যৌন জীবনে বিপর্যস্ততা অনেক সময় দাম্পত্য জীবনে প্রভাব ফেলে। এই ব্যাপারটিও কিন্তু্তু গুরুত্বপূর্ণ। যৌন জীবনে পুরুষ কিংবা নারীর ব্যর্থতা বা শিথিলতা অনেক সময়ই নানা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এর মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হলো স্বামীর পর নারীর প্রতি আসক্তি এবং স্ত্রীর পর পুরুষের প্রতি আসক্তি। দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে চাইলে আপনার যৌন জীবন সম্পর্কেও সজাগ থাকুন। উভয়ের মধ্যে যেন এ নিয়ে কোনো ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ না থাকে সে চেষ্টা করুন। নারী বা পুরুষ যে কেউ যে কোনো প্রকার যৌন সমস্যায় ভুগলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন এক্ষেত্রে দেরি করা কখনোই ভালো নয়।
সর্বোপরি জীবনের জন্য শক্তির প্রয়োজন সর্বাধিক। কাজেই দাম্পত্য জীবনে ভালোবাসা অটুট রাখার জন্য উচিত উভয়ের সহযোগিতা। খেয়াল রাখবেন একটু সতর্ক হলেই সুখী থাকা সম্ভব। পাশ্চাত্য দাম্পত্য জীবনে নারী এবং পুরুষের ভূমিকা সংক্রান্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠান সেদেশের মিডিয়াগুলোতে প্রচারিত হয়। এ সুবিধাটা আমাদের দেশে নেই। তবু আমরা নিজেরাই যদি এ ব্যাপারে সতর্ক হই সেটাই যথেষ্ট। আসুন দাম্পত্য জীবনে পূর্ণাঙ্গ ভালোবাসা সৃষ্টি কর। একটি সুখী সমৃদ্ধ দাম্পত্য জীবন কার না কাম্য থাকে। এ ব্যাপারে একটু চেষ্টা করুন এবং সফল হোন।


শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান । তাদের কে জানতে দিন অজানা বিষয় গুলি। ফেসবুকে  ব্লগারের সাথে ফেসবুকে যোগাযোগ করুণ

কোন মন্তব্য নেই :