দেহ নিয়ে ভাবনা

1 টি মন্তব্য


ডাঃ জাকারিয়া সিদ্দিকী
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক গবেষণায় দেখা গেছে বয়ঃসন্ধিকালে বিষণ্নতা ভোগের অন্যতম প্রধান কারণ হল নেতিবাচক দেহ ধারণা। এটা মুখ্যত কিশোরীদের বেলাতে বেশি দেখা যায়। ৮০২ জন মধ্যবিত্ত কিশোর-কিশোরী ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর গবেষণাতে দেখা গেছে মেয়েদের বেলাতে বিষণ্নতার উপসর্গগুলো অধিক মাত্রায় প্রকাশিত হয়। দেহ ধারণা অনেক বেশি নেতিবাচক, অধিকতর দেহ সচেতনতা বিদ্যমান পাশাপাশি আত্মসম্মানবোধ কম হতে দেখা গেছে।
একজন মানুষের ভালোলাগা আর ভালো থাকা ব্যাপারটা অনেক কারণের মাঝে নিজস্ব দেহের ভাবমর্তি দ্বারা অনেক পরিমাণে নিয়ন্ত্রিত হয়। একজন মানুষের যৌনতার মত দিকগুলোও ব্যক্তির দেহধারণা দিয়ে প্রভাবিত হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক গবেষণায় দেখা গেছে বয়ঃসন্ধিকালে বিষণ্নতা ভোগের অন্যতম প্রধান কারণ হল নেতিবাচক দেহ ধারণা। এটা মুখ্যত কিশোরীদের বেলাতে বেশি দেখা যায়। ৮০২ জন মধ্যবিত্ত কিশোর-কিশোরী ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর গবেষণাতে দেখা গেছে মেয়েদের বেলাতে বিষণ্নতার উপসর্গগুলো অধিক মাত্রায় প্রকাশিত হয়। দেহ ধারণা অনেক বেশি নেতিবাচক, অধিকতর দেহ সচেতনতা বিদ্যমান পাশাপাশি আত্মসম্মানবোধ কম হতে দেখা গেছে। গবেষণা রিপোর্টে দেখা গেছে বয়ঃসন্ধি বালিকারা নিজেকে দৈহিক দিক হতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ মনে করে। কর্মঠ পাশাপাশি তাদের ছেলেদের মত পজিটিভ দেহ ধারণা রাখে তারা তাদের বাস্তব জীবনে কম বিষণ্নতাগ্রস্ত হয়।
আপনার কিশোরী মেয়ের পজিটিভ স্বাচ্ছন্দ্য দেহ ধারণার বিকাশে আপনার করণীয়তা বিদ্যমান। ‘ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার ফর গার্লস ইন করপ্রোটেড’ এর পরিচালক হাইথার জনস্টোন নিকোসন পিএইচডি উপদেশ দেন-
(ক) অভিভাবক হিসেবে আপনার কিশোরী মেয়ের সাথে দেহ ফিগার ফ্যাশন নিয়ে সরাসরি আলাপ করুন। তাকে আশ্বস্ত করুন টিভি, সিনেমা, পত্র-পত্রিকায় মহিলাদের যে ফিগারকে দেখানো হয় তা কোনোক্রমেই আদর্শ হতে পারে না। কারণ খুব অল্প সংখ্যক মহিলাই তাদের দেয়া দেহ কাঠামো অর্জন করতে সক্ষম হয়।
(খ) আপনার কিশোরী মেয়ে পছন্দ করে এমন কোনো বাড়তি স্কিল বিকাশ করুন। কিশোরী মেয়েকে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং করুন। বাসায় টাইপিং, ড্রাফটিং শেখান।
(গ) আপনার আচরণের ব্যাপারেও সজাগ থাকবেন। আপনার আচরণ সক্ষ্মভাবে আপনার মনে দেহ নিয়ে নেতিবাচকথা আনতে পারে। বড় আয়নার সামনে ড্রেস নেয়াকালে যদি বলেন আপনার উরুযুগল কেমন মুটিয়ে গেছে বা স্তন যুগলের আকার যদি আরও সুন্দর হত! এ দেহ সক্ষ্ম সংলাপ আপনার মেয়ের মনে গেঁথে যেতে পারে। আপনার মেয়েকে স্বাভাবিক ধারায় বিকাশ হতে দিন।
(ঘ) আপনার মেয়েকে নানান প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত ফিগার সচেতন হবার চেয়েও সুস্থ শরীর গড়া ব্যাপারে অধিকতর অনুপ্রাণিত করুন। তাকে নানান জাতীয় দৈহিক শরীর চর্চার ব্যাপারে উৎসাহিত করে তুলুন। যদি সম্ভব হয় বাসার আঙ্গিনার মাঝে বা হেল্‌থ ক্লাবে নিয়ে সঙ্গ দিতে পারেন। এক সাথে অনেকটা পথ হেঁটে আসতে পারেন। গবেষণাতে দেখা গেছে যারা নিয়মিত ব্যায়াম করে থাকে তাদের আত্মসমমানবোধ মাত্রা বেড়ে যায়।
(ঙ) দেহ বিকাশের ক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ পর্যাই হল ঋতুস্রাবের বিকাশ। আপনার মেয়েকে এমনভাবে গড়ে তুলুন তার যেনো ঋতুস্রাব সম্পর্কে সাবলীল দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটে। এ ক্ষেত্রে ত্রুটি হলে কেবলমাত্র দেহ নয় তার নারীত্ব, রমণীয়তা সম্পর্কে ধারণা বিলম্বিত হবে।
(চ) দেহ ধারণার বিকাশের ক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হল স্তনের বিকাশ। স্তন একটা গুরুত্বপূর্ণ সেকেন্ডারি যৌন বৈশিষ্ট্য ও তা একটা যৌন অঙ্গও বটে। স্তনের আকারের সাথে যৌন উৎকর্ষতার যদিও কোনো সংশিস্নষ্টতা নেই, সাংস্কৃতিক অন্ধ বিশ্বাস দেখা যায়। আপনাকে সচেতন থাকতে হবে এমন শঙ্কা যেনো উদ্বেগের কারণ না হয়।
(ছ) দেহের কোনো ব্যাপার নিয়ে কোনো খুঁতখুঁতেভাব থাকলে সে যেনো সরাসরি আলাপ করে। আপনার কিশোরী মেয়ের সাথে এমন সাবলীল সম্পর্ক গড়ে তুলুন।
বিকাশলগ্ন
বয়ঃসন্ধিকালে এসে এ সমস্যা আরও প্রকট হয়। বয়ঃসন্ধিকালে দৈহিক পরিবর্তনগুলো যে জাতীয় দ্রুততার সাথে সংঘটিত হয় পাশাপাশি চারপাশের পরিবেশ দ্বারা তার নাজুক মন প্রচন্ড মাত্রায় মিথস্তিক্রয়ান্ব্বিত হয়। যে দেখতে পায় তার চারপাশের সমাজে দেহের ফিগার আর চাহনীকে প্রচন্ড গুরুত্বারোপ করে। এ সমস্ত কারণে তার ব্যক্তিধারণার বিকাশে দেহধারণা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে।
পরিবর্তন লগ্ন
আমাদের দেহ মাঝে সতত পরিবর্তন হচ্ছে। কতক বাহ্যিক অবয়বে আর কতক চোখের অন্তর্বাসে দেহের অভ্যন্তরে। জন্ম হতে মৃত্যু অবধি এ পরিবর্তন চলছে। বয়সকালে কয়েক বছর সময়কালে পরিবর্তন মাত্রা অপেক্ষাকৃত দ্রুততার সাথে ঘটে থাকে। শৈশবেও পরিবর্তন দ্রুত হলে এ বয়সকালে দেহে সেকেন্ডারি যৌন বৈশিষ্ট্যের বিকাশ ঘটে যে কারণে ছোটো শিশুটি কিশোর-কিশোরী হয়ে যায়। এ বয়সকালটার গুরুত্ব বেশি। কারণ একদিকে এ সময়কালে কিশোর-কিশোরীরা চারপাশের নানান উদ্দীপক দ্বারা মিথস্তিক্রয়ান্ব্বিত হয়। পাশাপাশি সামাজিক নানান বিধি নিষেধ বর্তায়। কিশোর-কিশোরী আচরণদ্বারা নিয়ন্ত্রণাধীন হয়।
বয়সকালের সেকেন্ডারি যৌন বৈশিষ্ট্যের বিকাশ শুরুহয়। কিশোর-কিশোরী দু’জনার বেলাতে নাভির নিচের লোম গজায়। কিশোরের বেলাতে বগল, বক্ষ, মুখেও দাড়ি, গোঁফ গজায়। কিশোরীদের স্তন বাড়তে থাকে। কিশোরদের পুরুষাঙ্গ আকারে বর্ধিত হয়। হাত পা লম্বা হয়। গলার স্বরের তীব্রতায় পরিবর্তন আসে। দৈহিক যে পরিবর্তন তার সাথে সাথে আবেগ সংশিস্নষ্ট এডজাস্ট করার দরকার হয়। কারণ বয়সটাই এমন শিশু সুলভ আচরণ করলে ন্যাকামী বলে অভিযোগ তোলা হয়। আর প্রাপ্ত বয়স্কদের ধারায় আচরণ করলে পাকামির আপত্তি তোলা হয়।
তারা ভবিষ্যৎ স্বপ্নে বিভোর থাকে। বর্তমানকালে তাদের দেহের বিকাশের দৈন্যতার কারণে একদিকে হতাশ হয়। পাশাপাশি আড়ষ্টতায় ভোগে। দৈহিক বিকাশের পর পরিণত হতে তো সময়ের দরকার। তাতে কয়েক দিনের ব্যাপরে নয়। দেহের বিকাশের পর হরমোনাল, অপরিণতদশা, পাশাপাশি পরিবেশ চাপানো বাড়তি উদ্বিগ্নতা ‘ ব্রোন’ সমস্যার কারণ ঘটাতে পারে। এ কারণে এ বয়সকালে যারা হোস্টেলে থাকে তারা একা শাওয়ারে অপেক্ষা করে স্নান শেষে কেমন অনেক বেশি যত্নসহকারে টাওয়াল ব্যবহার করে থাকে। যেনো দেহ নিয়ে সে প্রচন্ড অস্বস্তিতে ভুগছে। এদের কেউ কেউ আবার মনের স্বপ্নের জগত রচনা করে বসে- তারা ধারণা করে বসে সে তার পরিচিত সিনেমা নায়িকা বা প্রিয় খেলাঘরের মত দেহ ফিগার অর্জন করতে চলেছে।
চারপাশের সাংস্কৃতিক ভাবধারা দৈহিক পরিবর্তনের এ ক্রান্তি লগ্নে শিশুর মন বিকাশে মস্তবড় আপদ হয়ে যায়। পাশ্চাত্য বিশ্বে দেহের ফিগারের ওপর প্রচন্ড গুরুত্বারোপ করা হয়। দেহের সুস্থতা থাকলেই তো যথেষ্ট, কিন্তু্তু পাশ্চাত্যে চাহিদা অনেক বেশি। পাশ্চাত্যের জীবন যাপনের একটা বিরাট পরিশ্রম আর অর্থ ব্যয়িত হয় দেহের ফিগার আর চাহনীর কথিত উৎকর্ষতা অর্জনে। প্রতিদিন কয়েক মাইল জগিং করা, প্রাত্যহিক জীবনের নৈমিত্তিক পরিশ্রমের পরেও কয়েক মাইল সাইকেল চালিয়ে আসা। ঘন্টার পর ঘন্টা বাথটান করা। সবগুলোর লক্ষ্য একটাই সে কাক্ষিত দেহ গড়ন অর্জন করে নেয়া। ডাইট বুক ‘ব্যায়াম বিধি’ বই পুস্তক ক্যাসেটের ছড়াছড়ি। টেলিভিশন, পত্র-পত্রিকায় ফিগার আর পোশাকের ব্যাপারে এত ব্যাপক বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয় তাতে আন্ডারওয়্যার বা জেনিটাল কোনোটাই বাদ যায় না। শিশুরাতো শৈশব হতে এগুলো দেখে আসছে।
দেহ মনস্তাত্ত্বিক বিকাশের এ ক্রান্তিলগ্নে নিজ দেহ সম্পর্কে মনের মাঝে যে ধারণা আর ভাবমর্তির বিকাশ ঘটে প্রাপ্ত বয়স অবধি সেগুলো থেকে যায়। এমনকি সুন্দর দেহের অধিকারী এমন অনেক পুরুষ মহিলার বর্তমান যারা তাদের দেহের নানান ব্যাপার নিয়ে অস্বাচ্ছন্দ্যতাবোধ করে থাকেন। কারণ বয়ঃসন্ধি আর তার আগে দেহ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা গড়ে নিয়েছিল। মনোগবেষকরা বলেন নাসিসিজম দেহ আঘাত লাগার অহেতুক ভয় বা দেহ নিয়ে খুঁতখুঁতে স্বভাব, খাবার নিয়ে সমস্যা এ জাতীয় নানান সমস্যা দেহ ধারণা নিয়ে অতিরিক্ত শঙ্কা উদ্বেগ প্রসত এদের সংখ্যা অল্প। অধিকাংশের বেলাতেই যদি ক্ষণকাল স্থায়ী উদ্বিগ্নতা দেখা যায় তারা পরবর্তীতে গিয়ে স্বাভাবিক দেহ ধারণা গড়ে নেয়।
আপনার করণীয়তা
  • আপনার শিশুর পড়াশোনার পাশাপাশি অন্য স্কিল গড়ে তুলতে দিন যা বয়ঃসন্ধিকাল আসার আগে হতেই শুরুকরতে হবে। ছবি আঁকা, খেলাধুলায় অংশ নেয়া বা স্কুল বা এলাকার সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত করা মানে শিশুকে প্রকাশ্যে সুযোগ দেয়া। শিশু যখন অনেকগুলো দিক হতে নিজেকে প্রকাশের সুযোগ পায় দেহের বিকাশ লগ্নের উদ্বেগ আশঙ্কা অনেক পরিমাণে কেটে যায়। শিশু এ ক্রান্তিলগ্ন সহজভাবে পেরিয়ে আসতে পারে।
  • শিশুকে মনস্তাত্ত্বিক দিক হতে সাবলীল করে গড়ে তুলুন। শৈশব হতে শিশুর মাঝে দায়িত্ববোধ, নেতৃত্বদান ইত্যাদি গুণ যদি গড়ে তুলতে পারেন সে ক্ষেত্রে শিশু মনস্তাত্ত্বিক বিকাশে অনেক পরিমাণে এগিয়ে যায়। যাদের মনস্তাত্ত্বিক বিকাশ স্বাভাবিক তারা তাদের দেহ সম্পর্কে পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে থাকে।
  • বয়ঃসন্ধিকালের সেকেন্ডারি যৌন বৈশিষ্ট্যের বিকাশকালে তাকে আশ্বস্ত করুন তাদের বিকাশ স্বাভাবিক সাবলীল ধারায় চলছে। বিকাশ পূর্বটা সবার বেলাতে এমনভাবে চলে। এতে উদ্বিগ্ন হবার কোনো কারণ নেই।
  • আপনার দেহ সম্পর্কে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি শিশু মনের ওপর নেতিবাচক/ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে। দেহের সুস্থতা বিধান মুটিয়ে না যাওয়া বন্ধে মোটামুটি অয়াসশ্রম শিশু মনের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ায় আপনার শরীর নিয়ে যদি অতিমাত্রায় উদ্বিগ্ন, শঙ্কাগ্রস্ত হন, সারাদিন কেবলমাত্র শরীর নিয়ে মেতে থাকেন সে ক্ষেত্রে কোনোভাবে আপনার শিশুর মনে ইতিবাচক দেহ ধারণার বিকাশ ঘটবে না।
সমীক্ষণ
দেহ হাল্কা পাতলা রাখা আধুনিক সভ্য সমাজের ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিভাবে ওজন কমিয়ে দেহ পিম রাখা যাবে তার ওপর ভিত্তি করে বই পত্তর, ভিডিও ক্যাসেট, বিশেষজ্ঞ এমনকি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা নিতান্ত কম নয়। দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা নিতান্ত কম নয়। আবার এ জাতীয় প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছিল তাদের ওপর সমীক্ষণে দেখা গেছে এদের ৮৪.২০ শতাংশ অভিমত প্রকাশ করেছে তাদের যৌনতা আগের চেয়েও উৎকর্ষতর হয়েছে।
সেক্স থেরাপিস্টরা এটাকে ব্যাখ্যা করেন-দেহের ওজন কমানো মানে দেহ সচেতনতা বাড়ার প্রমাণবহ, একজন মানুষ যতই স্বাস্থ্য সচেতন হবে তার যৌনতা তত বেশি উৎকর্ষতর হয়ে উঠবে।
নিজেকে ভালোবাসুন
আগে প্রশ্ন করুন
(১) দেহ বা দেহের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আমি স্বাচ্ছন্দ্যতা বোধ করি।
প্রায় সময়/ মাঝে মাঝে/ খুব কম সময়।
(২) আমার বাহ্যিক প্রকাশ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট
প্রায় সময়/ মাঝে মাঝে/খুব কম সময়।
(৩) আমাদের দেহের ইতিবাচক দিক বা দুর্বল দিকগুলো অন্যকে জানানোর ক্ষেত্রে মনে কোনো প্রকার জড়তা বা আড়ষ্টতাবোধ আসে না।
সব সময়ে/ মাঝে মাঝে/ খুব কদাচিত।
  • যদি এ তিনটি ক্ষেত্রে আপনি সব সময়ের তালিকায় থাকেন সে ক্ষেত্রে আপনি আত্মবিশ্বাসী, আপনার আত্মবিশ্বাসমাত্রা অনেক তীব্র। এ কারণে আপনাকে ধন্যবাদ জানানো উচিত।
  • যদি মাঝে মাঝে এমন বোধগুলো আসে সে ক্ষেত্রেও আপনাকে স্বাগতম জানানো উচিত। কারণ আপনি ধীরভাবে ক্রমশ আত্মবিশ্বাসের দিকে এগোচ্ছেন।
  • যদি এমনভাব কদাচিৎ মানে খুব কম সময়ে আসে তাহলে আপনাকে তৎপর হতে হবে। সত্যিকারভাবে এ ক্ষেত্রে আপনি বিষাদগ্রস্ত অবস্থায় আছেন।
আসলে দেহ মনের সাথে যোগসূত্র নিবিড়। দেহ ভালো থাকলে মন ভালো থাকে আর মন ভালো না থাকলে দেহ ও আক্রান্ত হয়ে পড়ে আপনা হতে। আত্মবিশ্বাস কে না চায়। আমাদের সবারই স্মরণে থাকা চাই নিজের কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতা আত্মবিশ্বাস একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আসলে আত্মবিশ্বাস আর আত্মমর্যাদাবোধের একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদানই হল নিজেকে ভালোবাসতে শেখা। যদি আপনি নিজেকে ভালোবাসতে না শেখেন সে ক্ষেত্রে আপনার দেহের ইতিবাচক দিকগুলো এড়িয়ে নেতিবাচক দিকগুলোই আপনার কাছে বারবার প্রতিভাত হবে। এগুলো আপনার মনে হতাশা আর বিষণ্নতার সৃষ্টি করবে।
আপনি নিজেকে ভালোবাসতে শিখুন। নিজকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে শিখুন।
  • আপনার দেহ গড়ন ফিগার নিয়ে ক্ষণিককাল চিন্তা করুন। আপনার দেহের যে যে বৈশিষ্ট্যগুলো আপনার কাছে অপর্যাপ্ত মনে হয় সেগুলোর তালিকা তৈরি করে নিন এগুলো হতে পারে আপনার দেহের উচ্চতা, দেহের বর্ণ, চোখের ধরন। একটু চিন্তা করে দেখুন এগুলোর ওপর আপনার কোনো হাত নেই। এ কারণে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ মেনে নেয়া। এমনকি আপনার মনে এমন কোনো ইপ্সিত কামনা আসে ইস যদি আরেকটু লম্বা হতাম, ইস যদি গায়ের বর্ণ আরেকটু ফর্সা হত! ইত্যাদি ইত্যাদি। মনকে এমনভাবে এডজাস্ট করে নিন আপনার কাক্ষিত বৈশিষ্ট্যাবলী কাউকে দেখলে যেনো আপনার মনে ঈর্ষা না আসে।
  • পাশাপাশি আরেকটু তালিকা তৈরি করে নিন দেহ সংশিস্নষ্ট যে বৈশিষ্ট্য বা বিষয়গুলো আপনি চেষ্টা আর কর্মতৎপরতার দ্বারা কম বেশি পরিবর্তন করতে পারবেন। যেমন পোশাক-পরিচ্ছদে স্মার্টন্যাস ফিগার ধরে রাখা, চুলের ধরন।
  • স্মরণে রাখুন পৃথিবীর কোনো মানুষই সামগ্রিকভাবে পরিশুদ্ধ নয়। প্রতিটি মানুষ মাত্রেরই কমবেশি সীমাবদ্ধতা বিদ্যমান। এ সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়েই আপনাকে বিকাশ ঘটাতে হবে।
  • আপনার দেহের নেতিবাচক হা-হুতাশের ব্যাপারগুলো নিয়ে অন্যের সাথে আলাপ আলোচনায় বা বিজ্ঞাপনে যাবেন না। প্রতিটি মানুষ মাত্রেই নিজেকে নিয়ে এতটা ব্যস্ত থাকে। অন্যের খুঁত দেখার ব্যাপারে ফুরসত থাকে না। যদি কেউ তার দেহের কোনো সীমাবদ্ধতা নিয়ে চারপাশের লোকজনের দৃষ্টি আকর্ষণে ঢাকঢোল না পিটায় সে ক্ষেত্রে অধিকাংশ লোক সেগুলোর দিকে আদৌ কোনো নজরই দেন না।
  • আপনার চারপাশের যে যে লোকদের প্রশংসায় আপনি পঞ্চমুখ তাদেরকে ভালোভাবে লক্ষ্য করুন। তারা কতটা নিখুঁত? যদি আপনি খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করে থাকেন সে ক্ষেত্রে সকল মডেলেরও অস্বাভাবিক দেহ বৈশিষ্ট্য থাকতে দেখতে পাবেন।


শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান । তাদের কে জানতে দিন অজানা বিষয় গুলি। ফেসবুকে যোগাযোগ করুণ  https://www.facebook.com/sayed.rubel3

1 টি মন্তব্য :

এম.এ.রহিম বলেছেন...

ভালো লাগলো.......ধন্যবাদ আপনাকে