স্লিপ এপনিয়াঃ ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ হওয়া

কোন মন্তব্য নেই

একবার ভেবে দেখুন তো ঘুমের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে কী হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে এ ঘটনা ঘটতে পারে। এ ধরনের অবস্থাকে স্লিপ এপনিয়া বলা হয়। টানা ১০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় শ্বাস বন্ধ থাকলে বা একেবারে কমে গেলে এ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
যাদের হয়
সাধারণত এটি বড়দের রোগ এবং শিশুরা এ ক্ষেত্রে খুব কম আক্রান্ত হয়। মহিলাদের তুলনায় পুরুষরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তবে বয়স ৫০ বছর পেরোলে মহিলা-পুরুষ সমানভাবে এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। স্থূলকায় লোকদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। তাছাড়া হার্টের রোগসহ বেশ কিছু রোগ আছে যাতে আক্রান্ত হলে স্লিপ এপনিয়া হতে পারে।
কীভাবে হয়
বুঝতে হলে জানতে হবে আমরা কীভাবে শ্বাস গ্রহণ করি। নাক ও মুখ দিয়ে যে বাতাস গ্রহণ করি তা শ্বাসনালি নামক লম্বা পথ দিয়ে বেরিয়ে ফুসফুসে গিয়ে পৌঁছায়। স্লিপ এপনিয়ার শুরুতে ঘুমের মধ্যে শ্বাসনালির পথ বন্ধ বা কলাপস হয়। এ অবস্থায় রোগী একটু জোরে শ্বাস নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সেটা সম্ভব হয় না। ফলে রোগীর ব্রেইনে অক্সিজেন ঘাটতি দেখা দেয়। ব্রেইন তখন বাধ্য হয়ে রোগীকে জাগিয়ে তোলে।
কী কারণে হয়
যখন ঘুমাই তখন ব্রেইন শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে জড়িত মাংসপেশিগুলোকে নির্দেশ দেয় শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য। অনেক সময় ব্রেইন এ ধরনের নির্দেশ পাঠায় না। তখন শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। অপরদিকে ব্রেইন হয়তো নির্দেশ পাঠাল, কিন্তু শ্বাসনালির পথ কোনো কারণে বন্ধ থাকলে তখন শ্বাস নেয়া সম্ভব হয় না। একই সঙ্গে দুই ঘটনাও ঘটতে পারে। অর্থাৎ ব্রেইন নির্দেশ পাঠাল না এবং শ্বাসনালির পথও বন্ধ থাকল।
স্লিপ এপনিয়া কেন এত ভয়াবহ
স্লিপ এপনিয়া বেশির ভাগ সময় মারাত্মক কোনো রোগের ইঙ্গিত বহন করে।
  • হার্টের রোগ যেমন-হার্ট ফেইলিওর, অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন ইত্যাদি
  • ব্রেইনের রোগ
  • জন্মগত কোনো ত্রুটি
  • কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
  • উচ্চরক্তচাপ
চিকিৎসা
বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা আছে সেগুলোর সাহায্যে রোগ ও রোগের তীব্রতা নির্ণয় করা যায়। চিকিৎসা হিসেবে নিচের পদক্ষেপগুলো নেয়া যায়-
  • শোয়ার স্টাইল পরিবর্তন। কারণ চিত হয়ে শুয়ে তাকলে স্লিপ এপনিয়া বাড়ে।
  • ওজন কমানো। ১০ ভাগ ওজন কমালে স্লিপ এপনিয়া ২৫ ভাগ কমে যায়।
  • সুষম খাবার গ্রহণ।
  • নিয়মিত ব্যায়াম।
  • ওষুধ, অপারেশন বা সার্জারির মাধ্যমে চিকিৎসা।
কার কাছে যাবেন
বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে এ ধরনের সেন্টার গড়ে উঠেছে, যারা স্লিপ এপনিয়া রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে থাকে। অতএব নাকডাকা রোগ থাকলে নাকে তেল দিয়ে না ঘুমানোই উত্তম। কেননা ছোট এই সমস্যাটি অনেক জটিল রোগের বাহক হতে পারে।
লেখকঃ অধ্যাপক ডা. মির্জা মোহাম্মদ হিরণ
বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ
জনসেবা নার্সিং হোম, মোহাম্মদপুর, ঢাকা

শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান । তাদের কে জানতে দিন অজানা বিষয় গুলি। প্রকাশক ও সম্পাদক ব্লগার_সৈয়দ রুবেল লেখকজানার আছে অনেক কিছু

কোন মন্তব্য নেই :