শীর্ষ চরমপুলকের ইতিহাস

বাংলাদেশের বিশিষ্ট মনোশিক্ষাবিদ, মনোবিজ্ঞানী ও মনোচিকিৎসক
অধ্যাপক ডা. এ এইচ মোহাম্মদ ফিরোজ
মানসিক রোগ শিক্ষা, গবেষণা, চিকিৎসা ও জনসচেতনতায় পথিকৃৎ
আমি যৌনপুলকের একটা সংক্ষিপ্ত ইতিহাস আপনাদের দিতে চাই। বিগত দিনে অর্গাজম সম্বন্ধে সীমিত জ্ঞান কার্যকরীভাবে যৌনশক্তিকে সীমিত করে রেখেছিল। আজকের দিনের গবেষণা অনেক বেশি নতুন জ্ঞান এনে দিয়েছে। যার ফলে আমাদের সম্ভাবনাও অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে। আমরা জানি আরও অনেক বেশি সম্ভব। তথাপি, বহু লোক এখনো বিশ্বাস করে যে, পুরুষ শুধু একটি মাত্র যৌনপুলক পেতে পারে, যাকে তারা সংজ্ঞা দেয়- পুংলিঙ্গের যৌনপুলক নামে যেটা শিশ্ন ও অণ্ডকোষের মধ্যে অবস্থান করে এবং নারীদের দুটি স্থানে ভগাঙ্কুরে অথবা যোনিতে। প্রকৃতপক্ষে নারী এবং পুরুষ উভয়েই বহুবিধ যৌনপুলক উপভোগ করতে পারে যেটা সম্ভাবনার বিস্ময়কর সীমানা খুলে দেবে।
আমার এই নির্দিষ্ট বিবেচ্য বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করার জন্য আমাকে কতগুলো যৌনপুলকের প্রতিক্রিয়ার আবিষ্কারের কথা বলতে দিন; যেটা আমি পরে আলোচনা করব-
  • যৌনপুলক লাভের সময় পুরুষের মতো নারীরাও বীর্যস্খলন ঘটাতে পারে।
  • যৌনাঙ্গের শীর্ষপুলক নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যে বীর্যপাত ঘটানো ছাড়াও হতে পারে।
  • ভালোবাসার মধ্যে নারী ও পুরুষ উভয়েই অসংখ্য শীর্ষ যৌনপুলক উপভোগ করতে পারে।
  • যৌনাঙ্গের পূর্ণ শীর্ষপুলক আত্মজ্ঞানের পরিবর্তিত বিকাশ ঘটাতে পারে।
যদিও এসব আবিষ্কার নিয়ে বহু সংখ্যক গবেষণা প্রোগ্রাম লিখিত আকারে এসেছে এবং অনেক দিন থেকেই জানা যাচ্ছে তবু এখনো তারা অনেক লোকের কাছেই বিস্ময়কর হিসেবে ধরা দিচ্ছে। তথাপি আমার ধারণা হচ্ছে এই যে, যদি একজন ওটা করতে সক্ষম হয়, তবে আমরা সকলেই তা করতে সক্ষম হব! যৌন শীর্ষপুলক শব্দটি তার সাথে একটা বিরাট পূর্ণতার ওয়াদা বহন করে। এটা দুটো গ্রিক শব্দ থেকে উদ্ভূত হয়েছে-একটা (Orgasmos) অর্গাজমস-এর পূর্ণ অর্থ হচ্ছে-পাকা হওয়া বা পূর্ণতাপ্রাপ্তি, ফুলে ওঠা এবং কামাসক্ত হওয়া এবং (Orge) অরজি-এর অর্থ হচ্ছে আবেগ বা তাড়না। এটার মূল সংস্কৃত ভাষার ‘Urj’ শব্দটির মধ্যেও পাওয়া যায়। যার অর্থ হচ্ছে পুষ্টি, শক্তি এবং দৈহিক বা মানসিক সমর্থ। এসব সংজ্ঞার সাথে আমরা যদি দৃঢ়সংলগ্ন থাকতাম নিঃসন্দেহে আমরা অনেকগুলো সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারতাম। যেগুলো এই সীমিত ব্যাখ্যার দ্বারা দীর্ঘদিন বছরের পর বছর যৌন শীর্ষপুলকের উপভোগ সম্বন্ধে আমাদের দেয়া হয়েছে।
ইদানীংকালে নারী ও পুরুষের যৌনপুলক সম্বন্ধে কঠোর স্বাতন্ত্র্য দেখানো হচ্ছে। বিভিন্ন নারীর ক্ষেত্রেও বিভিন্ন প্রকৃতি ও তাদের যৌনপুলকের পার্থক্য দেখানো হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ সিগমন্ড ফ্রয়েড দাবি করেছেন যে কোনো নারী যদি তার বয়ঃসন্ধিকালে ভগাঙ্কুরের পুলক থেকে গভীর যোনির ভেতরস্থ যৌনপুলকের অভিজ্ঞতা লাভ না করে থাকে, তাহলে সে যৌনতার ও মনস্তাত্ত্বিক দিক দিয়ে অপরিণত থেকে যায়। তিনি ভগাঙ্কুরকেও ক্ষয়প্রাপ্ত শিশ্ন বলে বিবেচনা করেছেন এবং এই বিশ্বাস দিয়েছেন যে, নারীর যৌনাঙ্গসমূহ প্রকৃতিগতভাবে পুরুষাঙ্গের একটা ন্বিম্নতর প্রতিলিপি। ১৯২০ সালে ফ্রয়েড তার A general introduction to Psychoanalysis নামক গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন-
Of little girls we know that they feel themselves heavily handicapped by the absence of a large visible penis and envy the boys possession of it; from this swore primarily springs the wish to be a man. The clitoris in the girl, more over, is a region of especial excitability in which auto-erotic satisfaction is achieved. The rendition to woman hood very much depends upon the early and complete relegation of this sensitivity from the clitoris over to the vaginal orifice.
ফ্রয়েডের ধারণা যৌনাঙ্গসমূহকে মেরু মুখীকরণ তীব্রতর করেছিল, সম্ভবত সেটাই সেসব হাজার হাজার নারীর অবর্ণনীয় দুঃখের কারণ হয়েছিল, যারা নিজেদের অসম্পূর্ণ এবং অপ্রাপ্ত মনে করত। যখন তারা পূর্ণ যোনির পুলক, শিহরণ লাভে ব্যর্থ হতো। এটা ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত ছিল, যখন পর্যন্ত না আলফ্রেড সি কনসে ভগাঙ্কুর ও যোনির মধ্যে যৌনপুলক সম্বন্ধে অতিকথা বা মিথ্য প্রচারের পরিসমাপ্তি ঘটান। তিনি তার প্রকাশিত গ্রন্থে Sexual behavior in the Human female-এ বলেন, তিনি যে ২৭০০ আমেরিকান নারীকে নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন, তাদের মধ্যে অর্ধেকের মতো মেয়েলোকই বলেছেন যে, তারা ভগাঙ্কুরের মধ্য দিয়ে শীর্ষপুলক লাভ করেছেন এবং সেখানে এমন কোনো প্রমাণ নেই যে সেই নারীগণ তাদের চেয়ে কোনোক্রমে কম পরিপক্ব ছিল যারা যোনির শীর্ষপুলক পেয়েছেন। কিনসে ঘোষণা করলেন যে, ভগাঙ্কুর থেকে সংবেদনশীলতা যোনির মধ্যে বদলি করার কল্পনা করা হচ্ছে একটা জৈবিক অসম্ভাব্যতা বা biological impossibility.
১৯৪৮-এর প্রারম্ভে কিনসে আরও আবিষ্কার করলেন যে, পুরুষের মধ্যে শীর্ষ যৌনপুলক ও বীর্যস্খলন দুটো নির্দিষ্ট এবং আলাদা ঘটনা হতে পারে- যেটা উন্নত যৌনতার ক্ষেত্রে একটা অতীব প্রয়োজনীয় বা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর এবং প্রাচ্যের তন্ত্রীয় দর্শনের একটা অখণ্ড দিক। কিনসে লিখেছেন শীর্ষপুলক বীর্যস্খলন ব্যতীতও হতে পারে। এটা ওইসব পরিপক্ব পুরুষের মধ্যে হয়ে থাকে যারা ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের যৌনাঙ্গের পেশিগুলোকে সংকোচন করতে পারে- এই টেকনিকটাকে কয়েটাস রিজার্ভেটাস বলা হয়ে থাকে। এসব পুরুষ প্রকৃত শীর্ষপুলকের অভিজ্ঞতা লাভ করে যাকে প্রত্যক্ষ করতেও তাদের কোনো কষ্ট হয় না, যদিও সেটা হয়ে থাকে বীর্যপাতহীন। ইতিমধ্যে উইলহেমরিচ (Wilhelm reich) তার ভিত্তি হেলানো পুস্তক the function of the orgasm-এ যেটি ১৯৪০ সালে প্রকাশিত হয়। শীর্ষপুলকের সংজ্ঞাকে আরও স্পষ্ট ও বিস্তারিত বর্ণনা করে যিনি প্রথম যৌন বিজ্ঞান বিশারদ হন, তিনি সেটাকে এমন একটা ঘটনা বলে বর্ণনা দেন যা শুধু যৌনাঙ্গসমূহকে ছাড়িয়ে সমস- দেহকে সমাচ্ছন্ন করে। রিচ বিশ্বাস করতেন যে একজনের আবেগ উত্তেজনাজনিত স্বান্থ্য, তার (স্ত্রী বা পুরুষ) যৌন কার্যকালে সম্পূর্ণ শরীরের শীর্ষপুলক ছেড়ে দেয়ার অভিজ্ঞতার সামর্থ্যের সাথে সম্পৃক্ত। তিনি অনুভব করেছিলেন পূর্ণ যৌনপুলকজনিত বীর্যপাত হচ্ছে উপশমকারী অভিজ্ঞতার অন্যতম। যেটা একজন লোক দৈহিক ও মানসিকভাবে লাভ করতে পারে। তিনিই ছিলেন প্রথম পশ্চিমা যৌনবিজ্ঞানবিশারদ যিনি দেখিয়েছিলেন যে, স্বাস্থ্যপ্রদ যৌন ক্রিয়াকর্ম উচ্চস্তরের সজ্ঞানতার অভিজ্ঞতা লাভের সাথে সম্পৃক্ত।
অপরদিকে রিচের সমস- দেহের কাছে যাওয়ার বিপরীতে উইলিয়াম মাস্টারস এবং ভার্জিনিয়া জনসন মানুষের শীর্ষপুলক প্রতিক্রিয়াকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন। এখানে- দেখিয়েছিলেন একটা পরিমেয় এবং পরিমাপক পদ্ধতি হিসেবে। তারাই ছিলেন গবেষকদ্বয় যারা সর্বপ্রথম সেক্সকে একটা পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণনির্ভর বিজ্ঞান হিসেবে প্রত্যক্ষ করেছেন। তারা ১৯৫৪ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত পরীক্ষাগারে অতি যত্নের সাথে ৭০০ লোকের ওপর একের পর এক গবেষণা করে দেখেছেন, শীর্ষপুলকের সময় তাদের মনস্তাত্ত্বিক প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল। মাস্টারস এবং জনসন নারী ও পুরুষের যৌন প্রতিক্রিয়ার বিভেদগুলোকে অপসারিত করার জন্য সাহায্য করেছেন। তারা পেনিস ও যোনির সূক্ষ্ম অনুভবগুলোর মধ্যে একটা সমতায় সংঘর্ষে আসার মতো সামঞ্জস্যতার কথা বলেছেন। তারা দেখেছেন যৌনতার প্ল্যাটো স্তরে নারী ও পুরুষের বুকের ধুঁকধুঁকানি এক হয়ে যায় এবং শীর্ষপুলককালে অভিন্ন ছান্দিক সমতায় তাদের পায়ুর পেশিগুলো সংকুচিত হয়। তারা আরও নিশ্চিত করে বলেছেন যে নারীদের যৌন অনুভূতিসমূহ প্রথমত তাদের ভগাঙ্কুরের উত্তেজনার মধ্য দিয়ে আসে, যোনির মধ্য দিয়ে নয়।
১৯৮২ সালে Alice lades, Beverly whipped and john Perry যৌন শীর্ষপুলকের একটা নতুন পরিপ্রেক্ষিত উপস্থাপন করেন, তাদের the G spot নামের পুস্তকে। তারা নিশ্চিতভাবে এটা সংক্ষেপে উপস্থাপন করেন যে নারী ও পুরুষের যৌন-প্রতিক্রিয়া প্রায় সকল ক্ষেত্রেই সমকক্ষ। তাদের আগমন দুটি লিঙ্গের মধ্যস্থি'ত দূরত্বের হাত থেকে আমাদের বাঁচালো এবং ফ্রয়েড প্রদত্ত যৌনাঙ্গের মেরুকরণের হাত থেকেও নিষ্কৃতি দিল। তারা এনে দিলেন নারী ও পুরুষের একে অন্যের জন্য শ্রদ্ধার সাথে যৌন প্রতিক্রিয়ার অনুভব। সবচেয়ে বেশি উত্তেজনাকর ও ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিল তাদের যৌন সম্বন্ধীয় গবেষণা। তাদের আবিষ্কার ছিল যোনির শীর্ষপুলক হয়ে থাকে ‘জি স্পট’-এর মধ্য দিয়ে যেটি হচ্ছে যোনিনালির প্রায় দু ইঞ্চি গভীরের উপরি অংশে ছোট একটা আনন্দ কেন্দ্র। সঠিকভাবে উত্তেজিত হলে স্থানটি ফুলে ওঠে, শক্ত হয়, যোনির অন্যান্য অংশ থেকে বিশেষভাবে আলাদা হয় এবং অনেক নারীর দেহে শীর্ষ যৌনপুলক এনে দেয়। একইভাবে তাদের এই আবিষ্কার ছিল অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যে শীর্ষপুলক অনুভবকালে নারীরা একটা স্বচ্ছ তরল পদার্থ নিঃসৃত হওয়ার অভিজ্ঞতা পেতে পারেন, যেটা প্রস্রাব থেকে আলাদা, যোনির পিচ্ছিল পদার্থ থেকে আলাদা এবং একটা অভ্যন্তরীণ বীর্যপাতের সমমানের হয়ে থাকে। ‘জি স্পট’ এবং নারীর বীর্যপাত নিয়ে যথেষ্ট তর্কাতর্কি হয়েছে। অনেক ডাক্তার দুটোকেই অস্বীকার করেছেন। আমার ধারণায় এই মনোভাব হচ্ছে পুরুষের আধিপত্যবাদের প্রতীকী যেটা ধীরে ধীরে অপ্রচলিত হয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে ‘জি স্পট’ আছে, গবেষণায় ‘জি স্পট’ পাওয়া গেছে এবং পরবর্তীতে Eves secrets নামক একটা নারীর যৌনতার নতুন থিওরি 'A new theory of female sexuality' নু জোসেফাইন লাউন্ডার্স সিভলি Josephine lowndes sevely তে যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দিয়েছে।
আমার অভিজ্ঞতায় বলে সিভলির সংজ্ঞা সঠিক এবং সঠিক উপদেশ হচ্ছে সর্বসাকল্যে শীর্ষপুলক একটা বেষ্টনকারী ঘটনা যা মন ও শরীরের মস্তিষ্ক ও যৌনাঙ্গের মধ্যস্থিত বহুবিধ চলন- প্রতিক্রিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করে। শীর্ষপুলকের একটা দিক আছে, কী করে আপনি সেখানে পৌঁছবেন এটা সে দিকের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয় না বরং এটার একমুখ খোলা যেটা ব্যক্তিত্বের অনুপমতা ও পার্থক্যের প্রতিক্রিয়ার সামর্থ্যের প্রতি শ্রদ্ধাবান।
মানুষের শীর্ষ যৌনপুলক সম্বন্ধে গবেষণা দ্বারা পরবর্তীতে যা পৃথক করা হয়েছে তা আমাদের উন্নত যৌনতা পরিপ্রেক্ষিতের সন্নিকটে নিয়ে এসেছে। তাদের অভিনন্দিত পুস্তক ESO (Extended sexual Orgasm)-এ ডাক্তার অ্যালেন ব্রায়ার ও তার স্ত্রী ডোনা স্পষ্টভাবে প্রদর্শন করে দেখিয়েছেন যে, যৌন শীর্ষপুলক শুধু এক গুচ্ছ প্রতিক্রিয়া সাধক জিনিস নয় যা সচরাচর ১২ সেকেন্ড স্থায়ী হয়, বরং ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা লাভ করে তাকে ৩০ মিনিট ও তদূর্ধ্ব সময়ের জন্য বাড়ানো যায়। তারা লক্ষ করেছেন যে, এই বাড়তি যৌন শীর্ষপুলকের সময়ে শরীরের জাগরণের লেভেলটা একটু নিচে নেমে আসে। অন্য কথায় আপনার হৃৎপিণ্ডের বিট ও শ্বাস-প্রশ্বাসের সংখ্যা কমে আসে; আপনার রক্তচাপ নিচে নেমে আসে এবং সাধারণত আপনি ঠান্ডা হয়ে যান। যদিও আপনি বাড়তি মাত্রায় গভীর আনন্দ লাভ করেন। এটা উন্নত যৌনতার অন্যতম গোপন তথ্যকে সমর্থন দেয়। উচ্চতর জাগরণের অবস্থায় শিথিল থাকা যদিও Brayers গণ প্রায়ই যৌনাঙ্গের পুলকের পরেই বীর্যপাত প্রত্যক্ষ করেন এবং তার প্রতি দৃষ্টি প্রদান করেন। তাদের যৌনপুলকের বৈষয়িক আনন্দ উৎফুল্লতার উপাদানকে সজ্ঞানতার পরিবর্তিত অবস্থা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান, আধুনিক পশ্চিমা যৌনবিজ্ঞানকে তন্ত্রীয় দর্শনের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। যাই হোক তারা কিন্তু শীর্ষপুলকের ভ্রমণটাকে আনন্দ উৎফুল্লতার দিকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যায় না- যেখানে জাগ্রত শক্তিকে এক ধাক্কায় নির্গত না করে অন্য পথে পুনঃ পরিচালিত করা হয়। এটা এমন যেন Brayers গণ তান্ত্রিকদের দ্বারা প্রস্তুতকৃত বৃহৎ মহাদেশের নকশার একটা সমুদ্রতীরবর্তী সমতল ভূমিকে পুনঃআবিষ্কার করলেন, কিন্তু তীরে অবতরণ করে তাকে ভালোভাবে আবিষ্কার করার আহ্বানকে গ্রহণের অপারগতা প্রকাশ করলেন।
স্ট্যামফোর্ড ভার্সিটির জুলিয়ান ডেভিডসন এই মতবাদ প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিলেন যে, শীর্ষপুলক মন ও শরীরের মধ্যে ঘটে থাকে এবং সেটা সজ্ঞানতার একটা পরিবর্তিত রূপ। তার এই অনুমান, আমেরিকার টুলেন ইউনিভার্সিটির নিওরোলজিস্ট বরার্ট জে থি-এর ধারণার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তিনি আবিষ্কার করেছিলেন যে, মস্তিষ্কের কিছু অংশ যথাযথ এবং সরাসরি তড়িৎ পরিবাহক দ্বারা উত্তেজিত করা হলে যৌন আনন্দের অনুভূতি সৃষ্টি করে। ডা. গিলবার্ট টরজম্যান একজন ফরাসি যৌনবিশেষজ্ঞ। তিনি যৌনাঙ্গ ও মস্তিষ্কের মধ্যের সম্পর্ককে আরও পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেন। তার ব্যাখ্যা হলো ব্রেইন হচ্ছে আমাদের প্রাথমিক যৌনাঙ্গ এবং যার মধ্য দিয়ে যৌনাঙ্গের শীর্ষপুলক অনুভূতিসমূহকে পুনরায় মস্তিষ্কে প্রেরণ করে।