৭.১ সৌন্দর্য সাধন ও কাম বর্ধন

কোন মন্তব্য নেই
প্রেম বিষয়ে সু-ফল পেতে হলে যে কটি কাজ অবশ্যই জানতে হবে তা হলো- (১) দৈহিক সৌন্দর্য। এই সৌন্দর্যই নারীকে টেনে আনে। যেমন আগুনের দিকে পতঙ্গ ছুটে যায়। (২) গুণাবলী। যে সকল গুণের কথা পুস্তকের প্রথম দিকে লেখা আছে। (৩) যৌবন। যৌবন না থাকলে সুন্দর পুরুষ কোন নারীকে প্রেমে ফেলতে পারে না। (৪) হৃদয়ের ঔদার্য্য। নারীর সৌন্দর্য চর্চা ১। প্রত্যহ স্নান। সুগন্ধি সাবান দিয়ে স্নান করলে আরো ভাল হয়। ২। প্রত্যহ মাথা আঁচড়ে বেণী বাঁধা। ৩। মালা বা ফুল ব্যবহার। ৪। অলঙ্কার পরিধান। ৫। গন্ধ দ্রব্য ব্যবহার। ৬। মুখে পান। ৭। লিপষ্টিক ঠোঁটে দেবে। ৮। প্রত্যহ পরিষ্কার বস্ত্রাদি পরবে। ৯। যে ভাবে প্রসাধন করলে ভাল হয় বা নিজেকে সুন্দর দেখায় তা করবে। ১০। সর্বদা পরের রুচিমত ভাল পোষাক পরিধান করবে। পুরুষের সৌন্দর্য চর্চা ১। যাতে মুখে দুর্গন্ধ না থাকে, সেজন্য রোজ সকালে বিকালে মুখ ধোবে। ২। রোজ স্নান করবে। ৩। সাবান দিয়ে গাত্রমার্জন করবে। ৪। সুগন্ধ দ্রব্য ব্যবহার করবে। ৫। কেশ আঁচড়াবে। ৬। দাড়ি মুন্ডিত করবে। ৭। সর্বদা ভাল পোষাক পরিচ্ছদ পরবে। বশীকরণ কাম উপদেষ্টগণ বলেন- পুরুষ ও নারীর কাম অভিযানের আগে প্রয়োজন যৌবন সাধনা। বাৎস্যায়নের মতে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নিম্নলিখিত দ্রব্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে- ১। টগর ফুল, সাদা কূজ এবং তুলসী পত্র একত্রে মাড়িয়া সর্বাঙ্গে প্রলেপ দেবে। এতে কুৎসিত মানুষকেও সুন্দর করে তোলে। ২। উপরোক্ত তিন প্রকার উপাদান সূক্ষ্ম ভাবে গুঁড়া করতে হয়। তারপর পশম বস্ত্রের সলতেতে লাগিয়ে আগুনে পোড়াবে। আগুনে পোড়াবার পূর্বে ঐ সলতে অক্ষ তেল দিয়া ভিজাবে। এই সলতে পোড়ানো ধুন বা কালি নর-কঙ্কালে লাগাতে হবে। এই ‘কাজল’ পুরুষ কপালে লাগালে, তার কামনার নারী অবশ্যই বশীভূত হবে। ৩। পুনন বা, সহাদেবী, কুরন্টক, সরিষা গাছ, নীল পদ্ম এক সঙ্গে শিশোমাস্‌ তেলে ফুটিয়ে মলম তৈরী করবে। এই মলম অঙ্গে প্রলেপ দিলে কুৎসিৎ ব্যক্তিকেও সুন্দর করে তোলে। এতে বাঞ্ছিতা নারীও বশীভূত হয়। ৪। শ্বেত পদ্ম, নীল পদ্ম ও নাগ গাছের শুষ্ক ফুল একত্রে গুঁড়া করে ঘৃত ও মধুসহ সেবন করলে মানুষ সুন্দর হয়। সে রমণীগণের প্রিয় হয়ে ওঠে। ৫। শ্বেত পদ্ম, নীল পদ্ম, নাগ গাছের শুকনা ফুল, টগর পাতা, তুলসী পাতা ও তামল গাছের পাতা এক সঙ্গে চূর্ণ করে মলম তৈরী করবে। এই মলম গাত্রে প্রলেপ দিলে মানুষকে সুন্দর করে তোলে। সঙ্গম ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় ১। কামশাস্ত্র অধ্যাপকরা বলেন, ধুতুরা, কালো মরিচ ও পিপুল সমপরিমাণ একত্রে গুঁড়া করবে। তাপর সমপরিমাণ মুধুর সঙ্গে একত্রে মিশিয়ে মলম করবে। এই মলম লিঙ্গ মুণ্ডে লাগিয়ে পরে তাহা পরিষ্কার করে ফেলতে হয়। এখন এই পুরুষ যে নারীর সঙ্গে সঙ্গমে ব্রতী হবে, সে নারী, এ পুরুষ ব্যতীয় অন্য কোন পুরুষকে পছন্দ করবে না। সঙ্গমও দীর্ঘস্থায়ী হয়। ২। ঝড়ে ফেলে যাওয়া গাছের তেজ পাতা, শবের মাথার পুড়ে যাওয়া অবশিষ্টাংশ ও ময়ূরের অসি’ এক সঙ্গে বেঁটে গুঁড়া করবে। এই গুঁড়া যদি নারী পুরুষের পায়ে, কিংবা পুরুষ নারীর মাথায় মেখে দিতে পারে, তা হলে ঐ পুরুষ বা নারী অবশ্যই বশীভূত হবে। ৩। যদি কোন স্ত্রী লোক শকুনের স্বাভাবিক মৃতদেহ সংগ্রহ করে শুকিয়ে গুড়ো করে নেয়। তারপর সেই গুঁড়ো মধুর সহিত মিশিয়ে ্লানের পূর্বে আপন অঙ্গে মর্দন করবে। কয়েক দিন এর রকম করলে বাঞ্ছিত পুরুষ অবশ্য তার বশীভূত হবে। ইহাতে প্রেম ভালবাসা সুদৃঢ় হয়। ৪। যদি কোন লোক সুনুহ (Cuphortra Nellifolia) গাছের শিকড় ও গন্ড (acacic catechu) গাছের পল্লব মিশিয়ে বিশুদ্ধ গন্ধক সহ Red Arsenic -এ সাত বার ডোবাবে ও সাত বার শুকোবে। তারপর ঐ গুড়ো মধুর সহিত মিশিয়ে প্রলেপ দেবে। ইহার পর সে যে নারীর সহিত সুরত কার্যে রত হবে সে নারী চিরদিন এই পুরুষের দাসী হ’য়ে থাকবে। ৫। কোনও শিংশপা (শিশু) গাছে একটি ফুটো করবে (যেখান থেকে পাতা গজিয়েছে এমন জায়গা)। শেষে ঐ ফুটাতে আম্রফলের আঁটির তেল কতকগুলি বচার (বচের) (Acorus calamus) খণ্ড দিয়ে ফুটো বন্ধ করে দিতে হবে। ছয় মাস পরে, ঐ দ্রব্যগুলি ফুটা খুলে বের করতে হবে। তারপর এ দিয়ে একটি মলম তৈরী করতে হবে। ঐ মলম যদি কোনও পুরুষ তাহার সমস্ত অঙ্গে প্রলেপ লাগায়, তাহা হলে সে দেবতার মত দেখতে সুন্দর হয় এবং সমস্ত নারীর মনাকর্ষণ করতে পারে। ৬। উদর্‌ কিডল (Phascolus Radiatus) তার ভূষি না বাদ দিয়ে, পরিষ্কার করে, ভেজে নেবে ও গো দুগ্ধে ইহা স্‌দ্িধ করতে হয়। তারপর ইহা অর্ধেক ঝোলে (soup) পরিণত করে তাহা মধু ও ঘৃতে মিশ্রিত করতে হয়। কামসূত্ররূপী অধ্যাপকগণ বলেন, ইহা ভোজন করলে পুরুষকে বহু নারীর সঙ্গে সুরতে ক্ষমতাশালী করে তোলে। ৭। ভিদারি এবং স্বায়ংগুপ্তর শিকড় এক সঙ্গে গুঁড়া করে ময়দার সহিত মিশিয়ে চিনি, মধু ও ঘৃতের সহিত মিশিয়ে লেচি তৈরি করতে হয়। ইহা হতে পিষ্টক তৈরী করে খেতে হবে। ইহা খেলে একসঙ্গে বহু নারীর সহিত সুরত কার্য করতে সক্ষমতা লাভ করে। ৮। চাউল, চটক (চড়ুই পাখীর) ডিম্বের সহিত চটকে তারপর শুষ্ক করতে হবে। পরে দুগ্ধে সিদ্ধ করে পায়েসে পরিণত করতে হবে। এই পায়স মধু এবং ঘৃতের সহিত মিশিয়ে খেলে সুরতে যথেষ্ট শক্তি দান করে। ৯। সিসেমাম্‌ (sesamum) বীজের খোসা ছাড়িয়ে, চাতক পাখির ডিমের সহিত মিশ্রিত করতে হবে। পরে শুষ্ক করে নিতে হবে। তারপর শৃঙ্গাটক, কেসুর ও স্বয়ংগুপ্ত বীচির সহিত মিশ্রিত ক’রে ময়দা বা আটায় মিশিয়ে দুগ্ধ এবং ঘৃতে সিদ্ধ করতে হবে। এই সুপ (soup) তৈরী করতে হবে। ইহা সেব করলে বীর্য কামশক্তি ও দীর্ঘ জীবন লাভ করে। ১১। শতভরি, (asparagus saaramantosus) এবং গোক্ষুর গাছের ছালের রস গুড়ের সহিত মিশ্রিত করে, পিপুল ও দারুচিনি গুঁড়া করে মেশাবে। গোদুগ্ধ ও ভেড়ার ঘৃত দিয়ে সিদ্ধ করে চাটনী তৈরী করতে হবে। পুষ্যা নক্ষত্রের সঙ্গে যে দিন চন্দ্রের মিলন হয়, সেই দিন থেকেই ইহা খেতে আরম্ভ করতে হয়। ইহাও খুবই শক্তি বর্ধক বীর্য প্রসবক। ১২। সমান ভাগ শতভরি, গোক্ষুর এবং শ্রীপর্নি ফল নিতে হবে। তাহা জলে সিদ্ধ করতে হবে। যখন মাত্র সিকি ভাগ থাকবে, তখন আগুন থেকে নামাবে। ইহা পুষ্যা নক্ষত্র যুক্ত চন্দ্রের দিনে খেতে হয়। ইহা খেলে শরীরে বীর্য ও গুণ বাড়তে দেখা যায়। ১৩। গোক্ষর এবং বার্লি সমান বাগে মিশাবে। প্রত্যেক দিন সকালে ঐ মিশ্রিত দ্রব্যের ক্কথ এক পলা করে খেলে ইহাতে বুদ্ধি, আয়ু এবং রতি শক্তি বৃদ্ধি পায়। এ সকল ব্যবস্থা আয়ুর্বেদ, অর্থববেদ এবং তর্কশাস্ত্র হ’তে গৃহীত হয়েছে। তবে এ সকল উপাদান খেতে হলে, শরীরে যাহাতে কোনও ক্ষতি না হয়, এমনভাবে খেতে হবে। আধুনিক যুগে উপরোক্ত উপাদান, পর্বত অরণ্য ইত্যাদি স্থান থেকে সংগ্রহ করা খুবই দুষ্কর। শুধু-যে সকল বস্তু মহর্ষি বাৎস্যায়ন সকল বেদ ও তন্ত্রশাস্ত্র হ’তে উল্লেখ করেছেন, তাই আমরা লিখলাম। রতি কার্যে নানাবিধ ব্যবস্থা যে সকল পুরুষ রতিকার্য করে নারীর কাম উত্তেজনা শান্ত করতে পারে না তাহাদিগের উচিত আয়ুর্বেদ, অথর্ব বেদ ও তন্ত্রশাস্ত্র হতে উদ্ধৃত উপাদান ব্যবহার করা। তাহাদিগের কর্ত্তব্য, সুরত আরম্ভ করবার আগে, নারীর যোনিরন্ধ্রে আপনার দ্বিতীয় ও তৃতীয় করাঙ্গুলি একত্রিত করে তাহার দ্বারা ইহা সুগম করে নেওয়া। পরে ঐ নারীর রস্তক্ষয় আম্ভ হবার মত হবে তখন আপনার লিঙ্গ মুন্ড যোনিতে প্রবেশ করিয়ে দেবে। এইভাবে নারীর যৌন কন্ডুয়ন নিবারিত হতে পারে। কৃত্রিম লিঙ্গ যে সকল পুরুষ খুব দুর্বল স্থুল শরীর ও বার্ধক্যবশতঃ ক্লান্তিবোধ করে, ইহারা পুরুষাঙ্গ শক্ত করতে পারে না। তাহারা কৃত্রিম লিঙ্গ মুন্ড ব্যবহার করে। ইহা লিঙ্গে লাগিয়ে নারীর যোনির মধ্যে প্রবেশ করাইয়া দিতে পারে। আচার্য্য বাভ্রব্য বলেন-ইহার উদ্দেশ্যে সুবর্ণ বা রৌপ্য, তাম্র বা লৌহে প্রস্থত লিঙ্গ-মুন্ড ব্যবহার করা যেতে পারে; বাৎস্যায়ন বলেন, কাষ্ঠের নির্মিত লিঙ্গ মুন্ডও ব্যবহার করা চলে। যে কৃত্রিম লিঙ্গ মণ্ডু ব্যবহার করতে হবে, তা যেন পুরুষের স্বাভাবিক লিঙ্গ মুণ্ডের মত দীর্ঘ হয়, এবং তার বাইরের দিকটা অমসৃণ হবে। ছোট ছোট উঁটু-নীচু কাঁকরের মত থাকবে। যথা, একটি বাঁশের পিপ তেল মেখে, তাহা কোমরের সহিত একটি সূতা দিয়ে বেঁধে রাখবে এবং রতিকালে তা লাগিয়ে নেবে। তারপর আমলকির ছোট ছোট দানা লিঙ্গের মূলে (গোড়ায়) লাগিয়ে তার সহিত কৃত্রিম লিঙ্গমুণ্ড জুড়ে দেবে। দক্ষিণ দেশে এক প্রকার প্রথা আছে। যেমন কারো লিঙ্গমুণ্ড ক্ষুদ্র হলে, তার ফুটার মধ্যে একটু তীক্ষ্ম সূচ দিয়া ফুটা করে দিতে হয়। যেমন বালক বালিকার কর্ণে ফুটা করে দেওয়া হয়, সেইরূপে লিঙ্গ মুন্ডের ফুটা বাড়িয়ে দিতে হয়। তাতে ক্রমশঃ লিঙ্গ মুন্ড স্ফীত হতে পারে। যে কৃত্রিম লিঙ্গ মুন্ডের কথা বলা হয়, তাহা নানা প্রকারের করা যায়। কোনটা অর্দ্ধগোলাকার, কোনটা গোলাকার, কোনটা পদ্মের মত, আবার কোনটা হস্তিদন্তর মত করা যায়। ————————— সমাপ্ত শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :