হরিণ একটি বান্ধা ছিল গাছেরি তলায়

কোন মন্তব্য নেই
ইন্টারনেটে ইউটবে প্রায়ই
মাওলানা তোফাজ্জল হোসেনের ওয়াজ
শুনি। এগুলোতে তিনি নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের কিছু
দিক আলোচনা করলেও অলী-
আওলীয়াদের কল্পিত কারামতই
বেশী বর্ণনা করে থাকেন। তার গলার
সুন্দর আওয়াজ ও বলিষ্ঠ কন্ঠ বাদ
দিলে যা থাকে তার অধিকাংশই বানোয়াট
কিচ্ছা-কাহিনী ছাড়া আর কিছুই নয়।
তার গলার আওয়াজ ও সুরে মুগ্ধ
হয়ে অনেক সরলমনা মুসলমান
এগুলো বিশ্বাস করে থাকেন। ইসলামের
মূলনীতি সম্পর্কে যার সামান্য জ্ঞান
আছে, তিনি কখনই এ জাতীয়
কাহিনী বিশ্বাস করতে পারেন না। তার
বক্তৃতার মধ্যে যে সমস্ত বানোয়াট
কাহিনী এসেছে,
তা থেকে মুসলমানদেরকে সাবধান
করা দ্বীনি দায়িত্ব
মনে করে আপনাদের সামনে তার কিছু
অংশ তুলে ধরছি। সংশোধন করাই
আমার একমাত্র উদ্দেশ্য।
আজ যে ওয়াজটি শুনলাম,
তা হচ্ছে নবী (সাঃ) একদা মদীনার
পথে চলার সময় দেখলেন একটি তাঁবুর
ভিতর একটি হরিণ বাঁধা আছে।
হরিণটি নবী (সাঃ)কে দেখে সালাম
দিয়ে কেঁদে কেঁদে বললেনঃ এই
বেদুইনটি আমাকে পাকড়াও করেছে।
আমার দু’টি বাচ্চা আছে। আমাকে একটু
ছেড়ে দিলে একটু দুধ পান করায়ে আবার
চলে আসবো। এভাবে শেষ পর্যন্ত
কিচ্ছাটি আমাদের সমাজের মানুষের
মুখে মুখে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে।
লোকেরা বক্তাদের সুললিত
কন্ঠে ঘটনাটি শুনে মুগ্ধ হয়, কেউ
বা কেঁদে বুক ভাষায়।
এখানে ক্লিক করে তার মুখ থেকে একটু
শুনে নেওয়া ভালঃ
http://www.youtube.com/
watch?v=uAnRWoMAhhI
মূলত নবী (সাঃ)এর অন্যতম
মুজেযা হচ্ছে, জড় পদার্থও
তাঁকে সালাম দিত। আলী (রাঃ)
হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ
ﻛﻨﺖ ﻣﻊ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ ﺑﻤﻜﺔ ، ﻓﺨﺮﺟﻨﺎ ﻓﻲ
ﺑﻌﺾ ﻧﻮﺍﺣﻴﻬﺎ ، ﻓﻤﺎ ﺍﺳﺘﻘﺒﻠﻪ
ﺟﺒﻞ ﻭ ﻻ ﺷﺠﺮ ﺇﻻ ﻭ ﻫﻮ ﻳﻘﻮﻝ :
ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻋﻠﻴﻚ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ
আমি নবী (সাঃ)এর
সাথে মক্কাতে ছিলাম। একদা মক্কার
কোন প্রান্তের দিকে বের হলাম। তখন
সামনে যত পাহাড় ও গাছ পড়ল সকলেই
বলতেছিলঃ আস্ সালামু
আলাইকা ইয়া রাসূলুল্লাহ।
(দেখুনঃ তিরমিজীঃ হাদীছ নং ৩৬৩০,
সিলসিলায়ে সহীহা, হাদীছ নং ২৬৭০)
মদীনার মসজিদে মিম্বার তৈরী হওয়ার
আগে তিনি খেজুর গাছের একটি কাঠের
উপর দাড়িয়ে খুতবা দিতেন। মিম্বার
নির্মাণের পর তাতে উঠা বাদ দিলে সেই
কাঠটি থেকে শিশু বাচ্চার কান্নার
আওয়াজের ন্যায় আওয়াজ
আসতে লাগল। এই ঘটনাও সহীহ
সূত্রে প্রমাণিত হয়েছে।
কিন্তু কোন পশুর
সাথে তিনি কথা বলেছেন এবং পশুও তাঁর
সাথে কথা বলেছে এমন কোন
বর্ণনা আমি সহীহ সূত্রে প্রমাণিত
হয়েছে বলে জানি না। তা ছাড়া পশু-
পাখীর ভাষা বুঝা এবং তাদের
সাথে কথা বলা আল্লাহর নবী সুলাইমান
(আঃ)এর মুজেযা ছিল, আমাদের নবীর
নয়।
সকল নবীর সরদার ও সর্বশ্রেষ্ঠ
নবী মুহাম্মাদ (সাঃ)এর
ফজীলতে কুরআন ও সহীহ
হাদীছে যে সমস্ত বর্ণনা রয়েছে একজন
মানুষ সারা জীবন বর্ণনা করেও শেষ
করতে পারবে না। দিবালোকের মত
সুস্পষ্ট এ সকল ফজীলত ও
মর্যাদা বাদ দিয়ে একজন দাঈ
কিভাবে নানা রকম বানোয়াট
কাহিনী বর্ণনা করে মুসলিমদেরকে
বিপদগামী করছে তা বোধগম্য নয়।
কিছু কিছু বানোয়াট
কাহিনী শুনে মাথা ঘুরে যায়।
মাওলানা তফাজ্জল সাহেব দাপটের
সাথে হরিণের সাথে নবী (সাঃ)এর
যে কাহিনীটি বর্ণনা করছেন, তার কোন
সহী ভিত্তি নেই।
ইমাম ইবনে কাছীর
বলেনঃ ঘটনাটি মানুষের মুখে প্রসিদ্ধ
হলেও কুতেবে সিত্তায় এর কোন
ভিত্তি নেই। এই হাদীছের অন্যতম
রাবী ﺍﻟﻬﻴﺜﻢ ﺑﻦ ﺟﻤﺎﺯ
সম্পর্কে ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন
বলেনঃ এই ব্যক্তি যঈফ, হাদীছ
বর্ণনার যোগ্য নয়।
ইমাম নাসাঈ এবং আহমাদ বিন হাম্বাল
(রঃ) বলেনঃ তার হাদীছ অগ্রহণযোগ্য।
ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রঃ)
বলেনঃ হরিণের সাথে কথা বলার
হাদীছের সহীহ বা যঈফ কোন সনদ নেই।
ইমাম সাখাভী (রঃ) বলেনঃ হরিণের
সালাম দেয়ার হাদীছ মানুষের
জবানে প্রসিদ্ধ হয়েছে। এর কোন
ভিত্তি নেই। যে ব্যক্তি এটি রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
নামে বর্ণনা করল সে মিথ্যাবাদী।
তথ্য সূত্রঃ
http://www.albwady.com/
vb/showthread.php?
p=286573

Post by dineralo

ব্লগ সম্পাদক ও এ্যাডমিনঃসৈয়দ রুবেল উদ্দিন
Next post "Next post "রামাযান মাসের মর্যাদা ও রোযার গুরুত্ব

ব্লগের প্রকাশিত পোস্ট গুলি ফেসবুকে শেয়ার করে আমাদের চলার পথকে আরো গতিময় করে তুলুন ।আমরা দিন রাত খাটিয়ে পোস্ট গুলি লেখি ।ব্লগে প্রকাশ করে আপনাদেরকে উপহার দেয় ।আপনারা যদি শেয়ার না করেন?তাহলে আমরা তো সামনে এগিয়ে যেতে পারবোনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :