প্রথাগত বিবাহ - অবৈধ যৌনতা

কোন মন্তব্য নেই
প্রথাগত বিবাহ
বুখারী শরীফ এবং হাদীসের বিভিন্ন
কিতাবে হযরত আয়শা সিদ্দীকা কর্তৃক
এক দীর্ঘ হাদীসে জাহেলী যুগের
প্রথাগত বিবাহের বিস্তারিত
বর্ণনা পাওয়া যায়। হযরত আয়শা রা.
বলেন, সেই যুগের চার ধরনের বিবাহ
প্রথা সমাজে চালু ছিল।
ক. চারটির
মধ্যে একটি যা ইসলামে স্বীকৃত হয়েছে।
খ. দ্বিতীয়টি হচ্ছে, স্বামী তার
স্ত্রীকে বলতো যে তুমি হায়েয অর্থাৎ
ঋতুস্রাব থেকে মুক্ত হয়ে অমুকের
সাথে সহবাস করবে। তাকে অনুরোধ
করে অথবা যে কোন
উপায়ে রাজী খুশী করে তার সাথে যৌন
মিলনে মিলিত হবে, স্ত্রী তার স্বামীর
নির্দেশ পালনার্থে নির্ধারিত ব্যক্তির
সাথে যৌন মিলনে মিলিত হতো, তারপর
যতক্ষণ পর্যন্ত সন্তান ধারনের
নিদর্শনাবলি প্রকাশ
না পেতো ততক্ষণ পর্যন্ত
স্বামী স্বীয় স্ত্রীর সাথে সহবাস
থেকে বিরত থাকতো। এ ধরনের
বিবাহকে “ইস্তেবজা” বলা হতো। এ
ধরনের বিবাহ প্রথা সাধারণত:
সাহসী সন্তান লাভের আশায় বীর
সাহসী বংশের লোকদের সাথে চালু ছিল।
গ. তৃতীয় বিবাহ প্রথাটি ছিল অত্যন্ত
নোংড়া ও বেশ্যার নামান্তর।
কেননা এই ক্ষেত্রে একাধিক পুরুষ যার
অধিক সংখ্যা নয় পর্যন্ত ধার্য ছিল
তারা একের পর এক কোন মহিলার
সাথে যৌন মিলনে মিলিত হতো। এরূপ
মিলনের দ্বারা গর্ভবতী হয়ে যখন
সন্তান প্রসব করতো, এর কয়েক দিন
পর যৌন
মিলনকারী সকলকে ডেকে একত্রিত
করা হতো। আর প্রথাগত
কারণে তাদেরকে তার
ডাকে সাড়া দিয়ে অবশ্যই হাযির
হতে হতো। একত্রিত
হলে মহিলা তাদেরকে তাদের যৌন
মিলনের কথা স্মরণ
করিয়ে যাকে ইচ্ছা সন্তানকে তার
সন্তান বলে রায় প্রদান করতো।
ফলে সেই লোক সন্তানের
পিতা হিসেবে বিবেচিত হতো। অস্বীকার
করার সুযোগ হতো না।
ঘ. চতুর্থ বিবাহ প্রথা ছিল
ব্যভিচারিণী মহিলাদের মত।
পতিতালয়ের ন্যায় তাদের
বাড়ী ঘরে নিদর্শন দেয়া থাকতো,
সেমতে পুরুষরা তাদের সাথে যৌন
স্বার্থ চরিতার্থ করতো। যখন
গর্ভবতী হয়ে সন্তান প্রসব
করতো তখন
সকলকে ডাকা হতো এবং পুরুষগণ
আসতে বাধ্য হতো,
সাথে সাথে গণককেও
ডাকা হতো সে সন্তানের এবং যৌন
মিলনকারীদের
অবস্থা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যাকে
পিতা সাব্যস্ত করতো তাকেই
পিতা হিসেবে চূড়ান্ত করা হতো। হযরত
আয়শা রা. এই চার প্রকার বিবাহ
প্রথার কথা উল্লেখ করে বলেন, হযরত
রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়াত লাভ
করে ইসলামে স্বীকৃত বিবাহ ব্যতীত
অন্য সব ধরনের বিবাহকে হারাম
ঘোষণা করেন। (বুখারী ২/৭৭০)
প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস ইবনে হাজার
আসকালানী শরহে বুখারী ফাতহুল
বারীতে (৯/১৫৮) এই চার ধরনের
বিবাহ প্রথার বর্ণনা দিয়ে আরো তিন
প্রকার বিবাহ প্রথার কথা উল্লেখ
করে বলেন-
ঙ. মেয়ে এবং পুরুষ গোপনে উভয়ের
সম্মতিতে যৌন মিলনে লিপ্ত হওয়া,
এতে কারো আপত্তি করার অবকাশ
হতো না, পবিত্র কুরআনে এক
স্থানে ﻭﻻﺗﺘﺨﺬﺍﺕ ﺍﺧﺪﺍﻥ অন্য
স্থানে ﻭﻻﻣﺘﺨﺬﺍﺕ ﺍﺧﺪﺍﻥ বলে এই
প্রথাকে সম্পূর্ণরূপে হারাম করেছে। ঐ
যুগে এরূপ বিবাহকে ‘নিকাহুল খাদান’
বলা হতো।
চ. এক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোন
পুরুষ কোন মহিলার সাথে যৌন মিলনের
জন্য কথা বার্তা পাকা করে নিতো, এ
ধরনের বিবাহ প্রথাকে ‘নিকাহুল মুতা’
বলা হতো। ইসলামের প্রথম দিকে এরূপ
প্রথা চালু ছিল। পরবর্তী সময়
সম্পূর্ণভাবে হারাম করে দেয়া হয়েছে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে,
ইসলামের দাবীদার শিয়াদের
মধ্যে অদ্যাবধি এহেন গর্হিত কাজ চালু
রয়েছে। তারা নিকাহে মুতাকে বিরাট
এবাদত এবং সওয়াবের কাজ মনে করে।
ছ. দুই স্বামী উভয়ের স্ত্রীদের
মধ্যে বদলা বদলী করে নিতো এবং এর
সাথে বেশতি কিছু উপহার-উপঢৌকন
দিয়ে দেয়া হতো। এরূপ বিবাহ
প্রথাকে “নিকাহুল বদল” বলা হতো।
ইসলাম এরূপ বেগায়রতী এবং লজ্জাহীন
প্রথাকে হারাম করেছে।
অবৈধ যৌনতা
এ ধরনের বেহায়াপনা,
নির্লজ্জতা এবং মানবতা বিবর্জিত
বিবাহ প্রথাকে শরীয়ত
সম্পূর্ণভাবে হারাম করেছে। মূলত
এটা মহিলাদের প্রতি আল্লাহ পাকের
বিশেষ বড় এহসান এবং দয়া, যার
কৃতজ্ঞতা আদায়
করা থেকে তারা কখনো মুক্ত
হতে পারবে না।বাস্তবতা এই যে, কোন
নিপুন চরিত্রের অধিকারী পবিত্র
স্বভাবের মহিলা কোনদিন যৌন
মিলনে অবৈধ
তরীকা অথবা অংশিদারিত্ব পছন্দ
করে না এবং করতে পারে না। আর
একাধিক পুরুষের সাথে সম্পর্ক
স্থাপনের অনিবার্য পরিণাম এই হয় যে,
ঐ মহিলা কোন দিন
কারো অন্তরে স্থান লাভ
করতে সক্ষম হয় না। যার পরিণাম হয়
অত্যন্ত ভয়ংকর। আর এই ভয়াবহ
পরিণামের অবস্থা তখন সৃষ্টি হয় যখন
তার প্রতি কারো কোন প্রকার
আকর্ষণ থাকে না, অথচ
ইসলামী বিধি বিধান মুতাবিক বিবাহ
মহিলার সম্পূর্ণ জীবনের
সঙ্গীনী হওয়ার পরিপূর্ণ
নিশ্চয়তা দেয়। এজন্যে ইসলাম
মৌলিকভাবে স্থায়ী সম্পর্ক স্থাপন
করনের বিধি বিধানকে বৈবাহিক
ব্যাপারে জরুরী করেছে। স্বামী-
স্ত্রী উভয়কে স্থায়ীভাবে সম্পর্ক
স্থাপনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ
করেছে। আর স্থায়ীসম্পর্ক
ছাড়া প্রকৃত
অর্থে দরদী এবং আন্তরিক ভালবাসার
পাত্র মোটেই হতে পারে না । এই সমস্ত
বৈশিষ্ট এবং উপকারিতা অবৈধ যৌন
মিলনের মাধ্যমে মোটেই হাসিল হয়
না এবং অবৈধ যৌন মিলনের
মাধ্যমে স্থায়ী সম্পর্ক,
সমবেদনা আন্তরিকতার কোন
অবকাশই নাই, বরং এটা সাময়িক যৌন
স্বার্থ চরিতার্থের হীন প্রয়াস মাত্র।


সূত্রঃ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তরদাওয়াতি সংগঠন মজলিসে দাওয়াতুলহক। এর মৌল উদ্দেশ্য মানব জীবনেসকল ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত ওআদর্শের প্রতিফলন ঘটানো।কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামের ইত্তিবা-অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলারইবাদত আনুগত্যের দাবি পূরণ করাই হলএকজন মুসলমানের ইহকালীন জীবনেরমূল উদ্দেশ্য।।শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের কে জানার সুযোগ দিন ।আপনি জেনেছেন হয়তো সে জানেনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :