হৃদয়ছোঁয়া গল্প

কোন মন্তব্য নেই
হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ
আলী থানবী (রহ.)-এর বয়ানকৃত
মজার উপদেশ গল্প
অনুবাদ : মাওলানা মুনীরুল ইসলাম
শিশুসুলভ বায়না
একদা এক বাদশাহ তার
উজীরকে বললেন, একটি কথা প্রসিদ্ধ
যে, তিনব্যক্তির আবদার
রক্ষা করা খুব কঠিন : বাদশাহদের
আবদার, নারীদের আবদার এবং শিশুদের
আবদার। এদের মধ্যে বাদশাহ ও
নারীদের আবদার কঠিন হওয়ার
বিষয়টি মেনে নেয়ার মতো। কারণ,
তারা বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন। তারা এমন
কোনো আবদার করে বসতে পারে,
যা রক্ষা করা সম্ভব নাও হতে পারে।
কিন্তু শিশুদের আবদার
রক্ষা করা কঠিন হওয়ার কী আছে!
উজীর বললেন, বাদশাহ জাঁহাপনা! এটাই
তো সবচেয়ে কঠিন আবদার।
বাদশাহ বললেন, এটা আমার
বুঝে আসছে না।
উজীর বললেন, আচ্ছা, আমি শিশু
হয়ে তাদের মতো আবদার করছি,
আপনি আমার আবদার রক্ষা করুন!
বাদশাহ বললেন, ঠিক আছে, তা-ই হবে।
তখন উজীর কান্না শুরু করে দিলেন।
তা দেখে বাদশাহ বললেন, কী ব্যাপার,
কান্না করছো কেন?
উজীর বললেন,
আমাকে একটি হাতি এনে দিন।
বাদশাহ আস্তাবল
থেকে একটি হাতি এনে দিলেন।
উজীর আবার কান্না করতে লাগলেন।
বাদশাহ বললেন, আবার কী চাও?
উজীর বললেন,
আমাকে একটি কলসি এনে দিন।
বাদশাহ একটি কলসি এনে দিলেন।
উজীর আবার কান্না করতে লাগলেন।
বাদশাহ বললেন, আবার কী চাও?
উজীর বললেন, হাতিটা কলসির
ভেতরে ঢুকিয়ে দিন।
এখন বাদশাহ চিন্তায় পড়ে গেলেন, এ
আবদার কিভাবে রক্ষা করবেন? তখন
বাদশাহ বললেন, বুঝতে পেরেছি, শিশুদের
আবদার রক্ষা করা আসলেই কঠিন।
উপদেশ : নাফরমানরা এ শিশুদের মতোই
নির্বোধ। তারা অনবরত আল্লাহর
নাফরমানী করে বেড়ায়, আবার
বেহেশতেও যেতে চায়। আবার গলদ পথ
অবলম্বন করে আল্লাহর সন্তুষ্টির
আশা করে। এসবই আসলে ধোঁকা। সহীহ
ঈমান ও সঠিক পন্থায় আল্লাহর
ইবাদত-
বন্দেগী করা ছাড়া কখনো আল্লাহর
সন্তুষ্টি ও জান্নাতের
আশা করা যাবে না।
[সূত্র : আকবারুল আ‘মাল, পৃষ্ঠা :
১৭]
অজুহাত কাম্য নয়
এক মাদরাসার ছাত্র একবার মিরাঠ
গিয়েছিল। সেখানে তখন মেলা চলছিল।
তা শুনে সে মেলা দেখতে গেলো।
বিষয়টি তার এক মুরব্বী লক্ষ্য
করলেন। মেলা থেকে ফিরে আসার পর
সেই মুরব্বী তাকে জিজ্ঞেস করলেন,
মৌলভী সাহেব! এ ধরনের মেলায়
যাওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে কেমন?
ছাত্রটি বলল, তা জায়িয নয়।
মুরব্বী বললেন, আপনি যে গেলেন?
ছাত্রটি জবাব দিল,
আমি আসলে সেখানে কী হয় জানার
জন্য গিয়েছিÑযেন মানুষকে এর
অপকারিতা সম্পর্কে সাবধান
করতে পারি। মুরব্বী বললেন, কিন্তু
লোকজন তো আপনার সেখানে যাওয়ার
দ্বারা-ই এর জায়িযের পক্ষে দলীল পেশ
করবে, আপনি কী জন্য
গিয়েছেনÑতা তো তারা দেখবে না। এ
কথা শুনে ছাত্রটির বোধোদয়
হলো এবং নিজের ভুল
বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হলো।
উপদেশ : তোহমতের স্থান
থেকে দূরে থাকা কর্তব্য। নাজায়িয
স্থানে যেমন যাওয়া নিষেধ, তার
আশপাশে ঘুরাফেরা করাও নিষেধ।
আবার অনেকে জানার নাম
করে বিধর্মীদের বই-পস্তক পড়ে।
তা জায়িয নয়। অন্য ধর্মের
গ্রন্থে কী আছে তা আমাদেরকে জানতে
বলা হয়নি। বরং শুধু আমাদের নিজ
ধর্মগ্রন্থের জ্ঞানই অর্জন
করে আমল করতে বলা হয়েছে।
সুতরাং সেই চটকদার
ধোঁকা থেকে আমাদের বাঁচতে হবে।
[সূত্র : হুকুক ও ফারায়িজ, পৃষ্ঠা :
৭৭২]
আতর বিক্রেতার মেয়ের ঘটনা
এক আতর ব্যবসায়ীর মেয়ের
বিয়ে হলো চামড়া রংকারীর সাথে।
চামড়ার দুর্গন্ধ অন্যদের জন্য এক
অসহ্য যন্ত্রণা। এ জন্য প্রথম
প্রথম নতুন বউয়ের খুব কষ্ট হলো।
এরপর ধীরে ধীরে এ অবস্থা তার
সয়ে গেলো। তখন তার কাছে তেমন
দুর্গন্ধ লাগে না।
একদিন লোকজনের সাথে তার
কথা হচ্ছে। কথার এক
পর্যায়ে সে বললো, আগে এ
বাড়ীতে প্রচ- দুর্গন্ধ ছিলো। কিন্তু
এখন আর তা নেই। দুর্গন্ধ সব
চলে গেছে।
উপদেশ : আসল কথা হলো, দুর্গন্ধ দূর
হয়নি। বরং সে এই দুর্গন্ধে অভ্যস্ত
হয়ে গিয়েছে। এটাকেই সে দুর্গন্ধ
চলে গেছে বলে ধরে নিয়েছে।
আমাদের অবস্থাও এমনই। আজ
আমরা বিভিন্ন অযাচিত
কাজে এমনভাবে অভ্যস্ত হয়ে পড়ি যে,
তা করা যে অনুচিত, সেই অনুভূতিটুকুও
নিঃশেষ হয়ে যায়। এর
থেকে নিজেদেরকে সংশোধন করতে হবে।


ব্লগ সম্পাদক ও এ্যাডমিনঃসৈয়দ রুবেল উদ্দিন
Next post "হাদীস পড়ি – জীবন গড়ি
ব্লগের প্রকাশিত পোস্ট গুলি ফেসবুকে শেয়ার করে আমাদের চলার পথকে আরো গতিময় করে তুলুন ।আমরা দিন রাত খাটিয়ে পোস্ট গুলি লেখি ।ব্লগে প্রকাশ করে আপনাদেরকে উপহার দেয় ।আপনারা যদি শেয়ার না করেন?তাহলে আমরা তো সামনে এগিয়ে যেতে পারবোনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :