কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে দানশীলতা ও কৃপণতা

কোন মন্তব্য নেই
সৌজন্যঃ কুরআনের আলো ডট কম ।

মহান আল্লাহ বলেন,
“তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে তিনি তার বিনিময় দেবেন।”(সূরা সাবা ৩৯)
তিনি আরো বলেন,
“তোমরা যা কিছু ধন-সম্পদ দান কর, তা নিজেদের উপকারেরজন্যই। আল্লাহর সন্তোষটি ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যেতোমরা দান করো না। আর তোমরাযা দান কর, তার পুরস্কার পূর্ণভাবে প্রদান করা হবে এবং তোমাদের প্রতি অন্যায়করা হবে না।” (সূরা বাক্বারাহ ২৭২)
তিনি অন্যএ বলেন,
“তোমরা যা কিছু ধন-সম্পদ দান কর, আল্লাহ তা সবিশেষ অবহিত।”(সূরা বাক্বারাহ ২৭৩)
এ বিষয়ে অনেক হাদীস উল্লেখ করা হল।
১) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন, “কেবলমাত্র দুটি বিষয়ে ঈর্ষাকরা যায় (১) ঐ ব্যক্তির প্রতিযাকে মহান আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন,অতঃপর তাকে হক পথে অকাতরে দান করার ক্ষমতা দান করেছেন এবং (২) ঐ ব্যক্তির প্রতি যাকে মহান আল্লাহ হিকমতদান করেছেন, অতঃপর সে তার দ্বারা ফায়সালা করে ও তা শিক্ষা দেয়”।(সহীহুল বুখারী ৭৩, ১৪০৯, ৭১৪১, মুসলিম ৮১৬)
*হাদীসের অর্থ হল, উক্ত দুই প্রকার মানুষ ছাড়া অন্য কারোপ্রতি ঈর্ষা করা বৈধ নয়।
২) উক্ত রাবী থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) লোকদেরকে প্রশ্ন করলেন, “তোমাদের মধ্যে এমন ব্যক্তি কে আছে, যে নিজের সম্পদের চেয়ে তার ওয়ারেসেরসম্পদকে বেশি প্রিয় মনে করে?” তাঁরা জবাব দিলেন, ‘হে আল্লাহর রসুল! আমাদের মাঝে এমন কোন ব্যক্তি কেউ নেই, যে তার নিজের সম্পদকে বেশি প্রিয় মনে করে না।’ তখন তিনি বললেন, “নিশ্চয়ই মানুষের নিজের সম্পদ তাই, যা সে আগে পাঠিয়েছে। আর এ ছাড়া যে মাল বাকী থাকবে, তা হল ওয়ারেসের মাল”। (সহীহুল বুখারী ৬৪৪২, নাসায়ী ৩৬১২,আহমাদ ৩৬১৯)
৩) আদী ইবনে হাতেম (রাঃ) বলেন, আমি নবী (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি, “তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচো;যদিও খেজুরের এক টুকরো সাদকাহকরে হয়।”(সহীহুল বুখারী ১৪১৩,১৪১৭,৩৫৯৫,৬০২৩, নাসায়ী ২৫৫২,২৫৫৩,আহমাদ ১৭৭৮২)
৪) জাবের (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সাঃ)-এর নিকট এমন কোন জিনিসই চাওয়া হয়নি, যা জবাব দিয়ে তিনি ‘না’ বলেছেন।(সহীহুল বুখারী ৬০৩৪,আহমাদ ১৩৭৭২)
৫) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেন, “প্রতিদিন সকালে দু’জনফেরেশতা অবতরণ করেন। তাঁদের একজন বলেন, ‘হে আল্লাহ! দাতাকে তার দানের বিনিময় দিন।’ আর অপরজন বলেন, ‘হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস দিন।”(সহীহুল বুখারী ১৪৪২, মুসলিম ১০১০)
৬) উক্ত রাবী কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! তুমি (অভাবীকে) দান কর, আল্লাহ তোমাকে দান করবেন।’(সহীহুল বুখারী ৪৬৮৪, ৫৩৫২, ৭৪১১, তিরমিযী ৩০৪৫)
৭) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আ’স (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কেজিজ্ঞাসা করল, ‘ইসলামের কোন কাজটি উওম?’ তিনি জবাব দিলেন, “তুমি অন্নদান করবে এবং পরিচিত ও অপরিচিত সবাইকে সালাম দেবে।”(সহীহুল বুখারী ১২, ২৮, ৬২৩৬, তিরমিযী ১৮৫৫, নাসায়ী ৫০০০)
৮) উক্ত রাবী কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “চল্লিশটি সৎকর্ম আছে, তার মধ্যে উচ্চতম হল, দুধ পানের জন্য (কোন দরিদ্রকে) ছাগল সাময়িকভাবে দান করা। যে কোন আমলকারী এর মধ্যে হতে যে কোন একটি সৎকর্মের উপর প্রতিদানেরআশা করে ও তার প্রতিশ্রত পুরস্কারকে সত্য জেনে আমল করবে, তাকে আল্লাহ তার বিনিময়ে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।”(সহীহুল বুখারী ২৬৩১,আহমাদ ৬৪৫২,৬৭৯২,৬৮১৪)
৯) আবূ উমামাহ সুদাই বিন আজলান(রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “হে আদম সন্তান! প্রয়োজনের অতিরিক্ত মাল (আল্লাহর পথে) খরচ করা তোমার জন্য মঙ্গল এবং তা আটকে রাখা তোমার জন্য অমঙ্গল। আর প্রয়োজন মত মালে তুমি নিন্দিত হবে না। প্রথমে তাদেরকে দাও, যাদের ভরণ-পোষণ তোমার দায়িত্বে। আর উপরের (উপুর) হাত নিচের (চিৎ) হাত অপেক্ষায় উওম।”(মুসলিম ১০৩৬,তিরযিমী ২৩৪৩)
১০) আনাস (রাঃ) বলেন, ইসলামের স্বার্থে (অর্থাৎ নও মুসলিমেরপক্ষ থেকে) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট যা চাওয়া হত, তিনি তা-ই দিতেন। (একবার) তাঁর নিকটএক ব্যক্তি এল। তিনি তাকে দুই পাহাড়ের মধ্যস্থলের সমস্ত বকরীগুলো দিয়ে দিলেন। তারপর সে তার সম্প্রদায়ের নিকট গিয়ে বলল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা ইসলাম গ্রহন কর। কেননা, মুহাম্মাদ (সাঃ) ঐ ব্যক্তির মত দান করেন, যার দারিদ্রতার ভয় নেই।’ যদিওকোন ব্যক্তি কেবলমাত্র দুনিয়া অর্জন করার জন্য ইসলাম গ্রহণ করত। কিন্ত কিছুদিন পরেই ইসলাম তার নিকট দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে সব কিছু থেকে প্রিয় হয়ে যেত।(মুসলিম ২৩১২, আহমাদ ১১৬৩৯, ১২৩৭৯)
১১) উমার (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কিছু মাল বণ্টন করলেন। তারপর আমি বললাম,‘হে আল্লাহর রসূল! অন্য লোকেরাএদের চেয়ে এ মালের বেশি হকদার ছিল।’ তিনি বললেন, “এরা আমাকে দু’টি কথার মধ্যে একটা না একটা গ্রহণ করতে বাধ্য করেছে। হয় তারা আমার নিকট অভদ্রতার সাথে চাইবে (আর আমাকে তা সহ্য করে তাদেরকে দিতে হবে) অথবা তারা আমাকে কৃপণ আখ্যায়িত করবে। অথচ, আমিকৃপণ নই।” (মুসলিম ১০৫৬, আহমাদ১২৮, ২৩৬)
১২) জুবাইর ইবনে মুত্বইম (রাঃ)বলেন, তিনি হুনাইনের যুদ্ধ থেকে ফিরার সময় রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সঙ্গে আসছিলেন। (পথিমধ্যে) কতিপয় বেদুঈন তাঁর নিকট অনুনয়-বিনয় করে চাইতে আরম্ভ করল, এমন কি শেষ পর্যন্ত তারা তাঁকে বাধ্য করেএকটি বাবলা গাছের কাছে নিয়ে গেল। যার ফলে তাঁর চাদর (গাছেরকাঁটায়) আটকে গেল। নবী (সাঃ) থেমে গেলেন এবং বললেন, “তোমরা আমাকে আমার চাদরখানি দাও। যদিআমার নিকট এসব (অসংখ্য) কাঁটা গাছের সমান উঁট থাকত, তাহলে আমি তা তোমাদের মধ্যে বণ্টন করে দিতাম। তারপর তোমরা আমাকেকৃপণ, মিথ্যুক বা কাপুরুষ পেতেনা।”(সহীহুল বুখারী ২৮২১, ৩১৪৮)
১৩) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “সাদকাহ করলে মাল কমে যায় না এবং ক্ষমা করার বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা (ক্ষমাকারীর) সম্মান বৃদ্ধি করেন। আর কেও আল্লাহর (সন্তোষটির) জন্য বিনয়ী হলে, আল্লাহ আযযা অজাল্ল তাঁকে উচ্চ করেন।”(মুসলিম ২৫৮৮, তিরমিযী ২০২৯)
১৪) আবূ কাবশাহ আমর ইবনে সা’দ আনসারী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি, “আমি তিনটি জিনিসের ব্যাপারে শপথ করছি এবং তোমাদেরকে একটি হাদীস বলছি তাস্মরন রাখোঃ (এক) কোন বান্দার মাল সাদকাহ করলে কমে যায় না। (দুই) কোন বান্দার উপর কোন প্রকার অত্যাচার করা হলে এবং সে তার উপর ধৈর্য-ধারন করলে আল্লাহ নিশ্চয় তাঁর সম্মান বাড়িয়ে দেন, আর (তিন) কোন বান্দা যাচ্ঞার দুয়ার উদঘাটনকরলে আল্লাহ তার জন্য দারিদ্রতার দরজা উদঘাটন করে দেন।” অথবা এই রকম অন্য শব্দ তিনি ব্যবহার করলেন।
“আর তোমাদেরকে একটি হাদীস বলছি তা স্মরন রাখো”। তিনি বললেন, “দুনিয়ায় চার প্রকার লোক আছে; (১) ঐ বান্দা, যাকে আল্লাহ ধন ও (ইসলামী) জ্ঞান দান করেছেন। অতঃপর সে তাতে আল্লাহকে ভয় করে এবং তার মাধ্যমে নিজ আত্মীয়তা বজায় রাখে। আর তাতে যে আল্লাহর হক রয়েছে তা সে জানে। অতএব সে (আল্লাহর কাছে) সবচেয়ে উৎকৃষ্ট স্তরে অবস্থান করবে। (২) ঐ বান্দা, যাকে আল্লাহ (ইসলামী) জ্ঞান দান করেছেন; কিন্তু মাল দান করেননি। সে নিয়তে সত্যনিষ্ট, সে বলে যদি আমার মাল থাকত, তাহলে আমি (পূর্বাক্ত) অমুকের মত কাজ করতাম। সুতরাং সে নিয়ত অনুসারে বিনিময়ে পাবে; এদের উভয়ের প্রতিদান সমান। (৩) ঐ বান্দা, যাকে আল্লাহ মাল দান করেছেন; কিন্তু (ইসলামী) জ্ঞানদান করেননি। সুতরাং সে না জেনে অবৈধরূপে নির্বিচারে মালখরচ করে; সে তাতে আল্লাহকে ভয়করে না, তার মাধ্যমে নিজ আত্মীয়তা বজায় রাখে না এবং তাতে যে আল্লাহর হক রয়েছে তাও সে জানে না। অতএব সে (আল্লাহর কাছে) সবচেয়ে নিকৃষ্ট স্তরে অবস্থান করবে। আর (৪) ঐ বান্দা, যাকে আল্লাহ ধন ও (ইসলামী) জ্ঞান কিছুই দানকরেননি। কিন্তু সে বলে, যদি আমার নিকট মাল থাকত, তাহলে আমিও আমি (পূর্বাক্ত) অমুকের মত কাজ করতাম। সুতরাং সে নিয়ত অনুসারে বিনিময়ে পাবে;এদের উভয়ের পাপ সমান।” (তিরমিযী ২৩২৫, ইবনে মাজাহ ৪২২৮)
১৫) আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদিন তাঁরা একটি ছাগল জবাই করলেন। তারপর নবী (সাঃ) বললেন,“ছাগলটির কতটা (মাংস) অবশিষ্ট আছে? আয়েশা (রাঃ) বললেন, ‘কেবলমাত্র কাঁধের মাংস ছাড়া তার কিছুই বাকী নেই।’ তিনি বললেন, “(বরং) কাঁধের মাংস ছাড়া সবটাই বাকী আছে।”(তিরমিযী ২৪৭০, আহমাদ ২৩)
*অর্থাৎ, আয়েশা (রাঃ) বললেন, ‘তার সবটুকু মাংসই সাদকা করে দেওয়া হয়েছে এবং কেবলমাত্র কাঁধের মাংস বাকী রয়ে গেছে।’ উওরে তিনি বললেন, “কাঁধের মাংসছাড়া সবই আখেরাতে আমাদের জন্য বাকী আছে।” (আসলে যা দান করা হয়, তাই বাকী থাকে।)
১৬) আসমা বিন্তে আবূ বাকর (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) আমাকে বললেন, “তুমি সম্পদ বেঁধে (জমাকরে) রেখো না, এরূপ করলে তোমার নিকট (আসা থেকে) তা বেঁধে রাখাহবে।” অন্য এক বর্ণনায় আছে, “খরচ কর, গুনে গুনে রেখো না, এরূপ করলে আল্লাহও তোমাকে গুনে গুনে দেবেন।আর তুমি জমা করে রেখো না, এরূপ করলে আল্লাহও তোমার প্রতি (খরচ না করে) জমা করে রাখবেন।(সহীহুল বুখারী ১৪৩৩,১৪৩৪,২৫৯০,২৫৯১ মুসলিম ১০২৯)
১৭) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী (সাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, “কৃপণ ও দানশীলের দৃষ্টান্ত এমন দুই ব্যক্তির মত, যাদের পরিধানে দু’টি লোহার বর্ম রয়েছে। যা তাদের বুক থেকে টুঁটি পর্যন্তবিস্তৃত। সুতরাং দানশীল যখন দান করে, তখনই সেই বর্ম তার সারা দেহে বিস্তৃত হয়ে যায়, এমনকি (তার ফলে) তা তার আঙ্গুলগুলোকেও ঢেকে ফেলে এবং তার পদচিহ্ন (পাপ বা ত্রুটি) মুছে দেয়। পক্ষান্তরে কৃপণ যখনই কিছু দান করার ইচ্ছা করে,তখনই বর্মের প্রতিটা আংটা যথাস্থানে এঁটে যায়। সে তা প্রশস্ত করতে চাইলেও তা প্রশস্ত হয় না।”(সহীহুল বুখারী ১৪৪৪,২৯১৭,৫৭৯৭ মুসলিম ১০২১)
১৮) উক্ত রাবী (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যেব্যক্তি (তার) বৈধ অর্থ ছাড়া অন্য কিছুই গ্রহণই করেন না— সে ব্যক্তির ঐ দানকে আল্লাহ ডান হাতে গ্রহন করেন। তারপর তা ঐ ব্যক্তির জন্য লালন-পালন করেন, যেমন তোমাদের কেউ তার অশ্ব-শাবককে লালন-পালন করে থাকে। পরিশেষে তা পাহাড়ের মতহয়ে যায়।”(সহীহুল বুখারী ১৪১০, মুসলিম ১০১৪)
১৯) উক্ত রাবী (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “একব্যক্তি বৃক্ষহীন প্রান্তরে মেঘ থেকে শব্দ শুনতে পেল, ‘অমুকের বাগানে বৃষ্টি বর্ষন কর।’ তারপর সেই মেঘ সরে গিয়ে কালো পাথুরে এক ভূমিতে বর্ষন করল। তারপর (সেখানকার) নালাসমূহের মধ্যে একটি নালা সম্পূর্ণ পানি নিজের মধ্যে জমা করে নিল। লোকটির সেই পানির অনুসরণ করে কিছু দূর গিয়ে দেখল, একটি লোক কোদাল দ্বারা নিজ বাগানের দিকে পানিঘুরাচ্ছে। সে তাকে জিজ্ঞাসা করল, ‘তোমার নাম কি ভাই?’ বলল, ‘অমুক’। এটি ছিল সেই নাম, যে নাম মেঘের আড়ালে সে শুনেছিল।বাগান-ওয়ালা বলল, ‘ওহে আল্লাহর বান্দা! তুমি আমার নাম কেন জিজ্ঞাসা করলে?’ লোকটি বলল, আমি মেঘের আড়াল থেকে তোমার নাম ধরে তোমার বাগানে বৃষ্টি বর্ষন করতে আদেশ শুনলাম।
তুমি কি এমন কাজ কর? বাগান-ভাগলা বলল, ‘এ যখন বললে, তখন বলতে হয়; আমি এই বাগানের উৎপন্ন ফল-ফসলকে ভেবে-চিন্তে তিন ভাগে ভাগ করি। তারপর তার এক ভাগ দান করি, এক ভাগ আমি আমার পরিজনসহ খেয়ে থাকি এবং বাকী এক ভাগ বাগানের চাষ-খাতে ব্যয় করি।”(মুসলিম ২৯৮৪, আহমাদ ৭৮৮১)
কৃপণতা ও ব্যয়কুণ্ঠ তা
আল্লাহ তাআলা বলেন,
“পক্ষান্তরে যে কার্পণ্য করে ও নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করে। আর সদ্বিষয়কে মিথ্যাজ্ঞান করে অচিরেই তার জন্য আমি সুগম করে দেব (জাহান্নামের) কঠোর পরিণামের পথ। যখন সে ধ্বংস হবে, তখন তার সম্পদ তার কোন কাজেই আসবে না।” (সূরা লাইল ৮-১১)
তিনি আরো বলেন,
وَمَن يوقَ شُحَّ نَفسِهِ فَأُولٰئِكَ هُمُ المُفلِحونَ
অর্থাৎ, যারা অন্তরে কার্পণ্য হতে মুক্ত, তারাই সফলকাম।(সূরা তাগাবূন ১৬)
জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “অত্যাচার করা থেকে বাঁচ। কেননা, অত্যাচার কিয়ামতের দিনের অন্ধকার। আর কৃপণতা থেকে দূরে থাকো । কেননা, কৃপণতা তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছে।(এই কৃপণতাই) তাদেরকেপ্ররোচিত করেছিল, ফলে তারা নিজদের রক্তপাত ঘটিয়েছিল এবংতাদের উপর হারামকৃত বস্তুস্মূহকে হালাল করে নিয়েছিল।”(মুসলিম ২৫৭৮, আহমাদ ১৪০৫২)

কোন মন্তব্য নেই :