গর্ভকালীন ত্বকের সমস্যা

কোন মন্তব্য নেই
গর্ভাবস্হায় নারীর দেহে কিছু গুরুতর
ফিজিওলজিক্যাল পরিবর্তন সাধিত
হয়। এই সময় পিটুইটারি, থাইরয়েড ও
অ্যাডরিনাল গ্রন্হির কর্মকান্ড
বৃদ্ধি পায়। ফলে বিভিন্ন ধরনের
প্রোটিন ও ষ্টেরয়েড হরমোন
তৈরি হয়ে থাকে। এরই প্রভাবে যেসব
রোগ বা উপসর্গ তৈরি হয়
তা নিম্নরুপঃ
পিগমেন্টেশনঃ গর্ভবতী মায়ের স্তনের
বোঁটা ও তার আশপাশের ত্বক,
কালচে রংয়ের হয়।
– কিছু সংখ্যক ক্ষেত্রে বগল ও
উরুতেও এ ধরনের পরিবর্তন
দেখা যায়।
–সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন
হচ্ছে মুখে মেছতা হওয়া যা কি না
অন্তত ৫০ ভাগ ক্ষেত্রেই
গর্ভাবস্হায় হতে দেখা যায়।
–প্রসব করার পর কিছুদিনের মধ্যেই
এই পরিবর্তিত রং আবার আগের
অবস্হায় ফিরে আসতে থাকে।
চুলঃ অনেক ক্ষেত্রেই গর্ভবতীর
মুখে সামান্য পরিমাণ বা তার চেয়ে কিছু
বেশি পরিমাণে অবাঞ্ছিত লোম
গজাতে দেখা যায়, যা সাধারণত
প্রসবের পর কমে যায়। তবে জটিল
গর্ভাবস্হার
সৃষ্টি হলে কিংবা অপারেশনের
মাধ্যমে প্রসব
করিয়ে থাকলে যদি অস্বাভাবিক
রকমের শারীরিক বা মানসিক চাপ
হতে দেখা যায়
তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রসবের
১ থেকে ৫ মাসের মধ্যে সাংঘাতিক
রকমের চুল পড়ে গেলেও প্রায় সব
ক্ষেত্রেই পুনরায় স্বাভাবিক অবস্হায়
তা ফিরে আসে।
ত্বক ফাটাঃ গর্ভাবস্হায় ত্বকের ওপর
চাপ পড়ে। পেট বড় হওয়ার
কারণে ত্বক প্রসারিত হতে থাকে।
একপর্যায়ে যখন আর প্রসারণ ঘটার
ক্ষমতা থাকে না, তখন ত্বকে ফাটল
ধরে। এই অবস্হাকে বলা হয়
ঝঞজওঅঊ উওঝঞঊঘঝঅঊ। ৯০
ভাগ গর্ভবতীর ক্ষেত্রে এ অবস্হার
সৃষ্টি হয়ে থাকে। পেট ছাড়াও ঐরঢ়,
ইঁঃঃড়পশ এ এই পরিবর্তন হয়ে থাকে।
চবসঢ়যরমড়রফ
এবংঃধঃরড়হরংঃ গর্ভাবস্হায় এই রোগ
কখনো কখনো হতে দেখা যায়।
এক্ষেত্রে ফোস্কা থাকবে আর
সঙ্গে থাকবে চুলকানি। যদিও
রোগটি কম হতে দেখা যায় কিন্তু
যদি হয়ে বসে তাহলে কিন্তু কষ্ট আর
যন্ত্রণা দেয়।
চৎঁৎরমড় ড়ভ
চৎবমহধহপুঃ এক্ষেত্রে গর্ভবতীর
পেটে লালচে দানা হতে দেখা যায়। বেশির
ভাগ ক্ষেত্রেই গর্ভবতীর শেষের ৩
মাসে হয়ে থাকে। এই দানা এক
হয়ে মিশে গিয়ে পুরো স্হানেই
একটা লালচে ভাব সৃষ্টি করে।
এতে থাকে অস্বাভাবিক রকমের
চুলকানি। এ অবস্হায়
রাত্রে গর্ভবতী ঘুমাতে পারে না
চুলকানির কারণে।
কখনো কখনো চুলকানির ফলে কষ
ঝরতে থাকে। এগুলো ছড়াতে ইঁঃঃড়পশ ও
ঞযরমযতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
কখনো কখনো বাহুতে এবং পায়েও
ছড়িয়ে পড়তে পারে, তবে কখনই
মুখে হতে দেখা যায় না।
সাধারণভাবে এটি প্রসবের পরপরই
ভালো হয়ে যায়।
চৎঁৎরমড় এৎধারফধৎঁসঃ এটি লিভার
সিষ্টেমের সমস্যার কারণে হয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে গর্ভাবস্হার শেষের
দিকে সারা শরীরে চুলকানি শুরু হয়
এবং সেই সঙ্গে জন্ডিস দেখা দেয়।
প্রথম দিকে যে চুলকানি হয় তা শুধু
রাত্রিকালীন সময়ে হয়ে থাকে।
প্রথমে শরীরের অংশবিশেষ ধরে শুরু
হলেও পরে সারা শরীরে বিস্তার ঘটে।
এর সঙ্গে বমি বমি ভাব ও শারীরিক
দুর্বলতা বিদ্যমান থাকে। সাধারণত
সন্তান প্রসবের কিছুদিন পর পরই
এটা ভালো হয়ে যায়।
তবে ভবিষ্যতে পুনরায়
সন্তানসম্ভবা হলে তখন
একইভাবে একই উপসর্গ
নিয়ে রোগটি আবার দেখা দিতে পারে।
ওসঢ়বঃরমড়
ঐবৎঢ়বঃরভড়ৎসরংঃ এটি সেরিয়াসিসের
রোগের একটি বিশেষ গ্রুপ বা ধরন।
যদিও এর সংখ্যা কম কিন্তু এটির
গুরুত্ব কিন্তু অনেক বেশি কারণ
এটি কখনো কখনো মৃত্যুর কারণ
হয়ে দাঁড়ায় গর্ভবতী মহিলাদের জন্য।
এটিও প্রসুতির শেষের ৩ মাসের
মধ্যে কোনো এক সময় দেখা দেয়।
একবার যিনি আক্রান্ত হলেন
পরবর্তী ক্ষেত্রে সে গর্ভবতী হলে এটি
পুনরায় দেখা দিতে পারে।
এক্ষেত্রে চুলকানি না থাকলেও শরীরের
একটি বিরাট অংশ আক্রান্ত
হতে পারে।
এছাড়া আরো ২/১টি রোগ আছে,
যা গর্ভাবস্হায় হতে দেখা যায়।
তবে এই রোগগুলো খুব কম অবস্হায়ই
হতে দেখা যায়।
—————–
ডা. দিদারুল আহসান
২০০৮-০৫-২৭
লেখকঃ চর্ম, ও অ্যালার্জি রোগ
বিশেষজ্ঞ ব্যবস্হাপনা পরিচালক, আল
রাজি হাসপাতাল লি. ১২, ফার্মগেট,
ঢাকা

সূত্রঃ বাংলা হেলথ ।শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের কে জানার সুযোগ দিন ।আপনি জেনেছেন হয়তো সে জানেনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :