দাম্পত্য জীবনঃ----১. স্বামীর উদ্দেশ্য সাজ-সজ্জা গ্রহণ...২. মর্যাদার পোশাক পর্দাঃ part2
1 টি মন্তব্য
মহিলাদের উগ্র চালচলনের ভয়াবহ আখিরাতের পরিণতি সম্পর্কে হযতরআবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহ আনহু) বর্ণিত হাদীসটিও এখানে উল্লেখের দাবী রাখে।
প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম). ইরশাদ করেন: “দোযখের দু’প্রকার লোককে আমি (দুনিয়ায়) দেখেনি।
এক: যাদের নিকট গরুর লেজের মত লম্বা লাঠি থাকবে এবং এর দ্বারা তারা লোকদেরকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করবে।
দুই: এক প্রকার স্ত্রীলোক যারা কাপড় পরেও উলঙ্গ, গুণাহর প্রতি ঝোঁক প্রবণ এবং অন্যদেরকেও গুণাহর প্রতি আকৃষ্টকারিণী, তাদের মাথা খোঁপা হবে অহংকারীউটের কুব্জের মত উঁচু। তারা না বেহেশতে যাবে আর না বেহেশতের ঘ্রাণ পাবে। অথচ বেহেশতের ঘ্রাণ এত এত দূরের পথ থেকেও পাওয়া যায়।” (মুসলিম শরীফ)
আল্লাহর রাসুলের এ মহামূল্যবানভবিষ্যতদ্বাণী বাস্তবে সত্যে পরিণত হয়েছে। কেননা, তাঁর উম্মতের মধ্যে এ দু’ধরণের লোকেরআবির্ভাব ঘটেছে।
এক: লাঠি দিয়ে লোকদের নির্যাতন করার অর্থ সর্বপ্রকারের নির্যাতন বুঝায়। বনী আদমের মধ্যে একে অপরের উপর ক্ষমতা ও প্রভাব বিস্তারের ফলে বা অন্যায়ভাবে স্বার্থ উদ্ধারের জন্য শাসক ও জালিমরা এ ধরণের কাজ অহরহ করে চলছে।
দুই: ‘কাপড় পরেও যে স্ত্রীলোক উলঙ্গ থাকে’-এর অর্থ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পরবর্তী যুগে একশ্রেণীর নারীদের শরীরের কিছুঅংশ ঢাকে আর কিছূ অংশ খোলা রাখেঅথবা এমন পাতলা কাপড় পরিধান করে যে, শরীরের ভেতর দেখা যায় কিংবা তা এত সংকীর্ণ যে, নারীর শরীরের উঁচু-নীচু অংশ পরিষ্কারদেখা যায়।
উপরোক্ত প্রকারের মহিলারা নিজেরা ইসলাম প্রদত্ত শালীন পোশাকাদি ত্যাগ করত নিজেরা গুণাহে লিপ্ত ও অন্যদেরও তার প্রতি আকৃষ্ট করে। তাই তাদের শাস্তি হল, তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না এবং তারা তা থেকে এত দূরে অবস্খান করবে যে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।
তাদের এ বর্বর আচরণের জন্য তাদের প্রতি অভিশাপ বর্ণনা প্রদান করতে গিয়ে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন: “তাদেরকে অভিশম্পাত দাও কেননা তারা অভিশপ্ত (আল্লাহর রহমত পাওয়ার অধিকার বঞ্চিত)।” (ইবনে হিব্বান, হাকিম)
মর্যাদার পোশাক পর্দাঃ
ইসলামে পোশাকের মডেল ‘তাকওয়ার পোশাক’। যে পোশাক সতর ঢাকার সাথে সাথে সৌন্দর্যচর্চার ক্ষেত্রে সীমা ছাড়িয়ে গর্ব ওঅহঙ্কারে পরিণত না হয়, শালীনতাবিকাশে কোনো বাধার সৃষ্টি না করে, তা-ই তাকওয়ার পোশাক। পুরুষের পোশাকের ক্ষেত্রে শালীন ও মার্জিত পোশাকই তাকওয়ার পোশাক। আল কুরআনের সূরা আন নূর ও সূরা আহজাবে বলা হয়েছে, মহিলারা যেন জাহেলি যুগের মেয়েদের মতো বাইরে নিজেদের রূপ-সৌন্দর্যের প্রদর্শন করে না বেড়ায়। তারাঘরের বাইরে যাওয়ার সময় যেন চাদর দিয়ে নিজেদের দেহকে আবৃতকরে নেয়। তারা যেন তাদের আঁচল দিয়ে বুক ঢেকে রাখে। ঝঙ্কারদায়ক অলঙ্কারাদি পরিধান করে ঘরের বাইরে না যায়। ঘরের ভেতরেও যেন তারা মাহরাম ও গায়ের মাহরাম পুরুষদের মধ্যে পার্থক্য করে চলে।
এ ক্ষেত্রে নারীদের ঘরে আটকিয়ে রাখার কথা বলা হয়নি বরং বলা হয়েছে তাদের সৌন্দর্যটা আবৃত করে রাখার কথা।
যে নারী অনিয়ন্ত্রিত নগ্ন জীবন যাপন করে, সে শুধু নিজের সর্বনাশই করে না, তার চালচলনের প্রভাব তার ভবিষ্যৎ বংশধরের ওপরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয়ভাবেই পড়ে।
তেমনি পুরুষের বেলায়ও তা প্রযোজ্য। ‘যে ব্যক্তি কোনো অপরিচিত নারীর প্রতি লোলুপদৃষ্টি নিক্ষেপ করবে কিয়ামতের দিন তার চোখে উত্তপ্ত গলিত লোহা ঢেলে দেয়া হবে।’ (ফাতহুল কাদির)।
হঠাৎ যদি কারো ওপরে নজর পড়ে যায় তাহলে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়ার কথা বলা হয়েছে। ‘হঠাৎ দৃষ্টি পড়লে ক্ষমার যোগ্য। কিন' পুনরায় ভালোভাবে দেখার উদ্দেশ্যে দৃষ্টি দেয়া ক্ষমারযোগ্য নয়’ (বোখারি, মুসলিম, আবুদাউদ)
তাকওয়ার পোশাক যুক্তিসম্মত ও বিজ্ঞানসম্মত, তা কখনো প্রগতির অন্তরায় নয়। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠপ্রাণী মানুষ শৃঙ্খলা, সভ্যতা ওআবরু রক্ষা করে চলবে, এটাই ধর্মীয় বিধান। পর্দা বা তাওকয়ার পোশাক নৈতিক চরিত্রেরহেফাজত ও ইভটিজিং প্রতিরোধ করে। সামাজিক অশান্তি রোধ করে।পারিবারিক ব্যবস্থা সুরক্ষিত ওসুদৃঢ় করে। সুষ্ঠু, সুন্দর ও ভারসাম্যপূর্ণ সোনালি সমাজ বিনির্মাণে মুমিনদের উদ্বুদ্ধ করে।
সূত্রঃ
১. কোরআন ও হাদীসের আলোকে পারিবারিক জীবন
মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (রঃ)
২. সাজসজ্জা ও রুপচর্চার ইসলামীবিধান
ড. মুহাম্মদ ওয়ালি উল্লাহ
সংগ্রহে---------------------
================= ==============
---------------------মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন, দুবাই ইউ এ ই
ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড : দাম্পত্য জীবন
বিষয়শ্রেণী: বিবিধ

1 টি মন্তব্য :

Azharul Islam Akbor বলেছেন...

আমি আপনার সব গুলো পোস্ট পড়েছি এবং দেখেছি যে সব গুলোই প্রতিটি মুসলমানের পড়া উচিত। আমি সব সময় আপনার পাশে আছি। আপনি চালিয়ে যান। - আকবর