দাম্পত্য জীবনঃ----আপনারস্ত্রীকে ভালবাসুন! (বিবাহিত ভাইদের জন্য)
কোন মন্তব্য নেই
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যখন সে আপনার চায়ে ছোট একটি চুমুক দেয়। কারণ, সে নিশ্চিত হতে চায় চা টি আপনার পছন্দ মত হয়েছে কিনা।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যখন সে আপনাকে নামাজ পড়তে জোর করে। কারণ সে আপনারই সাথে জান্নাতে যেতে চায়।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যখন সে আপনাকে সন্তানদের সাথে খেলা করতে বলে। কারণ সন্তানদের অভিভাবক সে একা নয়।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যখন সে আপানাকে নিয়ে ঈর্ষান্বিত হয়। কারণ, সে অন্য সমস্ত মানুষকে রেখে শুধুমাত্র আপনাকেই বেঁছে নিয়েছে।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যখন তার কিছু দোষ ত্রুটি আপনাকে বিরক্তকরে। কারণ, আপনারও এমন অনেক দোষত্রুটি রয়েছে।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যখন তার রান্না খারাপ হয়। কারণ, সে ভাল রান্নার চেষ্টা করেছে।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যখন সকাল বেলায় তাকে উষ্কখুষ্ক দেখায়। কারণ, সে আবার আপানরই জন্য সাজগোজ করবে।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ.যখন সে আপনাকে সন্তানের লেখাপড়ায় সাহায্য করতে বলে। কারণ সে চায় আপনাকে সংসারের অংশ হিসেবে পেতে।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ .যখন সে জানতে চায় তাকে মোটা লাগছে কিনা। কারণ, আপনার মতামত তার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ; এজন্যতাকে বলুন সে সুন্দর।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃযখন তাকে সুন্দর দেখায়। কারণ সে আপনারই, তাই প্রশংসা করুন।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যখন সে তৈরি হতে দীর্ঘ সময় পার করে দেয়। কারণ সে চায় তাকে আপনার চোখে সবচেয়ে সুন্দর লাগুক।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যখন সে এমন কোন উপহার দেয় যা আপনার পছন্দ হয়নি। কারণ সে আপনাকে খুশি করতে চায়, তাই তাকে বলুন, ঠিক এমন উপহারই আপনার প্রয়োজন ছিল।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যখন তার মধ্যে কোন বদঅভ্যাস গড়ে ওঠে। কারণ আপনারও এমন অনেক বদঅভ্যাসরয়েছে; প্রজ্ঞা আর কোমলতার সাথে তার সেই বদঅভ্যাস পরিবর্তন করানোর সময় এখনো আপনার আছে।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যখন সে অকারণেই কাঁদে। তাকে বলুন সব ঠিক হয়ে যাবে।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যখন সে PMS বা মাসিক অবসাদ এ ভোগে। তার জন্য চকলেট আনুন, তার পায়েরপাতায় ও কোমরে মালিশ করে দিন, এবং তার সাথে নিছকই গল্প করুন (বিশ্বাস করুন এতে কাজ হয়!)
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যদি সে অসন্তোষজনক কিছু করে ফেলে। এরকম হতেই পারে এবং এর রেষ একসময় কেটেও যাবে।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যখন সে আপনার কাপড়ে ভুলবশতঃ দাগ লাগিয়ে ফেলে। একটি নতুন জামা আপানি এমনিতেও কিনতেন।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যখন সে আপনাকে বলে আপনার কিভাবে ড্রাইভ করা উচিৎ। সে শুধু চায় আপনি নিরাপদে থাকুন।স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ যখন সে তর্ক করে। সে তাই চায় যা আপানাদের দুইজনের জন্যই ভাল হয়।
স্ত্রী কে ভালবাসুনঃ সে শুধু আপনারই। এটি ছাড়া তাকে ভালবাসার অন্য কোন বিশেষ কারণেরও প্রয়োজন নেই!!!
এই সবই নারীসুলভ স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। আর স্ত্রী আপনার জীবনেরই একটি অংশ যাকে রানীর মত মর্যাদা দেওয়া উচিৎ।
মহানবী (সাঃ) নারীদের বিষয়ে উপদেশ দিয়েছেনঃ
• তোমরা স্ত্রীদের জন্য মঙ্গলকামী হও (বুখারী ৩৩৩১, মুসলিম ৪৭)
• তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি সবচেয়ে উত্তম যে তার স্ত্রীদেরকাছে উত্তম (তিরমিজি ১১৬২)
বিদায় হজ্জ এ নবী (সাঃ) আল্লাহরপ্রশংসা ও স্তুতি বর্ণনা করে উপদেশ ও নসিহত দান করে বলেনঃ
তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার কর।...তোমাদের স্ত্রীদের উপর তোমাদের অধিকার রয়েছে, অনুরূপ তোমাদের উপর তোমাদের স্ত্রীদের অধিকার রয়েছে। তোমাদের অধিকার হল, তারাযেন তোমাদের বিছানায় ওই সব লোককে আসতে না দেয় যাদেরকে তোমরা অপছন্দ কর এবং তারা যেন ওই সব লোককে তোমাদের বাড়ীতে প্রবেশ করার অনুমতি না দেয় যাদেরকে তোমরা অপছন্দ কর। তোমাদের উপর তাদের অধিকার এই যে, তাদেরকে ভালরূপে খেতে-পরতে দেবে। [তিরমিজি ১১৬৩, ইবনু মাজাহ ১৮৫১; তাহকীক রিয়াযুস স্বালেহীন পৃষ্ঠা ১৬০]========
====================
স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে মহানবী (সাঃ) এর বানীঃ
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসুলে আকরাম (সাঃ) বলেনঃ গোটা দুনিয়াই সম্পদে পরিপূর্ণ। এর মধ্যে সবচেয়ে উত্তম সম্পদ হলো পূর্ণবতী স্ত্রী। (মুসলিম)
হযরত আবু হুরাইয়া (রাঃ) বলেন, রাসুলে আকরাম (সাঃ) ইরশাদ করেনঃযে ব্যক্তির চরিত্র ও আচরণ সবচাইতে উত্তম, ঈমাদের দৃষ্টিতে সে-ই পূর্ণাঙ্গ মুমিন। তোমাদের মধ্যে সেই সব লোক উত্তম, যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম। তিরমিযী)
হযরত উম্মে সালামা (রাঃ) এর বর্ণনা মতে, রাসুলে আকরাম (সাঃ)বলেনঃ কোন স্ত্রী লোক যদি এমন অবস্থায় মারা যায় যে, তার স্বামী তার উপর সন্তুষ্ট, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তিরমিযী)
হযরত আবু হুরাইয়া (রাঃ) এর বর্ণনা মনে, রাসুলে আকরাম (সাঃ)বলেনঃ আমি যদি কোন ব্যক্তিকে অপর কোন ব্যক্তির সামনে সিজদা করার জন্য নির্দেশ দিতাম, তাহলেস্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সিজদা করার জন্য। (তিরমিযী)
হযরম মু'য়াজ ইবনে জাবাল (রাঃ) এর বর্ণনা মতে, রাসুলে আকরাম (সাঃ) বলেনঃ যখনই কোন নারী তার স্বামীকে দুনিয়াতে কষ্ট দিতে থাকে, তখনই (জান্নাতের) আয়াতলোচনা হুরদের মধ্যে তার সম্ভাব্য স্ত্রী বলেঃ (হে অভাগিনী!) তুমি তাকে কষ্ট দিওনা। আল্লাহ তোমায় ধ্বংস করুক! তিনি তোমার কাছে একজন মেহমান। অচিরেই তিনি তোমাকে ছেড়ে আমাদের কাছে চলে আসবেন। (তিরমিযী)
উসামা ইবনে যায়েদ বর্ণনা করেন, রাসুলে আকরাম (সাঃ) বলেনঃ আমার অনুপস্থিতে আমি পুরুষদের জন্য মেয়েদের চাইতে বেশী ক্ষতিকর ফিতনা (বিপর্যয়) আর রেখে যাইনি।(বুখারী ও মুসলিম)
হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসুলে আকরাম (সাঃ) ইরশাদ করেনঃকোনো ব্যক্তি যদি তার বিছানায় স্বীয় স্ত্রীকে ডাকে; কিন্তু স্ত্রী তাতে সাড়া না দেয়ায় স্বামী তার উপর অসস্তুষ্ট হয়ে রাত কাটায়, তাহলে ফেরেশতারা ভোরপর্যন্ত তার প্রতি অভিশাপ বর্ষণ করতে থাকে । (বুখারী ও মুসলিম)
হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বর্ণনা করেন, স্বামী বাড়ীতে উপস্থিত থাকা অবস্থায় তার অনুমতি ছাড়া স্ত্রীর পক্ষে (নফল) রোযা রাখা বৈধ নয় । তার অনুমতি ছাড়া কোন ব্যক্তিকে তার ঘরে ঢোকার অনুমতি দেয়াও তার (স্ত্রীর) জন্য বৈধ নয়। (বুখারী ও মুসলিম)
উপরোক্ত হাদিসগুলো রিয়াদুস সালেহীন বই থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। (পৃষ্টা নং ১৮৯)
===========মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন, দুবাই, ইউ এ ই===========

কোন মন্তব্য নেই :