স্ত্রীরোগ ( পাতা ২ )
1 টি মন্তব্য
কি করণীয় *. রোগ অনুযায়ী চিকিৎসা *. সুষম খাবার খাওয়া ও নিয়মিত ব্যায়াম করা *. মেয়েটিকে ভালো করে পরীক্ষা করতে হবে *. থাইরয়েডের চিকিৎসা *. ইস্ট্রোজেন হরমোন বড়ি দিয়ে অনেক সময় চিকিৎসা করতে হতে পারে *. মেয়েটিকে খুব ভালোভাবে কাউন্সিলিং করা দরকার, তার ভবিষ্যত জীবন, যেমন বিয়ে, সন্তানধারণ এগুলো স্বাভাবিক নাও হতে পারে-এ সম্বন্ধে তাকে বুঝিয়ে বলা দরকার। সেকেন্ডারি এ্যামেনোরিয়া (সাধারণ মহিলার যদি হঠাৎ কোনো কারণে পিরিয়ড বন্ধ থাকে) কারণ *. আসারম্যান সিন্ড্রোম (‌ইউটেরাসের অসুখ) *. এন্ডোমেট্রিয়াল টিউবারকিউলোসিস ( ইউটেরাসের টিবি) *. মিসড এ্যাবরশন (এক ধরনের গর্ভপাত) *. প্রিম্যাচিউর মেনোপজ (ওভারি ফেলিওর হওয়ার জন্য) *. ওভারিয়ান টিউমার *. রেডিওথেরাপি বা কেমোথেরাপির কারণে ওভারিয়ান ফেলিওর*. কোনো কোনো ওষুধের কারণে গর্ভাবস্থা ঘটলে বা বাচ্চাকেব্রেস্টফিডিং করালেও পিরিয়ড বন্ধ থাকতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় অল্পবয়সী মেয়েদের পিরিয়ড ৩-৪ মাস পরে পরে হচ্ছে। এই ত্রুটি সাধারণ চিকিৎসায় সেরে যায়, না হলে পরীক্ষা করে দেখে চিকিৎসা করতে হয়। পিউবারটি মেনোরেজিয়া (অল্পবয়সিনীর অতিরিক্ত রক্তস্রাব) কোনো কোনো মেয়ের পিরিয়ড প্রথম শুরু হওয়ার পর পরই খুব হেভি ব্লিডিং হয়। এই রক্তস্রাবের প্রকৃতি অনিয়মিত, মাত্রাতিরিক্ত ও দীর্ঘস্থায়ী। এর ফলে কিশোরীর চেহারা হয়ে যায় ফ্যাকাশে, বিবর্ণ, এ্যানিমিক। তেমন ক্ষেত্রে মেয়েটিকে হাসপাতালে ভর্তি করার দরকার পড়তে পারে। মেনার্কি বা প্রথম পিরিয়ড হওয়ার পর এমন সমস্যায় বহু ছোট মেয়েই ভোগে। কেন এমন হয়? অল্পবয়সী মেয়েদের পিরিয়ড শুরু হওয়ার ঠিক পরপরই ওভারি থেকে ডিম্বাণু নির্গমন হয় না, তাই ইউটেরাসের আভ্যন্তর স্তরে (এন্ডোমেট্রিয়ম) শুধুই ইস্ট্রোজেন হরমোনের প্রভাব পড়ে। এতে করে এন্ডোমেট্রিয়ামে যথেষ্ট বৃদ্ধি ঘটে। (এন্ডোমেট্রিয়াল হাইপারপ্লেসিয়া) এবং এই কারণেইরক্তস্রাব বেড়ে যায়। পরবর্তীকালে যখন জরায়ু থেকে ডিম্বাণু বা ওভাম বের হওয়া শুরু হয় তখন প্রজেস্টেরন হরমোনের প্রভাবে এন্ডোমেট্রিয়ামের ইস্ট্রোজেন হরমোনের জন্য অতি বৃদ্ধি বহুলাংশে অবদমিত হয়। তখন রক্তস্রাব কমে গিয়ে আয়ত্তে থাকে। এরকম হলে মেয়েটির কিছু কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার। রক্ত পরীক্ষা করে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা, ব্লিডিংটাইম, ক্লটিং টাইম এবং প্লেটলেটের মাত্রা দেখে নিতে হবে। থাইরয়েড হরমোনের মাত্রাও দেখতে হবে। আলট্রাসাউন্ড করে জরায়ু বা ওভারির কোনো দোষত্রুটি আছে কি না দেখতে হবে। চিকিৎসা (১) এ্যানিমিয়ার চিকিৎসা (২) থাইরয়েড গ্রন্থি খারাপ থাকলে তার চিকিৎসা (৩) রক্তস্রাব বন্ধ করার জন্য মেড্রক্সিপ্রজেস্টেরন বড়ি বা নরএথিস্টেরন বড়ি (৪) একটি ছোট ‘ডি’ এ্যান্ড ’সি‘ (ডায়ালেটেশন এ্যান্ড কিউরেটাজ)অপারেশন দরকার হতে পারে। (৫) মেয়েটির সঙ্গে খুব ভালোভাবেকথা বলা দরকার। বলে রাখা ভালো যে বযস বাড়লে এবং ঠিকঠাক চিকিৎসা করলে এই রোগ একেবারেই সেরে যায়; সে জন্য একে বলে পিউবারটি মনোরেজিয়া, অর্থাৎ বয়ঃসন্ধিতে অতিরিক্ত রক্তস্রাব। ভবিষ্যত বিবাহিত জীবনে এই অসুখ কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে না। স্প্যাসমোডিক ডিজমেনোরিয়া (পিরিয়ডের সময় পেটব্যথা) আউটডোরে সে দিন একটি বছর পনেরো ষোলো বছরের মেয়েকে দেখলাম তার তিনজন মহিলা আত্নীয় ধরে ধরে নিয়ে আসছে। মেয়েটি পেটব্যথায় প্রায় কুঁকড়ে গেছে, হাঁপাচ্ছে কাঁদছে।কি হয়েছে জিজ্ঞেস করাতে তার মা বললেন, প্রত্যেক মাসে ‘মাসিক’ হওয়ার সময় সে ব্যথায় প্রায় অজ্ঞান হয়ে যায়। মেয়েটির নাম জানলাম আফসানা খাতুন। আজ একেবারে অসহনীয় হওয়ায় পাড়াপড়শিরা বলেছে শিগগিরহাসপাতালে চলো, চিকিৎসা না হলে এর বিয়েসাদি হবে না। অল্পবয়সী মেয়েদের এটি একটি খুবসাধারণ সমস্যা। এর কারণ হিসেবেবলা যেতে পারে, বয়ঃসন্ধিকালের মেয়েদের অত্যধিক মানসিক চাপ ও চাঞ্চল্য, দুশ্চিন্তা বিশেষত এই বয়সে, জরায়ুর অস্বাভাবিক গঠনও জরায়ুর পেশির প্রবল সংকোচন, দুর্বল শারীরিক গঠন, শারীরিক ও মানসিক অবসাদ, পিরিয়ডের সময় জরায়ুর এন্ডোমেট্রিয়ামে অতিরিক্ত পরিমাণ প্রস্টাগ্ল্যান্ডিন হরমোন নিঃসরণ ইত্যাদি। পিরিয়ড শুরুর কয়েক ঘন্টা আগে বা শুরুর সময় ব্যথা হয় এবং তা ২-৩ ঘন্টা থেকে। আরম্ভ করে ২৪ ঘন্টার মতো থাকতে পারে। এই ব্যথা তলপেট ও কোমর থেকে দুই উরুর উপরের অংশে প্রসারিত হয়। কখনও কখনও বমি বমি ভাব বা বমি হয়, ক্লান্তি, ডায়রিয়া, মাথাধরা থাকতে পারে, এমনকি মেয়েটি অজ্ঞান পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসা উপযুক্ত খাদ্য, পুষ্টি ও ঠিকমত বিশ্রাম দরকার। সাধারণস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানো, রোগীকে আশ্বস্ত করা, কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে ঠিকঠাক ওষুধ খেয়ে তা সারানো-এইগুলো করা দরকার। সেরকম ক্ষেত্রে ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ পিল পিরিয়ডের পঞ্চম দিন থেকে মাসে একুশটি করে কয়েক মাস দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। আজকাল পিরিয়ডের সম্ভাব্য তারিখের সাতদিন আগে থেকে পিরিয়ড শুরু হওয়ার পর ৩ বা৪ দিন পর্যন্ত পাইরিডকসিন বা ভিটামিন বি৬ বড়ি (পাররিকনটিন জাতীয় বড়ি) প্রয়োগ করে খুব ভালোফল পাওয়া যাচ্চে। এ কথা বলা দরকার, পিরিয়ডের সময়ে কিছু পরিমাণ ব্যথা ও অস্বস্তি প্রায়সব মহিলারই হয়ে থাকে। কারও কারও ঋতুমতী হওয়ার প্রথম ২-১ বছর কোনো ব্যথা থাকে না। তার সূত্রপাত হয় কিছুদিন পরে, যখন ওভারি থেকে ডিম্বাণু নির্গমন বা ওভিউলেশন শুরু হয়। আর বিভিন্ন মানুষের বেদনাবোধের অনুভূতির তারতম্য আছে। যে সব মেয়ে নেহাতই অজ্ঞ হয়, বেশি ভীতুহয়, তাদের ব্যথা বোধও প্রকট হয়েওঠে। অনেকে আবার সুযোগ বুঝে ব্যথার দোহাই দিয়ে স্কুল বা কলেজ কামাই করে। দুর্বল মনের মা-বাবা অত্যধিক আদিখ্যেতা করলে খুব ঝামেলা-ব্যথা আরও বেড়ে যায়। এসব ক্ষেত্রে ডাক্তারের উপদেশই সবচেয়ে ভালো।চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া তো কোনো ওষুধ খাওয়াই যাবে না। বিবাহ বা সন্মান লাভের পর এই সমস্যা আপনা থেকেই মিটে যায়। আগেকার দিনের মানুষরা একে বলতেন ‘বাধ্যকের ব্যথা’ ♥♥♥♥সমাপ্ত♥♥♥♥ প্রকাশক : সৈয়দ রুবেল উদ্দিন www.facebook.com/sayed.rubel3 ভাল লাগলে ফেসবুকে শেয়ার করুন । লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ । ভাল থাকুন সব সময় । অশ্নীলতার জোয়ারে বাংলাদেশ ।সৈয়দ রুবেল উদ্দিন http://sayedrubel.blogspot.com/2012/01/blog-post_9352.html

1 টি মন্তব্য :

নামহীন বলেছেন...

আচ্ছা আমার ৩-৪ মাস যাবত মাসিক হইতে ছে না আমি কি করব......। plz bolban keee ????