স্ত্রীরোগ ( পাতা ১ )
1 টি মন্তব্য
কি সাবলীল দক্ষতায়, কি অনুপম পারদর্শিতায় সৃষ্টি নারীর জরায়ু, ডিম্বকোষ! স্তন তৈরি হয় কি সুন্দর সূক্ষ্ম তন্তু দিয়ে, কি অপার্থিব তার বিন্যাস, সুষমা! কি শৈল্পিক কৌশলে মাতৃজঠরে স্থাপিত হয় ভ্রূণ, ধীরে ধীরে সে বেড়ে ওঠে জরায়ুর মধ্যকার এন্ডোমেট্রিয়মে... স্ত্রী শরীর বিধাতা সৃষ্টি করেছেন এক অপরূপরূপে, সুতরাং তার আভ্যন্তর কলকবজাগুলোও বিগড়োয় একটু আলাদাভাবে-সেইসব অসুস্থতার আলোচনা নিয়েই আমাদের এবারের আলোচনা ‘স্ত্রীরোগ’। আমরা যখন এনাটমি পড়তাম, তখন নারী শরীরের ভেতরকার শিল্পশৈলীআমাদের বিস্ময়ে হতবাক করে দিত।কি সাবলীল দক্ষতায়, কি অনুপম পারদর্শিতায় সৃষ্টি নারীর জরায়ু, ডিম্বকোষ! স্তন তৈরি হয় কি সুন্দরসূক্ষ্ম তন্তু দিয়ে, কি অপার্থিব তার বিন্যাস, সুষমা! কি শৈল্পিক কৌশলে মাতৃজঠরে স্থাপিত হয় ভ্রূণ, ধীরে ধীরে সে বেড়ে ওঠে জরায়ুর মধ্যকার এন্ডোমেট্রিয়মে। এই বিশেষ কারণে বিধাতা পুরুষ নারী দেহকে গড়েছেন বিশেষ পৃথকরূপে, নারী শরীরের গুরুত্বও তাই অপরিসীম। মেয়েদেরশরীরের রূপান্তর যেমন নানা বয়সে নানা রকম, অসুখও ঠিক তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। মেয়েদেরপিরিয়ড হয় ১০-১২ বছর বয়সে, ১৫-১৬ বছরে তা পূর্ণ পরিণতি পায়-‘ওগো তুমি পঞ্চদর্শী, পৌঁছিলে পূর্ণিমাতে’। ২২-২৪ বছরে বিবাহ, তার কিছু পরে সন্তান ধারণ, আজকের যুগে একটিই বড়জোর দুটি। তারপর ৪৮ থেকে ৫৪ এর মধ্যে মনোপজ। হরমোনের এতরকমতারতম্য ও পরিবর্তন পুরুষের জীবনে নেই। তাই স্ত্রী রোগের ফিরিস্তিও যথেষ্ট লম্বা। মেয়েদের বয়স অনুযায়ী সাধারণত দেখা যায় বা শোনা যায় এমন স্ত্রী রোগের একটা মোটামুটি ভাগ করা যায়। শৈশব কৈশোর থেকে ২২-২৩ বছর *. পিরিয়ড ৮ বা তার চেয়েও কম বয়সে শুরু হওয়া। *. প্রজনন অঙ্গের জন্মগত ত্রুটি--বেশি বয়স অবধি পিরিয়ড না হওয়া *. অল্প বয়সে অতিরিক্ত রক্তস্রাব (পিউবারটি মনোরেজিয়া) *. ম্প্যাসমোডিক ডিজমেনোরিয়া (পিরিয়ডের সময় পেটব্যথা) *. লিউকোরিয়া (সাদা স্রাব) ২২-২৩ বছর বয়সের পর বন্ধ্যাত্ব বা ইনফারটিলিটি *. হারমুটিজম (মেয়েদের দাড়িগোঁফগজানো) *. ওভারিয়ান সিস্ট (ডিম্বাকোষেরটিউমার) ৩৫ বছর পর *. ক্যান্সার সারভিক্স (জরায়ু মুখের ক্যান্সার) *. ফাইব্রয়েড (জরায়ু টিউমার) *. পি আই ডি (পেলভিক ইনফ্লামেটারি ডিজিজ বা তলপেটের প্রদাহ) *. এন্ডোমেটরিয়োসিস ৪০ বছরের পর *. প্রোল্যাপস (জরায়ু নিচের দিকে নেমে যাওয়া, এটির শুরু অবশ্য আরও আগেও হতে পারে) *. ব্রেস্ট ক্যান্সার ৪৫-এর পর *. প্রিমেনোপজাল সিন্ড্রোম (মেনোপজের আগেকার অস্বস্তি)ঞ্চমেনোপজ *. ডিসফাংশনাল ইউটেরাইন ব্লিডিং(অনিয়মিত ও অতিরিক্ত রক্তস্রাব) *. পোস্ট মেনোপজাল ব্লিডিং (মনোপজের পর আবার হঠাৎ রক্তস্রাব) কম বয়সে বা সময়ের আগেই যৌবনারী মেয়েটির নাম মধুবন। বয়স আটও পূর্ণ হয়নি। সকালবেলা হাসিমুখেলাফাতে লাফাতে স্কুলে গেছে। থার্ড পিরিয়ডের শেষে দেখে স্কুলড্রেস রক্তে মাখামাখি। বেঞ্চ, বই, খাতা সবেতেই একাকার।অথচ কোথাও কাটাকাটি, ব্যথাযন্ত্রণা নেই। মেয়ে ভয়ে এমন জোরে কেঁদে উঠেছে যে ক্লাস টিচার দৌড়ে এসেছেন। তিনি তো দেখেই ব্যাপার বুঝেছেন। তাড়াতাড়ি তাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে টয়লেটে নিয়ে গিয়ে ব্যবস্থা করেতার মাকে খবর দিয়েছেন। এমন ঘটনা হামেশাই ঘটে। আজকাল আবার দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ মেয়েদেরইপিরিয়ড ১০-১১ বছর বয়সের মধ্যেই হয়ে যাচ্ছে, আগে যে সীমারেখা ছিল ১২-১৩। যখন ১০ বছরের আগে পিরিয়ড শুরু হয় এবং তার সঙ্গে যৌবনারম্ভের অন্যান্য লক্ষণ (যেমন স্তনের বিকাশ ও বৃদ্ধি, শরীরের কিছু বিশেষ অংশে লোমের আধিক্য) দেখা দেয় তখন তাকে বলে প্রিকশাস পিউবারটি। মেয়েটির বয়স এ ক্ষেত্রে ১০,৯, ৮ বা তারও কম হতে পারে। পিরিয়ড শুরু হওয়ার পর শরীরের লম্বা হাড়গুলো আর বাড়ে না-তাই খুব কম বয়সে পিরিয়ড শুরু হওয়া মেয়েদেরহাইট সাধারণত কম হয়। এমন কেন হয়? কি কারণে?গঠনগতঃ অনেক সময় তেমন কোনো কারণপাওয়া যায় না। সময়ের আগেই হাইপোথ্যালামাস-পিটুইটারি-ওভারি এই তিনটি গ্রন্থির মধ্যেসমন্বয় ঘটার ফলে এমন হতে পারে। মস্তিষ্কের রোগঃ মেনিনজাইটিস, এনসেফালাইটিস, পিটুইটারি টিউমার ইত্যাদি কারণেও ৮-৯ বছরের কন্যা শিশুর পিরিয়ড শুরুহয়ে যেতে পারে। ওভারির টিউমারঃ ওভারির কিছু কিছু টিউমার বেশি মাত্রায় ইস্ট্রোজেন হরমোন নিঃসরণ করে। এই হরমোনের আধিক্যের জন্য আগে আগে পিরিয়ড শুরু হওয়া সম্ভব। হরমোন ওষুধ খেলেও এমন হতে পারে। কি কি করণীয় *. মেয়েটির পারিবারিক ইতিহাস জানা খুব জরুরি। মা বা দিদিরওকি এমন হয়েছিল? *. কয়েকটি রক্ত পরীক্ষা করা দরকার। *. আল্ট্রাসাউন্ড করে দেখা প্রয়োজন ওভারিতে টিউমার আছে কি না। *. মাথার এক্স-রে, সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করে দেখতে হবে কোনো *. অস্বাভাবিকতা আছে কি না। *. রোগ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে। *. অনেক সময় কোনো রোগ ছাড়াই আগে আগে পিরিয়ড শুরু হয়। প্রজনন অঙ্গের জন্মগত ত্রুটি *. যোনির গঠন অদ্ভুত হতে পারে (এনলার্জড ক্লিটোরিস বা বর্ধিত ভগ্নাঙ্কুর) *. ইমপারফোরেট হাইমেন (খুব শক্ত সতীচ্ছেদ) , রিজিড হাইমেন *. ট্রান্সভার্স ভ্যাজাইনাল সেপটাম (যোনির মধ্যে পরদাজাতীয় ভাগ) *. ডাবল সারভিক্স *. ডাবল ইউটেরাস। জরায়ুর গঠনগত ত্রুটি *. আরকুয়েট ইউটেরাস *. সেপটেট ইউটেরাস *. এই ত্রুটিগুলো আজকাল অত্যাধুনিক অপারেশন বা চিকিৎসার সাহায্যে ঠিক করা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সনন্তান ধারণ ঘটানো সম্ভব, কোনো কোনোটিতে মিসক্যারেজ বাবাচ্চার অবস্থান অস্বাভাবিক হলেও তার চিকিৎসা আছে। বেশি বয়স অবধি পিরিয়ড না হওয়া ১৬-১৭ বছর বয়সের পরও পিরিয়ড শুরু না হওয়া বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন- *. অপুষ্টি *. দীর্ঘস্থায়ী কোনো রোগ *. থাইরয়েডের অসুখ *. ব্রেন টিউমার *. জন্মগত ত্রুটি *. জরায়ুর অস্বাভাবিকতা *. হাইমেন বা সতীচ্ছেদের অস্বাভাবিকতা--যোনিতে কোনো পরদা বা বাধা থাকা--ক্রোমোজমের অস্বাভাবিকতা আরো পড়ুন, স্ত্রীরোগ ( পাতা ২ )

1 টি মন্তব্য :

raisa বলেছেন...

আচ্ছা আমার ৩-৪ মাস যাবত মাসিক হইতে ছে না আমি কি করব......। plz bolban keee ????