নর-নারীর যৌনানুভূতি, বীর্যতে কি থাকে " আরিফ মাহমুদ সাহাবুল

কোন মন্তব্য নেই
বীর্যের মাথায় ক্রোমোজম থাকে এটি পুরুষের উর্বরতার উদ্ভব ঘটায়। এক ফোঁটা বীর্যের মাথা হল একটি ক্ষুদ্র
পিনের মাথার আকারের সমান। অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে এটি দেখা যায়। একজন মানুষের দিনে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন বা৫০,০০০০০০০ কোটি (পঞ্চাশ কোটি) বীর্য কণা তৈরি হয়।বীর্য একা একা নিজে থেকেইলিঙ্গ থেকে পতন হতে পারে না। যৌনমিলনকালে বা অন্যকোনো উপায়ে যেমন হস্তমৈথুনের সময় বীর্যস্খলন ঘটে। প্রতিবার যে পরিমাণ বীর্যস্খলন হয় তাতে ৪০-৫০ কোটির মত শুক্রকীট থাকে। কিন্তু মজার কথা হলনারীকে গর্ভবতী হওয়ার জন্য কেবলমাত্র একটি শুক্রকীটই যথেষ্ট। পুরুষের লিঙ্গের মাধ্যমেনারীর যোনি বা জরায়ু মুখেবীর্যরস নিক্ষিপ্ত হবার পর শুক্রকীটগুলো এক প্রকার লেজের দ্বারা সাঁতার কেটে জরায়ুর ভেতরে প্রবেশ করে এগিয়ে যায়। পুরুষের মধ্যে যখন যৌবনের আগমন ঘটে তখন তার টেস্টিসে বা অন্ডকোষে শুক্রকীট অনবরত তৈরি হতে আরম্ভ করে দেয়। আর এ সময় থেকেই পুরুষরা সন্তান জন্মদানে সক্ষম হয়ে ওঠে।
গবেষকরা ল্যাবরেটরিতে টেস্টটিউবে কাচের মধ্যে গবেষণা করে দেখেছেন যে, শুক্র ব্যতীত অন্যান্য যেসব উপাদান বীর্যে পাওয়া যায় তার ৯০ শতাংশই তরল পানি জাতীয় উপাদান। এছাড়াও বীর্যে থাকে সুগার বা গ্লুকোজ যা কি না শুক্রাণুর কার্যকারিতা ও বলিষ্ঠতারজ্বালানিস্বরূপ। বীর্যে আরো থাকে ক্ষারীয় উপাদান। প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের কিছু পরিমাণএনজাইম ও কিছুমাত্রায় ভিটামিন সি, কিঙ্ক এবং থাকে কোলেস্টেরল। দেহের বীর্য সংশ্লেষণ প্রক্রিয়াটি অন্যান্য দশবারোটা শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার মতোই সাধারণ।এটি তৈরিতে বিশেষ রকমের খাদ্য উপাদানের সরবরাহেরপ্রয়োজন হয় না। আসল কথা হল বীর্যের সাথে খাবারের কোনো প্রত্যক্ষ বা ডাইরেক্ট সম্পর্ক নেই। যদি এ জাতীয় কোনো ধরনের সম্পর্ক থাকতো, তবে মাননীয় ডাক্তার মহাশয়বৃন্দরা প্রজনন বা সন্তান উৎপাদনে অক্ষম পুরুষদেরকে বেশি বেশি খাদ্য খেতে উপদেশ দিতেন।আমাদের দেহে প্রতিনিয়ত দিনরাত চব্বিশঘন্টা বীর্য তৈরি হচ্ছে আর তা সাময়িকভাবে সেমিনাল ভেসিক্যালে জমা থাকছে। ধারণক্ষমতা পূর্ণহবার পরে এর বাড়তি অংশ যৌন সঙ্গম বা মাস্টারবেশন প্রক্রিয়া ওস্বপ্নদোষের মাধ্যমে তা বেরিয়ে যায়। একটা কথা সবারই মনে রাখা দরকার যে,দেহের মাঝে বিরতিহীনভাবেবীর্য সংশ্লেষণ ঘটছে স্খলনের উদ্দেশ্যে, জমা বা সঞ্চিত থাকার জন্য নয়।বীর্য নির্গমন যে প্রক্রিয়াই ঘটুক না কেন, তা মানব দেহের উৎপাদন কর্মকান্ডকে সচল, সবল আর গতিশীল রাখে।কাজেই স্বাভাবিক সেক্স সঙ্গম বা নিদ্রার মধ্যবর্তী স্বপ্নদোষ বা যে কোনোভাবেই হোক না কেন, বীর্যস্খলন বা বীর্যপাত ক্ষতিকারক নয় বরঞ্চ স্বাস্থ্যসম্মত।
এতক্ষণ আমরা পুরুষের সেক্স অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সম্পর্কে যৎসামান্য জানতে পারলাম। জানতে পারলাম পুরুষাঙ্গের মত প্রধান কয়েকটি যৌন অর্গাজমের কার্যকলাপ। এখন আমরা অনুরূপভাবে নারী দেহ সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করবো। বুঝতে চেষ্টা করবো ফুলের মত কোমল চাঁদের মত সুন্দর নারীদের সেক্স অঙ্গগুলোরকার্যকলাপ। পুরুষ আর নারী একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। একজনকে বাদ দিয়ে অন্যজনের সেক্স কোনোভাবেই ভাবা যায় না। নারী আর পুরুষের যৌথ অংশগ্রহণ ও মিলনেই পরিপূর্ণতা লাভ যৌনজীবনে। আর তার ফলেই রচিত হয় একটি সুখময়-তৃপ্তিময়-ভালোবাসাময় সুখী দাম্পত্য জীবন।
নারীর যৌনতা বা সেক্স
নারী সে তো সারা দেহে যৌনচেতনায় পরিপূর্ণ। যে কোনো ভালো সেক্স বিজ্ঞান বই ঘাঁটলেই বোঝা যাবে যে,
নারী দেহের মাথার চুল থেকে শুরু করে পায়ের নখ পর্যন্ত লুকিয়ে রয়েছে সেক্স। লুকিয়ে রয়েছে যৌন উন্মাদনা। এটি একটি ঐতিহাসিক সত্য কথা যে, প্রায় প্রতিটি নারী তার নিজের সুন্দর আকর্ষণীয় দেহ সম্পর্কে খুব সামান্যই জানে। তবে সময়ের পরিবর্তন জীবন ধারার পরিবর্তনে নারীদেরমন-মানসিকতায় যে পরিবর্তন হচ্ছে তাতে করে ইদানীংকালে অনেক নারী তাদের যৌনতায় ভরপুর, নাজুক শরীর, বিচিত্র যৌন জীবন ও সেক্স স্বাস্থ্য সম্পর্কে দারুণ আগ্রহ পোষণ করছে এবং তারা নিজেরদেহ সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করছে হচ্ছে সচেতন। একটু পেছনে ফিরে তাকালে দেখা যাবে যে নারীর সেক্সের ব্যাপারে আলোচনা বিংশ শতাব্দির শুরুতেও তেমন একটা সাপোর্ট পায়নি। বরঞ্চ একে তখন দেখা হত অশ্লীলতার দৃষ্টিভঙ্গিতে। নারী যৌনস্বাস্থ্যের ব্যাপারে আলোচনা ছিল অনেকের কাছে যৌন সুড়সুড়ি পাবার উপায় হিসেবে। তবে দিন পাল্টেছে, হয়েছে সবাই সচেতন। এখন কিন্তু কি পুরুষ কি নারী কমবেশি সবাই সেক্স স্বাস্থ্য, সেক্স বিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। তাই এটি একটি আশাপ্রদ ও সুখের বিষয়। নারীর যৌন হেল্‌থ সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমেই নারীর সেক্স অঙ্গের নানাদিক সম্ব েজানতে হবে কিন্তিু এটি হওয়া উচিত অবশ্যই বিজ্ঞান সমমত-পরিশিলিত এবং যুক্তি নির্ভর। নারীর দেহের বাইরে এবং ভেতরে দুদিকেই যৌন অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো অবস্থিত। যখন একজন পুরুষের যৌন উত্তেজনা বা সেক্স বাইরে থেকে সহজেই টের পাওয়া যায়ঠিক তখন একজন নারীর যৌন অনভূতি এবং যৌন উত্তেজনা বা সেক্সের কোনো । আর এটাবোঝা ততটা সহজসাধ্যও হয় না।
বিজ্ঞান সম্পর্কিত তিনটিবিষয় একজন নারীকে পুরুষের চেয়ে আলাদা করেছে যা তিনটি উদাহরণ দিয়েই বোঝা সম্ভব হবে। এইতিনটি বিষয় হল-
*. নারীর শরীরে ঢ যৌন ক্রোমোজম থাকে। যা তার জেনেটিক পার্থক্য নির্ধারণ করে।
*. নারীর বহিঃযৌনাঙ্গ যারদ্বারা বোঝা যায় যে সে একজন নারী।
*. নারীর আভ্যন্তরীণ যৌনাঙ্গ বা ইন্টারনাল সেক্স অর্গান-যা পুরোপুরি পুরুষের চেয়েভিন্ন। এভাবেও পুরুষ থেকে নারী সম্পূর্ণরূপে আলাদা।
নারীর যৌনাঙ্গ দু’প্রকার। একটি হল বহিঃযৌনাঙ্গ বা এক্সটারনাল সেক্স অর্গানএবং অপরটি হল আভ্যন্তরীণ যৌনাঙ্গ বা ইন্টারনাল সেক্স অর্গান। পুরুষের যৌনাঙ্গের সমস্ত অংশটাই বাইরে প্রকাশ পায়। আর নারীর কিন্তু সবটা না হলেও কিছু অংশের বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়। তবে নারীর যৌনাঙ্গের বাইরের চেয়ে ভেতরের অংশটাই প্রধান এবং জটিল। আর সেক্সের প্রায় সব ব্যাপারেই ভেতরের যৌনাঙ্গগুলো রতিক্রিয়া, গর্ভধারণ এবং নারীর নারীত্ব রক্ষার বেশিরভাগকাজগুলো সম্পন্ন করে থাকে। নারীর যখন যৌন উত্তেজনা বা সেক্স জাগে তখন শুরুতেই বহিঃযৌনাঙ্গথেকে তা আভ্যন্তরীণ যৌনাঙ্গ পর্যন্ত এক অভাবনীয় বিস্ময়কর মনোমুগ্ধকর আলোড়ন তোলে।

কোন মন্তব্য নেই :