ভালোবাসা এবং যৌনতা

কোন মন্তব্য নেই
মিলনকালীন যৌনাঙ্গে
ব্যথার মানসিক কারণ
*. যৌনপুলকের ঘাটতি
*. যৌনসুখ ও শিহরণের অভাব
*. যৌনতা বা সেক্স সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণার অভাব
*. যৌনাঙ্গে আঘাত পাওয়ার প্রতি ভয় বা ফোবিয়া
*. গর্ভাবস্থায় যৌনমিলন
*. গর্ভবতী হওয়ার ভয়
*. শৈশবে যৌন অত্যাচারমূলক অভিজ্ঞতাবা সেক্সুয়াল অ্যাবিউস
*. সাইকোলজিক্যাল বা মেন্টালি আঘাত
*. সেক্স সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা
*. যোনি পিচ্ছিল না হওয়া বা যোনির শুষ্কতা অর্থাৎ মানসিকভাবে যৌনক্রিয়ায় পর্যাপ্ত উত্তেজনার অভাব বা উত্তেজনা সৃষ্টি করতে না পারা
*. সঙ্গী বা সাথীর মাঝে কোনো ব্যাপারে বনিবনা বা ভুল বোঝাবুঝি অথবা প্রেম-ভালোবাসার অভাবেও এ সমস্যার উদ্ভব হতে পারে
মিলনকালীন যৌনাঙ্গে ব্যথার দৈহিক কারণ
*. জরায়ুতে টিউমার যেমন-ফাইব্রয়েড
*. নারীর ইউরেথ্রাতে সংক্রমণ
*. যোনির শুষ্কতা
*. যোনিতে ক্ষত/ইনফেকশন যেমন-হারপিস
*. যোনির সারভিক্স, ডিম্বনালি বা ফেলোপিয়ান টিউব অথবা গর্ভাশয়ে ইনফেকশন
*. শ্রোণিচক্রের বা পেলভিসের প্রদাহজনিত ব্যাধি
*. অপারেশন-পরবর্তী কোনো জটিলতায় যোনি দেয়ালে চাপ অনুভূতির কারণে
*. এন্ডোমেট্রিওসিস
*. সন্তান প্রসব-পরবর্তী যোনির অপারেশনের জটিলতা
*. হঠাৎ করে সতীচ্ছদ ছিন্ন হওয়া
*. নারীর যোনির পর্দা বা সতীচ্ছদ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি মোটা হওয়া
*. মেনোপজ বা রজঃনিবৃত্তির পরে যোনিদেয়াল শুষ্ক ও পাতলা হয়ে যাওয়া
*. জন্মনিরোধক ফোম, কনডম বা ডায়াফ্রাম অথবা জেলির কারণে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া তৈরি হওয়া
মিলনকালীন নারীর যৌনাঙ্গে ব্যথার লক্ষণ ও উপসর্গ
*. পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করাতে গেলে যোনিতে ব্যথা সৃষ্টি হয়
*. সঙ্গমকালীন যোনি অঞ্চলে দারুণ ব্যথা পাওয়া
*. যৌনতার বা সেক্সের বিভিন্ন ভঙ্গিতেও যোনিএরিয়ার ব্যথা-বেদনা হতে থাকা
*. যৌনমিলন বা সেক্স করার সময় সামান্য নড়াচড়াতেইব্যথা তীব্র হয়ে যাওয়া
*. মিলনের সময় নারী যোনিতে Discomfort অনুভব করতে থাকে
*. যৌনমিলন নারীর কাছে ঘৃণা বা অতৃপ্তি অথবা যাতনার ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
*. নারী বিরক্ত হয়ে ওঠে
*. যৌনমিলনে ভীতসন্ত্রস্তথাকে, ফলে তার মাঝে তৈরি হয় Sen phobia
*. নারী স্বামীর সান্নিধ্য থেকে পালিয়েবেড়ায় বা দূরে দূরে থাকে
জটিলতা
*. এ সমস্যায় নারীর আত্মসম্মানবোধ হ্রাস পায়
*. যৌন অনুভূতিবোধ বিকৃত হয়ে যায়
*. ব্যক্তিত্বজনিত সমস্যার সৃষ্টি হয়
*. মানসিক সমস্যা দেখা দেয় (কোনো কোনো ক্ষেত্রে)
এ রোগে করণীয়
অভিজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে রোগীর পুরো মেডিকেল ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা ইনভেস্টিগেশন করাতে হবে।উপসর্গগুলোর ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ করা দরকার। প্যাপ স্মিয়ারসহ যোনির যে কোনো অ্যাবনরমাল ক্ষরণের কালচার টেস্ট করাতে হবে। আসল রোগ, আঘাতবা ইনজুরি অথবা যোনির গঠনগত ত্রুটি থাকলে সেগুলোর উপযুক্ত ডাক্তারদ্বারা চিকিৎসা করাতে হবে। মানসিক কারণ দায়ী থাকলে Sen Education ওমনোবিশেষজ্ঞের কাউন্সিলিং বা সাইকোথেরাপির দরকার হবে।সেক্স বা যৌনতা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞান বা ধারণা অর্জন করতে হবে এবংযৌনতা সম্পর্কে নেতিবাচকধারণা পরিহার করে ইতিবাচক ধারণা ও মনোভাব রোগীকে সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।নারীর যৌনাঙ্গে ব্যথার চিকিৎসা

যোনির শুষ্কতা বেশি হলে পিচ্ছিলকারক K Y লুব্রিক্যান্ট ব্যবহারকরা যেতে পারে
*. ইনফেকশন থাকলে তার চিকিৎসা করাতে হবে
*. উষ্ণ গরম পানিতে প্রতিদিন ৩-৪ বার যোনি ধুতে হবে
*. যৌনাঙ্গ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে
*. দুশ্চিন্তা বা টেনশনকেযথা সম্ভব এড়িয়ে চলার অভ্যাস গড়তে হবে। প্রয়োজনে সেক্সোলজিস্টবা সাইকোলজিস্টের শরণাপন্ন হতে হবে।
যৌনবিকৃতি ও আচরণ
যৌনতার কোন আচরণটি স্বাভাবিক আর কোন আচরণটি অস্বাভাবিক তা নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন মতান্তর। যৌনতার আচরণ একেক দেশে একেক রকম। এক দেশে যা স্বাভাবিক অন্য দেশে তা অস্বাভাবিক। আবার এক দেশে যা অস্বাভাবিক অন্য দেশে তা স্বাভাবিক। যে যৌনতা স্বাভাবিকতার শেষ সীমানা অতিক্রম করে তা বিকৃত যৌনতা। বিকৃত যৌনতার কারণ-
*. স্বাভাবিক যৌনসঙ্গীর অভাব
*. প্রয়োজনীয় যৌনশিক্ষার অভাব
*. বিকৃত ও অস্বাভাবিক পারিবারিক পরিবেশ
*. স্বাভাবিক ও যৌন আচরণের দীর্ঘমেয়াদি অভাব, বঞ্চনা
*. বিকৃত ও স্বাভাবিক যৌন আচরণের পার্থক্যকরণে অসামর্থ্যতা
*. বিপরীত লিঙ্গের প্রতি ভীতিকর অভিজ্ঞতা
*. শৈশবকালীন যৌন আচরণের প্রত্যাবৃত্তি
*. শৈশবের অনাকাঙ্ক্ষিত ওতিক্ত যৌন অভিজ্ঞতা।
এবার যৌন বিকৃতিমূলক
কিছু যৌন আচরণ উল্লেখকরা হলো
*. পিপিংটম
*. ট্রান্সসেক্সুয়ালিটি
*. ট্রান্সভেসটিজম
*. শ্লীলতাহানি
*. এক্সবিশনিজম
*. হোমোসেক্সুয়ালিটি/সমকামিতা
*. ফেটিসিজম
*. পায়ুমেহন
*. বহুগামিতা
*. নিম্ফোম্যানিয়া
*. হস্তমৈথুন/মাস্টারবেশন
*. জেরেন্টোফিলিয়া ইত্যাদি
পিপিংটম
যে মানুষ অন্যের গোপন ব্যাপার বা যৌনক্রিয়া দেখার জন্য জানালা বা দরজার ফুটো দিয়ে উঁকি মেরে যৌনতা বা যৌনক্রিয়া বা নগ্ন শরীর দেখে বেড়ায় সেটা বোঝাতে পিপিংটম শব্দ ব্যবহার করা হয়। কেউকেউ আবার জানালা বা ছাদে দাঁড়িয়ে দুরবিন দিয়ে অন্যের গোপন কাজগুলো অবলোকন করে মজা পায় তাও পিপিংটমের পর্যায়ে পড়ে। এ ধরনের বিকৃত যৌনচারীরা অন্যের যৌনাঙ্গ বা অন্যের যৌনমিলন/যৌনক্রিয়া দেখার জন্য ঘরের যে কোনো ফুটোয় চোখ রেখে আড়াল থেকেএ ধরনের দৃশ্য অবলোকন করেসেক্স উত্তেজনা অনুভব করে। কেউ কেউ এ সময় এ দৃশ্য দেখার পাশাপাশি হস্তমৈথুনও করে থাকে। এ ধরনের মনোভাব সম্পন্ন ব্যক্তি এ ধরনের অপকর্মে মজা পায়, তৃপ্তি পায়, উত্তেজিত হয়।
ট্রান্সসেক্সুয়ালিটি
এ ক্ষেত্রে দেখা যায় ব্যক্তির বিপরীত লিঙ্গে রূপান্তরিত হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা জন্মে। কোনো কোনো লোককে দেখা যায় যে এধরনের বাসনায় সে বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তির মতো যৌন আচরণ করে বেড়ায়, কোনোকোনো ক্ষেত্রে এ ধরনের মনোভাব সম্পন্ন ব্যক্তিরা প্রয়োজনে আধুনিকতম হরমোন থেরাপি বা সার্জারি করেও বিপরীত লিঙ্গে রূপান্তরিত হয়ে যায়।
ট্রান্সভেসটিজম
বিপরীত লিঙ্গের পোশাক-পরিচ্ছদ বা অলংকার পরিধান করতে পছন্দ করে আবার বিপরীত লিঙ্গের মতো আচরণ ও পেশায় তাদের মতো হতে চেষ্টা করে। আধুনিক যুগের অনেক ফ্যাশনও এই ট্রান্সভেসটিজমের আওতায় পড়ে যায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছেলেমেয়েদের বেলায়।
এক্সিবিশনিজম
এক্সিবিশনিজমের অর্থ দাঁড়ায় প্রদর্শন করা। এক্সিবিশনিজম বলতে বোঝায়যখন কোনো পুরুষ বা নারী অনেক লোকের সামনে তার যৌনাঙ্গ আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে উন্মোচিত বা প্রদর্শন করে যৌন আনন্দ লাভ করে বা অন্যের যৌনাকর্ষণের চেষ্টা করে।এ ধরনের যৌন বিকৃতি অনেক সময় অনেক অঘটন ঘটাতে পারে। তাই এক্ষেত্রে পরিবারকে সজাগ হতে হবে।
হোমোসেক্সুয়ালিটি/লেসবিয়ানিজম
এটি হলো আরেক ধরনের যৌন বিকৃতি। এ ধরনের সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির সংখ্যা পৃথিবীতে অনেক! এ ধরনের যৌন বিকৃতিতে দুজন পুরুষ বা দুজন ছেলে অথবা দুজন মহিলা বা মেয়ের মধ্যে ঘটে থাকে যৌন ক্রিয়ামূলক আচরণ। এ ধরনের আচরণে দুজন ব্যক্তিরই সমান সম্মতি থাকে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে একজনের নাও থাকতে পারে। যারা এ ধরনেরবিকৃত যৌন আচরণে অভ্যস্ত বা আসক্ত হয়ে যায় তাদের আর বিপরীত লিঙ্গের কাউকে ভালো লাগে না বা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি সেক্স জাগে না এবং বিপরীত লিঙ্গের মানুষকে বিয়ে করতেও রাজি হয় না। এ ধরনের সমকামী নারী বা পুরুষ তাদের অন্য ধরনের সেক্স ওয়ার্ল্ড তৈরি করে নেয় এবং সেটাতে তারা প্রায় সময়ই বিচরণ করে বেড়ায়।
পায়ুমেহন
এতে দুজন পুরুষ বা একজন পুরুষ ও একজন নারীর মধ্যেপায়ুপথে যৌনমিলন হয়। বালকদের এ কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ উদ্দেশ্যে বালকদের পাচারও করা হয়ে থাকে। এ ধরনের যৌনাচার সাধারণত কারাবন্দি, মিলিটারি ব্যারাক, হোস্টেলে হয়ে থাকে। হিজড়াদের সাথেও এ ধরনেরপায়ু পথে যৌন কাজ করা হয়ে থাকে। যারা অনেক দিন যাবৎ নিজের পরিবার বাস্ত্রী থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে তাদের মাঝেও কোনো কোনো সময় এ ধরনের যৌন বিকৃতি হতে দেখা যায়। এ ধরনের যৌন আচরণ মোটেও ঠিকনয়। তাই এ ধরনের আচরণে অভ্যস্ত হওয়া উচিত নয়।
যৌন বিকৃতি বা অস্বাভাবিকতা যে রকমভাবেই দেখা যাক না কেনতা একটি সুস্থ সমাজের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই এক্ষেত্রে পরিবার থেকে শুরু করে সবারই সজাগ হওয়া প্রয়োজন এবং প্রয়োজনে একজন মনোবিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।

কোন মন্তব্য নেই :