যৌনতার অজানা কথা,জি স্পট ও আরো কিছু কথা!
কোন মন্তব্য নেই
জি স্পট’ নারী দেহের মানচিত্রে এর অবস্থান। ডাঃ পেরি, ডাঃ ইতপলি ও ডাঃ লাডাস নামের তিনজন বিজ্ঞানী নারী দেহের ‘জি সপট’-কে সবার কাছে পরিচিতকরে দিয়েছেন। নারী দেহের গোপনাঙ্গে এ সপটের অবস্থান। নারী যৌনাঙ্গেরযোনি গোত্রে লুকানো এ জায়গাটি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল। নারীর মাঝে চরম পুলকের অনুভূতি আর শিহরণ জাগায় যৌনাঙ্গের এ অংশটি।
এর অবস্থানের একদম সূক্ষ্ম হিসাব জানিয়ে দিয়েছেন গবেষকবৃন্দরা।
এর অবস্থান হলো যোনির অগ্রবর্তী গাত্রে যা যোনি মুখ হতে পাঁচ সে.মি. পরিমাণ গভীরে থাকে।
এর আকার শিমের বিচির মত কিন্তু যৌন উত্তেজনায় এর সাইজ বৃদ্ধি পায়।
এত দিনকার প্রচলিত নানা তত্ত্বকে পাল্টে দিয়েছে এর আবিষ্কার।
অর্গাজমকে ঘিরে মনোবিজ্ঞানী ফ্রয়েডের দেয়া যে তত্ত্ব আলফ্রেড কিংসে পঞ্চাশের দশকে বাতিল করে দেন আশির দশকে এ ‘জি স্পট’ আবিষ্কার ফ্রয়েড তত্ত্বকে নতুন গ্রহণযোগ্যতা দান করেছে।
এ নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্কযৌন সমীক্ষকদের মাঝে।
এক দল এস্পটের উপস্থিতি মানতে রাজী নন।
কারো কারো অভিমত নারী যৌনাঙ্গে এ স্পট থাকতে পারে কিন্তু সবার মাঝে নেই।
এর উপস্থিতির কথা মাত্র দশ শতাংশ মহিলাদের বেলায়,এক গবেষক এ কথা বলেছেন।
প্রতি তিনজনে দু’জন নারীরবেলাতে এর উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায় - এটি হলো অপর আরেক দল বিজ্ঞানীদের কথা।
গবেষকবৃন্দ এ নানান বিতর্ক সম্পর্কে অভিমত দেন ঠিক এভাবে যে, কোনো নারীর যৌনাঙ্গে এর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গেলে প্রথমেই দেখতে হবে তার যৌন দৃষ্টিভঙ্গী আর যৌন সচেতনতা কেমন ?
এ কারণেই যতই দিন যাচ্ছে এ বিশেষ জি স্পটটির অধিকারিণী নারীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
এ স্পটের জি নাম দেয়ার কারণ আছে।
গ্রাফেন রাজ নামের একজন ফরাসী গাইনোকলজিস্ট সর্বপ্রথম এর ধারণা দিয়েছিলেন। তার নাম অনুসারে প্রথম অক্ষর দিয়ে এর নামকরণ করা হয়।
আমাদের মনের যে যৌন শিহরণবোধ তার মূল উৎস হলো সেক্স হরমোন আমরা এমন কথাই এতদিন শুনেছি।
মহিলাদের বেলাতে এস্ট্রোজেন প্রজেস্টেরন আর পুরুষদের বেলাতে টেস্টোস্টেরন।
নারী আর পুরুষের বেলাতে যথাক্রমে ডিম্বাশয় আর শুক্রাশয় এ সেক্স হরমোনের ক্ষরণের দায়িত্বপালন করে থাকে।
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর-কিশোরীর দেহে সেকেন্ডারিসেক্স বৈশিষ্ট্যের বিকাশঘটে এ সেক্স হরমোনের প্রভাবে।
এটি একবারে স্বতঃসিদ্ধ বিষয়।
এর পাশাপাশি সাম্প্রতিক গবেষকরা এক অভিনব নতুন তথ্য দিয়েছেন। মানুষের মনের যৌন তাড়নাবোধ বা লিকেজ এর মূলনিয়ামক হলো এটেস্টোস্টেরন বা টেস্টোস্টেরণজাত ক্ষরণগুলো -
এন্ডোজেনও বলা হয় শেষোক্তগুলোকে।
পুরুষ আর নারী দু’জনার বেলাতেই এটি প্রযোজ্য।
লিবিজে শব্দের পারিভাষিকঅর্থ হলো যৌন কামনা।
লিবিজেকে মনোবিজ্ঞানী ফ্রয়েড মানবের মূল চালিকা শক্তি বলেও অভিমত করেছিলেন।
পুরুষ দেহ থেকে না হয়ে শুক্রাশয় হতে ক্ষরিত হয়ে সহজাতভাবে বর্তমান থাকে এটেস্টোস্টেরন।
মহিলা দেহে টেস্টোস্টেরনবা এন্ড্রোজেন আসবে কোথা থেকে ?
তাহলে নারীদের লিবিজে নিয়ন্ত্রিত হয় কিভাবে ?
নারীদের রক্ত স্রোতে গবেষকরা দেখেছেন সূক্ষ্মমাত্রার এন্ড্রোজের উপস্থিতি।
এর মাত্রা পুরুষদের তুলনায় হাজার ভাগেরও কম।
শারীরবৃত্তীয় প্রভাব এত কমমাত্রার এন্ড্রোজেন কিরাখতে পারে ?
অথচ পুরুষ আর নারীর লিবিজের মাঝেতো বিস্তর ফারক নেই।
এতটা সূক্ষ্মমাত্রার এন্ড্রোজেন নিয়ে নারীরা পুরুষদের সমপর্যায়ের লিবিজের অধিকারী হলো কিভাবে ?
এ প্রশ্নের জবাব গবেষকরা দেন ভিন্ন আঙ্গিকে।
গবেষকদের ব্যাখ্যা নারী দেহে ক্ষরিত টেস্টোস্টেরন আর এন্ড্রোজেন মাত্রা কম হতে পারে।
কিন্তু নারী দেহ এর প্রতিঅতিমাত্রায় সংবেদনশীল।
একারণে সূক্ষ্মমাত্রায় ওঅনেক বেশি শারীরবৃত্তীয় প্রভাব তৈরি করে থাকে।
নারী দেহের এড্রিনাল কর্টেক্স নার্সের হরমোন গ্রন্থি হতে এ এন্ড্রোজেন ক্ষরিত হয়।
পাশাপাশি ডিম্বাশয় নিজেওসামান্য মাত্রার টেস্টোস্টেরন ক্ষরণ করে থাকে।
সাম্প্রতিক উদ্ভাবিত তথ্যের ব্যবহারিক প্রয়োগহচ্ছে রজঃনিবৃত্তি পরবর্তী হরমোন থেরাপিতে।
অনেক নারী তাদের যৌন ইচ্ছা কমে যাবার কথা বলেনরজঃনিবৃত্তিকালে।
সাম্প্রতিককালে নারীদের রজঃনিবৃত্তিকালীন হরমোন থেরাপিতে ইস্ট্রোজেন আর প্রজেস্টরন হরমোন পাশাপাশি পুরুষ সেক্স হরমোন টেস্টোস্টেরন নেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
এতে নাকি হরমোন থেরাপির উপযোগিতা অনেক বেশি বেড়ে যেতে দেখা যায়।

লেখকঃ অধ্যাপক ডা. এ এইচ মোহাম্মদ ফিরোজএমবিবিএস এফসিপিএস এমআরসিপি এফআরসিপি

আরো জানতে পড়ুনঃ মেডিক্যাল সেক্স গাইড  বইটি। এখানে ক্লিক করুন।

কোন মন্তব্য নেই :