যোনির শুষ্কতা বিষয়ক প্রশ্ন ও উত্তর- ছবি সহ
কোন মন্তব্য নেই
যোনি বিষয়ক সকল পোস্ট দেখুন


যোনির শুষ্কতা ব্যাপারটি নারীদের নানা যৌন আচরণে একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। এটি যৌন জীবনে চরম অসুখী অভিজ্ঞতার জন্ম দিতে পারে। যোনির শুষকতা জনিত কারণে অনেক নারী যৌনমিলনে পরিতৃপ্তি বা সঙ্গমের সময় চরমপুলক অনুভূতি লাভ করতে পারে না। এতে করে যৌনতা সম্পর্কে তাদের বেদনাদায়ক ও নেতিবাচক অনুভূতির জন্ম নেয়। কিন্তু যোনির শুষ্কতা কেন হয়? এ নিয়ে যৌন বিশেষজ্ঞরা নানা পর্যায়েঅনেক গবেষণা চালিয়েছে। বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের নানা গবেষণায় যা বেরিয়ে এসেছে তা হলো-
নারীর যৌনজীবনে এস্ট্রোজেন নামক হরমোনটিবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ এস্ট্রোজেন হরমোনের লেবেল বাচ্চা জন্মের পর স্বাভাবিকের তুলনায় অনেককমে যায়। এস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতিজনিত কারণেতীব্র মাত্রার যোনি শুষকতা দেখা দিতে পারে। অবশ্য এ মেডিকেল জটিলতাটি ধীরে ধীরে সেরে ওঠে।
যেসকল নারীদের মনোপজ বা রজঃনিবৃত্তি হয়ে গেছে তাদের রক্তে এস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা ধীরে ধীরে নিঃশেষিত হয়। ফলশ্রুতিতে যোনির কোষকলাগুলো পাতলা হয়ে যায় এবং এরা স্থিতিস্থাপকতা হারিয়ে ফেলে। নারী যখন যোনিতে শুষকতার অনুভব করে তখন স্বভাবতই যোনি ও তৎপার্শ্ববর্তী এলাকার আর্দ্রতা বা ভেজা ভেজা ভাব কমে যায়। ফলে তারা যোনিতে চুলকানি, ব্যথা ব্যথা ভাব, যোনি ফুলে যাওয়া এবং যৌন আচরণে অস্বাচ্ছন্দ্যবোধ ইত্যাদিতে ভুগে থাকে।
যোনির শুষ্কতার আর একটি মূল কারণ হল স্ট্রেস বা মনোদৈহিক চাপ। বিভিন্ন পরিসংখ্যানগত ট্রায়ালে পরিলক্ষিত হয়েছে যে, শতকরা ৯৫ ভাগ নারী জীবনেরকোনো না কোনো পর্যায়ে মনোদৈহিক চাপজনিত কারণে সঙ্গমের সময় যোনিতে শুষকতা অনুভব করেছে। অবশ্য এটাও ঠিক যে, স্ট্রেস বা মনোদৈহিক চাপের কারণে রক্তে এস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রাও কমে যেতে পারে। এস্ট্রোজেন হরমোন মূলত ওভারি বা গর্ভাশয় থেকে উৎপন্ন হয়। তবে সব সময় এইউৎপন্ন হওয়ার মাত্রা একরকম থাকে না। কোনো বিশেষ দিনে নারীর এস্ট্রোজেন হরমোন মাত্রাকমে গেলে তারা হঠাৎ করে যোনিতে আর্দ্রতার অভাব লক্ষ্য করতে পারে। বিশেষত সঙ্গমকালীন বা তার পূর্বে। এখানে এটি বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য যে, এটি ১৫-৮৫ বছর বয়স পর্যন্ত যেকোনো নারীর জীবনেই ঘটতে পারে।
খাদ্যাভ্যাসজনিত নানা সমস্যা বা ডিসঅর্ডারে ভোগে এরকম নারীর সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। আহারজনিত সমস্যার কারণে হরমোন লেবেলের ইম্বেলেন্স বা হেরফের হওয়া স্বাভাবিক। এর ফলে যোনিতে শুষ্কতা দেখা দিতে পারে।যেসকল নারী বিভিন্ন ধরনের ওষুধ বা মেডিকেশন যেমন- কোনো এন্টিবায়োটিকবা ব্যাকটেরিয়াবিরোধী ওষুধ সেবন করছে তাদের ক্ষেত্রেও যৌন এলাকায় শুষ্কতা দেখা দিতে পারে। এন্টিবায়োটিকগুলো সাধারণত হরমোনের ক্রিয়ারওপর প্রভাব ফেলে এবং যোনির আর্দ্রতা কমায়। যৌন এলাকায় লুব্রিকেশন বা তেলতেলে ভাব মূলত দুইটি ছোট গ্রন্থির নিঃসরণজনিত রসের কারণে হয়ে থাকে। বিজ্ঞানী বার্থোলন-এর নামানুসারে এই গ্রন্থিগুলোকে বলা হয় বার্থোলিন গ্ল্যান্ড। অবশ্য যোনি প্রাচীর বা যোনি দেয়াল থেকেও কতক পরিমাণ রস নিঃসৃত হয়ে থাকে। যোনির শুষ্কতাজনিতকারণে লালচে ভাব এবং অস্বাচ্ছন্দ্যবোধ থাকাই স্বাভাবিক। আবার নানা গবেষণায় এটিও প্রতীয়মান হয়েছে যে, যেসকল নারী যোনি শুষ্কতাজনিত সমস্যায় ভোগে তাদের ক্ষেত্রে ভ্যাজাইনাল ইনফেকশন বা যোনিতে জীবাণু সংক্রমণও অধিকতর বেশিমাত্রায় হয়ে থাকে।
এথলেট নারী বা যেসব নারীরা অতিরিক্ত পরিমাণেশারীরিক ব্যায়াম করে থাকে তাদের হরমোনাল সাইকেল বা এস্ট্রোজেন হরমোন চক্রের গন্ডগোলজনিত কারণে যোনিতে শুষ্কতা দেখা দিতে পারে। যোনিতে শুষ্কতা দেখা দিলে স্বাভাবতই কোষকলাগুলোতে স্পর্শকাতরতা বিরাজ করে।এক্ষেত্রে আমরা উপযুক্ত লুব্রিকেশনের জন্য ‘কে ওয়াই জেলি’ প্রেসক্রাইব করে থাকি। যারা লুব্রিকেশন ব্যবহার করেনতাদের জন্য আর একটি সতর্কসংকেত হল- চর্বিতে দ্রবণীয় লুব্রিকেন্টস ব্যবহার করা স্বাস্থ্যেরপক্ষে ক্ষতিকর। পানিতে বা জলীয় দ্রবণীয় পিচ্ছিলকারক পদার্থ ব্যবহার করাই স্বাস্থ্যপ্রদ।
নানা ধরনের জন্মবিরতিকরণপিল এবং স্পঞ্জ ইত্যাদির কারণেও যোনির আর্দ্রতা কিছু পরিমাণে হ্রাস পেতে পারে।
নানা ধরনের শারীরিক অসুস্থতা যেমন-ভাইরাস বাব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ, খাদ্যাভ্যাসজনিত নানা ডিসঅর্ডার ইত্যাদির কারণে হরমোনের লেবেলে তারতম্য ঘটতে পারে। এতে করে যোনিতে শুষ্ক এবং অস্বাচ্ছন্দ্যভাব বিরাজ করে এবং অন্তরঙ্গ সম্পর্ক বিনষ্ট হয়।
আন্তঃসম্পর্কজনিত টেনশন বা মানসিক চাপের কারণে যোনিতে শুষ্কতা বিরাজ করতে পারে।
লুব্রিকেন্টস বা জলে দ্রবণীয় কে ওয়াই জেলিতে যোনির আর্দ্রতা সাময়িক সময়ের জন্য ফিরে আসে এতে করে নারীর-পুরুষের যৌনজীবন আর অন্তরঙ্গ মধুর হয়ে ওঠে, যৌন আনন্দ এবং যৌন তৃপ্তি আগের চেয়েঅনেক মাত্রায় বেড়ে যায়। যৌন শিহরণ, শৃঙ্গার, যৌনতা সম্পর্কে আত্মবিশ্বাস, দাম্পত্য জীবনে পরিতৃপ্তি, যৌন মিলনে নতুন মাত্রা যোগ করে।এটি নারী-পুরুষের পারসপরিক হস্থমৈথুন বা মাস্টারবেশনেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। এটি প্রেমিক-প্রেমিকা বা
স্বামী স্ত্রীর মাঝে প্রেম নিবেদনে এবং উত্তেজনার উদ্রেক করতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে।
কিভাবে যোনির শুষ্কতা তাৎক্ষণিকভাবে দূর করবেন?
যোনির শুষ্কতা দূর করার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে আপনিকোনো ভাল লুব্রিকেন্ট বা পিচ্ছিলকারক তরল ব্যবহারকরতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে চর্বিতে দ্রবণীয় পিচ্ছিলকার তরল স্বাস্থ্যের জন্য অহিতকর। তাই পানিতে দ্রবণীয় কে ওয়াই জেলি ব্যবহার করতে পারেন যা একটু আগেই আমরা উল্লেখ করেছি। এটি ব্যবহারে পুরুষ যদি কনডম সহকারে যৌনসঙ্গম করতে চায় তাতেও কোনোরকম অসুবিধা সৃষ্টি করে না। তবে দীর্ঘমেয়াদিভাবে যোনিতে শুষ্কতা বিরাজ করলে যেহেতু যোনির স্পর্শকাতরতা বা সংবেদনশীলতা কমে যেতে থাকে তাই অবিলম্বে গাইনোকোলজিস্ট বা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন। তিনি সম্পূর্ণ মেডিকেল ইতিহাস এবং যোনিতে আঙ্গুল ঢুকিয়ে একটি পরীক্ষা করতে পারেন। এতে উপযুক্ত কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া না গেলে ধরে নিতে হবে যে, মানসিক চাপ, দ্বন্দ্ব বা অন্য কোনো অসুখের জন্য এ সমস্যা হচ্ছে। তখন স্থায়ীভাবে সমস্যাটি লাঘব করতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এতে করে যৌনমিলনে অন্তরঙ্গতাএবং যৌন পরিতৃপ্তি আগের চেয়ে অনেক বাড়বে।
আরো প্রশ্নঃ
০১ যোনি চুষা কি ভালো? যোনি চুষে কি স্ত্রীকে তৃপ্তি দেওয়া যাবে?
০২ মেয়েদের যোনি কতপ্রকার?
০৩ মেয়েদের যোনি বিষয়ক আরো ১৩০ টি পোস্ট

কোন মন্তব্য নেই :