গ্রাম্য রায় ফতোয়া কেন?[জুনাইদ আল হাবিব]

কোন মন্তব্য নেই
সম্প্রতি নারী-পুরুষের যৌনসংক্রান্ত
বিষয়গুলো গ্রাম্য সালিশে যে বিচার-
আচার অবলোকন
করা যাচ্ছে বা পত্রপত্রিকায়
প্রকাশিত হচ্ছে,তা কিন্তু গ্রামের
মাতাবররা এ ধরনের রায় দিয়ে থাকেন।
আর এরকম গ্রাম্য রায়কে কিছু কিছু
জাতীয় পত্রিকা থেকে নিয়ে স্থানীয়
পত্রিকাগুলোতেও
ফতোয়া নামে চালিয়ে যাচ্ছে। এর
দ্বারা ইসলামকে কলুষিত করা হচ্ছে।
কারণ, বর্তমান বাংলাদেশ তো আর
ইসলামি রাস্ট্র নয় বা কোন আলিম
অথবা কোন মুফতি এরকম রায়
দিয়ে থাকেন না। তাহলে কেন গ্রাম্য
সালিশের
রায়কে আমরা ফতোয়া বলে আখ্যা দেই?
এ প্রশ্ন পাঠক মহলসহ সচেতন
মানুষগুলোর। কেন আমরা মুসলমান
হয়ে গ্রাম্য সালিশের
রায়কে ফতোয়া বলব?
তদুপরি যদি কোন নারী-পুরুষ ব্যভিচার
করে, তাহলে তাদের বিচার করার
ক্ষমতা রাখে রাষ্ট্র। কিন্তু কোন
গ্রামের মাতাবর এর বিচার
করতে পারবে না। আর যদি তাদের
বিচার গ্রাম্য মাতাবররা সালিশের
মাধ্যমে নিস্পত্তি করেই, তাহলে এ
বিচারকে “গ্রাম্য সালিশ”
বলে আখ্যায়িত করতে হবে।
কস্মিনকালেও এ
রায়কে ফতোয়া বলা যাবে না বা এটা
ফতোয়াও নয় বরং এ রায় মূলত
গ্রামের মাতাবরদের।
চুনারুঘাটে রিপা-মামুন
ব্যাভিচারে লিপ্ত হওয়াকে কেন্দ্র
করে সালিশ বৈঠক বসে এবং তাদের
বিরুদ্ধে যে রায় দিয়ে তাদের
সাজা দেয়া হয়েছিল, স্থানীয়
একটি পত্রিকা ঐ রায়কে গ্রাম্য
সালিশ না বলে বরং লীড নিউজ
করে ফতোয়া শব্দটি বড় অক্ষর
দিয়ে ছাপিয়ে এর প্রচার
করে চালিয়ে দিয়েছে। যা বড়ই দুঃখজনক
এবং লজ্জাকর এবং আমাদের ইসলামের
জন্য খুব ক্ষতিকর বটে। কারণ, কোন
গ্রাম্য রায় ফতোয়া হতে পারে না।
বরং এটা মূলত গ্রামের মাতাবরদের
গ্রাম্য সালিশ। ফতোয়া না বলে এ
রায়কে “গ্রাম্য সালিশ”
বলা যেতে পারে। অভিজ্ঞ মুফতিগণের
শরয়ী হুকুম বর্ণনার ত্রে ছাড়া অন্য
কোথাও ফতোয়া শব্দ ব্যবহার
করা যায় না।
অথচ, বর্ণিত ঘটনায় কোন মুফতির
ফতোয়া ছিল না, ছিল শুধু গ্রাম্য
মাতাবরদের ফয়সালা। ইসলামের
ফতোয়া কখনো যিনা-ব্যভিচারের
শাস্তিস্বরূপ এলাকার
মাতাবরদেরকে ১০০/১০১
দোররা মারার অধিকার দেয় না।
যিনা,চুরি-ডাকাতি মদ্যপান
প্রভৃতি অপরাধের শাস্তিমূলক
ইসলামের হদ কিসাসের দন্ডবিধি শুধুই
ইসলামি রাষ্ট্রের সাথে সংশ্লিষ্ট-
যা কেবলমাত্র রাষ্ট্র কর্তৃকই
কার্যকর হতে পারে, কোন
ব্যক্তিবিশেষ বা পঞ্জায়েত কর্তৃক
নয়।
এ সম্পর্কে হযরত আব্দুল্লাহ
ইবনে মুহাইরিয (রাঃ) হতে বর্ণিত
হাদিছে রয়েছে, “হুদুদ (বিভিন্ন
অপরাধের জন্য নির্ধারিত
শরয়ী শাস্তিদন্ড প্রয়োগ), গনীমত
(যুদ্ধলব্ধ সম্পদ বন্টন), যাকাত
আদায় ও বন্টন
এবং জুমুয়া প্রতিষ্ঠা দেশের শাসক
বা রাষ্ট্রপ্রধানের উপর ন্যাস্ত”। এ
হাদিস উল্লেখ
করে আল্লামা তাহাবী (রহ.) বলেন, এ
বিষয়ে কোন সাহাবী এর বিপরীত কিছু
বলেছেন বলে আমাদের জানা নেই।
(দ্রষ্টব্য মুসান্নাফ ইবে আবি শাইবাহ,
৩য় খন্ড, ১৪৫ পৃষ্টা)
তাই সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দাবি,
যাতে করে কোন সাংবাদিক অথবা কোন
সম্পাদক গ্রাম্য সালিশকে “ফতোয়া”
না বলে অথবা কোন পত্রপত্রিকায়
ফতোয়া শব্দটি লিখে অপব্যবহার
না করে সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য
রাখতে হবে। তা না হলে সহজ সরল
অর্ধশিক্ষিত মুসলমান এবং ভিন্ন
ধর্মাবলম্বীরা এর দ্বারা ইসলাম
এবং ইসলামের আইন বিশেষজ্ঞদের
(মুফতিদের) নিয়ে সমালোচনা করবে।
যা ইসলামে আদৌ কাম্য নয়।
ইসলামে কোন কঠিনতা নেই। আছে শুধু
সহজ থেকে সহজতর। আর
আমরা এটাকেই গ্রহণ করব।
লেখক
জুনাইদ আলহাবিব

ব্লগ সম্পাদক ও এ্যাডমিনঃসৈয়দ রুবেল উদ্দিন
Next post "প্রশ্নঃ এটা কি বৈপরীত্য নয় যে কুরআন এক স্থানে ইবলিসকে বলছে ফেরেশ্তা এবং অন্যস্থানে তাকে জ্বিন বলছে?

ব্লগের প্রকাশিত পোস্ট গুলি ফেসবুকে শেয়ার করে আমাদের চলার পথকে আরো গতিময় করে তুলুন ।আমরা দিন রাত খাটিয়ে পোস্ট গুলি লেখি ।ব্লগে প্রকাশ করে আপনাদেরকে উপহার দেয় ।আপনারা যদি শেয়ার না করেন?তাহলে আমরা তো সামনে এগিয়ে যেতে পারবোনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :