রাবিতে গভীর রাতে চলছে অবাধ মেলামেশা

কোন মন্তব্য নেই

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাসে গভীর রাত
পর্যন্ত চলছে প্রেমিক জুটিদের
আড্ডা।
ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের সাথে যুক্ত
হয়েছে বহিরাগতদের আনাগোনা।
ফলে পুরা ক্যাম্পাস চত্ত্বর এখনও
অশ্লীল
আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। আর এসব
আড্ডাস্থলে অবাধে চলছে যৌনচার।
এতে করে প্রতিনিয়ত ছিনতাই চাদাবাজি,
জিম্মি এমনকি ধর্ষণের মতো ঘটনাও
ঘটছে। এসব
ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত
ঘটছে অপ্রীতিকর
ঘটনা। তবে এ ধরনের অপ্রীতিকর
ঘটনা এড়াতে কর্তৃপক্ষ তেমন কোন
ভূমিকা রাখছে না।
এতে করে ক্যাম্পাসের লেখাপড়ার
পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। একই সাথে উচ্চ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈতিকতার চরম
অধঃপতন
হচ্ছে। এতে করে শিক্ষাসহ বিশেষ
করে ছাত্রী চরম
নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে।
জানাগেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাসে সম্প্রতি সময়ে গভীর রাত
পর্যন্ত
প্রেমিক জুটিদের
আড্ডা দিতে দেখা যাচ্ছে। ২০১০
সালের শুরুর দিক থেকেই
ক্যাম্পাসে প্রেমিক
জুটিদের গভীর রাত পর্যন্ত
আড্ডা দিতে দেয়ার
প্রবণতা শুরু হয়। এর পর থেকে ক্রমেই
এই
আড্ডা বাড়তে থাকে এখন ক্যাম্পাসের
বিভিন্ন
চত্তরে বিকেল গড়াতেই আড্ডা শুরু
হয়ে চলতে থাকে রাত্রি ৮ পর্যন্ত।
সামগ্রিকভাবে আড্ডা ভেঙ্গে গেলেও
খন্ড খন্ড
আড্ডা চলতে থাকে রত্রি ১০
টা পর্যন্ত। খোজ
নিয়ে দেখা বিকেলের আড্ডাগুলো দলবদ্ধ
হলেও
সন্ধ্যার পর থেকেই
আড্ডাস্থলগুলো জুটিদের
দখলে চলে আসে। সন্ধ্যার পর
থেকে গভীর
রাত্রি পর্যন্ত ক্যাম্পাস জুড়েই
চলে এসব জুটিদের
আড্ডা।
আড্ডার চত্তর সমূহ
এখন প্রায় পুরো ক্যাম্পাসের সমস্ত
চত্ত্বরই
আড্ডার চত্তর হিসাবে খ্যাতি অর্জন
করেছে। এর
মধ্যে ইবলিশ চত্তর ও ইসমাঈল হোসেন
সিরাজী ভবনের পেছনের
জায়গাটি বেশি ভয়ঙ্ককর
রূপ নিয়েছে। এ পয়েন্ট
গুলো রাত্রি ৮টার পরেও
অনেক বসে থাকতে দেখা যায়।
তাছাড়া বিকেল
থেকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের বারান্দা,
সিনেট
ভবনের পেছনে, সাবাস বাংলাদেশ মাঠের
প্রান্ত
ঘেষে গাছ তলা, শহীদ মিনার সংলগ্ন
মাঠ, তৃতীয়
বিজ্ঞান ভবনের পেছনে, তুত বাগান,
রেল লাইনের
ধার, কৃষি অনুষদের মাঠ,
চারুকলা চত্তর, জুবেরীর
মাঠ, শহীদুল্লাহ ও মমতাজ উদ্দিন
কলা ভবনের
সামনের আমবাগান, পশ্চিম পাড়া,
শিক্ষকদের
আবাসিক এলাকার রাস্তার ধার সমূহসহ
কম
বেশি সব চত্তরেই
রাতি আটটা সাড়ে আটটা পর্যন্ত
আড্ডা চলে।
আরও বেশি নিরাপদ
ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী ও
বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে অবাদ মেলামেরার
জন্য
বাইরের খোলা জায়গার
পাশাপাশি বিভিন্ন
ভবনকে বেছে নিচ্ছে।
এক্ষেত্রে ক্যাম্পাসের
একটি প্রভাবশালী মহলের
সাথে প্রহরীদের
যোগসাজশের বিষয়টি ফুটে উঠেছে।
প্রহরীদের
ম্যানেজ করে ভবনের ভেতরে প্রবেশ
করতে পারলে সেখানে অবাধ যৌন
আচারনের
ক্ষেত্র হিসাবে ব্যবহার করছে।
সম্প্রতি ভবনের
ভেতরের এমন কর্মকান্ডের সময়
কয়েকটি ঘটনা প্রকাশ
পাওয়া বিষয়টি অনেকটা ওপেন সিক্রেট
হয়ে গেছে।
আড্ডা আড়ালের কথা
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা নিজেদের
বিনোদনের জন্য তৈরি করেছে পছন্দের
ঝুটি। জুটির
দুই সদস্য নিজের মনের সব
কথা একে অন্যের
সাথে শেয়ার করার জন্য এই
আড্ডা যৌক্তিকতা খুজে পায়। কিন্ত
বিকেল
থেকে রাত্রি ১০ পর্যন্ত এই
আড্ডাস্থলে মুলত
কি আচরণ করা হয় তা প্রায় সকলের
অজানা।
সম্প্রতি সময়ে ক্যাম্পাসের
কয়েকটি আলোচিত
ঘটনার ফলে বিভিন্ন মহলের
অনুষন্ধানে বের
হয়ে এসেছে এসব ব্যবহার।
খোজ নিয়ে দেখা গেছে. এসব প্রেম
চত্তরে সন্ধ্যার
পর থেকে শুরু হয় অবাধ মেলামেশা।
যা শিক্ষার
স্বাভাবিক পরিবেশ ও
মানসিকতাকে নষ্ট করছে।
এসব স্থানে চলছে অশ্লিলতার
মাত্রাহীন যাত্রা।
এ প্রসঙ্গে ক্যাম্পাসের একজন
প্রহরী বলেন,
আমরা যারা রাতে ডিউটি করি তারা সবাই
জানে সন্ধ্যার পরে যে সব
মামারা ক্যাম্পাসে আড্ডা দেয়
তারা কেউই
স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে না। যেসব
কাজ
তারা করে তা নিজের চোখে দেখেও
বিশ্বাস করার
মতো না। মামাদের আড্ডার মাঝখান
দিয়ে আমাদেরই যেতে লজ্জা করে।
কিন্তু বাইরের
কোন মানুষের হাটার শব্দেও মামাদের
কোন
অবস্থার পরিবর্তন হয়না।
বহিরাগতদের আনাগোনা বাড়ছে
ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের এ ধরনের
অবাধ
মেলামেশার সাথে এখণ নতুন মাত্রাই
যোগ
হয়েছে বহিরাগতদের আনাগোনা।
রাজশাহীর
অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রেমিক
জুটি,
স্থানীয় প্রেমিক জুটি, বাইরের কোন
মেয়ের
সাথে স্থানীয় বখাটের জুটি অহরহ
আসছে। এরই
সাথে যুক্ত হয়েছে পতিতাবৃত্তির
একটি নতুন অংশ।
ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের
সাথে বহিরাগতরা বেশি মাতা্রই
অশ্লিলতায়
মেতে উঠেছে।
সুবিধা হিসাবে দুটি জিনিসকে তারা কাজে লাগাচ্ছে
প্রথমত: ক্যাম্পাসের কেউ তাদের
চিনেনা আর
অন্যটি হচ্ছে ক্যাম্পাসের ভেতরের
যেকোন
আচরণকে তারা নিরাপদ মনে করছে।
যুক্ত হচ্ছে পতিতাবৃত্তি
ক্যাম্পাসের একটি প্রভাবশালী মহলের
মদদে এই
আড্ডাজুটিগুলোর সাথে তাল
মিলিয়ে চলছে নতুন
মাত্রার পতিতাবৃত্তি। যৌনমিলন
ছাড়াও
যৌনকর্মীরা ছাত্রদের সাথে প্রেমিকার
মতো টাকার বিনিময়ে সময় য্যবহার
করছে।
ফলে সাধারণ প্রেমিক জুটিদের
চেয়ে এদের আচরণ
অনেকটা নগ্ন হচ্ছে। একই
সাথে পতিতাবৃত্তির এই
নগ্নতা দেখে সাধারণ জুটিগুলোও অশ্লিল
কর্মকান্ড করছে।
ফলে ক্যাম্পাসে অশ্লিলতার
মাত্রা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
বাড়ছে ছিনতাই ও চাদাবাজি
আড্ডাস্থল সমূহ থেকে প্রতিনিয়ত
ছিনাতইয়ের
ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি ক্যাম্পাসের
ইবলিশ চত্তর,
শহীদ মিনার, জুবেরীর মাঠ, পশ্চিম
পাড়া হয়ে উঠেছে ছাদাবাজি ও
ছিনাতইয়ের প্রধান
ক্ষেত্র হিসাবে। জুটিদের আড্ডা ছাড়াও

রাস্তা সাধারণদের চলাচল বিশেষ
করে একাকী পেলেই কাছের মোবাইল,
মানিব্যাগ,
টাকা, স্বর্নের চেইনসহ বিভিন্ন
দ্রব্যাদি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে।
সম্প্রতি সময়ে এসব ছিনাতইয়ের
ঘটনা আরও
প্রকট আকার ধারণ করেছে।
প্রতিনিয়ত
ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও এ পর্যন্ত
কোন
ছিনতাইকারী আটক করা সম্ভব হয়নি।
ফলে ক্রমেই
এসব
ঘঠনা বাড়ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
একই
সাথে জুটিদের
জিম্মি করে চলছে চাদাবাজি। ক্ষেত্র
বিশেষে জিম্মি ব্যতিক্রম কোন
ব্যবস্থা নেয়ার
চেষ্টা করলেও
ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে সংঘর্ষ
বা হাতাহাতির ঘটনা ঘটছে।
ঘটছে ধর্ষণের ঘটনা
ক্যাম্পাসে এমন অবাধে মেলা মেশার
কারণেই কয়েক
গত মাসের শেষের দিকে তিনটি ধর্ষনের
ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন
গোয়েন্দা সংস্থা ছাড়াও
বিশ্বস্ত কয়েকটি সূত্র
বিষয়গুলো নিশ্চিত করলেও
সুষ্পষ্ট কোন তথ্য প্রমাণ
পাওযা যায়নি।
মুন্নুজান হল সূত্রে জানাগেছে, মার্চ
মাসের ২য়
সপ্তাহে ঐ হলের এক আবাসিক
ছাত্রী মেইন গেইট
থেকে হেটে হলে ফিরছিল। এসময় তার
পূর্বের
বয়ফ্রেন্ড তাকে ভিসির বাসভবনের
সামনে থেকে জোড় করে তুলে শহীদুলস্নাহ
ভবনের
সামনের আমবাগানে ধর্ষণ করে।
এতে মেয়েটি অসুস্থ অবস্থায় হল
গেটে পৌছালে তার
বাবন্ধভীরা তাকে একটি বেসরকারী ক্লিনিকে
চিকিৎসা দেন। এর সপ্তাহ খানেক
পরে ইবলিশ
চত্তরে পৃথখ একটি রেইপের ঘটনা ঘটে।
এক্ষেত্রে কারও পরিচয় পাওয়া যায়নি।
মার্চ
মাসের শেষ সপ্তাহে ইসমাইল হোসেন
সিরাজী ভবনের ছাদে আড্ডারত
ছিলো একটি জুটি।
এ সময় তিনজন বখাটে সেখানে উপস্থিত
হয়ে প্রেমিকের হাত
পা বেধে রেখে প্রেমিকাকে ধর্ষণ করে।
গত শনিবার
সন্ধ্যার পরে ইতিহাস বিভাগের এক
ছাত্রী তার
প্রেমিকের সাথে অশ্লিল আচরণ করছিল
সিরাজী ভবনের পেছনে। এ সময়
কয়েকজন
বখাটে উপস্থিত হয়ে তার
বন্ধুকে সরিয়ে ঐ
ছাত্রীকে শারিরিকভাবে হেনেস্তা করে বলে জানা
গেছে
সংশ্লিষ্ঠদের বক্তব্য
বিকেলে বা সন্ধ্যায়
ক্যাম্পাসে আড্ডা দেয় এমন
এখাধিক জুটি অভিযোগ করেছেন, এখনও
ক্যাম্পাসে বসে আর আড্ডা দেয়ার
পরিবেশ। এখন
আড্ডা মানেই অশ্লিলতা বা নগ্নতা।
তাই ভাল
কোন বন্ধু সার্কেল এখনও আর
আড্ডায়
বসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেনা।
বহিরাগতদের
সাথে ক্যাম্পাসের
শিক্ষার্থীরা যে পরিবেশ
তৈরি করেছে তারই ফলে এখন
ক্যাম্পাসে চাদাবাজি,
ছিনতাই বাড়ছে। আর ঘটছে ধর্ষণের
মতো ঘটনা।
ক্যাম্পাসে দায়িত্ব পালন কারী একজন
গোয়েন্দা কর্মকর্তা যেকোন
অপ্রীতিকর ঘটনার
অনেক পরে কান
কথা হিসাবে আমরা তথ্য পাচ্ছি।
কয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনার খবর
পেয়েছি তবে কোনটির বিশ্বস্ত কোন
প্রমাণ
আমরা পায়নি।
রাবি প্রক্টর প্রফেসর
চৌধুরী মোহাম্মাদ
জাকারিয়া বলেন, গভীর রাত পর্যন্ত
ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের থাকার
কথা নয়। আর
ছিনতাইয়ে ঘটনা সত্য নয়
এগুলো সাজানো অভিযোগ। —

প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :