দ্বীনের বিকৃতির পথ

কোন মন্তব্য নেই
মাসআলা
অত্যন্ত পরিতাপের সাথে বলতে হয় যে,
অতীতে যে সমস্ত পথে দ্বীনের
বিকৃতি সূচিত হয়েছে, তার
মধ্যে অন্যতম পথই ছিল ওলামাদের
অবহেলা ও নীরব ভূমিকা।
এটা বর্তমান যুগেও পরিলক্ষিত হচ্ছে।
ওলামা-মাশায়েখদের নীরবতার
কারণে কেবল ফটো আর মূর্তিই নয়,
সর্বক্ষেত্রেই ধর্মের বিৃকতি পরিদৃষ্ট
হচ্ছে। অথচ এ ব্যাপারে আমাদের কোন
অনুভূতিই নেই। হযরত শাহ
ওয়ালিউল্লাহ রহ. তার প্রসিদ্ধ কিতাব
‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগায়’ কোন্ কোন্
পথে দ্বীনের তাহরীফ ও বিকৃতি সাধিত
হয় এবং অতীতে হয়েছে তা এক-
একটি করে বর্ণনা করেছেন। তিনি এ
ক্ষেত্রে ওলামাদের নীরব ভূমিকা পালণ
করাকে পথম এবং অন্যতম কারণ
হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, দ্বীন
বিকৃতির অন্যতম কারণ হচ্ছে, গোনাহ
দেখেও নীরব ভূমিকা পালন করা।
(১২০/১) এই বিকৃতির সূচনা হয়
এভাবেঃ নবী-রাসূলদের মুখলিস-
খাঁটি অনুসারীদের পর এমন অযোগ্য
ব্যক্তি তাদের স্থলাভিষিক্ত হয়,
যারা নামাযকে গুরুত্বহীন
করে তোলে এবং প্রবৃত্তির
গোলামী করতে থাকে। তারা জ্ঞান
চর্চা, আমল এবং শিক্ষা গ্রহণ ও
শিক্ষাদানের মাধ্যমে দ্বীন প্রচারের
বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। মানুষকে ভাল
কাজের উপদেশ দেয়নি এবং মন্দ কাজ
থেকে বিরত রাখেনি। যে কারণে দ্বীনের
বিরুদ্ধে অগণিত প্রথা সমাজে চালু
হয়ে পড়ে এবং পর্যায়ক্রমে শরীয়তের
বিরোধিতা মানুষের স্বভাবে মজ্জাগত
হয়ে যায়। এরপর যারা তাদের
স্থলাভিষিক্ত হয়, তারা গোনাহের
প্রতিবাদ না করা এবং নীরব
ভূমিকা পালনে তাদের পূর্বসূরীদের
তুলনায় আরো চার কদম
সামনে অগ্রসর হয়। শেষ পর্যন্ত
ঐশী জ্ঞানের এক বিরাট অংশ
নিরুদ্দেশ হয়ে পড়ে। ফলে মানুষ স্বীয়
জীবনে কোন বিষয়েই শরীয়ত-কর্তৃক
হালাল-হারামের বিধি-বিধান মেনে চলার
প্রয়োজন মনে করে না। যারা জাতির
কর্ণধার এবং পৃষ্ঠপোষক, তাদের এই
নীরব ভূমিকাই জাতি ধ্বংসের
সবচেয়ে বড় কারণ হয়। তাদের নীরব
ভূমিকার কারণে সমাজে মুনকারাত ও
অপসংস্কৃতির প্রচার-প্রসার ঘটে।
এদিকে অপসংস্কৃতি দূরীকরণের
দায়িত্ব পালনে ওলামাদের চরম
উদাসীনতা মজ্জাগত হয়ে যায়। এই
দিকে আলোকপাত করেই আল্লাহপাক
ইরশাদ করেন, “তোমাদের পূর্বসূরীদের
মধ্যে এমন অভিজ্ঞ লোক কেন
জন্মায়নি, যারা ভূখণ্ডে ফ্যাসাদ
সৃষ্টিকারীদেরকে বিরত রাখবে?
হ্যাঁ যৎসামান্য লোক ভাল বটে; তাই
তাদেরকে আমি আযাব
থেকে রক্ষা করেছি।
যারা অত্যাচারে অভ্যস্ত,
তারা আত্মবিলাসী; তারা মারাত্মক
অপরাধী।” হযরত শাহ সাহেব এরপর
উপরে উল্লেখিত হযরত ইবনে মাসউদ
রা. কর্তৃক বর্ণিত হাদসিটিও
বর্ণনা করেছেন। বস্তুত
ওলামায়ে কেরাম গোনাহর
প্রতিরোধে নীরব ভূমিকা পরিহার
করে সঠিক পন্থা অনুসরণ
করতঃ ঐক্যবদ্ধভাবে সর্বশক্তি
প্রয়োগ করলে সমাজ থেকে সর্বপ্রকার
পাপাচার অবশ্যই দূর করা যেতে পারে।
দূর করা যেতে পারে আল্লাহপাকের
আযাব গজব। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম
পরিহাস! আমাদের অযোগ্যতা, আমাদের
নীরবতা এবং আমাদের দায়িত্বহীনতার
কারণে কবীরা গোনাহসমূহ বর্জন
তো দূরের কথা, গোনাহের কাজ
করা গৌরব ও সম্মানের বিশেষ
নিদর্শনে পরিণত হয়ে চলেছে। ওলামা-
মাশায়েখগণ হচ্ছেন খোদায়ী দ্বীন-
ভাণ্ডারের প্রহরী। আর
যারা শরীয়তের সীমালঙ্ঘন
করে তারা হচ্ছে চোর-ডাকাত।
সুতরাং প্রহরীগণ চোর-ডাকাতের
সাথে আতাত করলে তারাই
যে সর্বপ্রথম কঠোর শাস্তির
উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবেন
তাতে কোন ধরনের সন্দেহের অবকাশ
আছে কি? ওলামা-মাশায়েখদের প্রধান
কাজ হচ্ছে তালীম-তরবিয়াত
এবং দাওয়াত ও তাবলীগ।
তাদেরকে অবশ্যই সৎ কাজের উপদেশ
দিতে হবে এবং অসৎ কাজ
থেকে জনগণকে বিরত রাখার
প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এ
ব্যাপারে তাদেরকে হতে হবে নম্রভদ্র,
শিষ্টাচারী, সুকৌশলী, দূরদর্শী, দরদী ও
ধৈর্যশীল। কাউকে হেয়প্রতিপন্ন
করা যাবে না, কটাক্ষ
করা যাবে না এবং তিরষ্কার
করা যাবে না; বরং দাওয়াত ও
তাবলীগের নির্ধারিত নিয়মাবলির
অনুসরণ করতে হবে। তবে তাদের
মধ্যে এই দৃঢ়তা অবশ্যই
থাকতে হবে যে, গোনাহকে মোটেই
প্রশ্রয় দেয়া যাবে না।
কাউকে খুশী করার জন্য
অথবা ভয়ে ভীত হয়ে কিংবা হীন স্বার্থ
চরিতার্থের জন্য মোটেই
নমনীয়তা অবলম্বন করা যাবে না। এই
কঠোর ভূমিকার কারণে ভর্ৎসনার
সম্মুখীন হলে বা বিপদের
আশংকা দেখা দিলে ধৈর্যের পরিচয়
দিতে হবে। বড়দের
প্রভাবে প্রভাবান্বিত হয়ে গোনাহের
কাজে শরীক হওয়া যাবে না মোটেই।
কারণ হাদীসে এসেছে- ﻻﻃﺎﻋۃ
ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﯽ ﻣﻌﺼﯿۃ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ
অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার
নাফরমানী করে কোন সৃষ্টির
প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করা বৈধ
নয়। ভর্ৎসনাকারীর ভর্ৎসনায়
ভীতসন্ত্রস্ত হওয়া যাবে না।
ওলামাদেরকে নিম্নোক্ত
সতর্কবাণী অবশ্যই স্মরণ
রাখতে হবে- ﺍﻻ ﺍﻥ ﺍﻟﺨﯿﺮ ﺧﯿﺎﺭ
ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺉ ﻭﺍﻥ ﺍﻟﺸﺮ ﺷﺮﺍﺭ
ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺉ অর্থাৎ শুনে রাখো,
ওলামায়ে কেরামই সর্বপেক্ষা শ্রেষ্ঠ,
আবার তারাই সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট।


Post by Dawtul Haq.
Blog eiditor_Syed Rubel.ইহুদী, খৃষ্টান, হিন্দু ,বৌদ্ধ, নাস্তিক ও দেশের নারীবাদীদের ইসলামের বিরুদ্ধে করা সকল অপপ্রচারের দাঁত ভাঙ্গাঁ জবাব দেখুন এই পোস্ট টি থেকে
শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের কে জানার সুযোগ দিন ।আপনি জেনেছেন হয়তো সে জানেনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :