রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দাম্পত্য জীবন (দ্বিতীয়)

কোন মন্তব্য নেই
প্রথম পাতার পরমাওলানা আহদ শফি চকরবী
এখানে প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করতে হয়
যে, রাসূলে মাকবুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত খাদীজার
রা.-এর সান্নিধ্যে সর্বপ্রথম
এসেছিলেন একজন ব্যবসায়িক অংশীদার
হিসেবে। এ ধরনের একজন ধনাঢ্য ও
অধিক বয়স্কা মহিলার সাথে বিবাহ
বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার
কথা কখনো তাঁর কল্পনায়ও আসেনি।
কারণ এজাতীয় কল্পনা তাঁর তরফ
থেকে স্বাভাবিকও ছিল না। বরং এ
বিয়ের উদ্যোগটা একচেটিয়া হযরত
খাদীজার রা. পক্ষ থেকেই
নেয়া হয়েছিল। সর্বোপরি কথা হলো, এ
ঘটনা দ্বারা অনুমিত হয় যে, মহান
আল্লাহর পক্ষ থেকেই এ বিবাহের
সার্বিক ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন
করা হয়েছিল। রাসূলে মাকবূলের
সর্বমোট সাতজন সন্তানের
মধ্যে ছয়জনই হযরত খাদিজা রা. এর
গর্ভে জন্মেছিল। কাসেম, আব্দুল্লাহ
যাকে তৈয়ব ও তাহের নামেও ডাকা হত,
যয়নাব, রুকাইয়্যা, উম্মে কুলসুম ও
ফাতিমা। এ দুছেলে ও চার কন্যা ছিল
হযরত খাদীজা রা. এর সন্তান।
ছেলে দুটি শিশুকালেই ইন্তিকাল করেন।
চার কন্যাই পরিণত বয়স পেয়েছিল
এবং তাদের বিয়েও হয়েছিল,
তবে নবী নন্দিনীদের মধ্যে কেবল
সর্বকণিষ্ঠা হযরত ফাতিমা রা.
ছাড়া অন্য কারো সন্তান
রাসূলে মকবূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বংশধর
উত্তরাধিকার
হিসেবে পৃথিবীতে বেঁচে ছিল না।
হযরত খাদিজা রা.-এর সাথে রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
দীর্ঘ পঁচিশ বছরের দাম্পত্যজীবন
যে কত সুখকর ও মধুময় ছিল,
পাস্পরিক প্রেম ভালবাসার বন্ধন
যে কত অটুট ও গভীর ছিল, তার
বিস্তারিত বিবরণে সমৃদ্ধ হয়েছে হাদীস
শাস্ত্র। হযরত আয়শা রা.
হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, কখনো হযরত
খাদীজা রা. এর প্রসঙ্গ উত্থাপিত
হলেই হুযুর সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবেগ-আপ্লুত
হয়ে পড়তেন ও উচ্ছসিত ভাষায়
তিনি হযরত খাদীজা রা.-এর নানান
গুণ-গরিমার কথা বলতেন।
একদা আমি নারী-সুলভ ভঙ্গিতে বলেই
ফেললাম, আল্লাহ তায়ালা তো এখন
আপনার সান্নিধ্যে অনেক
সুন্দরী রমণীকে এনে দিয়েছেন, আমার
ন্যায় কুমারীও এখন আপনার
অন্তপুরে, অথচ
আপনি এখনো সে বৃদ্ধার কথা স্মরণ
করে আপ্লুত হয়ে পড়েন।
তদুত্তরে বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন,
আয়শা তোমার কথা অযৌক্তিক নয়,
আল্লাহ তায়ালা এখন আমার
সান্নিধ্যে একাধিক
সুন্দরী রমণী এনে দিয়েছেন, কিন্তু
খাদীজা আমার হৃদয়ে যে আসন
গেড়ে ছিলো, তোমরা কেউ
সে অবস্থানে পৌছতে পারবে না।
ইসলামের দুর্দিনে আমার সঙ্কটময়
জীবনে খাদীজা যা করেছে, তোমাদের
কারো পক্ষেই তা করার সুযোগ নেই।
হযরত আয়শা রা. আরো বর্ণনা করেন,
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কখনো ছাগল জবাই করলে 
তা থেকে কিছু অংশ অবশ্যই
খাদীজা রা.-এর
বান্ধবী বা প্রিয়জনদের নিকট
পাঠাতেন।
পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে,
মহানবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনের
সর্বাপেক্ষা সঙ্কটময় অধ্যায়ে নিজের
সর্বস্ব উজাড় করে দিয়ে শিশু
ইসলামকে মাতৃস্নেহে পরিচর্যা করার
জন্যই মহান আল্লাহ
হযরত খাদিজা রা. এর ন্যায়
মহিয়সী রমণীকে মনোনীত করেছিলেন।
নবুওয়াতের সময় নিকটবর্তী হওয়ার
সাথে সাথে তদানীন্তন সমাজের
জ্ঞানী-গুণী, সচেতন, বিবেকসম্পন্ন
লোকদের মনে এরূপ একটা আশাবাদ যেন
ক্রমেই দানা বাঁধতে শুরু করেছিল যে,
পতনের অতল-গহবরে নিমজ্জিত এ
মানবগোষ্ঠীর মুক্তির
উদ্দেশ্যে একজন মহামানবের
আবির্ভাবের সময় ঘনিয়ে এসেছে। 
পূর্ববর্তী ধর্মগ্রন্থসমূহের
ভবিষ্যদ্বাণী, কিছু অলৌকিক
নিদর্শনের প্রকাশ এবং কোন সাধক
পুরুষের তাৎপর্যপূর্ণ কিছু স্বপ্ন ও
আত্মিক অনুভূতি এ আশাবাদকে যেন
আরো জোরালো ও সুদৃঢ় করে তুলেছিল। 
এ ধরনের পরিচ্ছন্ন বিবেকসম্পন্ন
দূরদর্শী অতি সীমিত সংখ্যক লোকের
মধ্যে হযরত খাদীজা রা. ও তাঁর
বর্ষীয়ান চাচাতো ভাই
ওয়ারাকা ইবনে নওফেল ছিলেন
অন্যতম। ওয়ারাকা ছিলেন ধর্ম
বিশ্বাসে ঈসায়ী এবং তাওরাত ও
ইঞ্জিলের ইলমে সুবিজ্ঞ একজন সাধক
শ্রেণীর লোক। হযরত খাদীজা রা.-এর
সাথে প্রায়ই তাঁর ধর্ম
বিষয়ে আলোচনা হতো। তত্ত¡বিদগণের
ধারণা, এসব আলোচনার প্রভাবে পূর্ব
থেকেই হযরত খাদীজার রা.-এর মনের
যমীন তৈরি হয়ে গিয়েছিল, অতঃপর
ব্যবসায়ে যোগদানের পর
বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন অভাবনীয়
মুনাফা নিয়ে 
সিরিয়া থেকে ফিরে আসলেন তখন
হযরত খাদীজা রা. তাঁর বিশ¯Í’ ভৃত্য
মাইসারার নিকট খুটিয়ে খুটিয়ে সফরের
বিবরণ জানলেন। এরপরই
তিনি মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর
সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার
জন্য মনস্থির করে ফেললেন।
যুরকানীর বর্ণনা মতে,
নাফীসা বিনতে মুনীবা নামী জনৈকা
সম্ভ্রান্ত মহিলা বলেন, হযরত
খাদীজা রা. দ্বিতীয়বার বিধবা হওয়ার
পর কুরাইশ গোত্রের বিশিষ্ট কয়েকজন
ব্যক্তি তার সাথে বিবাহ
বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য পয়গাম
পাঠান, কিন্তু খাদীজা রা.
কারো প্রস্তাবই গ্রহণ করলেন না।
রাসূল করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিরিয়ার
সাফল্যজনক বাণিজ্যিক সফর
থেকে ফিরে আসার পর হযরত
খাদীজা রা. তার প্রতি নিদারুন আকৃষ্ট
হয়ে পড়েন এবং আমাকে তাঁর মতামত
অবগত হওয়ার উদ্দেশ্যে প্রেরণ
করেন। সে মতে আমি নবীজী 
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
নিকট হাজির হয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস
করলাম, আপনার বিয়ের বয়স
অতিক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে, অথচ
এখনো আপনি বিয়ে করছেন না যে?
তদুত্তরে তিনি বললেন, তুমি ঠিক
বলেছ, তবে আর্থিক অস্বচ্ছলতার
কারণেই আমি এ ব্যাপারে কোন
চিন্তাভাবনা করতে পারছি না।
প্রত্যুত্তরে আমি বললাম, যদি রূপ-গুণ
ও ধন-সম্পদ উভয়টিই আপনার
সামনে তুলে ধরা হয় এবং আর্থিক দিক
থেকে আপনাকে নিশ্চিন্ত করে দেয়া হয,
তবে আপনার কোন আপত্তি আছে কি?
তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কে এমন
পাত্রী? আমি বললাম, স্বয়ং খাদীজাই
আপনাকে গ্রহণ করতে চান। এ
কথা শুনে তিনি সম্মতি প্রদান
করলেন। (যুরকানী : ২/২২০)
যেমনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন নির্মল
চরিত্র ও সর্বপ্রকার অনুপম মানবিক
গুণ সম্পন্ন, আল-আমীন,
তেমনি হযরত খাদীজা রা.ও ছিলেন
সে যুগের হযরত মারইয়াম আ. সদৃশ
একজন পুণ্যাত্মা নারী।
যেকারণে সকলের নিকট
তিনি তাহেরা বা পবিত্রা নামে প্রসিদ্ধ
ছিলেন। তিনি ভালভাবেই জানতেন, আল
আমীনই যদি হন প্রতীÿিত সে মহাপুরুষ,
তবে তার সাহচর্য হবে কাঁটার
মধ্যে বিছানা পাতার মতই দিনারুন
কষ্টকর জীবনের এক দুঃসহ সাধনা।
কাজেই তিনি জেনেশুনেই এ বিপদসঙ্কুল,
কণ্টকাকীর্ণ ও ঝুকিপূর্ণ জীবনের
পথে বুক ভরা ব্যাকুলতা নিয়ে অগ্রসর
হয়েছিলেন। তার এ ব্যাকুলাত
যে কতটা তীব্র ও প্রকট ছিল 
তা সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যা গ্রন্থ
ফতহুল বারীর
একটি বর্ণনা থেকে অনুমান করা যায়। 
ঘটনাটি নিম্নরূপ :
একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত
খাদীজা রা.-এর নিকট পৌঁছার
সাথে সাথে হযরত খাদীজা রা.
তাঁকে আবেগআপ্লুত
হয়ে জড়িয়ে ধরে ভারাক্রান্ত
কণ্ঠে বলতে লাগলেন, আমার পিতা-
মাতা আপনার ওপর কুবরান হোক!
আমার মন বলছে, খুব শীঘ্রই
যে মহামানবের আবির্ভাবের
ধারণা হচ্ছে, আপনিই হবেন সেই
প্রতীÿিত মহামানব। যদি তাই হয়,
তবে সেদিন আপনি অবশ্যই
আমাকে স্মরণ রাখবেন ও মহান
আল্লাহ আপনাকে নবুওয়াত দান
করলে তাঁর কাছে আমার মুক্তির জন্য
দোয়া করবেন। তদুত্তরে বিশ্বনবী 
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, যদি তোমার অনুমানই সত্য
হয়, আর সেই প্রতিশ্রæত নবী আমিই
হই, তবে মনে রেখ, তুমি আমার
প্রতি যে অনুগ্রহ করেছ তা আমি কোন
দিনই ভুলতে পারবো না। আর সেই
প্রতিশ্রæত
ব্যক্তি যদি আমি ছাড়া অন্য কেউ হয়,
তবুও শুধুমাত্র মহান আল্লাহর
সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তুমি আমার জন্য
যা করে যাচ্ছ, তার সুফল ও প্রতিদান
কখনো আল্লাহ তায়ালা বিনষ্ট করবেন
না। (ফাতহুল বারী : ৫/২০০)
মহান আল্লাহ হযরত খাদীজা রা.
কে সে নিষ্ঠাপূর্ণ আত্মত্যাগের
পুরস্কার কিভাবে দিয়েছিলেন,
তা অনুধাবন করার জন্য সহীহ
বুখারী ও মুসলিম শরীফের নিম্নোক্ত
বর্ণনাটি দেখা যেতে পারে। হযরত আবু
হুরাইরা রা. বর্ণনা করেন, একদিন
হযরত জিবরীল আ. রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
নিকট হাজির হয়ে বলতে লাগলেন,
হযরত খাদীজা রা. তিনি আপনার জন্য
খানা নিয়ে আসছেন, তিনি আপনার
নিকট এসে পৌঁছলে বলবেন, আল্লাহ
রাব্বুল আলামীন ও আমার পক্ষ
থেকে তাঁকে সালাম।
এবং তাকে জান্নাতের এমন
একটি মনোরম প্রাসাদের সুসংবাদ
দিবেন যে প্রসাদাটি একটি মাত্র
মুক্তার দ্বারা নির্মিত। সেটির
অবস্থান হবে নিরিবিলি ও মনোরম
পরিবেশে। যাতে বাইরের কোন আওয়াজ
পর্যন্ত পৌঁছবে না।” 
নাসায়ী শরীফের একটি বর্ণনায় আছে,
হযরত খাদীজা রা. একথা শুনে জবাব
দিয়েছিলেন, “আল্লাহ তো মহান
শান্তিদাতা, তাই তাঁকে সালাম পাঠানোর
(অর্থাৎ শান্তি বর্ষণের দোয়া করার
দুঃসাহস আমি কি করে করতে পারি?
হযরত জিবরাীল আ.-এর প্রতি আমার
সালাম, মহান আল্লাহর রহমত ও
বরকত আপনার ওপর নাযিল হোক
এবং তাদের প্রতিও আমার সালাম,
যারা আমার এ
বাক্যগুলি শুনতে পাচ্ছে একমাত্র
শয়তান ছাড়া।’ (যুরকানীর
শরহে মাওয়াহেব ও ফতহুল বারী : ৫ম
খণ্ড)
সর্বপ্রথম যেদিন ওহী নাযিল হয়,
সেদিন এক অভ‚তপূর্ব
অভিজ্ঞতা নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ঘরে ফিরে আসলেন। চরম উৎকণ্ঠা ও
দ্বিধা নিয়ে তিনি হযরত খাদীজা রা.
কে বলতে লাগলেন, আমাকে কম্বল
চাপা দাও! আমার খুব ভয় করছে,
বেঘোরে আমি মারা না যাই। সব বিবরণ
শুনে হযরত খাদীজা রা. আরজ করলেন,
আল্লাহর কসম! আপনার ভয়ের কিছু
নেই। মহান আল্লাহ
কখনো আপনাকে বিপন্ন করবেন না।
কারণ আপনি অসহায়কে সাহায্য করেন,
দুস্থ ও বিধবাদের খোঁজ-খবর রাখেন,
আত্মীয় স্বজনের প্রতি সদ্ব্যবহার
করেন। বরং আমার তো মনে হয়,
আপনি যার দেখা পেয়ে উৎকণ্ঠিত
সে হলো ঐ
সত্তা যিনি পূর্ববর্তী নবী-রাসূলগণের
নিকট অবতরণ করতেন। (বুখারী)
অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে হযরত
খাদীজা রা. ওয়ারাকা ইবনে নাওফেলের
নিকট গমন করে ঘটনাটি সম্পর্কে তার
সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
ওয়ারাকা এক পর্যায়ে এসে মন্তব্য
করেছিলেন, তবে আক্ষেপের বিষয় 
হলো, যেদিন আপনার
জাতি আপনাকে দেশ
ছাড়া করবে হয়তো সেদিন
আমি বেঁচে থাকবো না। খৃষ্টান পণ্ডিত
ওয়ারাকার এ মন্তব্য থেকে স্পষ্ট
হয়ে উঠল যে, এর পরের
দিনগুলো হবে অত্যন্ত বিপদসঙ্কুল ও
কণ্টকাকীর্ণ। কিন্তু এতদসত্তে¡ও
হযরত খাদীজা রা.-এর সংকল্পের
দৃঢ়তায় রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সর্ব প্রকার
প্রতিকুল পরিস্থিতি ও সংকটময় মুহ
‚র্তে আগলে রাখার অদম্য
আগ্রহে বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি,
বরং তিনিই সে সৌভাগ্যবান নারী,
যিনি সর্বপ্রথম ইসলামে দীক্ষীত
হয়েছিলেন। এটা যে কতখানি প্রেম-
ভালবাসা ও আস্থার পরিচায়ক
তা সহজেই অনুমেয়।
নবুওয়াতের দশম বর্ষে অর্থাৎ
হিজরতের তিন বছর আগে রমযান
মাসে হযরত খাদিজা রা. ইন্তিকাল
করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি
রাজিউন)। ইনিত্কালের সময় তাঁর
বয়স হয়েছিল পয়ষট্টি বছর
এবং রাসূলুল্লাহ -এর বয়স তখন
পঞ্চাশ বছর। তখনো পর্যন্ত
জানাযার বিধান নাযিল না হওয়ায়
রাসূলুল্লাহ তাঁর জন্য মাগফিরাত-এর
দোয়া করে তাকে দাফন করার জন্য
নিয়ে যান এবং বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ হাতে এ
পূণ্যাত্মা মহিয়সী রমণীকে কবরস্থ
করেন।
হযরত খাদীজা রা. এর জীবদ্দশায়
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরিবারের দিক
থেকে ছিলেন সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত তাই
পথে ঘাটে, হাঁটে-বাজারে তথা সর্বত্র
দীনে ইসলামের দাওয়াত প্রদানের সময়
বিরুদ্ধবাদীরা তাঁর ওপর নানারূপ
অত্যাচার করতো বটে, কিন্তু নিজের
পারিবারিক পরিবেশে রাসূলে করীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন
সম্পূর্ণ নিরাপদ।
চাচা হযরত আবু তালেব
এবং প্রিয়তমা সহধর্মিনী হযরত
কাদীজা রা. এর সামাজিক মর্যাদা ও
প্রভাবের কারণেই
বিরুদ্ধশক্তি তাঁকে হত্যা কিংবা 
দৈহিকভাবে নির্যাতন করারও সাহস
পেত না। আবু জাহল ও আবু লাহাবের
দল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
প্রতি পৃষ্ঠপোষকতা ছেড়ে দেয়ার জন্য
যেমন আবু তালেবের ওপর চাপ প্রয়োগ
করত তেমনি হযরত খাদীজা রা. যে এ
জাতীয় চাপ হতে নিরাপদ ছিলেন
তা নয়। তবে মহান আল্লাহর দ্বীনের
ওপর প্রথম ঈমান
আনয়নকারিনী খাদীজা রা. তার
প্রাণপ্রিয় স্বামী, হযরত রাসূলে কারীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
প্রতি এমন শ্রদ্ধাবোধ ও আনুগত্য
পোষণ করতেন যার সামনে দুনিয়ার
সবকিছুই ছিল নিতান্ত তুচ্ছ। 
বিরুদ্ধবাদীদের তিরস্কার ও
নির্যাতনে মর্মামহত রাসূলে কারীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন
ঘরে ফিরে আসতেন হযরত খাদীজা রা.
তখন আন্তরিক সেবা ও অকৃত্রিম
ভালবাসা দিয়ে, সাহস জুগিয়েও
সান্ত্বনা দিয়ে মুহ‚র্তের মধ্যেই তাঁর
সকল গ্লানি মুছে দিতেন, অন্তরের
বোঝা হালকা করে ফেলতেন।
সকল বাধা-বিপত্তি ও প্রতিকুল
পরিস্থিতিতে আল্লাহর দ্বীন প্রচারের
দুঃসাহসী অভিযানের প্রতিটি স্তরেই
বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রেরণার
উৎস, বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য সাথী 
ও একান্ত সহমর্মী ছিলেন হযরত
খাদীজাতুল কোবরা রা.। নবুওয়াতের দশ
বছরে মাত্র কয়েক দিনের
ব্যবধানে চাচা আবু তালেব
এবং প্রাণপ্রিয় সহধর্মিনী হযরত
খাদীজা রা. এর ইন্তিকাল হয়েছিল। 
ফলে রাসূলুললাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বছরটির
নামকরণ করেছিলেন ‘আমুল হুযুন’
তথা দুশ্চিন্তার বছর।
হযরত খাদীজা রা.-এর ইন্তিকালের পর
থেকে শুরু হয় রাসূলে কারীমসাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দাম্পত্য
জীবনের দ্বিতীয় পর্যায়। এ সময় তাঁর
জীবনে সর্বপ্রথসম
যে সমস্যাটি সামনে এসেছিল
তাহলো হযরত খাদীজা রা.-এর
গর্ভে জন্ম নেয়া রাসূলে কারীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
চারটি মেয়ের লালন-পালন ও সংসার
সামলে রাখার মতো একজন দক্ষ
অভিভাবিকার। এ মৌলিক প্রয়োজনের
তাগিদেই তিনি হযরত
সাওদা বিনতে যাময়া রা.
কে বিয়ে করেন।
যুরকানীর মাওয়াহেব গ্রন্থে উল্লেখিত
হয়েছে, হযরত খাদীজা রা. এর মৃত্যুর
পর রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত বিমর্ষ
ও দুশ্চিন্তাগ্র¯Í হয়ে পড়েন। একদিন
তার গোত্রের জনৈক মুরুব্বী গোছের
মহিলা খাওলা বিনতে হাকীম
এসে বললেন, হুযুর! খাদীজা রা.-এর
মৃত্যুতে আপনাকে অতিশয় ভারাক্রান্ত
ও বিষণ্য দেখতে পাচ্ছি, এভাবে জীবন
চলতে পারে না। তদুত্তরে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, ঘর-সংসারের দায়িত্ব
এবং ছোট ছোট মেয়েগুলোর জন্যই
দুশ্চিন্তা আরো বেড়ে গেছে। অতঃপর
খাওলা বললেন, আমার মতে আপনার
বিয়ে করা দরকার, আমি কি আপনার
জন্য কোথাও প্রস্তাব দিতে পারে?
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ কাজ
তো একজন বর্ষীয়সী মহিলার পক্ষেই
সম্ভব। আমি বললাম,
সাওদা বিনতে যাময়া সম্ভ্রান্ত
কুরাইশ গোত্রের একজন
বর্ষীয়সী মহিলা। তিনি অনেক আগেই
ইসলাম কবুল করেছেন, হাবশায় হিজরত
করে সীমাহীন দুঃখ-কষ্ট ভোগ করে স
¤প্রতি বিধবা হয়ে দেশে ফিরেছেন।
আমার বিশ্বাস তাঁর দ্বারা আপনার
ঘর-সংসারের সার্বিক
ব্যবস্থাপনা সুচারুরূপে সম্পন্ন হবে।
একথা শুনে রাসূলু্ল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
তাহলে প্রস্তাব দিয়ে দেখতে পারেন।
অতঃপর আমি সওদা বিনতে যাময়া রা.
এর কাছে গেলাম এবং তাঁরই
পরামর্শক্রমে তার বৃদ্ধ পিতা যাময়ার
নিকট প্রস্তাবটি পেশ
করলে তিনি বিনাবাক্য
ব্যয়ে সন্তুষ্টচিত্তে অনুমতি দিলেন।
অতঃপর চারশ দিরহাম মহরের
বিনিময়ে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত সাওদা রা.
কে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করলেন।
হযরত সাওদা বিনতে যাময়া রা. ছিলেন
একজন প্রৌঢ়া মহিলা, তবে অত্যন্ত 
ধৈর্যশীলা ও নরম মেজাজের
অধিকারিনী। হযরত খাদীজা রা.-এর
রেখে যাওয়া চার কন্যার লালন-পলন
এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঘর-সংসার
সামলানোর ব্যাপারে তিনি যে ধৈর্য ও
কর্তব্যনিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছেন
তা সত্যিই বিরল।
হযরত সাওদা রা. ছিলেন খুবই হাসি-
খুশী ও খোশ মেজাজী মহিলা।
পারিবারিক পরিবেশে তিনি অনেক সময়
এমন হাস্য-কৌতুকেরও
অবতারণা করতেন যা শুনে স্বয়ং রাসুল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও
প্রাণ খুলে হাসতেন। এরূপ হাসিখুশি ও
আনন্দমুখর পরিবেশ
সৃষ্টি করে তিনি মহাবনী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হযরত
খাদিজা রা.-এর বিচ্ছেদজনিত শোক
অনেকটা লাঘব করে আনতে সক্ষম
হয়েছিলেন। ফলে ঘর সংসারের
ব্যাপারে অনেকটা চিন্তামুক্ত
হয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনরায়
সর্বাত্মক দীনের প্রচার
কাজে মনোনিবেশ করেন।
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমগ্র
মানবজাতির জন্যই রাসূল
হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন। আল্লাহ
তায়ালা তাঁর
সহযোগী শক্তিরূপে মনোনীত করেছিলেন
নিবেদিত প্রাণ সাহাবায়ে কেরাম রা. এর
জামায়াতকে। মক্কার
জীবনে কাবা শরীফের অদূরে দারুল
আরকামে প্রতিষ্ঠিত
শিক্ষাকেন্দ্রে বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
সাহাবায়ে কেরাম এসে সমবেত হতেন।
এখানে তারা ইসলামের যাবতীয় বিধান
ও আদেশ-নিষেধ সম্পর্কে অবহিত
হতেন, অতঃপর অর্জিত জ্ঞান
অন্যদের নিকট পৌঁছানাই ছিল তাঁদের
প্রধান ও প্রথম দায়িত্ব।
ইসলামে নারী ও পুরুষের কর্মক্ষেত্র
ভিন্ন। শরীয়তসম্মত জীবনযাপনের
ক্ষেত্রে কোন নারীকে জ্ঞানার্জনের
নিমিত্তে গয়রে মাহরাম পুরুষের নিকট
পাঠানো যায় না। সাহাবীদের প্রায়
অর্ধেকই তো ছিলো নারী। এজন্য
প্রয়োজন ছিল এমন একদল নিবেদিত
প্রাণ মহিলা সাহাবিয়ার
যারা আসহাবে সুফফার সদস্যগণের মত
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
একান্ত সান্নিধ্যে থেকে ইসলাম
সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করে অন্যদের
নিকট তা পৌঁছাতে সক্ষম হবে।
ইসলামের এ মহা প্রয়োজনীয়তার
দিকে লক্ষ করেই রাসূলে মকবুল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত
সাওদা বিনতে যাময়া রা.-এর পর হযরত
আয়শা রা. কে বিবাহ করেন।
হযরত আয়শা বিনতে আবু বকর রা.
ছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
সর্বাপেক্ষা প্রিয় ব্যক্তিত্ব হযরত
আবু বকর রা. এর স্নেহধন্যা কন্যা।
তাছাড়া তিনি ছিলেন প্রখর ধীশক্তির
অধিকারিনী নারী। সমাজে আল্লাহর
দ্বীনের যাবতীয় খুটিনাটি বিষয়
পৌঁছানোর মতো জ্ঞান ও
প্রজ্ঞা দ্বারা সমৃদ্ধ করার জন্য
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকেই পছন্দ
করলেন এবং মানুষের স্বাভাবিক
লেখাপড়া শুরু করার বয়সেই তিনি হযরত
আয়শা রা. কে স্ত্রীরূপে গ্রহণ
করে তার সান্নিধ্যে নিয়ে আসেন।
নবুওয়াতের দশম বর্ষের শাওয়াল
মাসে এ শুভ পরিণয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন
হয় এবং হিজরতের পর নয় বছর বয়স
থেকে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে নিয়মিত
দাম্পত্য জীবন-যাপন শুরু করেন। তখন
থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যেসকল
মুসলিম নারীগণ বিভিন্ন সমস্যা ও
জিজ্ঞাসা নিয়ে রাসূলে কারীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
দবরারে আসতেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
কাছ থেকে তাদের সেসব জিজ্ঞাসার
সমাধান জানা ও তাদের নিকট বিশ্লেষণ
করার দায়িত্ব পালন করতেন উম্মত
জননী হযরত আয়শা বিনতে আবু বকর
রা.।
ইলমে হাদীসের
ক্ষেত্রে উম্মতে মুসলিমা হযরত
আয়শা রা. এর নিকট যে কতটুকু
ঋণী তা হাদীস চর্চাকারীমাত্রই
অনুধাবন করতে পারেন। সহীহ হাদীস
গ্রন্থসমূহে তাঁর থেকে বর্ণিত হাদীসের
সংখ্যা চার হাজারেরও অধিক।
রাসূলূ্ল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তেকালের
সময় হযরত আয়শা রা.এর বয়স ছিল
মাত্র আঠারো বছর। এরপর
তিনি আরো আটচল্লিশ বছর হায়াত
পেয়ে ছিলেন। ছিষট্টি বছর
বয়সে হিজরী ৫৭ সালে তাঁর ইন্তিকাল
হয়।
হযরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সংসার ছিল
নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষার্থীগণের জন্য
শিক্ষালয় ও সাধনাকেন্দ্র। বসবাসের
কামরাগুলো ছিল খর্জুর শাখা নির্মিত
কুটির বিশেষ। মক্কা বিজয়ের পর
ইসলামী রাষ্ট্রের পরিধি যখন প্রায়
পৌনে আট লক্ষ বর্গমাইল পর্যন্ত
বিস্তৃত তখনও এ কুটিরের চেহারায়
কোন পরিবর্তনের ছোয়া লাগেনি।
জীবন যাত্রা ছিল কঠোর কৃচ্ছতা ও
নিদারুন সাধনাপূর্ণ, ভোগ-বিলাসের
কোন স্পর্শ সেখানে ছিল না।
হযরত আয়শা রা. এর বর্ণনা করেন যে,
কখনো কখনো পরপর তিনটা চাঁদের
উদয়াস্ত আমরা দেখতাম এমন
অবস্থায় যে, আমাদের চুলোয় আগুন
জ্বলতো না। শুকনো খেজুর ও
প্রতিবেশি আনসারদের তরফ
থেকে পাঠানো সামান্য কিছু দুধই ছিল
আমাদের জীবন ধারনের একমাত্র
অবলম্বন। ঘরে কিছু থাকলে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহার
করতেন, না থাকলে রোযা রাখতেন। এ
অবস্থায়ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীগণের
মধ্যে কোন বিরূপ
প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না হওয়ার একটাই
কারণ ছিল, তা হলো, দুনিয়ার ভোগ-
বিলাসকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করেই
তাঁরা মহান আল্লাহর প্রিয় রাসূলের
সাহচর্যে এসেছিলেন।
(সমাপ্ত)


Post by Dawtul Haq.

Blog eidtor_Syed Rubel.

ইহুদী, খৃষ্টান, হিন্দু ,বৌদ্ধ, নাস্তিক ও দেশের নারীবাদীদের ইসলামের বিরুদ্ধে করা সকল অপপ্রচারের দাঁত ভাঙ্গাঁ জবাব দেখুন এই পোস্ট টি থেকে

শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের কে জানার সুযোগ দিন ।আপনি জেনেছেন হয়তো সে জানেনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :