বিবাহ-সংক্রান্ত অধিকার

কোন মন্তব্য নেই
সাইয়্যিদ জুলফিকার জহুর
কন্যাসন্তানের বিবাহের
ক্ষেত্রে ইসলাম কনের মতামত
গ্রহণের ক্ষেত্রে গুরুত্ব প্রদান
করেছে। এ ক্ষেত্রে কোনো সিদ্ধান্ত
তার উপর জোরপূর্বক
চাপিয়ে দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না।
যা নিম্নে বর্ণিত হাদিস
থেকে আমরা অনুধাবন করতে পারি,
‘হজরত ইবনে উমর থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন_ উসমান ইবনে মাজউন
(রা.) এক মেয়ে রেখে ইন্তেকাল
করলেন। ইবনে উমর (রা.) বলেন,
আমার মামা কুদামাহ (রা.) তাকে আমার
সঙ্গে বিবাহ দিলেন। আর তিনি হলেন
তার চাচা। কিন্তু তিনি (চাচা) তার
সঙ্গে পরামর্শ করলেন না। আর এ
ঘটনা তার বাবার মৃত্যুর পরে সংঘটিত
হয়েছে। অতঃপর সে তার
বিবাহকে অপছন্দ করল
এবং মুগিরা ইবনে শু’বা (রা.)-এর
সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার
ইচ্ছা ব্যক্ত করল। অতঃপর
তিনি তাকে তার সঙ্গেই বিবাহ
দিলেন।’_ সুনানে ইবনে মাজাহ্
উলি্লখিত হাদিসের আলোকে বিয়ের
ক্ষেত্রে পাত্রীর মতামত গ্রহণের
গুরুত্ব সহজেই অনুমেয়।
দাম্পত্য জীবন নারী ও পুরুষের
জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ
দাম্পত্য জীবনকে সুন্দর ও সুখময়
করতে হলে কতিপয় বিষয়ের সমতা ও
সামঞ্জস্যতা প্রয়োজন। যার ইঙ্গিত
পাওয়া যায় পবিত্র কোরআনের নিম্ন
বর্ণিত আয়াতে, ‘নিশ্চয়ই যেসব পুরুষ
ও যেসব স্ত্রীলোক মুসলমান, মু’মিন,
আল্লাহর অনুগত, সত্যপথের পথিক,
ধৈর্যশীল, আল্লাহ সম্মুখে অবনত,
সাদকাহকারী, রোজা পালনকারী,
নিজেদের লজ্জাস্থানের
হিজাফতকারী এবং অধিক মাত্রায়
আল্লাহর স্মরণকারী_ তাদের জন্য
ক্ষমা এবং অতি বড় পুরস্কার
নির্দিষ্ট করে রেখেছেন।’
সুরা আহযাব-৩৫
যে সংসারে স্বামী-স্ত্রী উল্লেখিত
গুণাবলী অর্জন করতে সক্ষম
হবে সে সংসারে আল্লাহ প্রদত্ত
সার্বিক সুখ-শান্তি বিরাজ করবে।
ইনশাআল্লাহ!
মেয়েদের বিবাহের ক্ষেত্রে দেনমোহর
প্রাপ্তি তাদের অন্যতম অধিকার। এ
দেনমোহর তার পারিবারিক ও সামাজিক
মর্যাদা অনুসারে নির্ধারণ
করা হবে এবং তা অবশ্যই
বরকে পরিশোধ করতে হবে। এ
দেনমোহর বিয়ের পরপরই পরিশোধ
করা কর্তব্য। তবে কনের
অনুমতি সাপেক্ষে পরবর্তীতেও
পরিশোধ করা যেতে পারে।
এক্ষেত্রে স্ত্রীর কাছ থেকে দেনমোহর
ক্ষমা চেয়ে নেওয়া অনুচিত। দেনমোহর
বিবাহিত নারীর অর্থনৈতিক প্রাথমিক
সচ্ছলতা ও স্বাচ্ছন্দ্যতার প্রতীক ও
অধিকার।
সমাজে এটা নিয়ে আলোচনা কম হয়।
মনে রাখতে হবে, সমাজে ঋণ খেলাপির
চেয়ে দেনমোহর খেলাপির সংখ্যা কম নয়
বেশিই হবে। দেনমোহর প্রদান
সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র
কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘আর
তোমরা তোমাদের
স্ত্রীদেরকে সানন্দে তাদের মোহর
পরিশোধ কর।’ সুরা নিসা-৪
ইসলাম কন্যাসন্তানের যে অধিকার ও
মর্যাদা প্রদান
করেছে তা নীতিগতভাবে বাস্তবায়িত
হলে সমাজে নারীরা নিগৃহীত ও
নির্যাতিত হত না। এক্ষেত্রে নেতা,
ইমাম এবং পরিবার ও সমাজের
অভিভাবকদের
সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
এক্ষেত্রে সুবোধসম্পন্ন
আইনপ্রণেতা ও মুফতিয়ে কেরাম
এবং আইনশৃক্সখলা রক্ষা বাহিনীর
বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে।
অসমর্থিত ও অযাচিত
ফতোয়া গ্রহণযোগ্য নয়।
সমাজে ফতোয়ার নামে এক শ্রেণীর
মানুষ তাদের স্বার্থকে লালন
করে ইসলামের ওপর দোষ চাপায়
যা অজ্ঞতারই নামান্তর।
এক্ষেত্রে প্রকৃত
অর্থে মুফতিয়ে কেরামের দলগত
সিদ্ধান্ত একান্ত প্রয়োজন।
ইসলাম নারীদের ক্ষেত্রে ব্যাপক
দিকনির্দেশনা দিয়েছে। যার
ফলে জাহেলিয়াত যুগের অন্ধকার
থেকে নারী জাতিকে আলোর পথে বের
করে আনতে পেরেছে।
লেখক : খতিব, মসজিদুত তাকওয়া,
ধানমন্ডি, ঢাকা।

শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের কে জানার সুযোগ দিন ।আপনি জেনেছেন হয়তো সে জানেনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :