মহিলাদের অধিকার না থাকার উপকারিতা - অনর্থক তালাকের পরিণাম

কোন মন্তব্য নেই
মহিলাদের অধিকার না থাকার
উপকারিতা
মহিলাদেরকে তালাকের অধিকার
না দেয়ার মধ্যেই রয়েছে উপকারিতা ও
কল্যাণ। এ সম্পর্কে প্রসিদ্ধ
হানাফী ফকীহ ইবনে হুমামের বক্তব্য
অত্যন্ত প্রণিধানযোগ্য তিনি বলেন,
ﺟﻌﻠﻪ ﺑﻴﺪ ﺍﻟﺮﺟﺎﻝ ﺩﻭﻥ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ
ﻻﺧﺘﺼﺎﺻﻬﻦ ﺑﻨﻘﺼﺎﻥ ﺍﻟﻌﻘﻞ
ﻭﻏﻠﺒﺔ ﺍﻟﻬﻮﻯ ، ﻭﻋﻦ ﺫﻟﻚ ﺳﺎﺀ
ﺍﺧﺘﻴﺎﺭﻫﻦ ﻭﺳﺮﻉ ﺍﻏﺘﺮﺍﺭﻫﻦ
ﻭﻧﻘﺼﺎﻥ ﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﻋﻨﻪ ﻛﺎﻥ ﺃﻛﺜﺮ
ﺷﻐﻠﻬﻦ ﺑﺎﻟﺪﻧﻴﺎ ﻭﺗﺮﺗﻴﺐ ﺍﻟﻤﻜﺎﻳﺪ
ﻭﺇﻓﺸﺎﺀ ﺳﺮ ﺍﻷﺯﻭﺍﺝ ﻭﻏﻴﺮ ﺫﻟﻚ ،
তালাকের অধিকার পুরুষদের
হাতে রাখার বিভিন্ন কারণ সমূহের
মধ্যে অন্যতম কয়েকটি এই যে,
ক. বুদ্ধি এবং দূরদর্শিতার
স্বল্পতা এবং অধিক আবেগপূর্ণ
হওয়ার কারণে অধিকার প্রয়োগে ভুল
করে বসা এবং সহজেই ষড়যন্ত্রের
শিকার হওয়া।
খ. আর ধর্মীয় ব্যাপারে দুর্বলতা হেতু
সাজ সজ্জা এবং ফ্যাশন
ইত্যাদিতে অধিক নিমগ্ন থাকা, যার
পরিণামে অতি সহজে ষড়যন্ত্রকারীদের
ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়া। অনেক
ক্ষেত্রে আপন উদ্দেশ্য সফল করার
জন্য অযৌক্তিক তাল বাহানা শুরু
করা আর স্বামীর গোপনভেদের
কথাবার্তা অন্যদের নিকট ফাঁস
করে দেয়া। এসব ছাড়াও অনেক কারণ
এবং রহস্য রয়েছে যা মানুষের জন্য
অনুধাবন করা সম্ভব নয়।
কেননা আল্লাহ পাকের কর্মকাণ্ডের
এবং তার সিদ্ধান্তাবলির সমস্ত কারণ
এবং রহস্যসমূহ সীমিত জ্ঞানের
অধিকারী মানুষের জন্য
বুঝা এবং অনুধাবন
করা কী করে সম্ভব হতে পারে?
একথাও মনে রাখা প্রয়োজন যে, পুরুষের
বুদ্ধি এবং ধর্মশক্তি ও সঠিক প্রয়োগ
ক্ষমতার কারণে তাদেরকে তালাকের
পুরাপুরি অধিকার দেয়া হয়েছে। অবশ্য
এর পাশাপাশি তালাকের অধিকার
প্রয়োগের জন্য বহুবিধ শর্তাবলীর
পাবন্দ করা হয়েছে। এবং যথাসম্ভব
তালাক না দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
অনর্থক তালাকের পরিণাম
রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
ﺍﺑﻐﺾ ﺍﻟﺤﻼﻝ ﺍﻟﻄﻼﻕ অর্থাৎ
বিশেষ প্রয়োজনে যে সমস্ত কাজের
অনুমতি প্রদান করা হয়েছে সে গুলির
মধ্যে সর্বাধিক অপছন্দনীয় কাজ
হচ্ছে তালাক প্রদান করা। (আবু দাউদ
১/৩১২)
এ কারণেই অনর্থক তালাক
দেয়াকে গোনাহের কাজ বলে মন্তব্য
করা হয়েছে। প্রসিদ্ধ আরিফ বিল্লাহ
এবং প্রখ্যাত ফকীহ
আল্লামা শা’রানী রহ. বলেন,
ﺍﺗﻔﻘﻮﺍﻋﻠﻲ ﺍﻥ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﻣﻜﺮﻭﻩ
ﻓﻲ ﺣﺎﻝ ﺍﺳﺘﻘﺎﻣﺔ ﺍﻟﺰﻭﺟﻴﻦ ﺑﻞ
ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﺑﺘﺤﺮﻳﻤﻪ- ﺍﻟﻤﻴﺰﺍﻥ
ﻟﻠﺸﻌﺮﺍﻧﻲ ﺝ২ﺹ১৩৫
এ বিষয়ে সমস্ত ওলামা ফকীহগণ
একমত রয়েছেন,
অযৌক্তিকভাবে তালাক প্রদান
করা অত্যন্ত অপছন্দনীয় কাজ। আর
ইমাম আবু হানীফা অযৌক্তিক তালাক
দেয়াকে হারাম বলেছেন।
আল্লামা ইবনে হুমাম বলেন :
ﻭﻻﻳﺨﻔﻲ ﺍﻥ ﻛﻼﻣﻬﻢ ﻓﻴﻤﺎ
ﺳﻴﺎﺗﻲ ﻣﻦ ﺍﻟﺘﻌﺎﻟﻴﻞ ﻳﺼﺮﺡ ﺑﺎﻧﻪ
ﻣﺤﻈﻮﺭ ﻟﻤﺎ ﻓﻴﻪ ﻣﻦ ﻛﻔﺮﺍﻥ
ﻧﻌﻤﺔ ﺍﻟﻨﻜﺎﺡ-ﻓﺘﺢ ﺍﻟﻘﺪﻳﺮ
ﺝ ২ﺹ১৪৬
ফকীহদের কথাবার্তা দ্বারা প্রতীয়মান
হয় যে, উপযুক্ত কারণ ব্যতীত তালাক
দেয়া নিষিদ্ধ। কেননা এতে বিবাহের মত
আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামত
এবং ইহসানের অবমূল্যায়ন
এবং অক”তজ্ঞতা প্রকাশ পায়।
ইবনে হুমাম আরো বলেন যে,
ﺍﻻﺻﺢ ﺣﻈﺮﻩ ﺍﻻﻟﺤﺎﺟﺔ প্রয়োজন
ব্যতীত তালাক দেয়া নিষেধ এটাই
সঠিক মতামত। এরূপই
দুররে মুখতারে বলা হয়েছে যে, ﺍﻻﺻﺢ
ﺣﻈﺮﻩ ﺍﻱ ﺍﻟﻄﻼﻕ
ﺑﻼﺿﺮﻭﺭﺓ অর্থাৎ
অপ্রয়োজনে তালাক দেয়া নিষেধ। এটাই
সঠিক মতামত। আল্লামাহ শামীও এই
মতটিকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
(শামী ২/২৬১)
হানাফী ফিকহের প্রসিদ্ধ কিতাব
হেদায়াতেও তালাককে নিষেধ বলে কেবল
প্রয়োজনের সময় তালাক
দেয়াকে জায়েয বলা হয়েছে-
ﺃﻥ ﺍﻷﺻﻞ ﻓﻲ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﻫﻮ
ﺍﻟﺤﻈﺮ ﻟﻤﺎ ﻓﻴﻪ ﻣﻦ ﻗﻄﻊ ﺍﻟﻨﻜﺎﺡ
ﺍﻟﺬﻱ ﺗﻌﻠﻘﺖ ﺑﻪ ﺍﻟﻤﺼﺎﻟﺢ ﺍﻟﺪﻳﻨﻴﺔ
ﻭﺍﻟﺪﻧﻴﻮﻳﺔ ﻭﺍﻹﺑﺎﺣﺔ ﻟﻠﺤﺎﺟﺔ ﺇﻟﻰ
ﺍﻟﺨﻼﺹ
আসলে তালাক দেয়া নিষেধ, কেননা এর
দ্বারা বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়,
অথচ বিবাহের সাথে ইহকাল পরকালের
অসংখ্য উপকারিতা সম্পৃক্ত রয়েছে।
অবশ্য প্রয়োজনে বৈধ করা হয়েছে।
হাম্বলী প্রসিদ্ধ ফকীহ ইবনে কুদামাহ
বলেন-
ﺍﻟﻄﻼﻕ ﻋﻠﻰ ﺧﻤﺴﺔ ﺃﺿﺮﺏ
)ﻭﺍﻟﺜﺎﻧﻲ( ﻣﻜﺮﻭﻩ ﻭﻫﻮ ﺍﻟﻄﻼﻕ
ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺣﺎﺟﺔ ﻟﻘﻮﻝ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ
ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ " ﺃﺑﻐﺾ ﺍﻟﺤﻼﻝ
ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﻭﻋﻨﻪ ﺃﻧﻪ
ﻣﺤﺮﻡ ﻻﻧﻪ ﺿﺮﺭ ﺑﻨﻔﺴﻪ ﻭﺯﻭﺟﺘﻪ
ﻭﺍﻋﺪﺍﻡ ﻟﻠﻤﺼﻠﺤﺔ ﺍﻟﺤﺎﺻﻠﺔ ﻟﻬﻤﺎ
ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺣﺎﺟﺔ ﺇﻟﻴﻪ ﻭﻟﻘﻮﻝ ﺍﻟﻨﺒﻲ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ " ﻻ ﺿﺮﺭ
ﻭﻻ ﺍﺿﺮﺍﺭ-ﺍﻟﻄﺎﻓﻲ ) ﺍﻟﺸﺮﺡ
ﺍﻟﻜﺒﻴﺮ ﻻﺑﻦ ﻗﺪﺍﻣﺔ ﺝ৮ﺹ২৩৪)
অর্থাৎ যেহেতু তালাক অত্যন্ত
অপছন্দনীয় এবং স্বামী-স্ত্রী উভয়ের
জন্যই অত্যন্ত ক্ষতির কারণ তাই
ইমাম আহমদের একমত অনুসারে তালাক
দেয়া হারাম। কেননা রাসূলে পাক
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ইরশাদ করেছেন যে, নিজেও
ক্ষতিগ্রস্ত হয়ো না এবং অন্যকেও
ক্ষতিগ্রস্ত করো না।

সূত্রঃ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তরদাওয়াতি সংগঠন মজলিসে দাওয়াতুলহক। এর মৌল উদ্দেশ্য মানব জীবনেসকল ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত ওআদর্শের প্রতিফলন ঘটানো।কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামের ইত্তিবা-অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলারইবাদত আনুগত্যের দাবি পূরণ করাই হলএকজন মুসলমানের ইহকালীন জীবনেরমূল উদ্দেশ্য।।শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের কে জানার সুযোগ দিন ।আপনি জেনেছেন হয়তো সে জানেনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :