ইভটিজিং ঠেকাতে শরয়ী পর্দার বিকল্প নেই [জুনাইদ আল হাবিব]

কোন মন্তব্য নেই
মানুষের ইজ্জত-সম্ভ্রম খুবই
মূল্যবান। যা টাকা-পয়সার
বিনিময়ে অর্জন করা যায় না। আবার
তা অর্জন করা যেমন তেমন,
ধরে রাখা খুবই কঠিন। একবার
চলে গেলে তা আর ফিরে পাওয়া যায় না।
সমাজের দৃষ্টিতে কারো গায়ে কলংকের
দাগ লেগে গেলে, তা আর মুছার মত নয়।
সুস্থ মস্তিস্কের অধিকারী মানব
সভ্যতা উলঙ্গ থাকতে পারে না।
অন্যথায় বুঝতে হবে – সেই
মানুষটা পাগল ছাড়া কিছুই নয়। কারণ,
পাগলের কোন লজ্জা-শরমের অনুভূতি।
আর মানুষের লজ্জাশরম হিফাজত
রাখাও ইজ্জত-সম্মানের অন্তর্ভূক্ত।
এ জন্য আল্লাহ
তা‘আলা মানুষকে আব্রু
রক্ষার্থে পোশাক দিয়েছেন। আল্লাহ
তা‘আলা বলেন, “হে বনী আদম!
আমি তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ
করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত
করে এবং অবতীর্ণ করেছি সাজ-
সজ্জার বস্ত্র। আর পরহেযগারীর
পোশাক – এটি সর্বোত্তম।
এটা আল্লাহর কুদরতের অন্যতম
নির্দশন, যাতে তারা চিন্তা-
ভাবনা করে।” (সূরাহ আ‘রাফ, আয়াত :
২৬)
তাই আমরা মানুষরা লজ্জাস্থান আবৃত
করে ইজ্জত-সম্মান বাঁচানোর জন্য
আল্লাহ প্রদত্ত পোশাক ব্যবহার
করে থাকি। পুরুষ যারা আছে, তাদের
লজ্জাস্থানের সীমানা হলো – নাভীর
নিচ থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢেকে রাখা।
তেমনি নারীদের জন্যও লজ্জাস্থান
হিফাজতের হুকুম রয়েছে। বিধান
অনুযায়ী তাদের লজ্জাস্থানের
সীমানা হলো – তাদের আপাদমস্তক
সমস্ত শরীর। তাই নারীদের হিজাব
পড়ে বেগানা পুরুষ থেকে তাদের সমস্ত
শরীর ঢেকে রাখা কর্তব্য।
নারীরা এ বিধান পালনে বাইরে বের
হওয়ার জন্য বোরকা দ্বারা শরীর
আবৃত করে। কিন্তু দুঃখের বিষয়,
অনেকে তা ব্যবহার করে না।
তারা মহান আল্লাহর এ
পর্দা বিধানকে উপেক্ষা করে চলে।
যারা বোরকা পরে পর্দার
আড়ালে থাকতে চায় না,
বর্তমানে তাদের কারণে বখাটে ছেলেদের
উৎপাতে মেয়েদের বিভিন্ন সমস্যায়
পড়তে হচ্ছে। আর এর কারণেই
সাম্প্রতিককালে বহুল আলোচিত বিষয়
হয়ে দাঁড়িয়ে ইভটিজিং বা নারীদের
প্রতি যৌন হয়রানি। আজকাল
“ইভটিজিং-এর প্রতিবাদে স্কুল-
কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও
অভিভাবকদের অংশগ্রহণে এক
মানববন্ধন”, “বখাটেদের উৎপাত
বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি”,
“ইভটিজিং বন্ধে গণপ্রতিরোধ
গড়ে তোলার দাবিতে গণজমায়েত”,
“সারা দেশে অব্যাহতভাবে নারীর
প্রতি অবমাননাকর আচরচণ ও
নির্যাতন বন্ধ ও আত্মহত্যার
প্ররোচনা দানকারীদের গ্রেফতার ও
বিচারের দাবি” এই নামে পত্র-
পত্রিকায়
লেখালেখি করে সারা দেশে গণজাগরণ
সৃষ্টি করলেও তা প্রতিরোধ
করা সম্ভব হচ্ছে না।
আর এই পদ্ধতিতে ফলপ্রসু কিছু হবেও
না – যদি মেয়েরা এভাবে হিজাব
বা পর্দা লংঘন করে বেপর্দা-
অর্ধোলঙ্গ হয়ে চলাফেরা করে। মহান
আল্লাহর বিধান লংঘনের পরিণতিই
যে এটা।
সুতরাং বখাটে ছেলেদের হাত
থেকে মেয়েদের বাঁচার একমাত্র পথ হল
– তাদের পুরোপুরিভাবে পর্দাবিধান
পালন করা। যদি তারা পর্দার হুকুম
পালন করে চলে,
তাহলে তারা ইভটিজিংসহ অনেক
সমস্যা থেকে বেঁচে যাবে।
নারীদেরকে পর্দার নির্দেশ
দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন
তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের
যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন
যা সাধারণত প্রকাশমান
তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য্য প্রদর্শন
না করে এবং তারা যেন তাদের জিলবাব
বক্ষদেশে দেয় আর তারা যেন তাদের
স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর
পুত্র, ভাই, ভাতিজা, ভাগিনা,
স্ত্রীলোক, অধিকারভুক্ত বাঁদী,
যৌনকামনামুক্ত পুরুষ ও বালক –
যারা নারীদের গোপন অঙ্গ
সম্পর্কে অজ্ঞ তাদের ব্যতীত
কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য্য প্রকাশ
না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-
সজ্জা প্রকাশ করার জন্য
জোরে পদচারনা না করে। হে মুমিনগণ!
তোমরা সবাই আল্লাহর নিকট
তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম
হও।” (সূরাহ নূর, আয়াত : ৩১)
সম্প্রতি নারীদের লাগামহীন চলাফেরা,
নির্লজ্জভাবে স্কীন টাইট-শর্ট
পোষাক পরিধান, উত্তেজক নৃত্য-
ক্রীড়া,
অঙ্গভঙ্গি প্রভৃতি বর্তমানে ফ্যাশন
হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর মেয়েদের এ
অশ্লীলতা ছেলেদের
চরিত্রকে অবক্ষয়গ্রস্ত করে দিচ্ছে।
হাদীসের বর্ণনা মতে,
নারীরা হচ্ছে শয়তানের ফাঁদ। যখন
তারা অর্ধনগ্ন হয়ে বাইরে বের হয়,
তখন শয়তান বখাটে যুবকদের
চোখে তাদেরকে আকর্ষণীয়
করে দেখায়। আর এতে তারা বেসামাল
হয়ে নানা অপকর্ম ঘটায়।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে – নারীদের
প্রতি যৌন হয়রানি বা ইভটিজিং-এর
প্রধান কারণই হচ্ছে নারীদের
বেপর্দা ও বেপরোয়া চলাফেরা।
এমতাবস্থায় যদি আমরা ইভটিজিং ও
বখাটেদের উৎখাতে সোচ্চার হওয়ার
সাথে সাথে আমাদের মেয়েদেরকেও
ইসলামী বিধান অনুযায়ী পর্দার
আড়ালে রাখতে পারি,
তাহলে আশা করা যায় – ইভটিজিংসহ এ
সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর সমাধান
হয়ে যাবে।
তা না করে সরকারীভাবে বিভিন্ন আইন
প্রণয়ন করা, মিছিল-
মিটিং করা এবং বিভিন্ন ধরনের
ইভটিজিংবিরোধী উদ্যোগ গ্রহণ করেও
যদি মেয়েদেরকে বেপর্দাভাবে ও
বেলাগাম ছেড়ে দেয়া হয়, তাহলে এই
ইভটিজিং কোনদিন বন্ধ হবে না।
কেননা, সুটকিমাছ হিফাজত
করে না রাখলে তো বিড়ালের আহার
হবেই। এই দুষ্ট লোভী বিড়ালের হাত
থেকে বাঁচাতে হলে সুটকি মাছকে যদি খুব
সতর্কতা সাথে হিফাজত করি,
তাহলে বিড়ালকে তাড়ানোর জন্য
আন্দোলন করতে হবে না।
বলা বাহুল্য, যদি মেয়েরা পর্দার
সাথে স্কুল-কলেজে বা যে কোন
স্থানে যাতায়াত করে,
তাহলে ইভটিজিং তো দূরের কথা,
তাদেরকে চিনতেই পারবে না বখাটেরা।
এতে সমস্যা নিমিষেই খতম হয়ে যাবে।


ব্লগ সম্পাদক ও এ্যাডমিনঃসৈয়দ রুবেল উদ্দিন
Next post "ইসলাম গ্রহণ নিয়ে সাক্ষাতকার হিন্দু থেকে মুসলমান হলেন গঙ্গারাম চোপড়া
ব্লগের প্রকাশিত পোস্ট গুলি ফেসবুকে শেয়ার করে আমাদের চলার পথকে আরো গতিময় করে তুলুন ।আমরা দিন রাত খাটিয়ে পোস্ট গুলি লেখি ।ব্লগে প্রকাশ করে আপনাদেরকে উপহার দেয় ।আপনারা যদি শেয়ার না করেন?তাহলে আমরা তো সামনে এগিয়ে যেতে পারবোনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :