ভুল ধারণাগুলো দূর করুন তামাক-জর্দা ক্ষতিকর কিন্তু সুপারি?

কোন মন্তব্য নেই
ভুল ধারণাগুলো দূর করুন
ডা. মঈনুল ইসলাম হাসিব
লেখক : রেডিওথেরাপি বিভাগ
শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,
বরিশাল
আমাদের দেশে যুগ যুগ
ধরে স্বাস্থ্যবিষয়ক কিছু ভুল
ধারণা চালু আছে। এগুলো অনেক
ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যসেবাকে পেছনের
দিকে নিয়ে যাচ্ছে। কোন কোনটি আবার
ভয়ঙ্কর পরিণতির জন্য দায়ী। এরকম
কয়েকটি ভুল
ধারণা নিয়ে আলোচনা করা হল।
তামাক-জর্দা ক্ষতিকর কিন্তু
সুপারি ক্ষতিকর নয়
আমাদের দেশে মেহমানদারির
একটি অবিচ্ছেদ্য উপাদান হল পান-
সুপারি। এমনকি পান-
সুপারি ছাড়া বিয়ে হয় না। অনেকেই
মনে করেন তামাক-জর্দা-
সাদাপাতা ক্ষতিকর হলেও পান
এবং সুপারি ক্ষতিকর নয়
বরং স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
এমনটা জেনে থাকলে একদম ভুল
জেনেছেন এতদিন! বিশ্বের কোথাও
খাদ্য তালিকায় এ বস্তুগুলো নেই।
বরং সুপারিকে রাখা হয়েছে ক্যান্সার
সৃষ্টিকারী পদার্থ বা ‘কারসিনোজেন’-
এর তালিকায়। মুখ গহ্বরের
ক্যান্সারের অন্যতম কারণ
বলা হয়েছে জর্দা ও সুপারি খাওয়ার
অভ্যাসকে। আমাদের দেশে মুখ ও গলার
ক্যান্সারের রোগী বেশি হওয়ার মূল
কারণ ধূমপানের পাশাপাশি পান খাওয়ার
বদাভ্যাসটি। এ ছাড়া পানের
সঙ্গে ব্যবহƒত চুন,
সুপারি এবং জর্দা দাঁত ও মাড়ির
নানা রোগ সৃষ্টি করে। কাজেই এ
অভ্যাস থেকে থাকলে আজই ত্যাগ
করুন।
কাঁচা লবণ খেলে প্রেসার বাড়ে, রান্নায়
খেলে ক্ষতি নেই
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের
কোন রোগী ডাক্তারের
কাছে গেলে সম্ভবত প্রথম
যে উপদেশটি শুনবেন তা হল ‘লবণ কম
খেতে হবে, আলগা বা কাঁচা লবণ
খাওয়া যাবে না’।. আর এখানেই
বুঝতে ভুলটা হয়।
আপনি হয়তো ভাববেন
কাঁচা বা আলগা লবণ
তো খাওয়া যাবে না, তাই রান্নার সময়
তরকারিতে একটু বেশি লবণ দিলেই
সমস্যা মিটে গেল। অনেকে আবার
কাঁচা লবণ টেলে বা ভেজে ‘পাকা’
করে খান। লবণ
টাললে পানি শুকিয়ে আরও গাঢ়ই
হবে কিন্তু সোডিয়াম ক্লোরাইড
সোডিয়াম ক্লোরাইডই থাকবে।
আসলে আলগা বা কাঁচা লবণ খেতে বারণ
করার অর্থ হল তরকারিতে যে লবণ
দেয়া হয় তার অতিরিক্ত লবণ
না খাওয়া। কারণ অতিরিক্ত লবণ
কিন্তু সত্যি রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়।
তবে আবার অনেক
কারণে রক্তে সোডিয়াম ক্লোরাইড
কমে গেলে ডাক্তার অতিরিক্ত লবণ
খেতে বলতে পারেন।
টক খেলে ব্লাড প্রেসার কমে
প্রচলিত আছে টক খেলে ব্লাড প্রেসার
বা রক্তচাপ কমে। তাই উচ্চ
রক্তচাপের রোগীরা প্রায়ই এ
পদ্ধতি ব্যবহার করেন। এমনও
দেখা গেছে প্রেসার কমাতে তেঁতুল
গোলা খেয়ে এসিডিটির মারাÍক
সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন
রোগী। কারণ তেঁতুলে আছে টারটারিক
এসিডের মতো যথেষ্ট
শক্তিশালী এসিড। আসলে উচ্চ
রক্তচাপ যাদের আছে তাদের কখনোই
হেলাফেলা করা উচিত নয়। জীবন
যাত্রা পরিবর্তনের
পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ
মতো প্রয়োজনে এন্টি হাইপারটেনসিভ
ওষুধ খেতে হবে। নিয়মিত চেপআপ
করাতে হবে এবং অবশ্যই ডাক্তারের
পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বন্ধ
করা যাবে না। কারণ যারা অনিয়মিত
ওষুধ খান তাদের মধ্যে স্ট্রোকের
ঝুঁকি অনেক বেশি। আর
মনে রাখতে হবে টক খাওয়ার
সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের কোন সম্পর্ক
নেই।
গরমের দিনে কৃমির ওষুধ খাওয়া যায় না
অনেক মা-ই বাচ্চাকে নিয়ে ডাক্তারের
কাছে গেলে ডাক্তার সাহেব যখন কৃমির
ওষুধ লেখেন মা রাজি হন না। বলেন,
এখন তো গরমের দিন, বৃষ্টি নেই;
কিভাবে খাওয়াব। তাদের ধারণা কৃমির
ওষুধ খেতে হয় শুধু ঠাণ্ডার
দিনে বা বৃষ্টি হলে। মেডিকেল
সায়েন্সে এ ধরনের কথার কোন
ভিত্তি নেই। আমাদের দেশে বিশেষ
করে শিশুদের রক্তস্বল্পতার অন্যতম
কারণ কৃমির সংক্রমণ।
এছাড়া খাদ্যনালী বন্ধ
হয়ে যাওয়া এবং পিত্তনালী বন্ধ
হওয়ার বড় কারণ কৃমি। দেশে জাতীয়
টিকা দিবসে বিভিন্ন সময়ে কৃমির ওষুধ
খাওয়ানো হয়। তাছাড়া স্কুলেও
মাঝে মাঝে কর্মসূচি থাকে।
গ্রামাঞ্চলে খালি পায়ে হাঁটা,
যেখানে সেখানে মলত্যাগ
এবং পায়খানার পর সাবান বা ছাই
দিয়ে হাত না ধোয়ার কারণে কৃমির
সংক্রমণ খুব বেশি। শিশুর বয়স এক
বছর পূর্ণ হলে এবং পূর্ণ
বয়স্করা অন্তত তিন মাস অন্তর
কৃমির ওষুধ খাওয়া উচিত। এ
ক্ষেত্রে আজেবাজে ওষুধ
না খেয়ে ডাক্তারের পরামর্শ
মতো কৃমির ওষুধ খেতে হবে। এ ওষুধের
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তেমন নেই। আর
গরম-ঠাণ্ডার সঙ্গে তো কোন
সম্পর্কই নেই।
তবে গর্ভবতী মায়েরা সাধারণ
কৃমিনাশক ওষুধ খেতে পারবে না।


ব্লগ সম্পাদক ও এ্যাডমিনঃসৈয়দ রুবেল উদ্দিন
Next post "Next post "আপনার সন্তানকে তাওহীদের শিক্ষা দিন
ব্লগের প্রকাশিত পোস্ট গুলি ফেসবুকে শেয়ার করে আমাদের চলার পথকে আরো গতিময় করে তুলুন ।আমরা দিন রাত খাটিয়ে পোস্ট গুলি লেখি ।ব্লগে প্রকাশ করে আপনাদেরকে উপহার দেয় ।আপনারা যদি শেয়ার না করেন?তাহলে আমরা তো সামনে এগিয়ে যেতে পারবোনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :