ঐতিহাসিক কাহিনী

কোন মন্তব্য নেই
অটল পর্বত সম
রুকাইয়া সালাম
নারী মানব সভ্যতার অর্ধাংশ।
প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ হোক
বিশ্বের যেখানে যত মহৎ কর্ম
সংগঠিত হয়েছে, তা সম্পাদনের
পেছনে পুরুষের অনুরূপ নারীরও অবদান
রয়েছে। সৃষ্টির ঊষালগ্ন থেকেই
নারী কন্যা, জায়া,
জননীরূপে সর্বদা পুরুষের
পাশে থেকে প্রেরণা, শক্তি ও সাহস
যুগিয়েছে। দুঃখ-যন্ত্রণায় ও বিপদে-
আপদে পরম আত্মজন
হয়ে পাশে থেকে সান্ত্বনা ও আশার
বাণী শুনিয়েছে।
তেমনি পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা যায় –
অপরাধীরা যখনই সভ্যজনদের ওপর
ঝাঁপিয়ে পড়েছে, তখনই সমাজের বীর
পুরুষেরা মহাপরাক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন
সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য। তখন কিন্তু
নারীরাও ঘরে বসে থাকেননি। অসীম
সাহস নিয়ে এগিয়ে এসেছেন বীরাঙ্গণার
বেশে। কখনো বা বীর-দর্পে অবতীর্ণ
হয়েছেন যুদ্ধের ময়দানে। কখনো নিজ
স্বামী বা আদরের পুত্তলি হৃদয়ের
ছেঁড়াধন পুত্রকে সঁপে দিয়েছেন সত্য
প্রতিষ্ঠার জন্য। ইতিহাসে এসব
নারীদের নাম
স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে।
এমনি একজন জননী হযরত
আসমা বিনতে আবু বকর (রা.) –
যিনি হযরত আবু বকর (রা.)-এর
কন্যা, এক মহান মহিলা সাহাবীয়া।
তিনি ছিলেন যেমন দুঃসাহসিণী, তেমনই
ঈমানের বলে ছিলেন বলীয়ান।
তিনি ছিলেন ইসলামের জন্য
নিবেদিতপ্রাণ।
তাঁকে বলা হত ‘জাতুন নিতাকাইন’
অর্থাৎ দু’টি কোমর বন্ধনীর
অধিকারীণী। এই
উপাধিটি তাঁকে দিয়েছিলেন স্বয়ং হযরত
রাসূলুল্লাহ (সা.)। সে এক অবিস্মরণীয়
কাহিনী।
মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতের সময়
হযরত আসমা (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.) ও
তার পিতা হযরত আবু বকরের (রা.)
জন্য থলেতে খাবার ও
মশকে পানি ভরে দিচ্ছিলেন। ভরা শেষ
হলো। এখন থলের মুখ বাঁধবেন
কী দিয়ে? হাতের কাছে তেমন কিছুই
না পাওয়ায় আসমা (রা.) নিজের কোমর
বন্ধনী খুলে দু’টুকরো করে তা দিয়েই
পাত্র দু’টির মুখ বাঁধলেন। এ দৃশ্য
দেখে দয়ার নবীর
হৃদয়টা খুশীতে ভরে উঠল। তিনি হাত
তুলে দু‘আ করলেন, “হে আল্লাহ!
আপনি আসমাকে এর
বিনিময়ে জান্নাতে দু’টি নিতাক দান
করুন।” সেই থেকে তিনি হলেন ‘যী-
নিকাতাইন’।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) আবু বকর
(রা.)কে নিয়ে হিজরতের পথে মদীনার
পানে রওয়ানা হলেন।
খবরটি মক্কায় ছড়িয়ে পড়ার
সাথে সাথে ক্ষেপে উঠল পাপিষ্ঠ আবু
জাহল। তৎক্ষণাত সে আসমা (রা.)-এর
নিকট গিয়ে জিজ্ঞাসা করল, তোমার
বাবা কোথায়? আসমা (রা.) দৃঢ়তার
সাথে বললেন, না, বলবো না।
সাথে সাথে পাপিষ্ঠ আবু জাহল
জোরে এক থাপ্পর লাগিয়ে দিল
আসমা (রা.)-এর গালে।
ছিটকে দূরে পরে গেল আসমার (রা.)
কানের দুল। কি ভয়ানক দৃশ্য!
বিয়ের পর স্বামীর ঘরে গেলেন
আসমা (রা.)। সংসারের যাবতীয় কাজ
নিজ হাতেই করতেন। যখন হিজরত
করার নির্দেশ এলো, তখন আসমা (রা.)
ছিলেন গর্ভবতী। কষ্টের
কথা না ভেবেই তিনি হিজরত
করতে বেরিয়ে পড়লেন। দীর্ঘ কষ্টের
পথ মক্কা থেকে মদীনা। তবুও
তিনি ধৈর্যহারা হলেন না। কুবা নামক
স্থানে পৌঁছে তিনি প্রসব করলেন এক
ফুটফুটে পুত্র সন্তান। নাম রাখলেন
আবদুল্লাহ বিন যুবাইর।
আবদুল্লাহর জন্মের খবর শুনেই
মুসলমানদের মনে বয়ে গেল আনন্দের
জোয়ার। তাকবীর
ধ্বনি দিয়ে তারা উল্লাসে ফেটে পড়লেন।
আবদুল্লাহ হিজরতকারীদের
মধ্যে প্রথম সন্তান।
সদ্যভূমিষ্ঠ
আবদুল্লাহকে নিয়ে আসমা (রা.) চললেন
নবীজীর (রা.) কাছে।
আবদুল্লাহকে দেখে নবীজীর
যে কী আনন্দ! আসমা (রা.)
তাকে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর
কোলে তুলে দিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.)
তাকে কোলে নিয়েই প্রথমে আপন মুখের
পবিত্র থুথু তার মুখে দিলেন এবং তার
জন্য আল্লাহর দরবারে প্রাণ
ভরে দু‘আ করলেন।
কালের গতি থেমে নেই। বহু বছর
অতিবাহিত হয়ে গেছে। রাসূলুল্লাহ (সা.)
নেই। নেই চার খলীফার কেউ।
আসমা (রা.) বুকে ধারণ করে আছেন
তাঁদের স্মৃতি।
ইতিমধ্যে উমাইয়া খলীফা ইয়াযীদ
ইন্তেকাল করলেন। তার মৃত্যুর পর
মিসর, ইরাক ও আরও অনেক অঞ্চলসহ
সিরিয়ার বেশীর ভাগ অঞ্চলের লোক
আবদুল্লাহ বিন
যুবাইরকে খলীফা হিসেবে মেনে নিলেন।
শুধু মেনে নেননি উমাইয়া রাজবংশ।
আবদুল্লাহ বিন যুবাইর (রা.)কে দমন
করার জন্য এগিয়ে এলো ইতিহাসের
কুখ্যাত জালিম হাজ্জাজ বিন ইউসুফ।
হাজ্জাজ যখন পবিত্র
মক্কা নগরী আক্রমণ করল, তখন
আবদুল্লাহ বিন যুবাইর (রা.) কা‘বার
হারাম শরীফে অবস্থান নেন। হাজ্জাজ
তার বিশাল বাহিনী নিয়ে হারাম শরীফের
চারিদিক ঘিরে ফেলল এবং প্রস্তর
নিক্ষেপ ও গোলা বর্ষণে প্রকম্পিত
করে তুলল কা‘বার সুশান্ত অঙ্গন।
বীর সন্তান হযরত আবদুল্লাহ বিন
যুবাইর (রা.) ও তার
সঙ্গীরা বীরবিক্রমে লড়াই
করে যেতে লাগলেন।
দিনের পর দিন চলছে দু’পক্ষের লড়াই।
বীর সন্তানেরা একের পর এক তাদের
জীবন দিতে থাকেন। এক সময় অবরুদ্ধ
কা‘বাবাসীদের সামানপত্র ফুরিয়ে গেল।
মক্কা নগরীতে দেখা দিল ভয়ঙ্কর
দুর্ভিক্ষ। ক্ষুধার্ত নারী, শিশু ও
বৃদ্ধদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠল
মক্কার আকাশ-বাতাস।
তদুপরি এক সময় আবদুল্লাহ বিন
যুবাইর (রা.)-এর বাহিনীর অনেকেই
বিজয়ের সম্ভাবনা না দেখে দল ত্যাগ
করে চলে গেলেন।
এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে আবদুল্লাহ
বিন যুবাইর (রা.) ছুটে গেলেন
প্রাণপ্রিয় মাতা আসমা (রা.)-এর
কাছে। আসমা (রা.) তখন বয়সের
ভারে কাতর। আবার চোখেও ভাল
দেখেন না। আবদুল্লাহকে দেখেই
তিনি বললেন, কী ব্যাপার!
তুমি এখানে কেন? হাজ্জাজ
বাহিনীরা হারাম শরীফে অবস্থানরত
তোমার বাহিনীর ওপর আক্রমণ করছে,
আর তুমি এখানে ছুটে এসেছো?
আবদুল্লাহ (রা.) বললেন, মা! আপনার
সাথে আমি পরামর্শ করতে এসেছি।
আসমা (রা.) বললেন,
কী বিষয়ে পরামর্শ করতে এসেছো?
আবদুল্লাহ (রা.) বললেন, হাজ্জাজের
ভয়ে অথবা প্রলোভনে আমার দলের
অনেকেই আমাকে পরিত্যাগ করেছে।
এমনকি আমার স্ত্রী-সন্তানেরাও
আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। এখন আমার
সঙ্গে দৃঢ়সংকল্প কিছু আল্লাহর
বান্দা ছাড়া আর কেউ নেই। তারাও
এখন প্রতিরোধে অক্ষম।
এদিকে উমাইয়া প্রস্তাব পাঠাচ্ছে,
আমি যদি আবদুল মালিক
ইবনে মারওয়ানকে খলীফা হিসেবে মেনে ন
িই এবং তার হাতে বাই‘আত গ্রহণ করি,
তবে সে আমাকে অনেক ধন-সম্পদ
দিবে এবং পার্থিব সুখ-ভোগের
ব্যবস্থা করবে। এখন আপনিই বলুন,
আমি কী করব?
আসমা (রা.) মনোযোগ দিয়ে পুত্রের
কথা শুনলেন। অতঃপর দৃঢ়তার
সাথে বললেন, “বাবা,
ব্যাপারটা একান্তই তোমার নিজস্ব।
তোমার নিজের সম্পর্কে তুমিই
বেশী জান। যদি তোমার বিশ্বাস
থাকে যে, তুমি সত্যের ওপর
প্রতিষ্ঠিত আছো এবং মানুষকে হকের
প্রতি আহবান করছো, তাহলে সত্যের
জন্য লড়ে যাও এবং জীবন দিয়ে দাও,
যেভাবে তোমার শহীদ বন্ধুরা জীবন
দিয়েছে। আর যদি তুমি দুনিয়ার সুখ-
সম্ভোগের প্রত্যাশী হও,
তাহলে তোমার আগেই বোঝা উচিত ছিল
– তুমি কত লোকের ধ্বংসের কারণ
হয়েছো এবং বলবো, তুমি একজন
নিকৃষ্টতম মানুষ।”
আবদুল্লাহ (রা.) বললেন, “মা! অবশ্যই
আমরা সত্যের পথে রয়েছি। তবে যুদ্ধ
চালিয়ে গেলে নিশ্চিত আজ
আমি মারা যাব।” আসমা (রা.)
জবাবে বললেন, “হাজ্জাজের
কাছে তুমি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ
করবে আর তার দলের লোকেরা তোমার
মস্তক নিয়ে খেলা করবে, এর
চেয়ে কি সত্যের জন্য জীবন দান শ্রেয়
নয়? অবশ্যই তা হাজার গুণ শ্রেয়।”
আবদুল্লাহ (রা.) বললেন, মা! আমার
ভয় হচ্ছে – বনু উমাইয়ার
লোকেরা আমাকে শূলে চড়াবে। হাত-
পা কেটে আমার লাশ বিকৃত
করে ফেলবে।
পুত্রের কথা শুনে আসমা (রা.)-এর
কণ্ঠে সাহস ও দৃঢ়তার বজ্রধ্বনি।
তিনি স্থির কণ্ঠে বললেন, “বাবা!
বকরী জবাই করার পর যখন
চামড়া তুলে ফেলা হয়, তখন তার কোন
কষ্ট হয় না। তুমি যুদ্ধের
ময়দানে গিয়ে আল্লাহর সাহায্য
প্রার্থনা কর।”
তখন শতবর্ষের জননীর ললাটে চুমু
খেলেন বীর আবদুল্লাহ বিন যুবাইর
(রা.) এবং বললেন, “মাগো! আমি ভীরু
নই, আমি কাপুরুষ নই।
আমি আপনাকে সান্ত¦না দিতে এসেছিলা
ম যে, আপনার ছেলে সত্যের জন্য
জীবন দিতে যাচ্ছে।” আসমা (রা.)
বললেন, “তোমার বিয়োগে আমি ধৈর্য
ধারণ করব বাবা। এখন যাও, ত্যাগের
পরীক্ষা দাও। ফলাফল আল্লাহ
নির্ধারণ করবেন।”
শাহাদাতের স্বপ্নে বিভোর আবদুল্লাহ
(রা.)। দ্রুত চললেন যুদ্ধের ময়দানে।
আসমা (রা.) মাতৃত্বের এক আকাশসম
মমতা মিশিয়ে ডাকলেন, “বাবা!
তুমি আমার কাছে একটু এসো।
শেষবারের মতো তোমাকে একটু আদর
করে নিই।” আবদুল্লাহ (রা.) বললেন,
মাগো! আপনার সাথে এই বুঝি আমার
শেষ মুলাকাত!
আবদুল্লাহ (রা.) মায়ের
কাছে এগিয়ে গেলেন। আসমা (রা.) তার
ললাটে চুমু খেলেন। শরীরে হাত
রেখে আদর করে দিলেন। মায়ের স্নেহের
পরশে শিউরে উঠল আবদুল্লাহর শরীর।
বৃদ্ধাজননী পুত্রকে আদর করে শেষ
বিদায় দেবার সময় আবদুল্লাহ (রা.)-
এর গায়ের লৌহবর্মের কঠিন
স্পর্শে চকিত হলেন। বললেন,
“তুমি এসব কী পরেছো?” আবদুল্লাহ
(রা.) বললেন, আমার বর্ম।
আসমা (রা.) প্রশান্ত
মুখে হেসে বললেন, “পাগল ছেলে!
যারা শাহাদাতের পিয়াসী হয়, এটা তাদের
পোশাক নয়। তুমি এটা খুলে ফেল।
তোমার ব্যক্তিত্ব, সাহসিকতা ও
বীরত্বগাঁথা আক্রমণের
পক্ষে এটা খুলে ফেলাই উচিত কাজ হবে।
এটা খুলে ফেললে তোমার
কর্মতৎপরতা ও
চলাফেরা হবে সহজতর। বরং এর
পরিবর্তে তুমি লম্বা পাজামা পর।
তাহলে তোমাকে মাটিতে ফেলে দিলেও
তোমার সতর থাকবে অপ্রকাশিত।”
সঙ্গে সঙ্গে আবদুল্লাহ (রা.) উক্ত
লৌহবর্ম খুলে ফেললেন
এবং লম্বা পাজামা পরিধান করলেন।
অতঃপর যুদ্ধে যাবার পূর্বে আবদুল্লাহ
(রা.) বললেন, “মা! আমার জন্য একটু
দু‘আ করে দিন।”
বয়োবৃদ্ধা আসমা (রা.) সাথে সাথে হাত
উঠালেন মহান আল্লাহর দরবারে।
বললেন, “হে আল্লাহ! রাতের
অন্ধকারে মানুষ যখন গভীর ঘুম
থেকে জেগে উঠে তোমার ইবাদত
করে এবং উচ্চকণ্ঠে কান্না করে, তার
ওপর তুমি রহম কর। হে আল্লাহ!
রোযা অবস্থায় মক্কা ও
মদীনাতে মধ্যাহ্নকালীন ক্ষুধা ও
তৃষ্ণায় যে কাতর হয়, তার ওপর
তুমি রহম কর। হে আল্লাহ! পিতা-
মাতার প্রতি সৎ ব্যবহারের জন্য তার
ওপর তুমি করুণা বর্ষণ কর।
হে আল্লাহ! আমার বুকের
ধনকে আমি তোমার হাতে সঁপে দিচ্ছি,
তার জন্য তুমি যে ফয়সালা করবে,
তাতেই আমি সন্তুষ্ট থাকব।
তাকে তুমি দৃঢ়তা দান করো এবং এর
বিনিময়ে আমাকে ধৈর্যশীলদের
প্রতিদান দান কর।”
মায়ের দু‘আ নিয়ে আবদুল্লাহ বিন
যুবাইর (রা.) ঢুকে পড়লেন শত্রুর
ঝড়ের ভেতর এবং শাহাদাতের অমিয়
সুধা পান করলেন। শাহাদাতের
পূর্বে তার মুখ থেকে উচ্চারিত হচ্ছিল
একটি ছন্দবদ্ধ বাক্য, যার অর্থ -
“আমার মৃত্যুশোকে কাঁদবেন
না হে আসমা -
যখন আমার অবশিষ্ট কিছু রইল না
বংশ আর দ্বীনদারী ছাড়া,
অসি আমার দক্ষিণ হস্তকে
করেছে সিক্ত………।”
আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রা.)কে শহীদ
করার পর হাজ্জাজ তার
লাশটিকে শূলিতে চড়িয়ে একটি গাছের
সাথে ঝুলিয়ে রাখল। আসমা (রা.)
ধীরে ধীরে ছেলের লাশের পাশে আসলেন।
ছেলের অবস্থা দেখে শান্ত ও স্থির
কণ্ঠে বললেন, এ সওয়ারীর
কি এখনো ঘোড়া থেকে নামার সময়
হলো না?
তখন হাজ্জাজ
এগিয়ে এলো আসমা (রা.)-এর
কাছে এবং বলল, বলুন তো – আপনার
ছেলের সাথে কিরূপ আচরণ করেছি?
দৃঢ়তার সাথে আসমা (রা.) বললেন,
তুমি তার দুনিয়া নষ্ট করেছো। আর
সে তোমার পরকাল নষ্ট করেছে।
তুমি নাকি তাকে ‘জাতুন নিতাকাইন’
উচ্চারণ করে ঠাট্টা করেছো? আল্লাহর
শপথ, আমিই ‘জাতুন নিতাকাইন’।
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছ
থেকে আমি শুনেছি, সাক্বীফ
বংশে একজন মিথ্যাবাদী-ভণ্ড ও
একজন জালিম পয়দা হবে।
মিথ্যাবাদীকে তো আগেই দেখেছি। আর
সেই জালিমটা হচ্ছো তুমি।
এক দুঃসাহসিণী মাতা যিনি শহীদ পুত্রের
বীভৎস লাশের দিকে তাকিয়েও কাঁপেন
না, থাকেন শান্ত ও স্থির হয়ে, আর
জালিমের সামনে দাঁড়িয়ে নির্ভয়ে সত্য
কথা বলেন, কত ধৈর্য তাঁর, কত সাহস!
যেন তিনি এক অটল পর্বত।
হযরত আসমা (রা.) তাঁদেরই
মধ্যে একজন – যাঁদের জীবনচরিত পাঠ
করলে হৃদয়ে বয়ে যায় ঈমানের ঢেউ।
সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাঁরা কত
ত্যাগ- তিতিক্ষা স্বীকার করেছেন।
তাঁরা আমাদের জন্য অনুসরণীয়।


ব্লগ সম্পাদক ও এ্যাডমিনঃসৈয়দ রুবেল উদ্দিন
Next post "হৃদয়ছোঁয়া গল্প
ব্লগের প্রকাশিত পোস্ট গুলি ফেসবুকে শেয়ার করে আমাদের চলার পথকে আরো গতিময় করে তুলুন ।আমরা দিন রাত খাটিয়ে পোস্ট গুলি লেখি ।ব্লগে প্রকাশ করে আপনাদেরকে উপহার দেয় ।আপনারা যদি শেয়ার না করেন?তাহলে আমরা তো সামনে এগিয়ে যেতে পারবোনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :