যাদেরকে বিবাহ করা যায় না

কোন মন্তব্য নেই
শরীয়তে যে সমস্ত মেয়েদেরকে বিবাহ
করা হারাম
করা হয়েছে তাদেরকে মুহাররমাত
বলা হয়। এই হারাম করার
পেছনে কয়েকটি তাৎপর্যপূর্ণ কারণ
বিদ্যমান রয়েছে :
প্রথমত নিকটতম আত্মীয়তা সম্পর্ক
আপন বংশের মধ্য থেকে সাধারণত: ঐ
সমস্ত মেয়েদেরকে হারাম করা হয়েছে,
যাদের সাথে রাত্র দিন উঠা-বসা,
চলাফেরা এবং কথাবার্তা বলার
প্রয়োজন দেখা দেয়। আর তা কেবল
অভ্যাস এবং স্বভাবগত ব্যাপারই নয়
বরং দুনিয়াতে জীবন যাপনের
তাকীদে তাদের পরস্পরে এ ধরনের
প্রয়োজন সংযুক্ত রয়েছে যে, এরপর
তাদের মধ্যে পর্দার বিধান কার্যকর
করা অত্যন্ত কঠিন। তাই শরীয়ত এ
ধরনের নসবী অর্থাৎ আপন
আত্মীয়দের পারস্পরিক
বিবাহকে চিরতরে হারাম
করে সম্ভাবনার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে।
যদি বিবাহের নূন্যতম অবকাশ
রাখা হতো তাহলে তাদের পরস্পর
উঠাবসা এবং অবাধে মেলা মেশা
চারিত্রিক অধঃপতন এবং লজ্জাজনক
কর্মকাণ্ডের কারণ হতো। কেননা যুবক
যুবতীর এক আধবার
মেলা মেশা বরং পরস্পর একজন
আরেকজনকে দেখার দ্বারাই অনেক
সময় ভয়ংকর অপরাধের পথ খোলে-
একথা বর্তমান যুগে বলার
অপেক্ষা রাখে না। পাশ্চাত্য
দেশসমূহে যুবক যুবতীদের
অবাধে মেলা মেশার কারণে যে জঘন্য
পরিণাম এবং লজ্জাহীনতা ও অসভ্য
পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে আছে, তা শুনলেও
শরীর শিউরে উঠে। এমতাবস্থায়
সর্বদায়
অবাধে মেলামেশা করা কথাবার্তা বলার
প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন
করে যদি বিবাহ হারাম
করা না হতো তাহলে ভয়াবহ
ফিতনা ফাসাদের পরিস্থিতি সৃষ্ট হতো।
তাছাড়া নিকটতম আত্মীয় যেমন মা,
বোন, মেয়ে, ভাতিজী, ভাগ্নীকে বিবাহ
করার অনুমতি হলে নারী সমাজের
ভবিষ্যত অত্যন্ত অন্ধকার হতো।
কেননা সাধারণত পিতা ভাই,
চাচা এবং মামাগণই স্বীয় সন্তান,
মেয়ে বোন, ভাতিজী এবং ভাগ্নীর জন্য
উত্তম বিবাহের
চিন্তা ভাবনা এবং খোঁজ খবর
নিয়ে থাকে এবং ভাল স্বামী তালাশ
করে থাকে। কিন্তু যদি তাদেরকে তাদের
যৌনপিপাসা মেটানোর জন্য উক্ত
আত্মীয়া মহিলাদেরকে বিবাহ করার
অনুমতি দেয়া হতো তাহলে স্বীয়
পছন্দের কারণে নিজেই বিবাহ
করে নিতে সক্ষম হতো। আর মেয়ের
পছন্দ অপছন্দ অথবা তার
সুবিধা অসুবিধার
তোয়াক্কা করা হতো না। এ
ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করার জন্য
কাউকে পাওয়া যেতো না। সে তার
অধিকার থেকে বঞ্চিত হতো। কেননা এ
সমস্ত বিষয়াদি নিয়ে চিন্তা-
ভাবনা করা, মেয়ের ভাল মন্দ
বিবেচনা করা তার
সুখে দুখে সাথী হওয়া এবং তার অধিকার
আদায় করে দেয়ার ব্যাপারে সজাগ
দৃষ্টি রাখা নিকট আত্মীয়
অভিভাবকদেরই হয়ে থাকে। এ
ক্ষেত্রে তারাই যদি উক্ত
মেয়েদেরকে বিবাহ করার
অনুমতি পেয়ে বিবাহ
করতো তাহলে মেয়েরা অভিভাবকদের
চাপের মুখে নিজেদের পছন্দ-অপছন্দের
বিষয়টি প্রকাশে বাধা পেত।
ফলে সারাটি জীবনই অশান্তি ভোগ
করতে হতো। কারো নিকট ফরিয়াদ
করারও সুযোগ হতো না।
২. শ্বশুর ও জামাতা সম্পর্ক
উক্ত কারণে চার প্রকারের আত্মীয়-
স্বজন বিবাহ-নিষিদ্ধের আওতাভুক্ত
নয়।
ক. স্বামীর নসবী বা দুগ্ধজাত মূলধারা,
যেমন, বাপ, দাদা, নানা স্ত্রীর জন্য
হারাম হয়ে যায়।
খ. স্বামীর নসবী বা দুগ্ধজাত
শাখা প্রশাখা। যেমন- ছেলে, নাতী,
পুতি-স্ত্রীর জন্য হারাম হয়ে যায়।
গ. স্ত্রীর নসবী বা দুগ্ধজাত মূলধারা,
যেমন, মা, দাদী, নানী- স্বামীর জন্য
হারাম হয়ে যায়।
ঘ. স্ত্রীর নসবী বা দুগ্ধজাত
শাখা প্রশাখা। যেমন মেয়ে, ছেলের মেয়ে,
মেয়ের মেয়ে- স্বামীর জন্য হারাম
হয়ে যায়।
৩. দুগ্ধ সম্পর্ক
গ.এমনিভাবে দূধ মাকে বিবাহ
করা সম্পূর্ণরূপে হারাম। দুধ মার
সাথে আত্মীয়তার কোন সম্পর্ক
থাকা ছাড়াই তার সাথে বিবাহ হারাম।
তবে শর্ত হলো যে, যদি দুই বৎসর
বয়সের মধ্যে দুধ পান করে থাকে। দুধ
মা জন্ম দাতা মার হুকুম রাখে।
মোটকথা নসব তথা জন্মগত
কারণে যে সমস্ত নারী বিবাহ
করা হারাম হয় তেমনি দুধপানের দরুন
তাদেরকে বিবাহ করা হারাম হয়।
অর্থাৎ দুধমা এবং তার মূল ও শাখা-
প্রশাখার আত্মীয়গণ। এমনিভাবে তার
স্বামী অর্থাৎ দুধপিতা ও তার মূল ও
শাখা প্রশাখার আত্মীয়গণ। উপরোক্ত
মুহাররামাত ব্যতীত আরো কিছু
মেয়েদের সাথে স্থায়ীভাবে নয়
তবে সাময়িকভাবে বিবাহ নিষেধ
করা হয়েছে। যে মেয়ের
কারো সাথে বিবাহ সম্পাদন হয়েছে এরূপ
বিবাহিতা মেয়ের সাথে বিবাহ বন্ধন
থাকাবস্থায়
অথবা তালাকপ্রাপ্তা হওয়ার পর
ইদ্দত পালন করা অবস্থায় অন্যের
সাথে বিবাহের অনুমতি নেই।
৪. আত্মীয়তা ছিন্ন করা
এমনিভাবে দুই আপন বোন
অথবা পরস্পর মুহাররামাতের
দুজনকে একসাথে বিবাহ করা নিষেধ
করা হয়েছে। কেননা সাধারণত সতিনগণ
পরস্পর কথা কাটাকাটি ঝগড়া-কলহ
করে থাকে। এমনকি একজন আর
একজনের শত্র“ হয়ে পড়ে। অথচ
শরীয়ত নিকটাত্মীয়গণের মধ্যকার
পারস্পরিক উত্তম সম্পর্ক
এবং সদাচারনের নির্দেশ করেছে। তাই
এ ধরনের নিকটতম দুইজন নারীকে এক
ব্যক্তির বিবাহ
বন্ধনে আনা শরীয়তের লক্ষ্য
উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ পরিপন্থি।
৫. কোন আসমানী দ্বীনে বিশ্বাস
না থাকা
ঙ. এমনিভাবে কোন মুসলমান পুরুষ
এবং মহিলার জন্য কোন কাফের
মুশরিক বিধর্মীদের সাথেও বিবাহ
বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার অনুমতি নেই। এ
সম্পর্কে কুফুর ব্যাপারে আলোচনার
সময় বর্ণনা দেয়া হয়েছে।


সূত্রঃ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তরদাওয়াতি সংগঠন মজলিসে দাওয়াতুলহক। এর মৌল উদ্দেশ্য মানব জীবনেসকল ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত ওআদর্শের প্রতিফলন ঘটানো।কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামের ইত্তিবা-অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলারইবাদত আনুগত্যের দাবি পূরণ করাই হলএকজন মুসলমানের ইহকালীন জীবনেরমূল উদ্দেশ্য।।শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের কে জানার সুযোগ দিন ।আপনি জেনেছেন হয়তো সে জানেনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :