একটা বিশেষ দিনে সিগারেট ছেড়ে দেই- ধুমপায়ীদের উদ্দেশ্যে [জুনাইদ আল হাবিব]

কোন মন্তব্য নেই
ধুমপান! মানে বিষপান। একথা শুধু
কথায় নয়, সর্বজন স্বীকৃত।
এবং মরণব্যধি যার কারণে অল্প
বয়সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয়
ধুমপায়ীদের। ধুমপান প্রাণহানিকর
বস্তু এমন জানা স্বত্ত্বেও একট
সংখ্যাগরিষ্ট দল খেয়ে যাচ্ছে। এদের
মধ্যে অনেকে ছেড়ে দেয়ার জন্য ব্যর্থ
চেষ্টা করছে, কিন্তু পারছে না। আবার
অনেকে ছেড়ে দিয়ে, ফের শুরু
করে দিচ্ছে।
আপনি একেবারে চিরজীবনের জন্য
ছেড়ে দিতে চান? জীবনকে সম্ভাবনার
মৃত্যুর কোল থেকে ফিরিয়ে রাখতে চান?
তাহলে বিশেষ দিনে সিগারেট ছেড়ে দিন।
আর তা এভাবে যে,
প্রথমে আপনি ছেড়ে দেয়ার পুর্ণ
সংকল্পবদ্ধ হোন, তারপর একটা বিশেষ
দিনে তা ছেড়ে দেন। যেমন ধরুণ,
আপনার বিয়ের দিনে আপনি সিগারেট
পান করা ছেড়ে দিন অথবা আপনার
সন্তানের জন্মের দিন ছাড়তে পারেন
কিংবা নামাজ পড়া শুরু করেছেন ঐ দিন
ইত্যাদি। মোট কথা, আপনি আপনার
জীবনের স্মৃতি করে রাখার জন্য
সিগারেট খাওয়া এমন দিনে ছেড়ে দিন
যা স্বরনীয় হয়ে থাকবে।
আমার আব্বাজান এভাবেই
একটা বিশেষ দিনে সিগারেট
খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। তিনি কোন
স্কুলের বারান্দায়ও পড়ালেখার জন্য
যায়নি বলে ছোটবেলায়
জীবনী আলোচনা করতে গিয়ে আমায়
বলেন। কারণ, শৈশবেই তার
বাবা মারা যান। তারা তিন ভাই
এবং দুই বোন। সবার বড় ছিল আমার
আব্বাজান। তার বাবা মারা যাওয়ার
কারণে সংসারের দায়দায়িত্ব পড়ে তার
উপর। এজন্য
প্রাতিষ্ঠানিকভাবে লেখাপড়া করতে
সুযোগ পাননি। এরপরও
তিনি অক্ষরজ্ঞানমুক্ত থাকেননি।
বরং স্বউদ্যোগে শিখে নেয়
পড়ালেখা এবং নিরক্ষতার অভিশাপ
থেকে মুক্ত হয়ে শিক্ষিতদের তালিকায়
নাম লেখাতে সক্ষম হন।
যাই হোক, তিনি এতই প্রখর মেধার
অধিকারী ছিলেন যে, স্কুলে না গেলেও
বর্তমানে মেট্রিক পাশদের
ছাড়িয়ে আছেন। তিনি ছোটবেলায়
আমাকে জ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্ন
করতেন, কিন্তু উত্তর দিতে পারতাম
না। পরে তিনি বুঝাতেন ঠিকই। আর
আউটে ইসলাম বিষয়ক জ্ঞানও
এমনভাবে অর্জন করেছিলেন, তাতেও
আমি কুলিয়ে উঠতে পাঠতাম না। অথচ,
আমি ইসলামী লাইনে পড়ালেখা করছিলাম।
তিনি ছিলেন একজন তাবলীগ প্রিয়
মানুষ। তাবলীগ জামাত আমাদের
গ্রামে আসলে তাদের যথাসাধ্য
আপ্যায়ণ করতেন এবং তাদের সঙ্গ
দিতেন, এটা আমার আব্বাজানের রুচির
মাঝে অন্যতম ছিল। সিগারেটের নেশায়
মাঝেমধ্যে তাদের সঙ্গ ত্যাগ
করা ছাড়া কোন উপায় থাকত না।
কিন্তু ক্ষনিকের সঙ্গ শূন্যতার
অনুভূব করলেন। পীড়িত হলেন, ব্যথিত
হলেন। তিনি চিন্তিত হলেন যে, ঐ
সিগারেটের নেশায় আমাকে তাদের
সৎসঙ্গ ত্যাগ করে চলে আসতে হয়েছে।
তিনি তা সমীচীন মনে করলেন না।
সাথে সাথে আধাপায়ী সিগারেটটা দূরে ছুঁড়ে
দেয় এবং তদের সঙ্গলাভের জন্য
তাদের মাঝে ফিরে আসেন। এবং ঐদিন
থেকে তিনি ধুমপান ছেড়ে দেন
চিরজীবনের জন্য। ঐ ঘটনাটি আমার
আব্বাজান বললে আমি বলেছিলাম যে,
আব্বাজান এটা তো আপনার জীবনের
একটা বিশেষ দিন। স্বরণ রাখার দিন।
আপনার ঘটনাটি স্বরনীয় এবং বরণীয়।
যারা ধুমপায়ী, ধুমপান ছাড়তে পারছেন
না, আসুন এভাবে একটা বিশেষ
দিনে জীবননাশক ধুমপান
ছেড়ে দিয়ে জীবনে আনি সুখ,শান্তি এবং
অনাবিল আনন্দ সমৃদ্ধি।
লেখক
জুনাইদ আলহাবিব

ব্লগ সম্পাদক ও এ্যাডমিনঃসৈয়দ রুবেল উদ্দিন
Next post "গ্রাম্য রায় ফতোয়া কেন?[জুনাইদ আল হাবিব]
ব্লগের প্রকাশিত পোস্ট গুলি ফেসবুকে শেয়ার করে আমাদের চলার পথকে আরো গতিময় করে তুলুন ।আমরা দিন রাত খাটিয়ে পোস্ট গুলি লেখি ।ব্লগে প্রকাশ করে আপনাদেরকে উপহার দেয় ।আপনারা যদি শেয়ার না করেন?তাহলে আমরা তো সামনে এগিয়ে যেতে পারবোনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :