বিবাহ শাদী - বিবাহের নির্দেশ

কোন মন্তব্য নেই
বিবাহ শাদী
মানুষের স্বভাবজাত চাহিদার অন্যতম
একটি বিষয় হচ্ছে বিবাহ। বিবাহের
চাহিদা মানুষের স্বভাবগত চাহিদা। এই
চাহিদা পূরণে ইসলামী শরীয়তের বিধান
কি এবং কতটুকু স্বভাবসম্মত? এ
বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা করা যেতে
পারে। এ বিষয়ের সার
হিসেবে বলা যেতে পারে যে, উক্ত
চাহিদা পূরণের জন্য মহান আল্লাহপাক
বিবাহের সুনির্দিষ্টভাবে নির্দেশ দান
করেছেন। অনুপ্রাণিত করেছেন।
বিস্তারিত বিবরণ দান করেছেন।
মানুষের স্বভাবগত
যে চাহিদা পূরণে বিবাহ
বন্ধনকে আইনসিদ্ধ করা হয়েছে,
তা প্রত্যেক সুস্থ ও সৎ
স্বভাবসম্পন্ন মানুষের জন্য
কতখানি স্বস্তিদায়ক তা বলার
অপেক্ষা রাখে না। হযরত শাহ
ওলীউল্লাহ রহ.-এর উক্তিমতে মানুষের
স্বভাবগত সকল চাহিদা সমূহের
মধ্যে এই চাহিদা সর্বাধিক তীব্র। এই
চাহিদার প্রবল তাড়নায় অপারগ
হয়ে অনেক সময় মানুষ ধ্বংসের ভয়াবহ
পথ অবলম্বনে বাধ্য হয়। শাহ
ওয়ালী রহ. বলেন,
ﺃﻥ ﺷﻬﻮﺓ ﺍﻟﻔﺮﺝ ﺃﻋﻈﻢ ﺍﻟﺸﻬﻮﺍﺕ
ﻭﺃﺭﻫﻘﻬﺎ ﻟﻠﻘﻠﺐ ﻣﻮﻗﻌﺔ ﻓﻲ
ﻣﻬﺎﻟﻚ ﻛﺜﻴﺮﺓ- ﺣﺠﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺒﺎﻟﻐﺔ
বিবাহের নির্দেশ
বিবাহ মানুষের স্বভাবগত প্রবল
চাহিদা, সুতরাং বিবাহের জন্য
অনুপ্রাণিত করা, তাকীদ
করা এমনকি বাধ্য করার কঠোর
নির্দেশ এবং নির্দেশ পালনে সম্মত
না হলে কঠোর আজাবের
হুশিয়ারী উচ্চারণ করার বাহ্যিক কোন
প্রয়োজন অনুভূত হয় না। কিন্তু
প্রাচীন বিভিন্ন ধর্মের
যৌনতাকেন্দ্রিক অনুদার দৃষ্টিভঙ্গীর
প্রেক্ষাপটে প্রত্যেক যুগেই কিছু
সংখ্যক লোক এমনও পাওয়া যায়,
যারা স্বীয় স্বভাবজাত
চাহিদা চেতনাকে বাধাগ্রস্ত
করতে স্বচেষ্ট হয় বরং নির্মূল
করতে উদ্দত হয়,
এবং বিবাহকে অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের
ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা বলে বিশ্বাস
করে। এভাবে তারা বিবাহকে আধ্যাতিক
সফলতা এবং আল্লাহ পাকের সান্নিধ্য
লাভের ক্ষেত্রে কঠিন অন্তরায়
মনে করে। যথা খৃষ্টবাদ
এবং হিন্দুবাদের মধ্যে বৈরাগ্য
সাধনা ও যোগসাধনা পাওয়া যায়।
এজন্য এদের প্রতিবাদ
এবং চিন্তাধারার অসারতা প্রমাণ
করা অত্যন্ত প্রয়োজন। এই
প্রয়োজনের তাকীদে এবং তাদের
চিন্তাধারনার পরিশুদ্ধির জন্য
এবং একথা বুঝানোর জন্য যে, স্বভাব
চাহিদা দমনের মাধ্যমে নয়
বরং বৈধভাবে তা পূরণ করার মাধ্যমেই
মানব জীবনের উৎকর্ষ সাধিত
হতে পারে। এর জন্য প্রয়োজন যথাযথ
ব্যবস্থাপনা, যা স্বভাবগতধর্ম
ইসলামে বিদ্যমান রয়েছে এবং এ
ব্যাপারে উপযুক্ত
দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আসলে স্বভাবগত ধর্ম ইসলাম
একটি বাস্তবমুখী এবং ব্যাপক জীবন
বিধান, যার মধ্যে প্রত্যেক মানুষের
কামনা-বাসনা এবং তার স্বভাবগত
চাহিদা-চেতনা পূরনের ন্যায়সংগত
পথনির্দেশনা ও মৌলিক বিধি-বিধান
বিদ্যমান রয়েছে। যোগী সাধক বৈরাগীর
সংখ্যা অনেক কম রয়েছে, কিন্তু
বর্তমানেও আছে। তাই এদের
চিন্তাধারার পরিশোধনের
প্রতি যতœবান হওয়া প্রয়োজন।
যারা যোগী নয়, বৈরাগী নয়, অথচ
প্রবৃত্তির কৃতদাসে পরিণত হয়ে আছে।
জানোয়ার পশু বরং এর চেয়ে অধিক
জঘন্য স্তরে উপনীত হয়ে আছে তাদের
পরিশুদ্ধির জন্য যেমন সচেষ্ট
হওয়া আবশ্যক তেমনি যারা যোগী,
যারা বৈরাগ্য অবলম্বনে আধ্যাতিক
সফলতার কামনা করে তাদের
পরিশোধনেও সচেষ্ট হওয়া দরকার।
বরং এদের প্রতি অধিক
মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।
কেননা এরা প্রকৃত সত্যের
অনুসন্ধানে রত রয়েছে। যেহেতু এদের
অন্তরে সত্যের তলব এবং গ্রহণের
তীব্র প্রেরণা বিদ্যমান তাই সঠিক পথ
দৃষ্টিগোচর হলে তারা ঐ পথে ত্বরিত
গমনে সক্ষম হবে। এ কারণে পবিত্র
হাদীসে বিবাহের স্বভাবগত
চাহিদা পূরণের প্রতি গুরুত্ব আরোপ
করা হয়েছে। অনুপ্রাণিত করা হয়েছে।
অমান্যকারীকে কঠোর শাস্তির
ধমকি দেয়া হয়েছে। বস্তুত এর
মাধ্যমে আল্লাহপাকের কুদরত
এবং ইচ্ছাশক্তির বহিঃপ্রকাশ হবে।
মানব সৃষ্টির
ধারাবাহিকতা এবং মানুষের
বৃদ্ধি প্রয়াস অব্যাহত রাখার
তাকীদে আল্লাহ পাকের হুকুম
আহকামের কার্যকারিতা এবং তার
গুণাবলীর প্রকাশনার প্রয়োজনে বিবাহ
বন্ধনের প্রয়োজনীয়তা অত্যধিক।
কতিপয় সাহাবী স্বীয় নফসের
সাথে ভর্ৎসনাসুলভ আচরণপূর্বক
প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলেন
যে আমি সর্বদা রোযা পালন করবো,
একজন সমগ্র রাত্রি জাগ্রত
থেকে নামায এবং আল্লাহ পাকের
জিকিরে নিমগ্ন থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
অপর একজন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন যে,
আমি কোন দিন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ
হবো না। প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস
ইবনে হাজার
আসকালানী এবং আল্লামা আইনীর
অনুসন্ধানমতে তারা ছিলেন হযরত
আলী, হযরত ইবনে উমর এবং হযরত
উসমান ইবনে মাজউন (ফতহুল
বারী ৯/৮৯, উমদাতুল
কারী ৯/৩৪৫) বুখারী শরীফেও এই
ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়
(বুখারী ২/৭৫৭) কিন্তু এ
সম্পর্কে রাসূলে পাক অবগত
হয়ে স্বয়ং তাদের নিকট হাজির
হয়ে ভর্ৎসনা করেন
এবং হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন
ﺃﻣﺎ ﻭ ﺍﻟﻠﻪ ﺇﻧﻲ ﻷﺧﺸﺎﻛﻢ ﻟﻠﻪ ﻭ
ﺍﺗﻘﺎﻛﻢ ﻟﻪ ﻟﻜﻨﻲ ﺃﺻﻮﻡ ﻭ ﺃﻓﻄﺮ ﻭ
ﺃﺻﻠﻲ ﻭ ﺃﺭﻗﺪ ﻭ ﺃﺗﺰﻭﺝ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ
ﻓﻤﻦ ﺭﻏﺐ ﻋﻦ ﺳﻨﺘﻲ ﻓﻠﻴﺲ
ﻣﻨﻲ )ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ )
“মনোযোগ সহকারে শোন!
আমি তোমাদের সকলের তুলনায়
আল্লাহকে অধিক ভয় করি এবং তার
নাফরমানী থেকে বেঁচে থাকি। অথচ
আমি কখনো কখনো নফল রোযা পালন
করি। আবার অনেক সময় পালন
করি না। রাতের এক অংশে নামায
আদায় করি, আর অধিক
অংশে নিদ্রা যাই। আমি একাধিক
সংখ্যায় বিবাহ করেছি। সুতরাং এটাই
আমার সুন্নত। অতএব যে আমার
সুন্নত থেকে দূরে সরবে সে আমার পথ
থেকে বিচ্যুত হবে।

সূত্রঃ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তরদাওয়াতি সংগঠন মজলিসে দাওয়াতুলহক। এর মৌল উদ্দেশ্য মানব জীবনেসকল ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত ওআদর্শের প্রতিফলন ঘটানো।কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামের ইত্তিবা-অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলারইবাদত আনুগত্যের দাবি পূরণ করাই হলএকজন মুসলমানের ইহকালীন জীবনেরমূল উদ্দেশ্য।।শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের কে জানার সুযোগ দিন ।আপনি জেনেছেন হয়তো সে জানেনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :