চিকিৎসকদের প্রতি ইসলামী নির্দেশনা (২য় কিস্তি)

কোন মন্তব্য নেই
মাওলানা সাদিকুল আমীন
ভুল চিকিৎসার জরিমানা
চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ
হওয়া এটা আল্লাহর ইচ্ছাধীন। কিন্তু
শৃংখলা রক্ষার্থে চিকিৎসা বিষয়ে ভুলের
জন্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকের
উপর জরিমানা আরোপিত হয়।
জরিমানা আরোপের
বিষয়ে চিকিৎসাকে কয়েকভাগে বিভক্ত
করা যায়। যথা :
১. শুধু মৌখিকভাবে ঔষধের
কথা বলে দেয়া।
২. ফি নিয়ে কাগজে ঔষধ লিখে দেয়া।
৩. ফি ছাড়া কাগজে লিখে দেয়া।
৪. হাসপাতাল
বা ক্লিনিকে ভর্তি করে চিকিৎসা করা।
যেখানে ডাক্তার বা তার
প্রতিনিধি ঔষধ খাওয়ানোর দায়িত্ব
পালন করে থাকে।
৫. ভর্তি না করে ব্যবস্থাপত্র
লিখে এবং নিজের পক্ষ থেকে ঔষধ
দিয়ে চিকিৎসা করা।
৬. অস্ত্রোপচারের
মাধ্যমে চিকিৎসা করা।
৭. প্যাথলোজির রিপোর্টের উপর
ভিত্তি করে চিকিৎসা করা।
উল্লেখিত পদ্ধতিগুলোর মাঝে যে সকল
ডাক্তার শুধু মৌখিক বা লিখিত
ব্যবস্থাপত্র দিয়ে থাকে আর
রোগী সে অনুযায়ী ঔষধ সেবন
করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়, সেসব
ক্ষেত্রে সাধারণত ডাক্তারের উপর
জরিমানা আসে না। কিন্তু বর্তমান
যুগে অসাধু ও অযোগ্য ডাক্তারদের
দৌরাত্ম্যের কারণে এরূপ অবস্থায়ও
জরিমানা আরোপ করাই সমীচীন।
আর যেসব ক্ষেত্রে ডাক্তার বা তার
সহকারী বা নার্স ঔষধ বা ইঞ্জেকশন
প্রয়োগ করে অথবা তাদের
হাতে অপারেশনের
কারণে রোগী ক্ষতিগ্রস্থ হয়,
তাহলে বিশেষ কিছু শর্ত-সাপেক্ষে তার
জরিমানা ডাক্তারের উপর আসবে।
শর্তগুলো হলো-
১. চিকিৎসা বিষয়ক জ্ঞান ও
যোগ্যতা না থাকা।
২. চিকিৎসার ব্যাপারে পূর্ণ আন্তরিক
ও যতœশীল না হওয়া।
৩. চিকিৎসার জন্য সতঃসিদ্ধ
নিয়মনীতির অনুসরণ না করা।
৪. রোগী বা তার অভিভাবকের
অনুমতি ছাড়াই চিকিৎসা করা।
উক্ত শর্তাবলীর মাঝে এক
বা একাধিক শর্তাবলী কোন চিকিৎসার
মাঝে পাওয়া গেলে এবং তাতে রোগী
ক্ষতিগ্রস্থ হলে সেটার
জরিমানা চিকিৎসককে বহন করতে হবে।
(জাদীদ ফেকহী মাবাহেস : ১০/১২৪)
যে সকল ডাক্তার যোগ্যতাসম্পন্ন নয়
এবং তার ভুল চিকিৎসার
কারণে রোগীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, তার
উপর জরিমানা আরোপের
পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার
চিকিৎসার উপর
নিষেধাজ্ঞা জারী করতে পারেন। জন
সাধারণকে প্রতারণা ও
ক্ষতি থেকে বাঁচানোর জন্য এ ধরনের
নিষেধাজ্ঞা আরোপের
অনুমতি শরীয়তে রয়েছে। (শামী :
৫/১০২, বাদায়ে : ৭/১৬৯)
গোপনীয়তা রক্ষায় চিকিৎসকের
কর্তব্য
চিকিৎসকের কাছে একজন
রোগী বিভিন্ন রকমের দৈহিক-মানসিক
রোগের চিকিৎসার জন্য এসে থাকে।
তার মাঝে কিছু থাকে একান্ত গোপনীয়,
যেটা আত্মীয়-স্বজনের কাছেও প্রকাশ
করা যায় না। শুধু চিকিৎসার
স্বার্থে ডাক্তারের কাছে প্রকাশ
করা হয়। তাই ডাক্তারের কর্তব্য
হলো, বিশস্ততার সাথে বিষয়টির
গোপনীয়তা রক্ষা করা।
তবে একটি কথা লক্ষণীয় যে,
শরীয়তে গীবত
বা পরনিন্দা করা হারাম। কিন্তু বিশেষ
ক্ষেত্রে গীবত করার অনুমতিও
রয়েছে। তেমনিভাবে ডাক্তারের জন্য
রোগীর দোষ গোপন
করা মৌলিকভাবে কর্তব্য হলেও কিছু
কিছু ক্ষেত্রে সেই দোষ প্রকাশ করার
অনুমতি ও বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। যার
বিস্তারিত বিবরণ নিম্নে উল্লেখ
করা হলো।
১.কোন রোগীর রোগ যদি এমন হয়,
যা প্রকাশ না করলে অন্যের প্রাণের
ক্ষতির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে,
তাহলে সেই দোষকে সংশ্লিষ্ট
ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে জানানো
ডাক্তারের উপর অবশ্য জরুরী। যেমন
ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য চক্ষু
পরীক্ষা করে যদি দৃষ্টিশক্তির
ত্রুটি পাওয়া যায়, তাহলে সেটা অবগত
করতে হবে। অন্যথায় এ
কারণে যদি কোন হতাহত বা ক্ষতি হয়,
তাহলে তার গুনাহ চিকৎসকের উপর
বর্তাবে।
২. রোগীর এমন দোষ যার
কারণে কারো জানের ক্ষতি না হলেও
তা গোপন থাকলে অন্য
ক্ষতি বা সামাজিক বিশৃংখলার
সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন, চোর, ডাকাত
ও সন্ত্রাসীদের অপরাধ
সম্পর্কে ডাক্তার অবগত
হলে সে বিষয়ে নিজ
উদ্যোগে দোষটি সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষকে জানানো ডাক্তারের উপর
জরুরী নয়। তবে যদি এজন্য
সরকারী নির্দেশ
বা প্রতিশ্রুতি নেয়া হয়ে থাকে তাহলে
বিষয়টি অবগত করা ডাক্তারের জন্য
জরুরী।
৩. রোগীর দোষ যদি এমন হয় যার
কারণে কারো জানের ক্ষতি বা ব্যাপক-
বিশৃংখলার আশংকা নেই,
তবে কারো ব্যক্তি পর্যায়ের ক্ষতির
সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন, বিবাহ
শাদীতে বর বা কনের কোন দোষ, যার
কারণে সাংসারিক জীবন ক্ষতিগ্রস্থ
হতে পারে। এরূপ অবস্থাতেও
ডাক্তারের জন্য দোষ প্রকাশ
করা জরুরী নয়। তবে যদি কোন পক্ষ
পরামর্শ বা বাস্তব অবস্থা জানার
জন্য জিজ্ঞাসা করে,
তাহলে ডাক্তারের কর্তব্য
হলো তা প্রকাশ করে দেয়া। কিন্তু
যদি ইতিপূর্বে রোগীর সাথে এ
বিষয়ে অবগত না করার
ওয়াদা করে থাকে তাহলে সেদোষ
কারো কাছেই প্রকাশ করা যাবে না।
(জাদীদ ফেকহি মাবাহেস : ১০/১০৬)
কোন ব্যক্তি যদি সংক্রামক
রোগে আক্রান্ত হয়। আর বিষয়টি শুধু
চিকিৎসকই জানেন,
তাহলে তিনি বিষয়টি অন্যকে অবগত
না করে রোগীকে পরামর্শ দিবেন
যাতে সে অন্যদের সাথে উঠা-
বসা না করে নির্জনতা অবলম্বন
করে।
লেখক : শিক্ষক যাত্রাবাড়ী মাদরাসা

Post by Dawtul Haq.
Blog eidtor_Syed Rubel.
ইহুদী, খৃষ্টান, হিন্দু ,বৌদ্ধ, নাস্তিক ও দেশের নারীবাদীদের ইসলামের বিরুদ্ধে করা সকল অপপ্রচারের দাঁত ভাঙ্গাঁ জবাব দেখুন এই পোস্ট টি থেকে

শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের কে জানার সুযোগ দিন ।আপনি জেনেছেন হয়তো সে জানেনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :