►প্রশ্ন-উত্তরে সিয়াম◄সিয়াম ভঙ্গ হওয়ার কারণসমূহ

কোন মন্তব্য নেই
►প্রশ্ন : কী কী কারণে সিয়াম ভঙ্গ
হয়ে যায়?
উত্তর : নিুোক্ত যে কোন কারণ
দেখা গেলে সিয়াম ভঙ্গ হয়ে যাবে :
১. ইচ্ছা পূর্বক পানাহার ও ধুমপান
করা।
২. স্বেচ্ছায় বমি করা
৩. স্বামীস্ত্রীর মিলন
৪. বৈধ অবৈধ যে কোন প্রকার যৌন
ক্রিয়া।
৫. পানাহারের বিকল্প কিছু গ্রহণ করা,
যেমন- ইনজেকশান বা রক্ত গ্রহণ
করা। আর তা এমন ইনজেকশান যার
মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করা হয়।
৬. মাসিক স্রাব ও প্রসবোত্তর স্রাব
►প্রশ্ন: কেউ যদি ভুলক্রমে কিছু
খেয়ে ফেলে তবে কি তার সিয়াম ভঙ্গ
হয়ে যাবে?
উত্তর : না, ভাঙ্গবে না।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
ﺇِﺫَﺍ ﻧَﺴِﻲَ ﻓَﺄَﻛَﻞَ ﻭَﺷَﺮِﺏَ ﻓَﻠْﻴُﺘِﻢَّ
ﺻَﻮْﻣَﻪُ ﻓَﺈِﻧَّﻤَﺎ ﺃَﻃْﻌَﻤَﻪُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺳَﻘَﺎﻩُ
১. যদি কেউ ভুলক্রমে পানাহার
করে তবে সে যেন তার সিয়াম পূর্ণ
করে নেয়, কেননা আল্লাহ তা‘আলাই
তাকে এ পানাহার করিয়েছেন (অর্থাৎ
এতে তার রোযা ভাঙ্গেনি)।
(বুখারী-১৯৩৩ ও মুসলিম-১১৫৫)
ﻣَﻦْ ﺃَﻓْﻄَﺮَ ﻓِﻲْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻧَﺎﺳِﻴًﺎ ﻓَﻼَ
ﻗَﻀَﺎﺀَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﻻَ ﻛَﻔَّﺎﺭَﺓَ
২. যে ব্যক্তি ভুল বশতঃ রমাযানের
দিনে বেলায় কিছু খেয়ে ফেলল : সেজন্য
কোন কাযা ও কাফফারা দিতে হবে না।
(দারাকুতনী ২৪, বায়হাকী ৭৮৬৩)
►প্রশ্ন : অযু গোসলের সময়
অসাবধানতা বশতঃ হঠাৎ করে কিছু
পানি গলায় ঢুকে গেলে বা জোরপূর্বক
খাওয়ানো হলে সিয়াম কি ভঙ্গ
হয়ে যাবে?
উত্তর : না, ভঙ্গ হবে না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَﺿﻊَ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻰ ﺍﻟْﺨَﻄَﺄ
ﻭَﺍﻟﻨِّﺴْﻴَﺎﻥَ ﻭَﻣَﺎ ﺍﺳْﺘَﻜْﺮَﻫُﻮْﺍ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
“আল্লাহ তা‘আলা আমার উম্মাতের
ভুল-ভ্রান্তি ও বাধ্য
হয়ে ঘটে যাওয়া পাপরাশি মাফ
করে দিবেন। (শরহে মা‘আনীল আসার)
►প্রশ্ন : সিয়াম অবস্থায় কেউ
যদি ইচ্ছাকৃত
বমি করে তাহলে তাকে কী করতে হবে?
উত্তর : এ সিয়াম আবার
কাযা করতে হবে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
ﻣَﻦْ ﺫﺭﻋﻪ ﻗﻰﺀ ﻓَﻠَﻴْﺲَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻗَﻀَﺎﺀً ﻭﺇﻥ ﺍﺳﺘﻘﺎﺀ ﻓﻠﻴﻘﺾ
যে ব্যক্তি অনিচ্ছা বমি করল
তাকে উক্ত সিয়াম কাযা করতে হবে না।
কিন্তু যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় বমি করল
তাকে উক্ত সিয়াম অবশ্যই
কাযা করতে হবে। (আবূ দাঊদ ২৩৮০)
►প্রশ্ন: রমযান মাসে দিনের বেলায়
স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে স্বামী-স্ত্রীর
মিলন হলে এর হুকুম কি?
উত্তর : এতে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
এর ফলে কাযাও
করতে হবে এবং কাফফারাও দিতে হবে।
(ক) একদিনের রোযার জন্য
একাধারে দু’মাস রোযা রাখতে হবে।
মাঝখানে একদিন বাদ গেলে এর পরের
দিন থেকে আবার একাধারে পূর্ণ দু’ মাস
রোযা রাখতে হবে। অথবা
(খ) ষাটজন মিসকিনকে এক বেলা আহার
করাতে হবে।
►প্রশ্ন: উপরোক্ত ঘটনায়
কারণে কে কাযা করবে?
স্বামী নাকি স্ত্রী?
উত্তর : উভয়েই
কাযা করবে এবং কাফফারা দিবে।
তবে স্ত্রীকে যদি জোরপূর্বক সঙ্গম
করে থাকে তাহলে কাযা ও
কাফফারা দিবে শুধু স্বামী, স্ত্রী নয়।
উল্লেখ্য যে, বৈধ ও অবৈধ যে কোন
উপায়ে বীর্যপাত ঘটানো হলে সিয়াম
ভঙ্গ হয়ে যাবে।
►প্রশ্ন: রমযান মাসে রাতের বেলায়
কি স্ত্রীসহবাস করা যাবে?
উত্তর : হা, তা জায়েয আছে।
►প্রশ্ন: কোন প্রকার
ইনজেকশানে সিয়াম ভঙ্গ হয়ে যাবে?
উত্তর :
(ক) রক্তশূন্যতা পূরণ জনিত
ইনজেকশান
(খ) শক্তি বর্ধক ইনজেকশান
(গ) স্যালাইন ও পানাহারের
স্থলাভিষিক্ত ইনজেকশান। এর কোন
একটা পুশ করলে সিয়াম ভঙ্গ হয়ে যাবে।
তবে শুধুমাত্র ঔষধজনিত হলে সিয়াম
ভঙ্গ হবে না।
►প্রশ্ন : দিবসের কোন
অংশে রক্তস্রাব শুরু হলে সিয়াম ভঙ্গ
হয়ে যাবে?
উত্তর : দিবসের শুরু বা শেষ যে কোন
অংশে স্রাব শুরু হলে সিয়াম ভঙ্গ
হয়ে যাবে।
►প্রশ্ন: মাসিক স্রাব শুরু
হওয়া অনুভব করছে কিন্তু হয় নি। এ
অবস্থায় কি সিয়াম ভঙ্গ হয়ে যাবে?
উত্তর : শুরু না হওয়া পর্যন্ত ভঙ্গ
হবে না।
►প্রশ্ন:
ঋতুবর্তী মহিলারা কি কাযা করবে?
উত্তর : শুধুমাত্র সিয়াম কাযা করবে।
সালাত কাযা করতে হবে না।
আয়িশাহ (রাঃ) বলেন :
ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺼِﻴﺒُﻨَﺎ ﺫَﻟِﻚَ ﻓَﻨُﺆْﻣَﺮُ ﺑِﻘَﻀَﺎﺀِ
ﺍﻟﺼَّﻮْﻡِ ﻭَﻻَ ﻧُﺆْﻣَﺮُ ﺑِﻘَﻀَﺎﺀِ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ
আমাদেরও এটা ঘটত (অর্থাৎ মাসিক
হতো)। তখন আমরা শুধু সিয়াম
কাযা করতে আদিষ্ট হতাম। কিন্তু
সালাত কাযা করতে আদিষ্ট হতাম না।
(বুখারী ও মুসলিম-৩৩৫)
►প্রশ্ন : ফাজরের ওয়াক্ত
হয়নি মনে করে ফজর শুরু হওয়ার পর
পানাহার করল, এমনিভাবে সূর্যাস্ত
হয়ে গেছে মনে করে অস্ত যাওয়ার আগেই
ইফতার করে ফেলল- এ সিয়াম কি শুদ্ধ
হবে?
উত্তর : হা, শুদ্ধ হবে এ জন্য যে,
এটি তার অজানা ও
অজ্ঞতাবশতঃ হয়ে গেছে। আল্লাহ
তা‘আলা বলেন :
ﻭَﻟَﻴْﺲَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺟُﻨَﺎﺡٌ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺃَﺧْﻄَﺄْﺗُﻢْ
ﺑِﻪِ ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﻣَﺎ ﺗَﻌَﻤَّﺪَﺕْ ﻗُﻠُﻮﺑُﻜُﻢْ
ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻏَﻔُﻮﺭﺍً ﺭَﺣِﻴﻤﺎً
ভুলক্রমে কোনকিছু
করে ফেললে এতে কোন গুনাহ হবে না।
তবে জেনে শুনে ইচ্ছাকৃত ভাবে কোন
অপরাধ করলে অবশ্যই এতে গুনাহ হবে।
আল্লাহ তা‘আলা অতিশয় ক্ষমাশীল ও
মেহেরবান। (আহযাব : ৫)
►প্রশ্ন : সিয়াম অবস্থায়
ভুলে পানাহার শুর করে দিল। এমন সময়
হঠাৎ স্মরণ হল। এ ব্যক্তি কি করবে?
উত্তর : মনে হওয়ামাত্র মুখের
বাকীখানা বা পানীয় ফেলে দেবে আর
যতটুকু ভুলে খাওয়া হয়ে গেছে সেজন্য
সিয়াম ভঙ্গ হবে না। তবে এ দৃশ্য
যে দেখবে তার উপর ফরয হল সিয়াম
পালনকারীকে স্মরণ করিয়ে দেয়া।
►প্রশ্ন : কেউ যদি কোন
সিয়ামকারীকে জবরদস্তি করে কোন
কিছু খাওয়ায় তাহলে কি হবে?
উত্তর : এতে সিয়াম ভঙ্গ হবে না।
অনুরূপভাবে জোর করে কোন
মুমিনকে কাফির
বানাতে চাইলে সে কাফির হবে না।
অনুরূপভাবে স্ত্রীর
সম্মতি ব্যতিরেকে স্ত্রীকে জোর
করে সঙ্গম করলে স্ত্রীর সিয়াম
ভাঙ্গবে না কিন্তু স্বামীর সিয়াম
অবশ্যই ভেঙ্গে যাবে।
►প্রশ্ন :
বিনা উযরে যে ইচ্ছা করে অতীতের
সিয়াম ভঙ্গ করেছে তার
কি করতে হবে?
উত্তর : এটি একটি মহাপাপ।
তাকে তাওবা করতে হবে এবং এসব
রোযা কাযা করতে হবে।
►প্রশ্ন : দিনের বেলায় ঘুমন্ত
অবস্থায় যদি স্বপ্নদোষ হয়ে যায়
তাহলে কি হবে?
উত্তর : এতে রোযা ভাঙ্গবে না। কারণ
স্বপ্নদোষ নিজের ইচ্ছাকৃত কোন
ঘটনা নয়।
►প্রশ্ন : সিয়াম অবস্থায় থুথু
কাশি গিলে ফেলা কেমন?
উত্তর : মুখে থাকা থুথু
গিলে ফেললে অসুবিধা নেই।
তবে কাশি গিলে ফেলা জায়েয নয়।
কেননা কাশি থুথুর মত নয়।
►প্রশ্ন : নাক দিয়ে রক্ত
পড়লে কিংবা দাঁত উঠলে অথবা আহত
হয়ে রক্ত প্রবাহিত হলে কি সিয়ামের
কোন ক্ষতি হবে?
উত্তর : না, এতে সিয়াম ভাঙ্গবে না।
কোন ক্ষতিও হবে না।
►প্রশ্ন : কোন রোযাদার ব্যক্তি তার
সিয়াম ভঙ্গ করার নিয়ত করল কিন্তু
সে তখনো কোন খানাপিনা খায়নি- তার
সিয়াম কি ঠিক আছে,
নাকি ভেঙ্গে গেছে?
উত্তর : তার সিয়াম ভঙ্গ হয়ে গেছে।
কারণ সিয়ামের জন্য নিয়ত ফরয। আর
এ ফরয তার তরক হয়ে গেছে। কাজেই
রোযা তার ভেঙ্গে গেছে খাবার বা পানীয়
গ্রহণ ছাড়াই।
কৃতজ্ঞতা ঃ Unity in the
Muslim ummah (মুসলিম উম্মার
মধ্যে ঐক্য)

Post on আখিরাতের জীবনের তুলনায় দুনিয়ার জীবন খুবই নগণ্য

Next post রোযাদারকে ইফতার করানোর ফযিলত

ব্লগ সম্পাদক ও এ্যাডমিনঃ সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

ব্লগের প্রকাশিত পোস্ট গুলি ফেসবুকে শেয়ার করে আমাদের চলার পথকে আরো গতিময় করে তুলুন ।আমরা দিন রাত খাটিয়ে পোস্ট গুলি লেখি ।ব্লগে প্রকাশ করে আপনাদেরকে উপহার দেয় ।আপনারা যদি শেয়ার না করেন?তাহলে আমরা তো সামনে এগিয়ে যেতে পারবোনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :