বিবাহান্তর কর্তব্য part1

কোন মন্তব্য নেই
নব বধূর প্রতি কর্তব্য
নববধূর প্রতি অবশ্যই পালনীয় কতকগুলি কর্তব্যের নির্দেশ করা হয়েছে আমাদের শাস্ত্রে। শাস্ত্রমতে সেগুলি অতি অবশ্যই পালন করা উচিত।
এখানে একে একে সেগুলি সংক্ষেপেবর্ণনা করা হলো।



১। নববধূ বাড়িতে প্রথম পদার্পণের পর প্রতিটি পরিজন তার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করা উচিত। এটি মনে রাখতে হবে, যেরকমতাকে দেখান হবে, তেমন আচরণ সে করবে। তাকে যদি প্রত্যেকে ভালবাসে, সেও প্রত্যেককে ভালবাসবে।
২। নববধূকে জোর করে বা হুকুম করে কোনও কাজ করাতে নেই। তাতে পরিবারের বা স্বামীর গৃহের প্রতি তার একটা বিরক্তির ভাব জন্মায়।
৩। নববধূ ইচ্ছা করে যদি কিছু কাজকর্ম সখ ক’রে নিজের হাতে তুলে নেয় তাতে কোন বাধা দিতে নেই। তাতে তার মনে দুঃখ বা ব্যথা লাগতে পারে।
৪। নববধুর প্রতি তার স্বামীর খুব ভদ্র ভ্যবহার করা উচিত। এটা অবশ্য মনে রাখা কর্তব্য, স্বামীর ভালবাসাই বিবাহিতা নারীর জীবনে সবচেয়ে বেশী কাম্য। তাতে স্বামীন আহ্লাদ থেকে বঞ্চিত হলে কিছুতেই তার মনে শান্তি আসতে পারে না।
৫। নববধূ পিতামাতার স্নেহের আলয় ছেড়ে স্বামীগৃহে পদার্পণ করেছে একথা মনে রাখা উচিত। বিবাহের আগে সে পিতামাতাকে খুবভালবাসত একথা অস্বীকার করা যায়না, তাই পিতামাতার নিন্দা তার কাছে মোটেই ভাল লাগে না- এতে সেমনে আঘাত পায়। তাই বিবাহিতা নববধূর সামনে কখনও তার পিতৃগৃহের নিন্দা করা উচিত নহে।
৬। ছোটখাটো আর্থিক বা ঐ ধরণের সামান্য বিষয় নিয়ে কখনও নববধূরমনে আঘাত দেওয়া উচিত নয়। এই কথাতুলে তার পিতাকে ছোট প্রতিপন্নকরার চেষ্টা করা কোনও মতেই উচিত নয়। এই ধরনের আলোচনা সর্বদা বর্জনীয়।
৭। আদর, সোহাগ, প্রীতি ও সেই সঙ্গে শ্বশুর গৃহের প্রকৃত অবস্থার বিষয়ে নববধূকে জ্ঞান দান করা কর্তব্য। নববধূ যদি স্বামীর প্রকৃত অবস্থা বোঝে, তবে সে নিশ্চয়ই প্রকৃত অবস্থারসঙ্গে খাপ খাইয়ে নেবার চেষ্টা করবে।
৮। নারীর কোমলতা, প্রেম, অভিমানএগুলি যে নারীর সহজাত বৃত্তি- নববধূকে তা বলা উচিত নয়।
নববধূর বিশ্বাস উৎপাদন
স্বামী কি করে নববধূর বিশ্বাস উৎপাদন করবে, এ বিষেয়ে শাস্ত্রেযা বলা হয়েছে তা হচ্ছে-
১। স্বামী কখনও বাড়ির সম্বন্ধেকোনও মিথ্যা কথা নিজে নববধূকে কিছুতেই বলবে না- এটা অত্যন্ত অন্যায় এবং এর ফলে পরে সে বধূর কাছে ছোট হয়ে যায়।
২। স্বামী তার ব্যবহারের মধ্যেকোনও সময়েই স্ত্রীর প্রতি সহসাকামভাব প্রদর্শন করবে না।
৩। ধীরে ধীরে স্ত্রীর সঙ্গে নানা কথা বলে আনন্দ করবে এবং তার ফাঁকে ফাঁকে নিজের প্রকৃতি,বুদ্ধি ও সংযমের পরিচয় দেবে।৪। প্রয়োজন হলে নববধূর প্রশংসাকরবে- তার ব্যবহার, কথাবার্তা, রূপ-গুণের প্রশংসা করবে।
৫। নববধূ তার প্রতি ধীরে ধীরে আকৃষ্টা হ’লে, তা প্রকাশিত হবে তার ব্যবহার ও রতি-প্রকৃতিতে। তা না হলে জোর করে স্বামী যৌন আকর্ষণ বা দৃঢ়তা দেখাবে না।
৬। নববধূ নিজে থেকে প্রেম ও প্রীতি প্রকাশ করলে তার মন বুঝে স্বামী তার প্রতি চুম্বন, আলিঙ্গন ইত্যাদি ধীরভাবে করতে পারে, তবে দেখতে হবে সে তা চায় কিনা।
৭। নববধূ বিমুখ হলে তার প্রতি কখনও রূঢ় আচরণ বা কর্কশ বাক্য ব্যবহার করবে না।
৮। প্রয়োজন হ’লে বধূকে প্রসন্ন করার জন্যে তার কাছে সব নিজেকে নিচু করবে। শাস্ত্রে উল্লেখ আছে- কোনরকম রূঢ়তা ও কর্কশতা সর্বদা পরিত্যাজ্য।
৯। যখন নববধূ চুম্বন নেবে তারপর আলিঙ্গন ও ধীরে ধীরে তার সম্মতি নিয়ে মিলনের কথা উঠতে পারে।
১০। নববধূর যদি প্রথম ঋতু না হয়ে থাকে, কদাচ মিলন উচিত নয়। নারী ঋতুমতী হবার আগে পর্যন্ত সে কখনও মিলনের উপযুক্তা হয় না।
এখানে একটা কথা।
আজকাল অধিকাংশ বিয়েই হয় নারীর ঋতুর পর-কিন্তু বাৎস্যায়নের আমলে তা হতো না।
উপরের নিয়মগুলি পালন না করলে বালিকার মনে স্বামীর প্রতি ঘৃণা বা বিরক্তির ভাব জাগতে পারে- তাতে দাম্পত্য জীবন কখনও সুখের হয় না।
যৌবনাগমন ও মাসিক ধর্ম
নারী ও পুরুষ উভয়ের জীবনেই বিভিন্ন সময়ে যৌবনের সঞ্চার ঘটে থাকে। তবে যৌবন আগমন উভয়ের ঠিক একই সময়ে ঘটে না- বিভিন্ন সময়ে ঘটে।
নারীর যৌবন আগমন ঘটে আগে- পুরুষের ঘটে কিছু পারে।
গ্রীষ্মপ্রধান দেশে পুরুষের যৌবন আগমন ঘটে আঠারো থেকে কুড়ি বছরের মধ্যে। শীতপ্রধান দেশে- অর্থাৎ ভারতের বহির্দেশে যুবকদের যৌবন আগমন ঘটে বাইশ থেকে পঁচিশ বছর বয়সে।
নারীর যৌবন আগমন ঘটে গ্রীষ্মপ্রধান দেশে চৌদ্দ থেকেষোল বছর বয়সে- আর শীতপ্রধান দেশে আঠারো থেকে কুড়ির মধ্যে।
যৌবন ধর্মের তালিকা
শীতপ্রধান দেশে যৌবন আগমন
পুরুষ- ২২-২৫
নারী- ১৮-২০
গ্রীষ্মপ্রধান দেশে যৌবন আগমন
পুরুষ- ১৮-২০
নারী- ১৪-১৬
শীতপ্রধান দেশে যৌবন নিরোধন
পুরুষ- ৬৫-৭০
নারী- ৫০-৫৫
গ্রীষ্মপ্রধান দেশে যৌবন নিরোধন
পুরুষ- ৫৫-৬০
নারী- ৪৫-৫০
পুরুষের যৌবন আগমনের লক্ষণ
অবশ্য মাঝে মাঝে উপরের প্রকৃতিগত নিয়মেও ব্যতিক্রম দেখা যায়।
পুরুষের যৌবন আগমন বিভিন্ন লক্ষণের মধ্য দিয়ে ফুটে ওঠে।
যেমন-
(১) কষ্ঠস্বর ভারী হয়।
(২) গোঁফের মধ্যে রেখা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
(৩) বগলে ও বসি-দেশে লোম দেখা যায়।
(৪) তাদের দেহের মধ্যে বীর্য্য বা শক্তি সৃষ্টি হয়।
(৫) মানসিক পরিবর্তন ঘটে।নারীর যৌবন আগমনের লক্ষণ
নারীর যৌবন আগমনের সঙ্গে সঙ্গেতার দেহে যে সব চিহ্ন ফুটে ওঠে তা হলোঃ- তাদের দৈহিক ও মানসিক পরিবর্তন।
১। দেহে নারী-সুলভ কমনীয়তা ফুটে ওঠে।
২। হাত, পা, জঙ্ঘন, নিতম্ব ইত্যাদিতে মেদ জমে ওঠে।
৩। বক্ষদেশ উন্নত হ’য়ে ওঠে।
৪। মানসিক পরিবর্তন দেখা দেয়।
৫। প্রায় আঠাশ দিন অন্তর মাসিক বা ঋতুস্রাব হয়ে থাকে।
এই ঋতুস্রাব হলো নারীর যৌবন আগমনের সবচেয়ে বড় চিহ্ন।
আরো পড়ুন বিবাহান্তর কর্তব্য part2
Link to http://sayedrubel.blogspot.com/2012/05/part-2.html

কোন মন্তব্য নেই :