পুরুষত্বহীনতা এবং যৌনতা

কোন মন্তব্য নেই
কোন পুরুষের প্রাথমিক
পুরুষত্বহীনতা হবে তা আগে থেকে বলা
যায় না। আবার কেউ
অন্যকে শেখাতে পারে না লিঙ্গ
উত্থানের বিষয়টি। লিঙ্গের উত্থান
একটি প্রাকৃতিক অবস্থা।
রেসপিরেটোরি,
সারকুলেটরী এবং স্নায়ুবিক
কারণে লিঙ্গ উত্থিত হয়। কিন্তু
আসল কারণটি হলো প্রাকৃতিক।
তবে অনেক ক্ষেত্রে যৌন মনোদৈহিক
সামাজিক কারণে ও অনেকের
পুরুষত্বহীনতা হতে পারে।
যে কারণগুলো পুরুষত্বহীনতার জন্য
স্বাভাবিকভাবে দায়ী সেগুলো হলো–
কঠিন ধর্মীয় বিশ্বাস।
যৌনতার জন্য প্রচুর শক্তি না থাকা।
মাতৃত্বের কঠিন চাপ।
সমকামিতা পছন্দ করা।
নারীদেরকে ঘৃণা করা।
পতিতার সাথে সঙ্গমে ব্যর্থ হওয়ার
পরে মনে পাপ বোধের সৃষ্টি।
পুরুষত্বহীনতার চিকিৎসা-
প্রায়শই পুরুষত্বহীনতার
চিকিৎসা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় এবং রোগের
কারণ
ধরতে না পারলে চিকিৎসা ব্যবস্থা
প্রলম্বিত হতে পারে। যৌন বিশেষজ্ঞ
মাস্টার এবং জনসনের মতে যৌন
সঙ্গিনী বদলের ফলেও অনেক সময় এ
রোগের সমস্যা সমাধান
করা যেতে পারে। নারীর উচিত
পুরুষকে এ ব্যাপারে সহায্য করা।
স্ত্রীর উচিত স্বামীকে সাহায্য করা।
নৈতিক, সমাজিক,আর্থ-সমাজিক
প্রোপটে পুরুষের পুরুষত্বহীনতার
চিকিৎসায়
বর্তমানে যে বিষয়গুলো গ্রহন করা হয়
সে গুলো হলো–
যৌনতার পরিপূর্ণ শিক্ষাদান।
সাইকোথেরাপী।
রোগীকে হস্তমৈথুনের দ্বারা তার
লিঙ্গের দৃঢ়তা বাড়ানো।
দুশ্চিন্তাগ্রস্ত
রোগীকে এ্যাংজিওলিটিঙ দেয়া।
নিচু মাত্রার ৫০ গ্রাম টেসটোস্টেরন
ইনফেকশন সপ্তাহে তিনবার দেয়া।
যদি রোগীর কেবলমাত্র উত্থানজনিত
সমস্যা হয় তবে রোগীকে নগ্ন নারীর
সমনে উপস্থিত করা।
এক্ষেত্রে পতিতাদের সাহায্য
নেয়া যেতে পারে।
পেপাভেরিন ইনকেজশন লিঙ্গের
দৃঢ়তা বাড়াতে পারে।
রোগীর জন্য সামাজিকতার প্রয়োজন।
যৌন উদ্দীপক গ্রন্থ পড়া উচিত।
চূড়ান্ত মাত্রার পুরুষত্বহীনতা-
অনেক পুরুষের পুরুষত্বহীনতা সাময়িক।
দেখা যায় যে খুব বেশি মাত্রায়
উদ্বিগ্ন থাকলে বা কোনো কিছু
নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত
থাকলে যৌনমিলনের সময় পুরুষ তার
যৌন উত্তেজনা হারাতে পারে। আবার
খুব বেশি মাত্রায় এলকোহল সেবনের
ফলেও পুরুষের লিঙ্গের দৃঢ়তা নষ্ট
হয়ে যায়। সাইকোজেনিক
অথবা অর্গানিক নানা কারণে পুরুষের
পুরুষত্বহীনতার সৃষ্টি হতে পারে।
মনোদৈহিক
যে যে কারণে পুরুষত্বহীনতার
সৃষ্টি হতে পারে–
১. দাম্পত্য সমস্যা।
২. ধর্মীয় কুসংস্কার।
৩. কঠিনভাবে পিতা বা মাতার
অনুশাসনের নিয়ন্ত্রণে থাকা।
৪. পূর্বের যৌন অমতার জন্য
পাপবোধ।
৫. অকাল বীর্যপাত।
৬. যৌনতার ব্যাপারে অনাগ্রহ।
৭. যৌনমিলনে সফলতা আসবে কিনা এই
নিয়ে ভয় এবং দুশ্চিন্তা।
অর্গানিক কারণে সৃষ্ট পুরুষত্বহীনতা-
১. এনাটোমিকাল বড় হাইড্রোসেল
টঙিকুলার ফাইব্রোসিস।
২.
কার্ডিওরেসপেরেটোরী মায়োকার্ডিয়াল
ইনফ্রাকশন ইনজিনা ফাইমোসিস।
৩. জেনিটো ইউরিনারী প্রিয়াপিজম
প্রোসটাটিটিস ইউরেথ্রিটিস
প্রোসটাটেকটমী।
৪. এন্ড্রোক্রাইনাল, ডায়াবেটিস
থাইরোটঙিকোসিস
স্থুলতা ইনফা্যান্টালিজম ক্যাসট্রেশন
এক্রোমেগালি।
৫. নিউরোলজিক্যাল, মাল্টিপোল,
সিরোসিস, অপুষ্টি, পারকিনসন্স অসুখ,
টেমপোরাল লবের সমস্যা, স্পাইরাল
কর্ডের আঘাত, ই.সি.টি।
৬. ইনফেকশন, টিউবারকিলোসিস,
গনোরিয়া, মাম্পস।
৭. ড্রাগ নির্ভরতা, এলকোহল সেবন,
স্নায়ু শিথিলকারী ওষুধ,
এন্টিহাইপারটেনসিভ ওষুধ,
সাইকোট্রপিকস ওষুধ, যেমন-
ইমিপ্রামিন, ডিউরেটিঙ। যেমন-
রেজারপাইন।
রোগ নির্ণয়-
যে কোনো ধরণের পুরুষত্বহীনতার
চিকিৎসার জন্য তার রোগ নির্ণয়ের
প্রয়োজন রয়েছে।
ডাক্তারকে জানতে হয় পুরুষের
ক্রমাগত যৌন সমস্যা কেন
সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়
মনোদৈহিক কারণের চাপ শরীরের উপর
এসে পড়ে এবং এই জন্য পুরুষ উত্থান
সমস্যায় ভোগে। রোগ নির্ণয়ের জন্য
ডাক্তারকে যে বিষয়গুলো জানতে হয়–
১. রোগীর পারিবারিক
ডাক্তারী ইতিহাস,
২. রোগীর ব্যক্তিগত
ডাক্তারী ইতিহাস।
৩. রোগীর শারীরিক পরীক্ষা।
৪. রোগীর লিঙ্গ পরীক্ষা।
৫. ল্যাবটেষ্ট।
৬. মিনেন সোটা মালটিফেজিক
পারসোনালিটি ইনভেনটোরি।
রোগীর পারিবারিক ডাক্তারী ইতিহাস
এবং রোগীর ব্যক্তিগত
ডাক্তারী ইতিহাস জানা এই জন্য
জরুরী যে, এতে করে রোগ নির্ণয়
করা সুবিধা হয় । ডাক্তার
বুঝতে পারেন পুরুষত্বহীনতার এই
সমস্যাটির কারন শারীরিক নয়
মানসিক। অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত
এলকোহল সেবনজনিত কারণে পুরুষের
পুরুষত্বহীনতা দেখা দেয় এবং অনেকের
অকাল বীর্যপাতের
সমস্যা দেখা দিতে পারে। রোগীর
শারীরিক পরীক্ষা নিরীার মধ্যে প্রধান
বিবেচ্য বিষয় থাকে তার
রেসপিরেটোরী এবং কার্ডিওভাসকুলার
ঠিকমত কাজ করছে কিনা তা ল্য করা।
এছাড়া ও স্নায়ু এবং তলপেট
ব্যবস্থা কতটুকু সুস্থ আছে এটিও
ডাক্তারদেরকে জানতে হয়। লিঙ্গ
পরীক্ষার সময় ডাক্তার
যে বিষয়গুলো ল্য করেন।
প্রিপিউজ-ফাইমোসিসের জন্য।
মূত্রনালীর মুখ- স্টেনোসিসের জন্য।
অন্ডথলি-হাইড্রোসেলের জন্য।
করপরা কেভারনোসা-যে কোনো প্রকার
ফাইব্রেসিসের জন্য।
ল্যাবরেটরী টেষ্ট-
ল্যাবরেটরীতে ডাক্তার রোগীর
বিভিন্ন শারীরিক বিষয়
পরীক্ষা নিরীক্ষা করে থাকেন।
এতে করে দ্রুত সমস্যা নির্ণয়
করা সহজ হয়।
ল্যাবরেটরীতে পুরুষত্বহীনতার জন্য
যে সমস্ত টেষ্ট করানো হয়
সেগুলো হলো–
সি.বি.সি।
ই.এস.আর।
মূত্র পরীক্ষা।
লিভারের এনজাইম পরীক্ষা।
বীর্য পরীক্ষা।
থুথু পরীক্ষা।
এস এম এ ১২।
টেসটোসটেরন স্তন পরীক্ষা।
প্রেল্যাকটিন স্তন পরীক্ষা।
পুরুষত্বহীনতার চিকিৎসা-
পুরুষত্বহীনতার চিকিৎসার
ব্যাপারে অধিকাংশ পরামর্শ
এসেছে মাস্টার এবং জনসনের কাছ
থেকে।
তারা তিনটি বিষয়ে প্রাথমিকভাবে
গবেষণা করে থাকেন যে কোনো একজন
পুরুষ পুরুষত্বহীনতার ভোগে। এই
তিনটি কারণকে বিশ্লেষণ
করে তারা এমন কিছু কৌশল
এবং পদ্ধতির কথা বলেন
যাতে করে পুরুষত্বহীনতা সমস্যা
কাটানো যায়। তাদের গভেষণার বিষয়
তিনটি হলো–
১. যৌনতার ব্যাপার পুরুষ এবং নারীর
ভ্রান্ত ধারণা।
২. পুরুষের
পুরনো চিন্তা ভাবনা এবং উঁচু মাত্রার
শারীরিক এবং মনোদৈহিক চাপ। বিশেষ
করে স্বামী স্ত্রী মধ্যকার যৌনতার
ব্যাপারে আলোচনা কম হওয়া।
মনে রাখা উচিত স্বামী স্ত্রী মধ্যকার
যৌন আলোচনা যৌন
উদ্দীপনা বাড়াতে পারে।
৩. পুরুষত্বহীন পুরুষের মানসিক চাপ
বেশি থাকে সেই কারণে স্ত্রীর বা যৌন
সঙ্গিনীর উচিত তাকে আশ্বস্ত
করা যে এটি কোনো রোগ নয়। মাস্টার
এবং জনসনের পুরুষত্বহীনতার
ব্যাপারে দেয়া পরামর্শগুলো হলো।
যৌন সঙ্গী এবং সঙ্গিনীর
মধ্যে খোলামেলা যৌন
আলোচনা করা উচিত। এটি পরস্পরের
যৌনানুভূতিকে চাঙ্গা করতে পারে এবং
পুরুষের লিঙ্গের দৃঢ়তা সৃষ্টি করে।
যৌনতার ব্যাপারে কোনো প্রকার
ধারণা পোষণ করা উচিত নয়।
এবং পুরুষ উভয়েরই উচিত যৌনতার
ব্যাপের একজন অন্যজনকে সাহায্য
করা। এর ফলে যৌন
অনুভূতি এবং পুরুষের লিঙ্গের
দৃঢ়তা তৈরী হতে পারে।
যদি নারী বা পুরুষের
যে কোনো একজনের
যৌনতা ব্যাপারে কোনো প্রকার সন্দেহ
ভয় ভীতি বা দুশ্চিন্তা কাজ
করে তাহলে সাথে সাথে তা ডাক্তারকে
জানানো উচিত। অনেক নারী যৌনতার
ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা খুব পছন্দ করে।
হয়তো তার যৌন সঙ্গী বা স্বামী ওরাল
সেক্স পছন্দ করছে অথচ
নারী সেটি পছন্দ করছে না।
এতে করে উভয়ের যৌন অনুভূতির
মধ্যে একটা পার্থক্য তৈরী হতে পারে।
এ ব্যাপারটি দিকে খেয়াল রাখা উচিত।
পরস্পরের সাথে গভীর স্পর্শের
সম্পর্ক থাকা উচিত।
পুরুষদের যদি উত্তেজনা কম
থাকে সে ক্ষেত্রে নারীর উচিত
পুরুষকে উত্তেজিত করে তোলা।
নারী বিভিন্ন ভাবে পুরুষকে উত্তেজিত
করে তুলতে পারে। বিশেষ
করে নারী তার স্তন, স্তনবৃন্ত,
কিটোরিস ইত্যাদি উত্তেজক শারীরিক
অংশের স্পর্শ
দ্বারা পুরুষকে উত্তেজিত
করে তুলতে পারে।
পুরুষত্বহীনতা সমস্যা মোকাবেলায়
নারীর ভূমিকা রয়েছে খুব বেশি।
নারী পুরুষকে বিভিন্ন ভাবে উত্তেজিত
করে আবার তাকে শিথিল করে তার
লিঙ্গের দৃঢ়তা বাড়াতে পারে।
স্ত্রী দিনে অন্তত তিন চার বার
স্বামীর দৃঢ়তা বাড়াতে এ
কাজটি করতে পারে।
লিঙ্গের উত্তেজনা দীর্ঘণ
ধরে না রেখে পুরুষের উচিত একবার
লিঙ্গ শিথিল করে আবার লিঙ্গের
উত্তেজনা তৈরী করা।
এতে করে পুরুষত্বহীনতার
সমস্যা কিছুটা কমতে পারে।
সূত্রঃ প্রফেসর ডাঃ মোহাম্মদ ফিরোজ

কোন মন্তব্য নেই :