জনতাকে লক্ষ্য করে এমপি গিয়াস উদ্দিনের গুলি (ছবি সহ)

কোন মন্তব্য নেই

বিক্ষুব্ধ দলীয় সমর্থক ও
এলাকাবাসী ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের
সাংসদের গাড়ি ভাংচুর
করলে এমপি ক্যাপ্টেন (অব.) গিয়াস
উদ্দিন তাদের লক্ষ্য করেগুলিবর্ষণ
করেন। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
ঘটনাটি ঘটে গতকাল শুক্রবার
উপজেলার উস্থি ইউনিয়নের
কান্দিপাড়াবাজারে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র
করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ
করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ
মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল
সন্ধ্যা ৬টায় গফরগাঁও-টোক সড়ক
দিয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি গিয়াস
উদ্দিন আহমেদ ঢাকা থেকে গফরগাঁও
উপজেলা সদরে যাওয়ার
পথে কান্দিপাড়া বাজারে গাড়ি থামিয়ে দলীয়
লোকজনের সঙ্গে কথাবলছিলেন।
এমপি কান্দিপাড়া এসেছেন_ এ খবর
শুনে মুহূর্তে সেখানে উপস্থিতহয় শত
শত দলীয় ও স্থানীয় লোকজন।
তারাএমপিকে ঘেরাও করে। সদ্য ঘোষিত
পাগলাথানার স্থান পরিবর্তনের
দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে তারা। এ
অবস্থায় এমপি গাড়ির গল্গাস
খুলে উপস্থিত লোকজনকে ধমকান
এবং গালাগাল করেন। এতে লোকজন
উত্তেজিত হয়ে এমপির গাড়িরপেছনের
গ্গ্নাস ভাংচুর করে। তখন ক্ষুব্ধ
এমপি গিয়াস উদ্দিন আহমেদ গাড়ির
জানালা দিয়ে নিজস্ব পিস্তল
থেকে বিক্ষোভকারীদের
উদ্দেশে গুলি করেন। এতে লোকজন
আরও উত্তেজিত হয়ে ফের এমপির
গাড়ি ভাংচুর করে। এ অবস্থায়
তিনি গাড়ি থেকে নেমে লোকজনকে লক্ষ্য
করে আবারও গুলি করেন। পরে স্থানীয়
মুরবি্বরা এগিয়ে এসে ঘটনা সামাল
দেন। সেখান থেকে এমপি গিয়াস উদ্দিন
উপজেলা সদরের
সরকারি ডাকবাংলোতে অবস্থান নেন।
অন্যদিকে এমপির গুলিবর্ষণের
প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক
কান্দিপাড়া বাজারে দলীয় ও স্থানীয়
লোকজন বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময়
আতঙ্কে বাজারের ব্যবসায়ীরা তাদের
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ
রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত
সাড়ে ১২টায়
কান্দিপাড়া বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ
মোতায়েন ছিল।
ঘটনার
বিষয়ে জানতে চাইলে উস্থি ইউনিয়ন
আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শফিউল
বাশার মনি জানান, 'সদ্য ঘোষিত
পাগলা থানার স্থান পরিবর্তনের
দাবিতে পাঁচ ইউনিয়নের লোকজন
আন্দোলন করছে। এমপি সাহেব এ
আন্দোলনে কোনো কর্ণপাতনা করায় এ
বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে।'
অপরদিকে এমপি সমর্থিত লংগাইর
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম
আহ্বায়ক লিয়াকত আলী মণ্ডল
সমকালকে বলেন,
'সন্ত্রাসীরা এমপিকে হত্যা করার জন্য
তার গাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করে।'
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার
প্রতিবাদে রাত ৯টায় স্থানীয়
বাজারে এক প্রতিবাদ সভা হয়।
। গফরগাঁও থানার ওসি (তদন্ত)
মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায়
রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত
কোনো মামলা করা হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী যুবলীগ কর্মী সিদ্দিকুর
রহমান রাসেল বলেন, 'এমপি সাহেব
গাড়িতে বসে এবং গাড়ি থেকে নেমে দু'বার
গুলি করেন।'
পরে এমপি গিয়াস উদ্দিন আহমেদ
উপজেলাসদরের ডাকবাংলোয় অবস্থান
নিয়ে তার দলীয় সমর্থকদের
জড়ো করেন। রাত ৯টায় পৌর
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
মতিউর রহমান বাবুলের
নেতৃত্বে ২০-৩০টি মোটরসাইকেল বহর
সশস্ত্র অবস্থায়
কান্দিপাড়া বাজারে যায়
এবং কান্দিপাড়া বাজার চৌরাস্তায়
সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভা করে।
এতে বক্তব্য দেন মতিউর রহমান
বাবুল, লিয়াকত আলী মণ্ডল,
মোফাজ্জল হোসেন সাগর, মাহতাব
উদ্দিন সাদেক প্রমুখ। অন্যদিকে রাত
সাড়ে ৯টায় সতরবাড়ি বাজারে এমপির
সমর্থকরা লংগাইর ইউনিয়ন যুবলীগের
সভাপতি এম হককে কুপিয়ে গুরুতর আহত
করে। তাকে উপজেলাস্বাস্থ্য
কমপেল্গক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ
ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন
পথচারীকে আটক করে পুলিশ।
আটককৃতরা হলো_ বকুল মিয়া, তানজিব
ও কামরুল। এ বিষয়ে গিয়াস উদ্দিন
আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান,
'আমি ঢাকা থেকে গফরগাঁও যাওয়ার
পথে কান্দিপাড়া বাজারে একটি পথসভা করি।
পথসভা শেষে গফরগাঁও ফেরার
পথে আমাকে হত্যার
উদ্দেশ্যে দুষ্কৃতকারীরা হামলা চালায়।
এ সময়
আমি ফাঁকা গুলি করলে তারা পালিয়ে যায়।'
এলাকাবাসী জানান, এলাকার উন্নয়ন
কাজের ঠিকাদারি, ভিজিএফ কার্ড
বিতরণ, পরিবহনে চাঁদাবাজি,
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগসহ সবকিছু
এমপির একক নিয়ন্ত্রণে। খোদ স্থানীয়
আওয়ামী লীগ নেতারা এমপির
বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় নানা অভিযোগ
তুলেছেন। ডাকবাংলো,
রেলওয়ে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের
জমি দখলের অভিযোগ করেছেন
স্থানীয়রা। এসব
নানা জনবিরোধী তৎপরতার
কারণে এলাকার একটি বড় অংশ এমপির
ওপর ক্ষুব্ধ। এলাকাবাসীর অভিযোগ,
এমপি হওয়ার পর এলাকার জন্য তেমন
কোনো উন্নয়ন কাজ করেননি গিয়াস
উদ্দিন। এমপির বিরুদ্ধে কথা বললেই
হামলা-মামলার শিকার হচ্ছেন সাধারণ
মানুষ থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ-
যুবলীগ নেতারাও। এমপি গিয়াসউদ্দিন
অবশ্য দাবি করে আসছেন,
তিনি দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে কখনোই
জড়িত ছিলেন না।
News link to......
http://
www.samakal.com.bd/
details.php?
news=13&action=main&option=single&news_id=260690&pub_no=1057

কোন মন্তব্য নেই :