কুমিল্লায় ‘বাংলা নীল ছবি

কোন মন্তব্য নেই

স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা থেকে:
স্কুল-কলেজের ছাত্রী ও প্রবাসীদের
স্ত্রীদের সঙ্গে অবৈধ মেলামেশার দৃশ্য
বাজারে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। প্রেমের
ফাঁদে ফেলে ধারণ করা নগ্ন
ভিডিওচিত্রের নাম
দেয়া হয়েছে ‘বাংলা নীল ছবি’। এ ঘটনার
সঙ্গে জড়িতদের ঘনিষ্ঠজনেরাই গোপন
এ কার্যকলাপ ফাঁস করে দিয়েছে। সূত্র
জানায়, প্রায় ১ ঘণ্টার ওই দু’টি নগ্ন
ভিডিওচিত্রের
কপি ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে মোবাইল ফোন,
সিডি, মেমোরি কার্ড ও ই-মেইলের
মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের
ছাত্রছাত্রীর কাছে।
পৌঁছে গেছে সাংবাদিক ও স্থানীয়
পত্রিকা অফিসে।
ভিডিওচিত্রে থাকা ২০/২৪ বছরের
তরুণীর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত
না হওয়া গেলেও দুই ব্যবসায়ীর পরিচয়
জানা গেছে। এদের একজন সদর
উপজেলার দক্ষিণ দুর্গাপুর ইউনিয়নের
চম্পকনগর সাতরা এলাকার
ব্যবসায়ী হাজী জহিরুল হক স্বপন,
অপরজন কুমিল্লা মহানগরীর ধর্মপুর
এলাকার মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী কবির
চৌধুরী তন্ময়। অনুসন্ধানে জানা যায়,
কুমিল্লা মহানগরীর ধর্মপুর এলাকার
পশ্চিম চৌমুহনীর মা-মনি টেলিকমের
স্বত্বাধিকারী ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম
লীগের কুমিল্লার জেলা শাখার
সভাপতি কবির চৌধুরী তন্ময় বিভিন্ন
মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের দৃশ্য
গোপনে ভিডিও করে ‘বাংলা নীল ছবি’
নাম দিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায়
সরবরাহ করে আসছিল। অনেক সময়
তন্ময় তার কক্ষে বন্ধুদের সঙ্গে তার
পরিচিত মেয়েদের মেলামেশার সুযোগ
দিয়ে গোপনে ক্যামেরা ও
মোবাইলে ভিডিও করে নিতো। তন্ময়
স্কুল কলেজের ছাত্রী ও প্রবাসীদের
স্ত্রীদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক
গড়ে তাদের একটি গোপন
কক্ষে নিয়ে মেলামেশা করতো।
পরে এগুলো ‘বাংলা নীল ছবি’ নাম
দিয়ে বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হতো।
তার প্রতারণার হাত
থেকে রক্ষা পায়নি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের
এক ছাত্রী। তাকে প্রেমের
ফাঁদে ফেলে নগ্ন ভিডিও ধারণ
করে দীর্ঘদিন তার
সঙ্গে মেলামেশা করতে বাধ্য করা হয়।
সমপ্রতি মহানগরীর এক কলেজ
ছাত্রীর নগ্ন ভিডিওচিত্র তার এক
ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মাধ্যমে কুমিল্লায়
ছড়িয়ে দেয়া হয়। পরে তা স্থানীয়
সাংবাদিকদের কাছেও সরবরাহ করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, কবির টেলিফোন
ব্যবসার অন্তরালে মেয়েদের প্রেমের
ফাঁদে ফেলে তাদের সঙ্গে মেলামেশার
ছবি গোপনে ভিডিও করে। পরে তাদের
কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ এ ভিডিও
অন্যত্র বিক্রি করে। অপরদিকে সদর
উপজেলার ঝাগরজুলি এলাকার
ঢাকা হাইওয়ে হোটেলের পরিচালক
হাজী জহিরুল হক স্বপনের অপর
একটি ভিডিওচিত্র
নিয়ে মহানগরীতে বেশ চাঞ্চল্য
সৃষ্টি করেছে।
ভিডিওচিত্রে একটি সুসজ্জিত
কক্ষে কুরুচিপূর্ণ যৌনচারে লিপ্ত
থাকতে দেখা যায় তাকে। একটি সূত্র
জানায়, হাজী স্বপন হোটেল ব্যবসার
আড়ালে ইয়াবা, মাদক ব্যবসাসহ
নানা অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত।
মেয়েদের সঙ্গে সখ্য গড়ে আপত্তিকর
দৃশ্যের ছবি তুলে পরে তাদের
সঙ্গে প্রতারণা করে থাকে। তার
ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে নগ্ন একটি ভিডিও
দৃশ্য এখন সবার হাতে হাতে।
এতে দেখা যায়, ওই ব্যবসায়ী এক
মহিলার সঙ্গে যৌনচারে লিপ্ত। তার
এক ঘনিষ্ঠ লোকের মাধ্যমে মোবাইল
ফোন
থেকে তা কৌশলে কপি করে কুমিল্লা শহরে ছড়িয়ে দেয়া হয়।
তাই বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গত
বৃহস্পতিবার ওই
ব্যবসায়ী জাগুরঝুলি এলাকার
একটি হোটেলে সংবাদ
সম্মেলনে বিষয়টি ‘ব্ল্যাকমেইলিং’
দাবি করে। তবে স্বপন মেয়েদের
সঙ্গে সখ্য তৈরির পর গোপন
কক্ষে নিয়ে অবৈধ মেলামেশার দৃশ্য
গোপন ক্যামেরা ও মোবাইল ফোনে ধারণ
করে রাখতো। বিশেষ করে প্রবাসীদের
সুন্দরী স্ত্রীরা ছিল তার টার্গেট।
পরে হুমকি দিয়ে তাদের কাছ থেকে অর্থ
আদায় করা হতো। অবাধে অনৈতিক
কাজে মিলিত হতে বাধ্য করা হতো।
এছাড়া স্বপনের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের
সঙ্গেও মেলামেশা করতে বাধ্য
করা হতো। কিন্তু সমপ্রতি স্বপনের
সঙ্গে এক মহিলার একটি নগ্ন ভিডিও
ফাঁস হয়ে যায় মহানগরীতে।
ব্যবসায়ী স্বপনের ঘনিষ্ঠরা জানান,
ইয়াবা, মাদক ব্যবসা, নারীসহ সব
ধরনের অসামাজিক
কার্যকলাপে সম্পৃক্ত স্বপন অল্প
দিনেই কোটি কোটি টাকার মালিক
হয়েছেন। ইয়াবা ব্যবসার জন্য তার
রয়েছে একটি বিশাল নেটওয়ার্ক। গত
৭ই মে কুমিল্লা র্যাব-১১ গোপন
সূত্রে খবর পেয়ে নগরীর ধর্মপুর
চৌমুহনী এলাকা থেকে ৪৫টি ইয়াবা টেবলেটসহ
স্বপনের ভাগ্নে জাহিদুল ইসলাম
বাবুলকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়াও
কুমিল্লা মহানগরীতে ব্যবসায়ীদের
টার্গেট করে পর্নো ছবি তৈরি ও তাদের
সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ
আদায়ে একটি সিন্ডিকেট মাঠে কাজ
করছে। ওই সিন্ডিকেট কৌশল
হিসেবে সুন্দরী মেয়ের ফাঁদে ফেলে তাদের
সুরক্ষিত কক্ষে নিয়ে অনৈতিক কাজ
করে। এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন
অনেক ব্যবসায়ী। কুমিল্লা মহানগরীর
ভিডিও দোকানে বাংলা পর্নো ভিডিও
সিডি বিক্রির চাহিদাও বেড়ে গেছে। তাই
অনেকেই এসব বাংলা পর্নো সিডি ক্রয়
করতে এখন দোকানে ভিড়
জমাচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। এ
বিষয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো.
মোখলেছুর রহমান জানান,
মহানগরীতে এ ধরনের অনৈতিক কাজের
বিষয়টি পুলিশের জানা ছিল না। তাই
এখন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই :