নারী এবং তার দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে আলোচনা কেন? Part 1

কোন মন্তব্য নেই
প্রথমত:
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাকে পুরুষের স্বভাব-প্রকৃতি থেকে ভিন্ন বিশেষ স্বভাব ও বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করেছেন; আর সে থেকেই তিনি তাকে এমন কতগুলো বিধিবিধানের সাথে বিশেষিত করেছেন, যেগুলো ঐ বিশেষস্বভাব-প্রকৃতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ হায়েয (ঋতুস্রাব), নিফাস, উভয় অবস্থা থেকে পবিত্রতা অর্জন, দুধ পান করানো এবং সালাত (নামায), সিয়াম (রোযা), হজ প্রভৃতি ধরনের ইবাদতের কিছু কিছু বিধানের সাথে যা সংশ্লিষ্ট। সুতরাং পুরুষ ও নারী গবেষকদের উপর আবশ্যকীয় কর্তব্য হল, তারা এ বিষয়ের প্রতি সংশ্লিষ্ট করে তাদের আলোচনা নির্দিষ্ট করবেন।

দ্বিতীয়ত:
একজন নারীর উপর কিছু আবশ্যকীয় দায়িত্ব ও মহান আমানত রয়েছে, যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তার উপরন্যস্ত করেছেন। সে সাধারণভাবেআকিদা-বিশ্বাস, পবিত্রতা অর্জন, সালাত (নামায), সিয়াম (রোযা) প্রভৃতির মত শরী‘আতের সকল বিধিবিধানের ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত। আর তার জন্যআরও কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে, একাধারে সে লালন-পালনকারিনী, মাতা ও স্ত্রী হওয়ার কারণে তাকে সেগুলোর সাথে বিশেষভাবে সম্পর্কিত করা হয়েছে; সুতরাংপ্রত্যেক অবস্থায় তার উপর আবশ্যক হল সে ঐ নিয়ম-কানুনসমূহ যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠিত করবে। অতএব তাকে নিয়ে মোটামুটিভাবে ও বিস্তারিতভাবে আলোচনা হওয়া আবশ্যক; আরও আবশ্যক সুস্পষ্টভাবে আলোচনা ও পর্যালোচনা করা, যাতে মুসলিম নারী তার মধ্য দিয়ে ঐসব দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে জানতে পারে।

তৃতীয়ত:
প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যব্যাপী ইসলামের শত্রুগণের পক্ষ থেকে বিগত যুগে মুসলিম নারীরা ঐ নগ্ন হামলার শিকার হয়েছে এবংমুসলিম সন্তানদের কেউ কেউ সেইপ্রয়াসকে গলধঃকরণ করেছে; ফলেতারা ঐ কলমসমূহ যা লিখেছে, তা-ই আওড়াতে থাকে এবং ঐ আওয়াজসমূহের প্রতিধ্বনি-ই করতে থাকে, যাতে নারী তার আপন গৃহ থেকে বেরিয়ে যায়, সে পুরুষের সাথে অবাধে মেলামেশা করতে পারে এবং তাকে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য থেকে এবং তার শিশু সন্তানদের যত্ন নেয়ার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে পারে। ঐ আওয়াজসমূহ মুসলিম নারীকে নিয়ে চিৎকার করে বলে: “তুমি যে অবস্থানে রয়েছো, তা ভেঙ্গে চুরমার করে দাও; তোমার চতুর্পাশে বিস্তৃতপর্দাসমূহ ছিঁড়ে ফেল; আমাদেরদিকে বের হয়ে আস, যাতে তুমি আলো দেখতে পাও, যে আলো থেকে তুমি আড়ালে ছিলে যুগ যুগ ধরে;পুরুষের কর্তৃত্ব থেকে স্বাধীনতা অর্জন কর; মর্যাদারশর্তসমূহ থেকে মুক্তি লাভ কর; তোমার পর্দা খুলে ফেলে দিয়ে বের হয়ে আস; ঘর থেকে বের হয়ে আসার মাধ্যমে তোমার অস্তিত্ব ও কণ্ঠস্বরের প্রমাণ দাও; জীবনের প্রতিটি লোভনীয় বস্তুথেকে তোমার অংশটুকু গ্রহণ করার মাধ্যমে তুমি নিজেকে উপভোগ কর; তোমার স্বাধীন রুচি ব্যতীত অন্য কিছু যাতে তোমাকেশাসন না করে এবং বই পুস্তকের প্রচ্ছদ পৃষ্ঠায় তোমার যাদুকরী কোমলতা ছাপিয়ে, সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা ও রূপ-সৌন্দর্য প্রদর্শনীর মাধ্যমে তুমি ব্যবসা চালিয়ে যাও!”আরব তরুনী! তুমি কি দারিদ্রতা চাও, অথচ সৌন্দর্য একটি বড় গচ্ছিত সম্পদ
তুমি কি পবিত্রতা চাও, অথচ এ যুগ হচ্ছে উপভোগের যুগ!
আগে অবশ্য মান-মর্যাদা রক্ষার যুগ ছিল, এখন সেটা তো শেষ হয়ে গেছে,
এ যুগ তো নতুন অনেক কিছু করেছে, সুতরাং তুমি চমৎকার কিছু কর! [১]
এই নগ্ন হামলা এর বিরুদ্ধেদাবি করে জোটবদ্ধ পরিশ্রম বা চেষ্টা-সাধনা, যাতে মুসলিম নারী তার বিরুদ্ধে প্রণীত পরিকল্পনাকে পরিপূর্ণ মনোযোগের সাথে বুঝতে পারে; অতঃপর সে পর্যবেক্ষণ করবে এবং তার পথ সে সচেতন দৃষ্টিতে গ্রহণ করতে সক্ষম হবে।

চতুর্থত:
আর তা তৃতীয়টির সাথে সংশ্লিষ্ট; উপরোল্লেখিত নগ্ন হামলার সাথে সাথে নারী বিষয় নিয়ে অনেক ফেতনা-ফাসাদ ও বিশৃঙ্খলার উদ্ভব সাধন করা হয়েছে। যেগুলো ইসলামী শরী‘আতের ব্যাপারে সচেতন মুসলিম নারীদের কারও কারও মধ্যেও দেখা যায়। বস্তুত এ ফেতনা ও বিশৃঙ্খলা নিয়ে এমন কিছু লোক হাঁকডাক দিচ্ছে, যারাচায় নিজেকে প্রকাশ করতে; আরও চায় তার জন্য এমন একটি রায় বা মত হবে, যা তার সাথে সম্বন্ধযুক্ত হবে। অবশেষে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, নারীর অনেক ব্যাপার নিয়ে পক্ষে ও বিপক্ষে দু’ভাগে মানুষবিভক্ত হয়ে পড়েছে। আর বিষয়টি শুধুমাত্র বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলো না। ফলে আমরা দৈনিক সংবাদপত্রগুলো এবং ম্যাগাজিনসমূহে বিখ্যাত ও অখ্যাত ব্যক্তিবর্গের হাতে লেখা বিভিন্ন প্রবন্ধ অধ্যয়নকরি— কারণ, তারা দাবি করে যে,শরী‘আত কারও একান্ত বিষয় নয়,সবাই এতে মত প্রকাশ করার অধিকার রাখে। [২]

তারা চিকিৎসা, প্রকৌশল ও অন্যান্য ক্ষেত্রে কোন কথাবলতে রাজি নয়; কারণ, তারা সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নয়; কিন্তু তারা মূর্খতা ও অজ্ঞতা সত্ত্বেও আল্লাহর শরী‘আতের মধ্যে নাক গলানোটাকে গ্রহণ করেছে; আল্লাহ তুমি পবিত্র! এটা কতবড় অপবাদ!!এটা বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের উপর গুরু দায়িত্ব চাপিয়ে দেয় যে, সত্য বর্ণনা ও ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে তারা সর্বাত্মকচেষ্টা-প্রচেষ্টা ও গবেষণা চালিয়ে যাবেন, যতটুকু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাদেরকে বর্ণনা, দলিল-প্রমাণ ও জ্ঞানবুদ্ধির শক্তি থেকে দান করেছেন।
আরো পড়ুন.....নারী এবং তার দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে আলোচনা কেন?
Part 2

কোন মন্তব্য নেই :