দাম্পত্য জীবনঃ----১. স্বামীর উদ্দেশ্য সাজ-সজ্জা গ্রহণ...২. মর্যাদার পোশাক পর্দাঃ part 1
কোন মন্তব্য নেই
মহান আল্লাহ সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। মানব সমাজে এ পরম আকর্ষণের প্রতি ইসলাম বিধি-নিষেধ আরোপ করে সৌন্দর্য চর্চার একটি মাপকাঠি রচনা করে দেয় যাতে ভারসাম্যপূর্ণভাবে তার চর্চা হয় ও অশ্লীলতার কারণ না হয়ে যায়। তাই প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর কর্তব্য হল, সৌন্দর্য চর্চাকে স্বীয় স্বামীও মহিলা অঙ্গন পর্যন্ত সীমিত রাখা। মুহরিম ব্যক্তিদের পর্যন্ত তা সম্প্রসারিত করা দোষণীয় নয়। এছাড়া অন্যদের সামনে সাজ-গোজের কোন মূল্য নেই।
স্বামীর উদ্দেশ্য সাজ-সজ্জাগ্রহণঃ
স্বামীর উদ্দেশ্য সাজ-সজ্জা গ্রহন করা একটি সওয়াবের কাজ। স্বামীর উদ্দেশ্য সাজ-সজ্জায় থাকার জন্য স্ত্রীর প্রতি শরীয়তে নির্দেশ রয়েছে।
বর্তমানে নারীদের অবস্থা হলো, স্বামীর সামনে তারা নোংরা অপরিছন্ন ও ময়লা কাপড় চোপড় পরে থাকে। আর বাইরে বেড়াতে যাবার সময় আপাদ-মস্তক সুসজ্জিত হয়ে যায়। কেউ স্বামীর উদ্দেশ্য সাজ-সজ্জা গ্রহন করলে সমালোচনাশুরু হয়ে যায় যে, মেয়েটির লাজ-লজ্জা বলতে কিছুই নেই- স্বামীর সামনে সে কেমন রূপ চর্চা করছে!
পরিতাপের বিষয়! যেখানে সাজ-সজ্জা গ্রহন করা উচিত সেখানে তা নিন্দনীয়। আর যেখানে
সাজ-সজ্জা গ্রহন করা উচিৎ নয় সেখানে তা প্রসংশনীয়। স্বামী যখন স্ত্রীর সাজ-সজ্জা কামনা করে তখন তা গ্রহন না করার কি যু্ক্তি থাকতে পারে?
আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, মহিলারা স্বগৃহে তো বাঁদী-দাসীও গৃহপরিচালিকার ন্যায় অপরিস্কার অপরিচ্ছন্ন্ থাকে। আর যখন কোন বিশেষ অতিথির আগমন ঘটে তখন বিভিন্ন সাজ-সজ্জায় সজ্জিত হয়ে সম্পূর্ন নববধু বনেযায়।
প্রতিটি জিনিষের একটি লক্ষ্য ওউদ্দেশ্য থাকে। আমার প্রশ্ন, ভাল কাপড় -চোপড় পরিধানের উদ্দেশ্য কি শুধু অন্যদেরকে দেখানো? অদ্ভুত কান্ড! যাকে দেখানের জন্য এই কাপড়-চোপড় ও সাজ পোশাক তৈরী হয়েছে, যার টাকায় তৈরী বা কেনা হয়েছে, তার সামনে তা পরিধান না করে অন্যদের সামনে পরিধান করা হয়। বিষয়টা কিছুটা লজ্জাজনক হলে ও সংশোধনের প্রয়োজনের বলতে হচ্ছে।
আজকালকার স্ত্রীরা স্বামীর সাথে কখনও স্বতঃফূর্তভাবে কথা বলবে না । তার সামনে ভাল কাপড়-চোপড় পরিধান করবে না। অতচ অন্যের গৃহে গেলে সুমিষ্টভাষী বনে যাবে, সুন্দর থেকে সুন্দরতমএবং উন্নত থেকে উন্নততর সাজে সজ্জিত হবে-এ কেমন কথা? অর্থ খরচ করবে স্বামী আর উপভোগ করবে অন্যরা?
মাহরাম ব্যতীত অন্য লোকদের উদ্দেশ্যে সৌন্দর্য চর্চা করাঃ
যাদের জন্য সৌন্দর্য চর্চা করাজায়েয তারা হল, স্বামীসহ ঐ সকল পুরুষ যাদের সাথে মেয়ে লোকের বিয়ে চিরস্খায়ীভাবে হারাম।তাদের তালিকা হচ্ছে: নিজ বাপ, ভাই, ছেলে, ছেলের ছেলে, শ্বশুর, স্বামীর ছেলে ইত্যাদী। তবে শর্ত হল, ঐ ব্যক্তিকে আমানতদার হতে হবে যিনি আল্লাহকে ভয় করেন। সে যদি ফাসিক ও গুণাহগার হয় তাদের সামনে সৌন্দর্য প্রকাশ করা জায়েয নেই, সেটা নিজভাই হলেও না। অনুরুপভাবে মহিলারা অমুসলিম মহিলাদের সামনে সৌন্দর্য প্রকাশের বিষয়েমতভেদ রয়েছে। পবিত্র কুরআনের নিম্মোক্ত বাণিটি তার সুষ্পষ্টপ্রমাণ।
মহান আল্লাহ বলেন: অর্থাৎ “তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর. পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভাগিনা, স্ত্রীলোক, অধিকারভুক্ত দাসী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত অন্য কারো কাছে তাদের সৌন্দর্যপ্রকাশ না করে”। (সূরা আন-নূর: ৩১)
মহিলারা আয়াতে বর্ণিত সকল লোক ব্যতীত অন্যদের সামনে সুসজ্জিতাবস্খায় যতবারই আসুক ততবারই তাদের গুণাহ হবে।
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু মুসা আল আশয়ারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীস থেকেও এ মর্মে একটি হাদীস বর্ণিত আছে।
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন: “প্রত্যেক চোখ যেনা করে। মেয়েলোক যখন সুগন্ধি মেখে কোন মজলিশের পাশ অতিক্রম করে, সেও যেনাকারিণী”। (আবু দাউদ ও তিরমিযী)
এর অর্থ হল, সে যেনার প্রতি আহ্বানকারিণী। এ প্রকার তৎপরতার জন্য সে গুণাহগার হিসেবে সাব্যস্ত হবে।
হাদীসে উল্লেখিত ‘চোখ যেনা করে’এর অর্থ হল, স্ত্রীদের নিষিদ্ধ সতরের দিকে তাকানো গুণাহ। কেননা, হারাম দৃষ্টি যেনার কারণএবং যৌন কামনা সৃষ্টির উপায়।
ইবনু খুযাইমা বর্ণিত আরো একটি হাদীস উপরোক্ত বিষয়টির ভয়াবহতার প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: “আল্লাহ সে স্ত্রীলোকের নামায কবুল করেন না, যে সুগন্ধি মেখে তার ঘ্রাণ বাতাসে ছড়িয়ে মসজিদের উদ্দেশ্যে বের হয়, যে পর্যন্ত না সে ঘরে ফিরে আসে ও গোসল করে।”( আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)
এটা হল, সুগন্ধি নিয়ে মসজিদে যাওয়ার পরিণতি। কিন্তু যে মহিলারা সুঘ্রাণ ছড়িয়ে খোলামেলা পুরুষের মজলিশে কিংবাঅনুষ্ঠান অথবা তাদের ক্লাব ও অন্য লোকের ঘরে যায়, তাদের অবস্খা সহজেই অনুমেয়।
মহিলাদের উগ্র চালচলনের ভয়াবহ আখিরাতের পরিণতি কি হবে?
মহিলাদের উগ্র চালচলনের ভয়াবহ আখিরাতের পরিণতি সম্পর্কে হযতরআবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহ আনহু) বর্ণিত হাদীসটিও এখানে উল্লেখের দাবী রাখে।
প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম). ইরশাদ করেন: “দোযখের দু’প্রকার লোককে আমি (দুনিয়ায়) দেখেনি। আরো পড়ুন.......দাম্পত্য জীবনঃ----১. স্বামীর উদ্দেশ্য সাজ-সজ্জা গ্রহণ...২. মর্যাদার পোশাক পর্দাঃ part 2

কোন মন্তব্য নেই :