পারিবারিক জীবনঃ--যাদের উছিলায় আজ আমরা দুনিয়াতে বীরদর্পে হেটে বেড়াচ্ছি তাদেরকে এত অবহেলা করি কেন?

কোন মন্তব্য নেই

মা-বাবার কাছে সন্তান হচ্ছে শ্রেষ্ট ধন। কলিজার টুকরার টুকরা। সন্তানদের জন্যই মা-বাবা বেঁচে থাকার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে প্রার্থনা করে থাকে। সন্তানের জন্মের পূর্ব থেকেই মা-বাবাকে কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে হয়। দশ মাস দশ দিন সন্তানকে পেটে ধারন করে মাকে সংসারের যাবতীয় কাজ করতে হয়। সন্তানের ফুটফুটে মুখ দেখার জন্য বাবা অপেক্ষায় থাকে। আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে সন্তান দুনিয়ায় আগমন করলে মা-বাবা ও পরিবারে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। মায়ের সেবায় সন্তান আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। আর বাবা সন্তানের জন্য যা যা দরকার এনে দিতে প্রস্তুত থাকে। তারপর সন্তান চার/পাঁচ বয়সে স্কুলে যায়। মা-বাবা সন্তানকে সুশিক্ষিত করার জন্য দিন রাত পরিশ্রম করে থাকে। তারপর উচ্চবিদ্যালয় তারপর মহাবিদ্যালয় তারপর কর্ম জীবনে সন্তানকে প্রবেশ করিয়ে বা মেয়ে হলে যোগ্য পাত্রের হাতে তুলে দিয়ে মা-বাবা একটু বিশ্রাম নিতে চাই। একটি সন্তানকে তৈরী করতে মা-বাবাকে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়। অনেক অর্থ খরচ করতে হয়। অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। আর সেই সন্তান একসময় বিয়ে করে বউ নিয়ে আলাদা থাকে। মা-বাবাকে বোঝা মনে করে গ্রামের বাড়ীতে রেখে বউ নিয়ে শহরে পাড়ি দিয়ে থাকে। প্রতি মাসে মা-বাবার কিছু টাকা পাঠিয়ে দিয়ে দায়িত্ব শেষ মনে থাকে। অনেকে মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেয়। এই রকম দৃশ্য আমাদের সমাজে দেখতে পাচ্ছি। ইদানিং সমাজে মা-বাবারসাথে সন্তানের দুরত্ব বাড়ছে। যৌথ পরিবার ভেঙ্গে যাচ্ছে।
শিক্ষিত সন্তানেরা মা-বাবাকে গ্রামের বাড়ীতে বা বৃদ্ধাশ্রমেরেখে কিভাবে বউ নিয়ে শহরের বসবাস করছে? তাদের কি একবারও মা-বাবার পরিশ্রমের কথা, ছোট বেলার লালন পালনের কথা মনে পড়ে না? আমরা এখন কোন সমাজে বসবাস করছি? যাদের উছিলায় আজ আমরা দুনিয়াতে বীরদর্পে হেটে বেড়াচ্ছি তাদেরকে এত অবহেলা করছি কেন? একবারও কি ভেবে দেখেছেন এই অবহেলার চিত্র একসময় আমাদের জীবনেও আসতে পারে। এক সময় আমাদের সন্তানেরাও আমাদেরকে বৃদ্ধাশ্রমে অথবা গ্রামের বাড়ীতে রেখে আসবে। তখন কেমন লাগবে? মনে রাখবেন মাতা-পিতাকেকষ্ট্ দেবার ফল মৃত্যুর পূর্বেই ভোগ করতে হবে।
তাই আসুন.. হে ভাই ও বোনেরা! যেখানে থাকি না কেন মা-বাবাকে সাথে নিয়ে থাকার চেষ্টা করি। ছেলে হলে অবশ্যই মা-বাবা-স্ত্রী-সন্তানদের এক সাথে বসবাস করবেন। আর মেয়ে হলে বিবাহিত জীবন থেকেও মা-বাবার সেবা করা যায়। নিয়মিত মা-বাবার সাথে যোগাযোগ রাখুন।ছেলে হলে অবশ্যই মা-বাবা-স্ত্রী-সন্তানদের এক সাথে বসবাস করবেন। আর মেয়ে হলে বিবাহিত জীবন থেকেও মা-বাবার সেবা করা যায়। নিয়মিত মা-বাবার সাথে যোগাযোগ রাখুন। আর প্রবাসী হলে অবশ্যই প্রতি সপ্তাহে মা-বাবার সাথে ফোনে কথা বলুন। হে আল্লাহ আমাদেরকে মা-বাবার সেবার করা তওফিক দান করুন।

কোন মন্তব্য নেই :