লাম্পট্যতা রোধে জেল-জরিমানা! কতটা ফলপ্রসু? ‘ইভ টিজার’ বলে বখাটেদের সম্মান না দিয়ে যথার্থ বাংলা শব্দের প্রয়োগ করতে হবে। part 2

কোন মন্তব্য নেই
মার্শাল আর্ট শিখার টাকা যার ঘরে আছে তার কণ্যা যে বখাটের খপ্পড়ে পড়বেনা, বলাই বাহুল্য। গ্রীসের মানুষেরা খুবই ভদ্র, মার্জিত। সেখানে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশী। স্কুল-কলেজের সামনে, কিংবা মহিলা আধিক্য বাসে যেভাবে পুরুষকে নারীরা উত্যক্ত করে ভাবলে শরীর শিউরে উঠে। আমাদের দেশে পুরুষ বেশী বলে নারীরা উত্যক্ত হচ্ছে, যে দেশে নারী বেশী সেখানে পুরুষ উত্যক্ত হওয়া কোন আশ্চর্যের বিষয় নয়। তাই নারীকে মার্শাল আর্ট শিখিয়ে পুরুষদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলা যেমনি চিন্তাশীল গোষ্টির উত্তম কর্মকান্ড হতে পারেনা। বখাটে ছেলেদের জেলে ঢুকিয়ে সাময়িক ফায়দাহলেও, জেল ফেরৎ বখাটেরা মেয়েদের বিরুদ্ধে আরো প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে উঠবে সন্দেহ নাই, তাই দীর্ঘ মেয়াদের জন্য এই পদ্ধতিও কোন সূফল বয়ে আনবেনা।
উপরের কয়েকটি দৃশ্য থেকে উপলব্ধি করা যায়, কিভাবে আমাদের দেশের সাংস্কৃতি কান্ডারী বিহীন নৌকার মত মতো, নদীর স্রোতে গা ভাসিয়ে দিয়েছে। কোন নিয়ন্ত্রন নাই, কারো অনুশোচনা নাই, কারো দায়বদ্ধতা নাই। যার কারনেএগুলো দেখে, আকৃষ্ট হয়ে, তরুণ সমাজে দুষ্ট ক্ষতের সৃষ্ট হচ্ছে। তরুণেরা সর্বদাই তরুণ, তাদের কাছে ভাল-মন্দের মানদন্ড রক্ষা করা কষ্টকর। যেখানে, যে যায়গায় তারা হাত দিবে, সেখানেই তারুণ্যের ছাপ রাখবে। এটাতাদের দোষ নয়, ফলে তাদের নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারিবারিক শাসন, স্কুল শিক্ষকের ভয়, সামাজিক বদনামের ভীতি দিয়ে তাদের সর্বদা তাড়িত করাতে হয়।আর নৈতিকতা শিক্ষা দেয় ধর্ম, সকল ধর্মই নৈতিকতার কথা বলে, খারাপ মানুষকে ভাল বানায়। আল্লাহ নারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, তোমরা হিজাব তথা শালীন পোশাক পড়,তাহলে তোমরা সম্ভ্রান্ত হিসেবে পরিচিত হবে এবং রাস্তায় তোমাদের উত্যক্ত করা হবেনা। পুরুষদের বলেছেন, তোমরা পর নারীর প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করোনা। তিনবারের অধিক তাকালে মহাপাপের ভয় দেখিয়েছেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয়বারের দেখা মাফ হলেও, তার সন্তোষজনক জবাব থাকতে হবে। কেননা সবই তিনি মনিটরিং করছেন? ইসলাম নারী-পুরুষ দুজনকেই পর্দা করতে আদেশ করেছেন, তাদের চরিত্রের মানদন্ড ও সীমানা নির্ধারণ করেছেন।
সকল ক্লাসে সকল ধর্মের বই পড়া বাধ্যতামূলক করতে হবে। টিভির বিজ্ঞাপনে পরিবর্তন আনতে হবে। যৌন উত্তেজক ছবি পরিহার করে, হাসি-কৌতুকের ছবিকে গুরুত্ব দিতে হবে। নারী-পুরুষ উভয়কে শালীন পোশাক পড়তে উৎসাহিত করতে হবে। মসজিদে-মন্দিরে চরিত্র গঠন মূলক বক্তব্য ও স্কুলে এ বিষয়ে বিতর্ক প্রতিযোগীতার ব্যবস্থা করতে হবে। নাটক, কার্টুন ছবির মাধ্যমে চরিত্রবান মানুষের কি মর্যাদা ও সম্মান ইত্যাদি বিষয়ে নাটক তৈরী করে প্রচার করতে হবে। আমাদের দেশে ইংরেজী শব্দের প্রতি আকর্ষন ও সম্মান বেশী। অর্থ যত বেমানান হোক, বোধগম্য নাই হোক; ইংরেজীরমত হলেই নিজেকে সম্মানী ভাবে। মানুষ ইংরেজী লিলি নাম রাখে বাংলায় শাপলা রাখেনা, বিউট রাখে সুন্দরী রাখেনা, লোটাস রাখে পদ্ম রাখেনা। তাই বিদেশী শব্দ ‘ইভ টিজার’ বলে বখাটেদের সম্মান না দিয়ে যথার্থ বাংলা শব্দেরপ্রয়োগ করতে হবে। যে শব্দশুনলে একজন মূর্খ মানুষেরচামড়ায় যাতে আগুন জ্বলে, ঘৃণা তৈরী হয়। লম্পট, লূইচ্ছা, বখাটে শব্দ না হলেও প্রচলিত নতুন বাংলা শব্দ খোঁজে বের করতে হবে।তখনই আমরা একটি সুস্থ যুবক শ্রেনী তৈরী করতে পারব এবং আমাদের কোমলমতি তরুণীরা পথে-ঘাটে, ঘরে-বাহিরে উত্যক্ত হবেনা।

কোন মন্তব্য নেই :