একটি বিব্রতকর সমস্যা part 2

কোন মন্তব্য নেই
প্রয়োজনে আলট্রাসনোগ্রাফির সহায়তা নেওয়া হয়।
অন্য কোনো কারণ না পাওয়া গেলে ওভার অ্যাক্টিভ ব্লাডারের চিকিৎসা শুরু করা হয়। প্রথমত, রোগীর জীবনাচরণ ও অভ্যাসে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের মাধ্যমে। যেমন—ধূমপান পরিহার করা, অতিরিক্ত ওজনকমিয়ে ফেলা, কোষ্ঠ পরিষ্কার রাখা ইত্যাদি। প্রস্রাবের পরিমাণ ও আবহাওয়ার উষ্ণতার ওপর নির্ভর করে পরিমিত পানি পান (কখনোই অতিরিক্ত নয়),যেসব পানীয়তে প্রস্রাবেরমাত্রা বেড়ে যায়, যেমন—চা, কফি, কিছু ফলেররস, বিভিন্ন কোমল পানীয় ইত্যাদি পান করা কমিয়ে দিতে হবে। বহুমূত্র রোগ থাকলে তা অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এর সঙ্গে রোগীকে তাঁর মূত্রদ্বার, যোনিপথ ও মলদ্বারের চারপাশের মাংশপেশিগুলোকে (পেরিনিয়াল মাংশপেশি) নিয়মিত বিরতিতে সংকোচন ও প্রসারণের ব্যায়াম শিখতেহবে। এ ছাড়া মূত্রাশয়ের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মূত্রাশয়ের পুনঃপ্রশিক্ষণের জন্য রোগীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ প্রশিক্ষণে রোগী ধীরে ধীরে প্রস্রাব বেশিক্ষণ ধরে রাখা এবং মূত্র ত্যাগের মধ্যবর্তীসময় বাড়ানোর অভ্যাস করেন।
ছয় সপ্তাহের মধ্যে উপসর্গের যথেষ্ট উন্নতি না হলে উপরিউক্ত চিকিৎসা বা থেরাপির সঙ্গে ওষুধ ব্যবহার শুরু করা হয়। এ রোগের চিকিৎসায় বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করা হয়, আর অতিসম্প্রতি কিছু ভালো ওষুধ বাজারে এসেছে। যে ওষুধ বা ব্যবস্থাপত্রই দেওয়া হোক না কেন, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তা দীর্ঘদিন খেতে হবে। ওভার অ্যাক্টিভ ব্লাডারে যেসবওষুধ ব্যবহার করা হয়, সেসব ওষুধের সবগুলোরই কমবেশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এর মধ্যে মুখ ও গলা শুকিয়ে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, চোখে ঝাপসা দেখা অন্যতম।
নতুন ওষুধগুলোর এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কিছুটা কম হলেও একেবারে মুক্ত নয়। আর বড় কথা হলো, ওষুধ খাওয়া শুরু করার পর থেকে উপসর্গের উন্নতি দেখা দিতে বেশ সময় লাগে, ফলে অনেক সময়ই রোগীরা ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন। তাই এ রোগের চিকিৎসায় প্রয়োজন মনোবল ও ধৈর্য। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনাচরণ ও অভ্যাসে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনুন এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সঠিক নিয়মে ওষুধ সেবন করুন।
ডা. মুনা সালিমা জাহান
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ১৬, ২০১০

কোন মন্তব্য নেই :